30 May, 2018

লিভারের রোগ ও তার প্রতিকার


লিভার মানব দেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটি দেহের দান দিকে অবস্থিত। একে শরীরের ল্যাবরেটরি বলা হয়। একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির শরীরের লিভারের ওজন প্রায় ১ থেকে ১.৫ কেজি। আমাদের মস্তিষ্ক, হৃিপণ্ড , ফুসফুস, কিডনি ইত্যাদি সব ক’টি যন্ত্রের সুষ্ঠু কাজের ক্ষমতা নির্ভর করে লিভার থেকে নির্গত শক্তির ওপর। সুতরাং এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।



আমাদের দেশে লিভারের যে সকল রোগগুলো হয়ে থাকে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল,

১. ভাইরাল হেপাটাইটিস (যা জন্ডিস নামে পরিচিত)

২. লিভার সিরোসিস

৩. লিভার ক্যান্সার

৪. লিভারের ফোঁড়া

৫. পিত্তথলির বা পিত্তনালীর রোগ

৬. লিভারের জন্মগত ও মেটাবলিক রোগ ইত্যাদি। লিভারের এসকল রোগের লক্ষন হঠাৎ করেই প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে এসকল রোগ মানুষের শরীরে বিকাশ করে।



লিভারের সমস্যায় সবচেয়ে বেশি লক্ষন পরিলক্ষিত হয়, জিহ্বায়।

* পিত্ত সংক্রান্ত রোগে জিহ্বায় হলদেটে আবরন দেখা দেয়।

* এছাড়াও জন্ডিস, পিত্ত পাথুরি, হেপাটাইটিস বি-ভাইরাস প্রভৃতির কারনেও জিহ্বা হলদেটে হয়ে যায়।

* লিভারের জটিল সমস্যা বুঝাতে, জিহ্বায় কালচে আবরনের সৃষ্টি হয়।

* জন্ডিসের সময় হঠাৎ হঠাৎ বমির ভাব, বা তীব্রভেবে বমি হয়।

* খাদ্য গ্রহণে অরুচি, অনীহা কিংবা তীব্র দুর্বলতা, কখনও কখনও জ্বর জ্বর ভাব বা জ্বরের মাধ্যমেও লিভারের রোগের সূত্রপাত হতে পারে।

আমাদের দেশে লিভারের রোগ বলতে প্রধানত হেপাটাইটিস এ এবং ই হয়ে থাকে। তাই বাইরের যেখানে সেখানের খাবার গ্রহন করা উচিত নয়। আমাদের দেশে এখন হেপাটাইটিস এ রোগের টিকা প্রচলিত। তাই এই টিকা সকলের নিয়ে নেয়া উচিত। এছাড়াও প্রাণঘাতী রোগ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকাও এখন আমাদের দেশে সর্বত্র পাওয়া যায়। পরিবারের সকলের এই টিকা নিতে নেয়া দরকার। হেপাটাইটিস সি-এর প্রতিষেধক টিকা এখনও আবিষ্কার না হওয়ার কারনে, সকল প্রকার সাবধানতা মেনে চলতে হবে। লিভার সুস্থ রাখতে আপনার সচেতনতাই হতে পারে অন্যতম পন্থা।

প্রতিদিন গাজর খান সুস্থ্য থাকুন


চোখের খেয়াল রাখতে নিয়মিত ভিটামিন এ খান। আর এই ভিটামিন এ-এর ভরপুর যোগান দেবে গাজর। তাই চটপট একটি গাজর খেয়ে ফেলুন। গাজরে যে শুধুমাত্র ভিটামিন এ আছে তা নয়। গাজরের আছে নানাবিধ উপকার। এটি আপনাকে উপহার দেবে সুন্দর ত্বক থেকে শুরু করে ক্যান্সারের থেকে সুরক্ষাও।



আসুন জেনে নিই একটি গাজর থেকে আপনি কি কি উপকার পাবেন-



১. আগে গাজর না খেয়ে থাকলে এবার শুরু করে দিন। কারণ গাজর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এতে আছে বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ তে বদলে যায়। পরে সেটি চোখের রেটিনায় গিয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, সেই সাথে রাতের বেলায় অন্ধকারেও চোখে ভাল দেখার জন্য দরকারি এমন এক ধরনের বেগুনি পিগমেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে।



২. গাজর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। গাজরে আছে ফ্যালকেরিনল এবং ফ্যালকেরিনডায়ল যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। তাই গাজর খেলে ব্রেস্ট, কোলন, ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।



৩. গাজর শুধু শরীরের জন্য ভাল তাই নয় এটি আমাদের জন্য অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে ঠিকঠাক করে।



৪. সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে। সেই সাথে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ, ব্রন, ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতা ইত্যাদি দূর করে আপনাকে সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।



৫. এছাড়াও গাজর ভাল অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবেও কাজ করে। এটি শরীরে কোনো ক্ষত হলে তা ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কোথাও কেটে বা পুড়ে গেলে সেখানে লাগিয়ে নিন কুচি করা গাজর বা সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট। আপনার ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।



৬. এছাড়া গাজর বাইরে থেকেও ত্বকের অনেক উপকার করে। ফেশিয়ালের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।



৭. হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখে এটি খুব ভাল কাজ করে। এর ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।



৮. গাজরে উপস্থিত ভিটামিন এ লিভারে গিয়ে তাকে শরীর থেকে নানা ধরনের টক্সিন জাতীয় খারাপ উপাদান পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজরের এই উপাদান লিভার থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে গাজরের ফাইবার কোলন পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করে।



৯. সুন্দর ও সুস্থ্য সবল দাঁতের জন্য গাজরের জুড়ি মেলা ভার। গাজর আপনার দাঁত ও মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখে। গাজরের মিনারেলগুলো দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে।



১০. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ছয়টির বেশি গাজর খান বা খাচ্ছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি যারা এর থেকে কম পরিমানে কম বা একটি গাজর খাচ্ছেন তাদের তুলনায় অনেক কম হয়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনি নিজের খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন গাজর। সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন বা তরকারিতেও দিতে পারেন।



একটু ভাল থাকার জন্য আমরা কত কিছুই না করি। যদি একটি খাদ্য উপাদান আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় যোগ করে আরো একটু ভাল রাখতে পারি তাহলে তা কেন নয়? তাই নিয়মিত গাজর খান সুস্থ থাকুন।

শ্বাসনালী থেকে নিকোটিন দুর করার উপায়


ধূমপান যে শরীর জন্যে ক্ষতিকারক এ আর নতুন করে বলার কিছু নেই। অনেকেই এখন স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে ধূমপান ছাড়তে সচেষ্ট হয়েছেন। কিন্তু শুধু ধূমপান ছেড়ে দিলেই কি দীর্ঘদিনের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব! অতটা সহজ নয়… কারণ দীর্ঘদিনের বদঅভ্যেসের ফলে শরীরে জমা হয় নিকোটিন। কিন্তু তার থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রাকৃতিক উপায়রয়েছে। প্রতিদিনের কিছুশাক-সবজি ও ফল… ব্যস, তাতেই কেল্লা ফতে!

ব্রকোলি

অত্যাধিক ধূমপানের ফলে শরীরে মজুত ভিটামিন সি-র পরিমাণ কমে যায়। ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামন সি এবং বি৫ থাকে যা শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব কম করতে সাহায্য করে।

গাজরের রস

নিকোটিন ত্বকের ক্ষতি করে। অন্যদিকে গাজর ত্বকের জন্যে খুব উপকারী। তাছাড়া গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে এবং বি থাকে যা শরীর থেকে নিকোটিন সরাতে সাহায্য করে।

পালং শাক

পালং শাকে মজুত ফলিক অ্যাসিড শরীর থেকে নিকোটিন দূর করতে খুবই উপকারী। কিউয়ি এই ফলকে মিরাকেল ফল বললেও অত্যুক্তি হবে না। এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এং ই, যা নিকোটিনের লেভেল কমাতে সাহায্য করে।

জল

ধূমপানের ফলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। ডিহাইড্রেশনের মোকাবিলায় এবং শরীর থেকে নিকোটিন নির্মুল করতে জলের কোনও বিকল্প নেই। কমলালেবুকমলালেবুতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা নিকোটিন ফ্লাশ আউট করতে সাহয্য করে এবং মেটাবলিজিমও বাড়ায়।

এইডস, কারণ ও প্রতিকার


চারটি ইংরেজি শব্দ Acquired Immune Deficiency Syndrom এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল AIDS (এইডস)। আবার তিনটি ইংরেজী শব্দ Human Immunodeficiency Virus এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল HIV (এইচআইভি)।

এইচআইভির কারনে এইডস হয়। কোন রোগ বা সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য শরীরের স্বাভাবিক ক্ষমতাকে এইচআইভি ক্রমান্বায়ে ধ্বংস করে দেয়। তাই, এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি অতি সহজেই যেকোন রোগে (যেমন: নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ডায়রিয়া) আক্রান্ত হয়ে পড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এইডস এর কোন প্রতিষেধক বা কার্যকর ওষুধ এখনও আবিষ্কার করতে পারেনি।

মানবদেহে এইচআইভি প্রবেশ করার সাথে সাথেই শরীরে এইডস এর লক্ষণ দেখা যায় না। এইচআইভি শরীরে প্রবেশ করার ঠিক কতদিন পর একজন ব্যক্তির মধ্যে এইডস এর লক্ষণ দেখা দেবে তা ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এবং অঞ্চলভেদে ভিন্ন হয়। তবে এটা মনে করা হয়ে থাকে যে, এইচআইভি সংক্রমণের শুরু থেকে এইডস- এ উত্তরণ পর্যন্ত সময়ের ব্যাপ্তি সাধারণত ৬ মাস থেকে বেশ কয়েক বৎসর এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ৫-১০ বৎসর অথবা তারও বেশি।

এই সুপ্তাবস্থার তাৎপর্য হচ্হে, এই সময়ের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমিত একজন ব্যক্তি (যার শরীরে এইডস -এর কোন লক্ষণ যায় নি বা যে আপাতদৃষ্টিতে সুস্খ) তার অজান্তেই অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে এইচআইভি ছড়িয়ে দিতে পারে।



এইডস এর প্রধান লক্ষনসমূহ

এইডস -এর নির্দিষ্ট কোন লক্ষণ নেই। তবে, এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তি অন্য যে রোগে আক্রান্ত হয় সে রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হচ্ছে:



(১) শরীরের ওজন অতি দ্রুত হ্রাস পাওয়া

(২) দীর্ঘদিন (দুমাসেরও বেশি সময়) ধরে পাতলা পায়খানা

(৩) পুন: পুন: জ্বর হওয়া বা রাতে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

(৪) অতিরিক্ত অবসাদ অনুভব হওয়া

(৫) শুকনা কাশি হওয়া ইত্যাদি।



উল্ল্যেখ যে কারো মধ্যে উপরিউক্ত একাধিক লক্ষণ দেখা দিলেই তার এইডস হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। তবে, কোন ব্যক্তির এসব লক্ষণ দেখা দিলে বিলম্ব না করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।



এইচআইভি কিভাবে সংক্রমিত হয়

বায়ু, পনি, খাদ্য অথবা সাধারণ ছোঁয়ায় বা স্পর্শে এইচআইভি ছড়ায় না। এইচআইভি মানবদেহের কয়েকটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থে (রক্ত, বীর্য, বুকের দুধ) বেশি থাকে। ফলে, মানব দেহের এই তরল পদার্থগলো আদান-প্রদানের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়াতে পারে।



সুনির্দিষ্টভাবে যে যে উপায়ে এইচআইভি ছড়াতে পারে তা হল:

১) এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত ব্যাক্তির দেহে পরিসঞ্চালন করলে

২) আক্রান্ত ব্যাক্তি কতৃক ব্যবহৃত সুচ বা সিরিঞ্জ অন্য কোন ব্যাক্তি ব্যবহার করলে

৩) আক্রান্ত ব্যক্তির কোন অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে

৪) এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে (গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা সন্তানের মায়ের দুধ পানকালে)

৫) অনৈতিক ও অনিরাপদ দৈহিক মিলন করলে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ এইচআইভি সংক্রমণের উপায়গুলো জেনে এ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা এইডস প্রতিরোধ করতে পারি।



এইডস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা হল:

১) অন্যের রক্ত গ্রহণ বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনে আগে রক্তে এইচআইভি আছে কিনা পরীক্ষা করে নেয়া

২) ইনজেকশন নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবারই নতুন সুচ/সিরিঞ্জ ব্যবহার করা

৩) অনিরাপদ যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকা

৪) এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মায়ের সন্তান গ্রহণ বা সন্তানকে বুকের দুধ দেয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া

৫) কোন যৌন রোগ থাকলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া



যৌনরোগ এবং এইচআইভি

ইংরেজি শব্দাবলী Sexually Transmitted Disease এবং Sexually Transmitted Infection এর সংক্ষিপ্ত নাম যথাক্রমে এসটিডি (STD) এবং এসটিআই (STI)। এসব রোগ বা সংক্রমণ সাধারণত অনিরাপদ যৌনমিলনে মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। কিছু কিছু যৌনরোগ যৌনমিলন ছাড়া অন্য উপয়েও সংক্রমিত হতে পারে। যৌনরোগসমূহ ভাইরাসঘটিত অথবা ব্যকটেরিয়া ঘটিত হতে পারে। এ ধরনের প্রধান রোগগুলো হল: গনোরিয়া, সিফিলিস, ক্ল্যামিডিয়া, এইচআইভি, জননেন্দ্রিয়ের চর্মরোগ ও ফোঁড়া, হেপাটাইটিস-বি ইত্যাদি।



এসব রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হল:

যননাঙ্গ বা এর আশেপাশে ঘা/চুলকানি হওয়া, প্রসাবের সময় ব্যথা ও জ্বালা করা, যৌনাঙ্গ থেকে পুঁজ পড়া ইত্যাদি।



যৌনরোগ এবং এইচআইভির মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। যাদের কোন যৌনরোগ রয়েছে তাদের এইচআইভি দ্বরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি।

এইডস অক্রান্ত ব্যাক্তির পরিচর্যা মরণব্যাধি এইডস এর পরিণতি আমরা জানি। একজন এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি অতি সহজেই অন্যকে সংক্রমিত করে না এবং অক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে না। তাই আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে আমাদের সামজ থেকে যেন বিচ্ছিন্ন করা না হয়। তাকে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে উৎসাহিত করতে হবে।



সুতরাং তাদের প্রতি আমাদের করনীয় হবে:

১) এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করা,

২) তাদেরকে মানসিকভাবে প্রফুল্র রাখার চেষ্টা করা এবং তাদের প্রতি যত্নবান হওয়া,

৩) তাদেরকে অন্যান্য সবার মত সমান সুযোগ দেয়া,

৪) এইচআইভি অক্রান্তদের নিত্য-নৈমিত্তিক কাজ থেকে বঞ্চিত না করা,

৫) পরিবারের ও সমাজের অন্যান্য সদস্যগণ কতৃক এদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

মারাত্মক যৌনরোগ সিফিলিস: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার


যৌনরোগসমূহের মধ্যে অন্যতম মারাত্মক রোগটি হল সিফিলিস। এটি মূলত একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ৷ এই রোগ সাধারনত সহবাসের মাধ্যমেই ছড়ায়৷ এই ব্যাকটেরিয়ায়র নাম ট্রিপোনেমা প্যাল্লিডাম৷ যে গর্ভবতী মায়েরা এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার তাদের ক্ষেত্রে গর্ভজাত শিশু অ্যাবনরমাল হতে পারে বা শিশু জন্মের পরই মারা যেতে পারে৷



রোগ কীভাবে ছড়ায়?

অনিরাপদ যৌনমিলন বা সংক্রমিত ব্যাক্তির সঙ্গে সহবাসের ফলে এই রোগ ছড়ায়৷ ভ্যাজাইনাল, অ্যানাল বা ওরাল সেক্সের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে৷ শুধু মাত্র সহবাসই য়ে এই রোগের জন্য দায়ী তা কিন্তু নয়, রক্তদানের সময় একই সূঁচ ব্যবহার করলেই এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে৷ কিন্তু একই শৌচালয় ব্যবহার করলে বা জামা বদল করলে এই ব্যাকটেরিয়া ছড়ায় না৷ করাণ সিফিলিস রোগের ব্যাকটেরিয়া মানব দেহের বাইরে বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না৷



রোগের লক্ষণ:

এই রোগের তিনটি আলাদা পর্যায় রয়েছে৷ রোগের পর্যায় অনুযায়ী উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়৷ এই রোগের প্রথম ধাপ কে প্রাইমারি সিফিলিস বলা হয়৷ এটিতে যৌনাঙ্গ বা মুখের আশে পাশে যন্ত্রণাহীন কালশিটে দাগ পড়তে দেখা যায়৷ এই দাগগুলি ২ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আবার মিলিয়ে যায়৷ দ্বিতীয় ধাপটি হল সেকেন্ডারি সিফিলিস৷ এই পর্যায়ের লক্ষণ আবার আলাদা হয়, যেমন – ত্বকে ফুসকুড়ি, গলা ব্যথা৷ এগুলি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেড়ে যায়৷ এরপরে এটি সুপ্ত অবস্থায় চলে যায় এবং এটি প্রায় কয়েকবছর ধরে থাকে৷ তৃতীয় পর্যায়ে এটিকে টেরটিয়ারি সিফিলিস বলা হয়ে থাকে৷ এটি হল সবচেয়ে মারাত্মক পর্যায়৷প্রতি তিন জন সিফিলিস আক্রান্ত রোগী যারা এর চিকিৎসা করেন না তাদের ক্ষেত্রে এই টেরটিয়ারি সিফিলিস দেখা যায়৷ এটি মস্তিষ্ক, চোখ শরীরকে গুরুতর ভাবে ক্ষতি করতে পারে৷



রোগের প্রতিকার:

এই রোগের নির্ণয় করতে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ একান্ত প্রয়োজন৷ উপসর্গের সূচনা হলে যৌন স্বাস্থ্য ক্লিনিক বা ডাক্তারের কাছে যান৷ প্রাথমিক সিফিলিস চিকিৎসার মাধ্যমে সাড়িয়ে তোলা যায়৷ তবে তা যদি কোন ভাবে মারাত্মক আকার ধারণ করে তবে এ থেকে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে৷ প্রাথমিক পর্যায়ে যদি সিফিলিস ধরা হড়ে তবে অ্যান্টিবায়োটিক ও পেনিসিলিন ইনজেকশনের মাধ্যমে এটিকে সুস্থ করা যায়৷ তবে যদি সিফিলিস রোগের চিকিৎসা না করা হয় তবে এটি ভয়াবহ আকার নিতে পারে৷ এছাড়াও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই রোগ থেকে এইআইভি সংক্রমণ হতে পারে৷ তাই এই রোগ এড়াতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল অরক্ষিত যৌনমিলন এড়িয়ে চলা এবং সুরক্ষিত যৌন পদ্ধতি গ্রহণ করা৷

কুষ্ঠ রোগ


কুষ্ঠ রোগ (leprae)কি?

কুষ্ঠ রোগের সংক্রমণের কারণ মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি (Mycobacterium leprae) নামক জীবাণু। কুষ্ঠ রোগের কারনে মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ডের বাইরের দিকের স্নায়ু, অন্ডকোষ, চোখ, ত্বক এবং নাকের মিউকাস মেমব্রেনের ক্ষতি হয়। কুষ্ঠ রোগের সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলেও এটা খুব বেশি সংক্রমক রোগ নয়। কুষ্ঠ রোগের ফলে মৃত্যুহার যদিও খুবই কম কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারকে অনেক মানসিক ও সামাজিক সমস্যায় পরতে হয়।



কিভাবে কুষ্ঠ রোগ ছড়ায়?

• কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির নাক অথবা মুখ দিয়ে সর্দি ঝরলে এবং সুস্থ ব্যক্তির নিঃশ্বাস নেয়া অথবা সংস্পর্শের মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে।

• শুধুমাত্র জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলেই সকল ব্যক্তির কুষ্ঠরোগ হয় না, কুষ্ঠ রোগ (leprae) সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে এবং দীর্ঘস্থায়ী মেলামেশার ফলে হতে পারে।

• স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত রোগ ছড়ায় না।

• জীনগত কারন অনেক সময় সংক্রমণের জন্য দায়ী থাকে এবং জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে সে সকল ব্যক্তির হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কুষ্ঠ রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ গুলো কি করে বুঝবেন? রোগের লক্ষন বুঝতে অনেক সময় লাগে কারন সংক্রমিত হওয়ার কমপক্ষে এক বছর আগে পর্যন্ত কোন লক্ষণ বা উপসর্গই দেখা যায় না। সাধারণত জীবাণু সংক্রমণের ৫ থেকে ৭ বছর পর উপসর্গসমূহ দেখা যায় এবং উপসর্গ আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। রোগের যেসকল লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায়:

• ত্বকে স্পর্শ, ব্যথা ও তাপমাত্রার অনুভূতি হ্রাস পেতে পারে। • সংক্রমিত স্থানে পিন্ড দেখা দিতে বা ফুলে যেতে পারে।

• স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হলে সে সকল ব্যক্তি মনের অজান্তেই নিজের শরীরের নানারকম ক্ষতি করতে পারে যেমন, শরীরের কোন জায়গা কেটে যেতে বা পুড়ে যেতে পারে। তিন রকমের কুষ্ঠ রোগ হতে পারে।



নিম্নে তিন রকমের কুষ্ঠ রোগের উপসর্গ ও লক্ষণসমূহ দেওয়া হলঃ

• টিউবারকিউলয়েড (Tuberculoid) : ত্বকে লালচে দাগ পড়ে এবং লালচে দাগের পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গায় মসৃণ সাদাটে দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত স্থানের অনুভূতি হ্রাস পায়।

• লেপ্রোমেটাস (Lepromatous) : ত্বকের উপরিভাগে বেশকিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিন্ড অথবা অনেকখানি স্থান জুড়ে লালচে দাগ দেখা যায়। শরীরের অনেক স্থান অসাড় হয়ে যায় এবং মাংসপেশী দূর্বল হয়ে যায়। ত্বকের অনেক অংশ এবং শরীরের নানা অঙ্গ যেমন-কিডনী, অন্ডকোষ এবং আরও অনেক অঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে।

• বর্ডারলাইন (Borderline) : উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলো বিদ্যমান থাকে এবং চিকিৎসা না করানো হলে এটি টিউবারকিউলয়েড কুষ্ঠের মত বৈশিষ্ট্য ধারণ করে কিন্তু পরে আরো খারাপ হয়ে লেপ্রোমেটাস কুষ্ঠের মত বৈশিষ্ট্য ধারন করতে পারে। কুষ্ঠ রোগ সনাক্ত করতে কি ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে? উপসর্গগুলো খুবই স্পষ্ট হওয়ায় ডাক্তাররা দেখেই বুঝতে পারেন যে কুষ্ঠ রোগ হয়েছে কিন্তু তারপরেও রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য আক্রান্ত স্থানের ত্বকের টিস্যু পরীক্ষা ও রক্ত পরীক্ষা করতে হতে পারে। কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা কুষ্ঠ রোগের (leprae) চিকিৎসা দীর্ঘ সময় ধরে করতে হয়। রোগের ধরণ, মাত্রা এবং রোগীর বয়স বিবেচনা করে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা করা হয়। দুইভাবে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা করা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এন্টিবায়োটিক সেবনের মাধ্যমে অথবা সারাজীবনব্যাপী ড্যাপসোন(Dapsone ) দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। কুষ্ঠ রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়? বিসিজি টিকা গ্রহনের মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগ (leprae) থেকে মুক্ত থাকা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে নিঃসৃত তরল এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে যে ফুসকুড়ি হয়, কোনভাবেই তার সংস্পর্শে আসা যাবে না।

ডায়রিয়া


গরমের সময় এলেই বেড়ে যেতে পারে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বড়দের ক্ষেত্রে বাইরের খোলা খাবার খেলে, দূষিত পানি পান করলে ডায়রিয়া হয়। আর শিশুদের ক্ষেত্রে রোটা ভাইরাসের আক্রমণে ডায়রিয়া হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক ডায়রিয়ার লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়-



লক্ষণ :

১. ২৪ ঘণ্টায় তিনবার বা এর বেশি পানিসহ পাতলা পায়খানা হওয়া

২. শরীর দুর্বল হওয়া

৩. খাওয়ায় রুচি কমে যাওয়া

৪. ডায়রিয়া শুরুর প্রথম দিকে বমি হয়। পরে অনেক ক্ষেত্রে বমি কমে যায়

৫. জ্বর এলেও খুব তীব্র হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শরীর হালকা গরম থাকে।



প্রতিরোধে যা করবেন :

বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নখ কেটে সব সময় ছোট রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। তারা বাইরে খেলাধুলা করে, ঘরের ছোট ছোট জিনিস হাতে নিয়ে মুখে দেয়। তাই সব সময় হাত পরিষ্কার রাখা উচিত। নিজেদেরও তা করতে হবে। খাবার সব সময় ঢেকে রাখা উচিত। পরিষ্কার স্থানে খাবার রাখতে হবে। না হলে মাছি বা অন্যান্য রোগবাহিত কীটপতঙ্গ খাবারে বসতে পারে। এগুলোর মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। টয়লেট শেষে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। হাতের কাছে সাবান না থাকলে ছাই দিয়ে হাত ধুয়ে বেশি পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। বাসায় খাওয়ার স্যালাইন ও জিংক ট্যাবলেট সব সময় রাখতে হবে। জিংক ট্যাবলেট খেলে অনেক সময় শিশুদের বমি হয়। তখন খাওয়ানো বন্ধ করে দিতে হবে। বমি বন্ধ হলে ১০ দিনের মধ্যে জিংক ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করা উচিত। এতে পরে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।



ওষুধ-পথ্য :

ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় ওষুধ খাওয়ার স্যালাইন। বড়দের ক্ষেত্রে চালের স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। ডায়রিয়া হলে শরীরে লবণ-পানির স্বল্পতা হয়, খাবারের ঘাটতি দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন ডায়রিয়া হলে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যাবে না- এটা ঠিক নয়। রোগীর সব সময় শুধু স্যালাইন খেতে ভালো নাও লাগতে পারে। তাই রোগীর রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী খাবার খেতে দিতে হবে। স্বাভাবিক খাবার একটু নরম করে খাওয়ানো উচিত। খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি ডাবের পানি ও যেকোনো ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে। অল্প আকারে ডায়রিয়া হলে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।



পানি যেভাবে বিশুদ্ধ করবেন :

১. পানি পান করার আগে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।

২. কমপক্ষে ১০ মিনিট পানি ফোটালে তাতে রোগজীবাণু থাকে না।

৩. এরপর পাত্রে পানি কিছুক্ষণ রেখে দিন। যদি কোনো ময়লা থাকে, তবে নিচে পড়ে যাবে।

পরে ওপরের অংশের পানি ছেঁকে আলাদা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে।

৪. বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়।

৬. বেশির ভাগ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিনা মূল্যে পাওয়া যায়।

এসব ট্যাবলেট পানি সংরক্ষণ ট্যাংকে দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়।

মশাবাহিত নতুন রোগ জিকা’র লক্ষণ ও প্রতিকার


মশা বাহিত রোগ হল জিকা। মানুষের শরীরে যদি এই রোগের জীবাণু একবার দানা বাঁধতে শুরু করে তাহলেই গেল। স্নায়বিক জন্ম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে এই রোগের জীবাণুর জন্য। ক্যারাবিয়ান দেশগুলি সহ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে আগে থেকেই মশা বাহিত এই জীবাণুর জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এছাড়া মোট ২৫টি দেশে জিকা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। আক্রান্ত মানুষদের মধ্যে রয়েছেন বহু গর্ভবতী মহিলাও। ফল স্বরূপ অস্বাভাবিক বাচ্চার জন্ম হয়েছে। দেখা গেছে বেশিরভাগ বাচ্চার মাথা দেহের তুলনাউ অনেক ছোট কিংবা বড় হয়েছে।



আসলে কি এই ‘জিকা’ ভাইরাস?
হলুদ জ্বর, চিকুনগুনিয়া এবং ডেঙ্গির সমগোত্রীয় মশা বাহিত ভাইরাস হল জিকা।



এই রোগের উপসর্গ?
অস্বাভাবিক জ্বর, মাথাব্যথা, চোখ গোলাপি হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তবে উপসর্গ আরও বেশি থাকতেই পারে। গবেষকরা এখনও পর্যন্ত এই রোগের প্রতি খুব একটা ওয়াকিবহাল না থাকার জন্যই সঠিক উপসর্গ বলতে পারছেন না।



প্রতিকার:
ডাক্তার এবং গবেষক কেউই এখনও পর্যন্ত এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কোনও ভ্যাক্সিন ওষুধ বের করতে পারেননি।



তাহলে কীভাবে প্রতিকার পাবেন?
ওষুধ যেহেতু এখনও পর্যন্ত বের হয়নি তাই নিজেকেই মশার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এমনকি যাঁরা খুব বেশি বিদেশ যাত্রা করেন তাঁরা এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত দেশগুলি থেকে দূরে থাকুন। এমনকি রোগে সানস্ক্রিন মেখে রোদ লাগান শরীরে। আর বাইরে বেরনোর সময় বড় প্যান্ট এবং ফুল হাতা জামা পরে বেরন।



জীবাণুতে আক্রান্ত দেশ
বলভিয়া, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে, ভেনেজুয়েলা, আমেরিকার ভার্জিন দ্বীপ ইত্যাদি।

বসন্ত থেকে সাবধান


বসন্ত শুধু ঋতুই নয়, বসন্ত একটা রোগেরও নাম। বসন্ত গিয়ে গ্রীষ্ম শুরু হলেও এখনো রয়ে গেছে বসন্তের আশঙ্কা। একসময় আমাদের দেশে এই রোগের মারাত্মক প্রকোপ দেখেই হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘কোথা ব্রজবালা কোথা বনমালা, কোথা বনমালী হরি! কোথা ছা হন্ত, চিরবসন্ত! আমি বসন্তে মরি।’

সংক্রামক রোগ দেখে বসন্ত রোগীর সেবাযত্নও ছিল দুষ্কর। তবে আধুনিককালে এসে প্রতিষেধক টিকায় এই রোগের প্রকোপ কমেছে। চিকিত্সা বিষয়েও সচেতন হয়েছে মানুষ। বসন্ত রোগ এবং এ রোগে করণীয় সম্পর্কে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক সৈয়দ আফজালুল করিম।



জলবসন্ত ও গুটিবসন্ত
বসন্ত রোগের এই দুটি ধরনেরই প্রাদুর্ভাব ছিল একসময়। ‘চিকেন পক্স’ বা জলবসন্তের প্রকোপ এখনো থাকলেও ‘স্মল পক্স’ বা গুটিবসন্ত এখন আর দেখা যায় না। গত শতকের আশির দশকেই পৃথিবী থেকে গুটিবসন্ত নির্মূল হয়ে গেছে বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চিকেন পক্স বা জলবসন্ত ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। ভ্যারসিলো জস্টার নামের একটি ভাইরাসের কারণে জলবসন্ত হয়। যেকোনো বয়সেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও শিশু ও অল্পবয়সীরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকে।


জলবসন্তের লক্ষণ
শুরুর দিকে শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, মাথাব্যথা করা, গা-হাত-পা ব্যথা করা এমনকি পিঠেও ব্যথা হতে পারে। একটু সর্দি-কাশিও হতে পারে। এরপর জ্বর জ্বর ভাব হবে। এগুলো রোগের পূর্ব লক্ষণ। এরপর শরীরে ঘামাচির মতো কিছু উঠতে দেখা যায়। তারপর সেটা একটু পর বড় হতে থাকে এবং ভেতরে পানি জমতে থাকে। খুব দ্রুতই শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। আর এভাবে জলবসন্ত হয়ে গেলে রোগীর অনেক জ্বর আসবে। শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হবে আর সঙ্গে সর্দি-কাশিও থাকবে।


বসন্ত রোগের সংক্রমণ
বসন্ত সংক্রামক রোগ হওয়ায় কোনো সুস্থ ব্যক্তি বসন্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে এতে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ করার বিষয় হলো জলবসন্ত রোগের সংক্রমণটা মূলত হয় রোগীর দূষিত চামড়া থেকে। জলবসন্তের গুটির ভেতরে পানি জমা থাকে। গুটি শুকিয়ে যেতে থাকলে ওপরের চামড়াটা ঝরে পড়ে। এই কালো হয়ে যাওয়া চামড়ায় জীবাণু থেকে যায় এবং এটা খুবই সংক্রামক। গুটি শুকিয়ে যেতে থাকলে শরীর অনেক চুলকায়। অনেকে তখন এগুলো চুলকিয়ে টেনে তুলে ফেলে। কিন্তু এটা করা একেবারেই ঠিক না। আর শুকনো চামড়াগুলো জমিয়ে পুড়িয়ে ফেলাই ভালো। এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে হলে রোগীকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। তাকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে এবং তার বিছানাপত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। শরীরের ফুসকুড়ি পুরোপুরি শুকানো এবং ঝরে না যাওয়া পর্যন্ত অন্তত দুই থেকে তিন সপ্তাহ রোগীকে এভাবে আলাদা রাখাটাই শ্রেয়। তবে, রোগীর ঘর যেন পরিষ্কার ও আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকে, তা-ও খেয়াল রাখতে হবে।


জলবসন্তের প্রতিষেধক
যদিও চিকেন পক্স বা জলবসন্ত একটা ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ, তার পরও এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এখন বসন্তের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন আছে। শিশুর জন্মের ৪৫ দিন পর থেকে যেকোনো বয়সে এই ভ্যাকসিন নেওয়া যায়। আর যারা ভ্যাকসিন নিয়েছে, তাদের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা নেই। অযথা রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ারও প্রয়োজন নেই। চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এ রোগ ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সাধারণত ভালো হয়ে থাকে।


রোগীকে কী খাওয়াবেন?
এ সময়ে রোগীকে অনেক পুষ্টিকর খাবার দেওয়া প্রয়োজন হয়। তবে খাবারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজি সবকিছুই খাওয়া যাবে। আর শরীরের দুর্বলতা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে রোগীকে বেশি বেশি করে খেতে হবে।


কীভাবে গোসল করবেন?
জলবসন্ত হওয়ার পরও নিয়মিত গোসল করা যায়। এতে কোনো সমস্যা হয় না। তবে গোসল শেষে শরীর ঘষে মোছা যাবে না, আলতো করে মুছে নিতে হবে। স্বাভাবিক পানি দিয়ে গোসল করানো যাবে। আর রোগীর ব্যবহূত পোশাক, বিছানার চাদর, শোবার ঘর অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যেহেতু এ রোগে শরীরে দাগ হয়, তাই এ সময়ে ডাবের পানি খুব উপকারী এবং ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়া এবং গোসল করলেও উপকার পাওয়া যাবে।

গর্ভাবস্থায় কী খাবেন


একজন সন্তানসম্ভবা মায়ের সঠিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভস্থ শিশুর সঠিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং মায়ের যথাযথ পুষ্টির চাহিদা বজায় রাখার জন্য যথাযথ ডায়েট অবশ্যই মেনে চলা উচিত। গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে অর্থাৎ প্রথম এক থেকে দুই মাস অনেক মা-ই ঠিক মতো খেতে পারে না। মাথা ঘুরানো, বমি হওয়া, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। কম খাবার গ্রহণ, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের জন্যই এমনটা হয়। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাবার বৃদ্ধি করলে এই অবস্থার উন্নতি হয়। প্রথম তিন মাস গর্ভবতী মায়ের ক্যালরির চাহিদা ২০০-৩৫০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যা অবশ্য সন্তান সম্ভবা মায়ের বর্তমান ওজনের ওপর নির্ভরশীল। এ সময়টায় এমন খাবার বেছে নেওয়া উচিত যা খুব পুষ্টিকর এবং অল্প পরিমাণ থেকেও অনেক ক্যালরি পাওয়া যায়। যেমন : খিচুড়ি (যা চাল-ডাল-সবজি-মাংস- তেল সবকিছু দিয়ে রান্না করা), দই, চিড়া, কলা, রুটি, মাখন, জ্যাম, খেজুর, পুডিং, দুধ, ফল, মুরগি - সবজির স্যুপ, নুডলস (ডিম বা মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি) ইত্যাদি খাবার। এই ধরনের একটি খাবার থেকে অনেক রকমারি পুষ্টি পাওয়া যায়। বমি বমি ভাব এড়ানোর জন্য শুকনো খাবার খুব উপকারী। যেমন : টোস্ট বিস্কুট, ব্রেড টোস্ট, যেকোনো বিস্কুট, শুকনো হালুয়া, খেজুর, খোরমা ইত্যাদি। এগুলো দেহে শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে। সন্তানসম্ভবা মাকে অনেক পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। কেননা এ সময় পুষ্টির চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পায়, যা সঠিক গর্ভধারণে জরুরি। খাবারে যে বিষয়গুলো থাকতে হয় : ক্যালরি আগেই বলা হয়েছে, এর চাহিদা মায়ের ওজনের ওপর অনেকটা নির্ভর করে, এই সময় বাড়তি ক্যালরির চাহিদা প্রোটিন ও শ্বেতসার জাতীয় খাবার থেকে পূরণ করতে হয়। প্রোটিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। মায়ের পুষ্টি চাহিদা অনুযায়ী এ পরিমাণ ১৫-২০ গ্রাম বৃদ্ধি পায় গর্ভাবস্থায় । তাই প্রোটিনের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দুধ, দই, ছানা, ডিম, মাছ ও মুরগি থেকে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মাছ খুব ভালো প্রোটিন যা থেকে অত্যাবশকীয় ফ্যাটি এসিডও পাওয়া যায়। যা গর্ভস্থ্য শিশুর চোখ, হার্ট ও মস্তিস্কের গঠনে অনেক জরুরি। এই সময় মাকে ঘন ডাল বা পাঁচমিশালী ডাল খেতে বলা হয়। মুরগি দৈনিক খাওয়া যাবে এবং দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। যা শুধু প্রোটিন নয় ক্যালসিয়ামের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনের চাহিদা মোটামুটি বৃদ্ধি পায়। ফলিক এসিডের সাপ্লিমেন্ট যদিও ডাক্তারের পরামর্শে চলতে থাকে তার পরও ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণে টক ফল, টকমিষ্টি ফল, রঙিন ফল ও শাক-সবজি অবশ্যই খেতে হবে। তবে শাক রাতে না খাওয়াই ভলো। উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও নিচের বিষয়গুলো একজন সন্তানসম্ভবা মায়ের মনে রাখা ভালো।

* গর্ভবতী মাকে অল্প খাবার বাড়ে বাড়ে খেতে হবে।

* বাইরের কেনা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

* পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। যা তার সঠিক বিপাকে সাহায্য করবে।

* বাসি বা পঁচা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

* খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে গিলে খেতে হবে।

* দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা যাবে না।

* খাবার আনন্দের সাথে উপভোগ করে খেতে হবে।

* গর্ভাবস্থায় সঠিক ওজন বৃদ্ধির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

মেয়েদের ঋতুচক্র বা মাসিক


প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। এর তিনটি অংশ, ১মটি চারদিন স্থায়ী হয় (৪-৭ দিন) এবং একে মিনস্ট্রাল ফেজ, ২য়টি ১০দিন (৮-১০ দিন) একে প্রলিফারেটিভ ফেজ এবং ৩য়টি ১৪ দিন (১০-১৪ দিন) স্থায়ী হয় একে সেক্রেটরি ফেজ বলা হয়। মিনস্ট্রাল ফেজ এই যোনি পথে রক্ত বের হয়। ৪-৭ দিন স্থায়ী এই রক্তপাতে ভেঙ্গে যাওয়া রক্তকনিকা ছাড়াও এর সাথে শ্বেত কনিকা, জরায়ুমুখের মিউকাস, জরায়ুর নিঃসৃত আবরনি, ব্যাকটেরিয়া, প্লাজমিন, প্রস্টাগ্লানডিন এবং অনিষিক্ত ডিম্বানু থেকে থাকে। ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের যৌথ ক্রিয়ার এই পর্বটি ঘটে। প্রলিফারেটিভ ফেজ ৮-১০ দিন স্থায়ী হতে পারে। শুধু ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে এটি হয়। এই সময় জরায়ু নিষিক্ত ডিম্বানুকে গ্রহন করার জন্য প্রস্ততি নেয়। সেক্রেটরি ফেজ টা সবচেয়ে দীর্ঘ, প্রায় ১০ থেকে ১৪ দিন। একে প্রজেস্টেরন বা লুটিয়াল ফেজ ও বলা হয়। এটিও ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন উভয় হরমোনের যৌথ কারনে হয়। এই সময় নিষিক্ত ডিম্বানুর বৃদ্ধির জন্য জরায়ু সর্বোচ্চ প্রস্ততি নিয়ে থাকে। ডিম্বাশয়ের কোনো ডিম্বানু শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত না হলে জরায়ু আবার মিনস্ট্রাল ফেজে চলে যায়। এভাবেই পূর্ন বয়স্ক মেয়েদের ঋতুচক্র চলতে থাকে।

সন্তানের ওপর মা-বাবার রক্তের গ্রুপের প্রভাব


সন্তানের ওপর মা-বাবার রক্তের গ্রুপের প্রভাব মায়ের রক্তের গ্রুপ এবং তাঁর সন্তানের রক্তের গ্রুপ দুটোর সমীকরণের ফলাফল গর্ভস্থ ভ্রূণ বা নবজাতকের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ধরা যাক, গর্ভধারিণী মায়ের রক্তের গ্রুপ আরএইচ নেগেটিভ এবং তাঁর স্বামীর রক্তের গ্রুপ আরএইচ পজেটিভ। এই যোগসূত্রে আরএইচ পজেটিভ শিশুর জন্ম হতে পারে। এই মা যদি আগে থেকে আরএইচ রক্তকোষ দ্বারা সংবেদনশীল থাকেন, তাহলে গর্ভস্থ আরএইচ পজেটিভ বাচ্চা আরএইচ হিমোলাইটিক অসুখে কোনো না কোনো মাত্রায় আক্রান্ত হবে। আর মা যদি ডেলিভারির পরে প্রতিক্রিয়ার আওতায় আসেন, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সব আরএইচ পজেটিভ গর্ভস্থ শিশু ঝুঁকিতে থাকবে।

# আরএইচ(রিসাস) ব্লাড গ্রুপ ও-এ-বি ব্লাড সিস্টেমের সাথে কারো শরীরে রক্ত সঞ্চালন কিংবা নবজাতক শিশুতে মারাত্নক হেমোলাইটিক ডিজিস তৈরিতে আরএইচ ব্লাড গ্রুপ খুব গুরুত্বপূর্ণ।

# এবিও রক্তের গ্রুপ সিস্টেম

• একদা যুদ্ধক্ষেত্রের অনুমান-পর্যবেক্ষণ—সিদ্ধ তথ্য গবেষণায় সিদ্ধি লাভ করে জানা গেছে, মূল রক্তের গ্রুপ হলো চারটি: এ, বি, এবি এবং ও।

• ও রক্তের গ্রুপ যেকোনো রক্তের শ্রেণীতে মেশালে তা জমাট বাঁধে না। তাই একে ইউনিভার্সেল ডোনার বলা হয়।

• এ গ্রুপের রক্ত এ অথবা এবির সঙ্গে মিশতে পারে যদি তা বি বা ও-এর সঙ্গে মেশে, তবে জমাট বাঁধবে।

• একইভাবে বি রক্তকোষ শ্রেণী নিরাপদে বি বা এবির সঙ্গে মেশানো যায়, কখনো ও বা এ-এর সঙ্গে নয়।

• এবি রক্তের শ্রেণী শুধু এবির সঙ্গে মেশে আর কারও সঙ্গে নয়।

• তবে প্রধান এই চার রক্তের গ্রুপ অ্যান্টিজেনের বাইরেও ক্যাপিটাল সি—স্মল সি, ডি, বড় ই-ছোট ই, বড় কে = ছোট কে, এম, এন এবং আরও অনেক জট পাকানো রক্তশ্রেণীর অস্তিত্ব রয়েছে।

# আরএইচ ডি রক্তের শ্রেণীর গরমিল

• ভাগ্য ভালো, সব রক্তশ্রেণী দুর্যোগ তৈরি করে না। কিন্তু ডি অ্যান্টিজেনের গরমিলের চিত্র খুব ভয়াবহ হতে পারে।

• তবে মাতা-পিতা দুজনই যদি ডি নেগেটিভ হন, বাচ্চা কখনো ডি পজেটিভ হবে না। সুতরাং বিপদমুক্ত।

• কিন্তু ডি নেগেটিভ মায়ের সঙ্গে ডি পজেটিভ স্বামীর যোগসূত্রে বাচ্চা ডি পজেটিভ, ডি নেগেটিভ দুটোর যেকোনো একটা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডি পজেটিভ বেবি হলেই কেবল বিপদ।

• গর্ভস্থ ভ্রূণ ডি পজেটিভ হলেও প্রথম বাচ্চা এতে আক্রান্ত হয় না। প্রথম বাচ্চা জন্মদানের সময় আরএইচ পজেটিভ রক্তকোষজাত অ্যান্টিডি-অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে, যা পরবর্তী সময়ে গর্ভস্থ শিশু থেকে বা রক্ত সরবরাহতন্ত্রে প্রাপ্ত যেকোনো ডি পজেটিভ রক্তকোষ পেলে সমূহ সংহারে উদ্যোগী হয়। এভাবে আরএইচ নেগেটিভ মা তাঁর ডি-অ্যান্টিজেন নিয়ে কতটা সংবেদনশীল হয়েছেন, তার মাত্রা মায়ের গর্ভকালীন সিরাম ইনভাইরেক্ট কুম্বসটেস্ট দ্বারা নির্ণয় করা যায়। প্রতিক্রিয়ার মাত্রা যত বেশি হবে, গর্ভস্থ ভ্রূণ তত বেশি ক্ষতির শিকার হবে; যার সর্বাধিক নমুনা হচ্ছে হাইড্রপস ফিটালিস

মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা – কী করণীয়?


মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা আমাদের দেশে একটা কমন ব্যাপার। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এই ব্যথা এড়িয়ে চলা যায়। কোন বোতলে গরম পানি ভরে বা কাপড় গরম করে তলপেটে ২০/২৫ মিনিট ছ্যাক লাগাতে হবে। এটা সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন করে করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে মাসিকের সময় ব্যাথা কমে যাবে। এছাড়া আরেকটা পদ্ধতি আছে- সিজ বাথ। ৩ মিনিট গরম পানিতে কোমর ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। পরের ২/১ মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে। এভাবে ২০/২৫ মিনিট সিজ বাথ নিতে হবে। এটাও সপ্তাহে টানা ৩/৪দিন নিতে হবে। শুধু পানি বা পানিতে কিছু লবন, বেকিং সোডা বা ভিনেগারও ব্যবহার করা যায়। আরেকটা পদ্ধতি আছে- কেজেল ব্যায়াম। এটাও খুব উপকারী। এগুলো করলে যোনি মধ্যে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে আবার ঠিকঠাক হয়ে যাবে, ব্যাথাও কমে যাবে। আমাদের দেশের অনেক মেয়েদেরই শারীরিক ফিটনেস ভালো নয় বলে এরকম সমস্যা বেশি হয়। একে একে এই পদ্ধতিগুলোর কথা সবাইকে বলে দিন। একজন আরেকজনকে বলে দিন। এই অবাঞ্চিত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকুক আমাদের নারী সমাজ।

শীতে ঠোঁট ফাটা এড়াতে সহজ কিছু উপায়


শীত আসি আসি করছে। এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়ে যান। মাত্রাতিরিক্ত ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অনেকের ঠোঁট ফেটেও যায়, যা খুবই অস্বস্তিকর।শীতের সময়ে ঠোট ফাটা সমস্যা খুব সহজ কিছু উপায়ে এড়াতে পারেন।

১. যাদের ঠোঁট ভীষণ শুকিয়ে যায় তাদের একটি বদ অভ্যাস তৈরি হয়। যা হল কিছুক্ষণ পর পর জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানো। অনেকে ভাবেন এটি করলে ঠোঁট শুকোবে না। কিন্তু এতে ঠোঁট আরো বেশি শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই এই কাজটি থেকে বিরত থাকুন।

২. ঠোটে লিপজেল বা ভেসিলিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ডকে প্রাধান্য দিন। অনেকেই যে কোনো ব্র্যান্ডের লিপজেল বা ভেসিলিন ব্যবহার করে থাকেন। মানহীন পণ্য ব্যবহারে ঠোটের ক্ষতির পাশাপাশি ঠোঁটের শুষ্কতার ভাব বেশ বেড়ে যায়। এসপিএফ সমৃদ্ধ লিপজেল ব্যবহার করুন।

৩. প্রাকৃতিক উপায়ে ঠোঁটের শুকিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে জল খান। এতে করে ঠোঁটের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে আর আপনি ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি পাবেন।

৪. মেয়েরা ঠোঁটে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন। এতে করে ঠোঁটের অনেক ক্ষতি হয়। ঠোঁটের ত্বকের ক্ষেত্রে যদি ভাল প্রসাধনী ব্যবহার না করেন তবে ঠোঁট শুকিয়ে গিয়ে তা ফেটে যায় এবং আরো অনেক বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভাল কোনো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করুন।

৫. ফেসওয়াশ ব্যবহার করার সময় একটু সাবধানে ব্যবহার করুন যাতে ঠোঁটে না লেগে যায়। কারণ এতে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।

বন্ধ্যাত্বের কারণ ও চিকিৎসা


একজন পূর্ণাঙ্গ রমণীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয়। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন বয়স ধরা হলেও ৩৫ বছরের পর থেকে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজনন বয়সের শেষ দিকে ডিম্বাণু নিঃসরণ প্রতি মাসে না-ও হতে পারে। প্রজনন বয়সের মধ্যে প্রতি মাসেই একজন মহিলার ২৮ থেকে ৩৫ দিন ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। ঋতুস্রাব মহিলাদের ডিম্বাণু নিঃসরণের একটি প্রমাণ। যদিও কখনো কখনো ডিম্বাণু নিঃসরণ ছাড়াও ঋতুস্রাব হতে পারে। ২৮-৩০ দিনের ব্যবধানে যাদের ঋতুস্রাব হয় তাদের সাধারণত ১৩তম, ১৪তম ও ১৫তম দিনগুলোর কোনো একসময় ডিম্বাণু নির্গত হয়। এ সময়কে বলে প্রজনন সময়। এ সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মিলন হলে স্বামীর শুক্রাণু ও স্ত্রীর ডিম্বাণু ডিম্বনালির প্রায় শেষ প্রান্তে, অম্বুলা নামক জায়গায় মিলিত হলে নিষেক সংঘটিত হয়। নিষেকের ফলে যেটি তৈরি হয় সেটিকে ভ্রূণ বলে। এ ভ্রূণ চক্রবৃদ্ধি হারে বিভক্ত হতে থাকে এবং ডিম্বনালি অতিক্রম করে নিষেকের সপ্তম দিন জরায়ুতে প্রবেশ করে এবং জরায়ুগাত্রে দৃঢ় হয়ে স্থাপিত হয়। পরে এখানেই ধীরে ধীরে বড় হয়ে ২৮০ দিন পরে পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু কোনো দম্পতি এক বছর জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছাড়া একই সাথে বসবাস ও মিলনের পরও যদি সন্তান ধারণ না করে থাকেন, তাকে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব বলে। এটি হতে পারে প্রাথমিক যাদের কখনোই গর্ভসঞ্চারণ হয়নি অথবা মাধ্যমিক যাদের আগে গর্ভসঞ্চারণের পর এখন আর গর্ভসঞ্চারণ হচ্ছে না। সাধারণত ৮০ শতাংশ দম্পতির চেষ্টার প্রথম বছরের মধ্যেই সন্তান হয়ে থাকে। ১০ শতাংশ দম্পতির দ্বিতীয় বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। বাকি ১০ শতাংশের কোনো না কোনো কারণে সন্তান ধারণে অসুবিধা হয়ে থাকে এবং তাদের জন্যই সেপশাল চিকিৎসা দরকার। এই না হওয়ার পেছনে স্বামী-স্ত্রী দুজনের যে-কেউই কারণ হতে পারেন। আবার সমিমলিত অসুবিধার কারণেও হতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে শুধু স্বামী দায়ী, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে শুধু স্ত্রী দায়ী এবং ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই দায়ী।

বন্ধ্যাত্বের কারণ

• সন্তান ধারণে ব্যর্থতার কারণ অগণিত। কারণ যা-ই হোক, প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ চিকিৎসা বিদ্যমান। তবে কারণগুলো নিরূপণের পদ্ধতি ও চিকিৎসাপদ্ধতি সহজতর ও স্বল্প ব্যয়সাপেক্ষ থেকে শুরু করে জটিলতম ও বহুল ব্যয়সাপেক্ষ পর্যন্ত হতে পারে।

• ডিম্বাণু তৈরি হওয়া (অনেক কারণে ডিম্বাণু তৈরি হয় না)।

• ডিম্বনালি বন্ধ হয়ে গেলে কিংবা কার্যক্রম না থাকলে।

• এন্ডোমেট্রিওসিস নামক ডিজিজের ফলে।

• জরায়ুতে টিউমার হলে।

• জরায়ুগ্রীবার শুক্রাণুর প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ভাব থাকলে।

• পুরুষদের মধ্যে মুখ্য কারণ হলো

• শুক্রাণুর পরিমাণ কম থাকলে।

• শুক্রাণুর আকৃতি স্বাভাবিক না থাকলে।

• শুক্রাণুর চলাচল স্বাভাবিক না থাকলে।

• শুক্রাণু অনুপস্থিত থাকলে।

• মিলনে স্বামীর অক্ষমতা থাকলে।

• এ ছাড়া সমিমলিত সমস্যার কারণে না হতে পারে এবং কখনো কখনো উভয়ের কোনো কারণ ছাড়াই সন্তান না হতে পারে। যখন কোনো নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়া যায়, তখন তাকে ব্যাখ্যাহীন বন্ধ্যাত্ব বলে।

চিকিৎসা

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মানবজাতির স্বাভাবিক প্রজননের হার অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে অনেক কম। জনসংখ্যা বিসেফারণের দেশে বাস করে এ কথা অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি এটিই যে ১০০ জন দম্পতি যাদের কোথাও কোনো সমস্যা নেই তারা তাদের প্রজনন সময় একত্রে বসবাস করলেও মাসে গর্ভসঞ্চার হবে মাত্র ২০ জনের। স্ত্রীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ হার আরো কমতে থাকে। সন্তান ধারণে ব্যর্থ হলে স্বামী-স্ত্রীর কোথাও না কোথাও সমস্যা বিদ্যমান থাকা স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা করে প্রজননের হার স্বাভাবিক হারের চেয়ে কম বই বেশি করা দুরূহ ব্যাপার। আর সে জন্যই বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা হলো ধাপে ধাপে চিকিৎসা। বিভিন্ন ধাপের কোনো এক ধাপে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। এই ধাপে ধাপে চিকিৎসার জন্যই চিকিৎসার সময় দীর্ঘায়িত হয়। অন্য কোনো অসুস্থতার মতো চট করে এটির সমাধান দেখা যায় না। তবে অবশ্যই স্ত্রীর বয়সের দিকে এবং বন্ধ্যাত্বের কারণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।



বন্ধ্যাত্বের স্বপ্ন পূরণে টেস্টটিউব বেবি

বর্তমানে অনেক দম্পতি টেস্টটিউব বেবির মাধ্যমে সন্তান গ্রহণ করছেন। টেস্টটিউব পদ্ধতিতে দুটি ভাগ আছে। একটি আইভিএফ (IVF), অন্যটি ইকসি (ICSI)। আইভিএফে স্বামী-স্ত্রীর শুক্রাণু ও ডিম্বাণুকে প্রকৃতিগত পদ্ধতিকে বাদ দিয়ে একটি গ্লাসের পাত্রে মিলিত হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ পাত্রটি একটি বিশেষ ইনকিউবেটরে রাখা হয় এবং সেখানেই নিষেক হয়ে ভ্রূণের সৃষ্টি হয়। এ পদ্ধতিতে একাধিক ডিম্বাণু তৈরি করা সম্ভব বলে একাধিক ভ্রূণ তৈরি হয়ে থাকে। তা থেকে সবচেয়ে ভালো মানসম্পন্ন তিনটি ভ্রূণকে স্ত্রীর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়, যা পরে স্বাভাবিক গর্ভসঞ্চালনের মতোই বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ শিশু হয়। পদ্ধতিটির প্রসারিত নাম ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। ভিট্রো একটি ল্যাটিন শব্দ যার ইংরেজি পরিভাষা গ্লাস। এই গ্লাসের পাত্রে নিষেক হয় বলেই এর নামকরণ হয়েছে টেস্টটিউব বেবি। ইকসি টেস্টটিউব পদ্ধতির আর একটি ভাগ। এ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু সংগ্রহের পর একটি ডিম্বাণুর ভেতরে একটি শুক্রাণুকে ইনজেক্ট করে দেয়া হয়।

আইভিএফে একটি পাত্রে একটি ডিম্বাণুর সাথে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ শুক্রাণু ছেড়ে দেয়া হয়। তা থেকে একটি শুক্রাণু নিজ ক্ষমতাবলে ডিম্বাণুর ভেতরে প্রবেশ করে। যখন শুক্রাণুর পরিমাণ অতি মাত্রায় কম থাকে কিংবা মোটেই থাকে না, তখন ইকসি করা হয়। বীর্যে শুক্রাণু অনুপস্থিত থাকলে অণ্ডকোষ থেকে ছোট্ট অপারেশনের মাধ্যমে শুক্রাণু পরিপক্ব কিংবা অপরিপক্ব পর্যায়ে বের করে একটি বিশেষ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে ডিম্বাণুর ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। পরে ইনকিউবেটরে রাখা হয় এবং বাকি পর্যায় আইভিএফের মতোই।

পেটে চর্বি জমা


পেটে চর্বি জমা সব বয়সের নারীদের জন্যই একটি প্রধান সমস্যা

আসুন জেনে নেয়া যাক এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়ঃ

১. এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবু ও একটু লবণ দিয়ে শরবত তৈরি করে প্রতিদিন সকালে খাবেন।

২.সকালে দুই বা তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেতে হবে। লেবুর শরবত পান করার পরই এটি খেয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এ পদ্ধতিটি আপনার শরীরের ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটি দ্বিগুণ গতিতে করবে। একই সঙ্গে আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন হবে মসৃণ গতিতে।

৩. সকালের নাশতায় অন্য খাবারের পরিমাণটা কমিয়ে সেখানে স্থান করে দিতে হবে ফলের। প্রতিদিন সকালে এক বাটি ফল খেলে পেটে চর্বি জমার হাত থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে।

৪. পেটের চর্বি থেকে মুক্তি পেতে হলে পানির সঙ্গে করতে হবে বন্ধুত্ব। কেননা পানি আপনার শরীরের পরিপাক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর সব কিছু বের করে দিতে সাহায্য করে।

৫. সাদা চালের ভাত থেকে দূরে থাকুন। এর পরিবর্তে আটার তৈরি খাবার খেতে হবে।

৬. দারুচিনি, আদা, কাঁচা মরিচ দিয়ে রান্না করুন আপনার খাবার। এগুলো শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে রাখতে সহায়তা করে।

৭. চিনিজাতীয় খাবার শরীরের বিভিন্ন অংশে চর্বি ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে পেট ও ঊরুতে। পেটের চর্বি থেকে রেহাই পেতে হলে চিনি এবং চিনিজাতীয় খাবারের সঙ্গে শত্রুতা ছাড়া উপায় নেই।

হার্ট অ্যাটাক হলে কী করবেন


হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কী কী?

১. বুকে অতুলনীয় তীব্র ব্যথা,

২. বুকে চাপ/যন্ত্রণা/ভারী লাগা,

৩. বিষম খাওয়া,

৪. দম বন্ধ হওয়া/শ্বাস কষ্ট,

৫. প্রচুর ঘাম,

৬. বমি বা বমির ভাব,

৭. অনাগত মৃত্যুর ভয়।



হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা

চিকিৎসার জন্য রোগীকে দ্রুত নিকটস্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবে। সন্নিকটে হৃদরোগের চিকিৎসা সুবিধা সংবলিত হাসপাতাল থাকলে সেখানে যাওয়াই উত্তম। হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ধারাবাহিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

হাসপাতালে পৌঁছার পূর্বে বাসা/কর্মস্থল/রাস্তায় যা করতে হবে:

১. পর্যাপ্ত আলো বাতাস নিশ্চিতকরণ।

২. জিহ্বার নিচে দুই চাপ নাইট্রেট ¯েপ্র বা একটি নাইট্রেট ট্যাবলেট দিতে হবে।

৩. দ্রুত হাসাপাতালে পৌঁছার ব্যবস্থা।


শেষ কথা

আদর্শ জীবনযাপন, রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা সঠিক মাত্রায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন, আলগা লবণ পরিহার, তেল/চর্বি/মিষ্টি কম খাওয়া, শাক-সবজি বেশি খাওয়া, উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ ও দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপনের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে দূরে থাকতে হবে। হার্ট অ্যাটাক হলে নির্ভীক চিত্তে সময়মতো যথাসাধ্য চিকিৎসা করাতে হবে। মানুষের হার্ট একটি, তাই হার্টের প্রতি যতœশীল হতে হবে।

ব্লাড ক্যান্সার


ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ :-

ক. লিউকেমিয়া (শ্বেতকণিকা থেকে সৃষ্ট ব্লাড ক্যান্সার)

• একিউট মাইলোবস্নাস্টিক লিউকেমিয়া

• একিউট লিমফোবস্নাস্টিক লিউকেমিয়া

• ক্রনিক লিমফোসাইটিক লিউকেমিয়া

খ. লিমফোমা : (লসিকা গ্রন্থি থেকে সৃষ্ট এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার)

• হজকিন ও নন হজকিন লিমফোমা,

• লিমফোবস্নাস্টিক লিমফোমা ইত্যাদি।

গ. মাইলোমা ও প্লাজমা সেল লিউকেমিয়া: প্লাজমা সেল থেকে সৃষ্ট ব্লাড ক্যান্সার।

ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ : -

রক্ত কণিকাগুলো সঠিক মাত্রায় উৎপন্ন না হলে রক্তশূন্যতা, রক্তক্ষরণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে রোগীর মৃত্যু ঘনিয়ে আসে।

রক্তশূন্যতাজনিত লক্ষণ : -

1. যেমন-অবসাদ ও দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় ইত্যাদি।

2. শরীরে ইনফেকশনের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ফলে লাগাতার জ্বর থাকতে পারে।

3. রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা দেখা দেয়, যেমন নাক, দাঁতের মাড়ি, চোখ ও ত্বকে রক্তক্ষরণ এবং মাসিকের সময় বেশি রক্ত যাওয়া প্রভৃতি হতে পারে।

4. শরীর বা হাড়ে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা।

5. লিভার ও স্পিলিন বড় হয়ে যাওয়া।

6. গলায়, বগলে বা অন্যত্র লিম্ফনোড বড় হওয়া।

ব্লাড ক্যান্সারের কারণগুলো :-

যেসব ফ্যাক্টর ব্লাড ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ায় তা হলো জেনেটিক, পরিবেশ ও পেশাগত ফ্যাক্টর।

• তেজস্কিয়তা: বোমা বিস্ফোরিত হওয়া।

• রাসায়নিক পদার্থ: বেনজিন, পেট্রোল ও প্লাস্টিক কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ। • জেনেটিক ডিজ অর্ডার: এনিমিয়া, ডাউন সিনড্রোম। অনকোজিনের আধিক্য অথবা টিউমার সাপ্রেসর জিনের অক্ষমতায় রক্তকণিকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে।

প্রতিরোধের উপায় :

• যেসব রোগীকে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি একসঙ্গে দেয়া হয় তাদের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সারের প্রবণতা প্রায় ২০ গুণ বেড়ে যায়।

• তেজস্ক্রিয়তা পরিহার করতে হবে।

• রাসায়নিক দ্রব্যাদির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।

• এক্স-রে বিভাগে ও নিউক্লিয়ার বিভাগের কাজ করার সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

• ধূমপান ও তামাক জর্দা পরিহার করতে হবে।

ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি :-

আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রতি লাখে ৪ থেকে ৫ জন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। সে হিসাব অনুযায়ী ১৫ কোটি মানুষের মধ্যে প্রতিবছর ৬-৭ হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছেন।

অধিক ঝুঁকির কারণ :-

• কৃষি কাজে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা।

• কলকারখানায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা।

• পরিবেশ দূষণ।

ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয় :-

• ব্লাড ফিল্ম পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।

• বোনাম্যারো ও ট্রিফাইন বায়োপসি পরীক্ষা: কোমরের হাড় থেকে অস্থিমজ্জা সংগ্রহ করে পরীক্ষা।

• লিমফোনোড এফএনএসি ও বায়োপসি পরীক্ষা: লসিকা গ্রন্থি থেকে টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা।

চোখ ওঠা ও তার চিকিৎসা


চোখ ওঠা নিয়ে আমরা কথা বলেছি ঢাকার বারডেম বা ডায়াবেটিক হাসাপাতালের চক্ষু বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ডা. হজরত আলীর সাথে । চোখ ওঠা বলতে সাধারণ ভাবে চোখে চোখ লাল হওয়া, চোখ খচখচ করা, চোখ সামান্য ব্যথা করা, চোখে পিচুটি জমা এবং রোদে বা আলোতে তাকাতে কষ্ট হওয়া ও পানি পড়াকে বোঝোনো হয়। বিশেষ করে রাতে ঘুমের পর সকালে উঠলে চোখের কোণে পিচুটি বা ময়লা জমতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। সর্দি ও চোখের চুলকানি একসঙ্গেও হতে পারে । এই রোগকে সাধারণ ভাবে চিকিৎসকরা কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার প্রদাহ বলে থাকেন । চোখের কালো মণির চারদিকে যে সাদা অংশ দেখা যায়, এর আবরণকে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কনজাংটিভা বলেন । চোখ উঠলে এই সাদা অংশ লাল হয়ে যায় এবং এখানে প্রদাহ বা জ্বালা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয় । সাধারণ ভাবে এ রোগটি ঋতু পরিবর্তনের সময় দেখা দেয় । অর্থাৎ শীত শেষে গরম যখন পড়তে থাকে সে সময় এই রোগ দেখা দেয় । একই সাথে এ সময় অন্যান্য ভাইরাস ঘটিত রোগ যেমন সর্দি-কাশি বা ঠান্ড জ্বর দেখা দেয়। সাধারণ ভাবে ভাইরাসের কারণেই চোখ ওঠার মতো রোগ দেখা দেয় । কিন্তু ভাইরাসই চোখ ওঠার একমাত্র কারণ নয় । ব্যাপক হারে বা মহামারী আকারে যে চোখ ওঠা দেখা দেয় তা এডিনো নামের এক জাতের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। ভাইরাসের কারণে যে চোখ ওঠা দেখা দেয় তা প্রচন্ড ভাবে সংক্রামক হয়ে থাকে । স্কুল কলেজ থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে । ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় কারো যদি ভাইরাসঘটিত চোখ ওঠা দেখা দেয় তা হলে সেখানে এই রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করতে থাকে । এ ছাড়া রোগীর ব্যবহৃত গামছা, তোয়ালে যদি সুস্থ কেউ ব্যবহার করেন তবে তারও এই রোগ হতে পারে । রোগীর সাথে একত্রে থাকার কারণে চোখ ওঠা হতে পারে। বাতাসের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার ঘটে। তবে সব চোখ ওঠাই কিন্তু ভাইরাসের কারণে হয় না। কোনো কোনো চোখ ওঠা ব্যাকটেরিয়ার কারণেও হয়। এবার স্বাভাবিক ভাবেই যে প্রশ্নটি সবার মনে উকি দেবে তা হলো, চোখ ওঠাটি কি ভাইরাসের কারণে হয়েছে না ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়েছে তা কি আমার আপনার মতো সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন? হ্যা ডা. হজরত আলী এমন এক প্রশ্নের জবাবে আমাদের জানিয়েছেন, ভাইরাসঘটিত চোখ ওঠার সাথে জ্বর সর্দি, কান বা গলা ব্যথার মতো উপসর্গ থাকতে পারে । চোখ লাল হবে এবং চোখে মনে হবে বালু জাতীয় কিছু পড়েছে বা চোখ কচকচানি হবে । এ জাতীয় চোখ ওঠার কারণে চোখে পিচুটি বা ময়লা প্রায় জমেই না। কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার কারণে যারা চোখ ওঠার মতো রোগে আক্রান্ত হন তাদের জ্বর সর্দি, কান বা গলা ব্যাথা থাকে না । তবে ব্যাকটেরিয়ার কারণে যাদের চোখ ওঠে তাদের চোখ বেশি লাল হবে । তাদের চোখে পিচুটি বা ময়লা ব্যাপক ভাবে জমবে বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় চোখ আটকে থাকবে। ময়লা জমার কারণে চোখের পাতা খুলতে কষ্ট হবে । তবে চোখ উঠলে চোখ লাল হবে কিন্তু চোখে ব্যাথা হবে না বা চোখে ঝাপসাও দেখা যাবে না । যদি চোখ ওঠার সাথে সাথে এ ধরণের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় তা হলে রোগীকে সর্তক হতে হবে । কারণ তখন ধরে নিতে হবে গ্লুকোমা বা আইরাইটিস নামের যে কোনো কারণে এই ধরণের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যেতে মোটেও বিলম্ব করা ঠিক হবে না । এ ছাড়া চোখ উঠলে চোখ থেকে যে পানি বের হবে তা একটু আঠালো হতে পারে । চোখের পাতা ফুলা থাকবে এবং চোখে বালু জাতীয় জিনিস পড়লে যে ধরণের খচ খচানি লাগে তা অনুভূত হতে পারে। চোখ ওঠা প্রথমে এক চোখে দেখা দিতে পারে। পরে তা অন্য চোখে হতে পারে। বা কখনো কখনো একত্রে দুই চোখেও হতে পারে । ভাইরাস জনিত চোখ ওঠার জন্য সাধারণ ভাবে তেমন কোনো ওষুধের দরকার পড়ে না । কারণ এ জাতীয় চোখ ওঠা সাতদিনের মধ্যেই ভাল হয়ে যায় । তারপরও চিকিৎসক কখনো কখনো এ জাতীয় চোখ ওঠার জন্য এন্টিবায়োটিক ড্রপ দিয়ে থাকেন । এটা দেয়া হয় সর্তকতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে । ভাইরাস জনিত চোখের রোগের ফলে অন্য কোনো সংক্রমণ যেনো হামলা করতে না পারে সে জন্যেই এই এন্টি বায়োটিক প্রদান করা হয় ।

টিউমার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি


টিউমার তিন প্রকার :-

1. হিস্টোমা বা কানেকটিভ টিস্যু টিউমার,

2. সাইটোমা এবং

3. টেরাটোমা বা মিক্সড সেল টিউমার।

হিস্টোমা টিউমার আবার দুই প্রকার :-

1. বিনাইন ও

2. ম্যালিগন্যান্ট।

# বিনাইন টিউমার :- এ জাতীয় টিউমার তুলতুলে নরম হয় এবং শক্ত হয় না। খুব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। এর কোনো আবরণ থাকে না। এর উপরের চর্ম আলাদা পৃথক মনে হয়। এ টিউমারের সংলগ্ন গ্রন্থিসমূহ আক্রান্ত হয় না। চাপ দিলে এতে কোনো যন্ত্রণা অনুভূত হয় না।

# ম্যালিগন্যান্ট টিউমার :- এটা নিরেট বা শক্ত হয়। এটা খুব দ্রুত বড় হয়। এতে আবরণ থাকে। এটার উপরের চর্ম আলাদা পৃথক মনে হয় না। এ টিউমার সংলগ্ন গ্রন্থিসমূহ আক্রান্ত হয়। চাপ দিলে এতে যন্ত্রণা অনুভূত হয়। এতে আঘাত করলে বা অস্ত্রোপচার করলে ক্ষতি হয়। অস্ত্রোপচার করলে পরে প্রায়ই ক্যান্সার হতে দেখা যায়।

শরীরের বিভিন্ন স্থানে টিউমার বিভিন্ন নামে পরিচিত :-

1. নাক, জরায়ু প্রভৃতি শৈ্লষ্মিক ঝিলি্লর টিউমারের নাম প্যাপিলোমা,

2. জরায়ু, পাকস্থলী প্রভৃতি স্থানের মাংসপেশির টিউমারের নাম মাইওমা,

3. চর্মের টিউমারের নাম এপিথেলিওমা,

4. পিঠ, কাঁধ প্রভৃতি স্থানে ফ্যাটিটিস্যু টিউমারের নাম লিপোমা,

5. বোনের কার্টিলেজের টিউমারের নাম কনড্রমা,

6. মাথার খুলি, মুখম-ল, নাসিকা গহ্বর প্রভৃতি স্থানে হাড়ের অস্থি টিউমারের নাম অস্টিওমা,

7. মস্তিষ্ক কোষের টিউমারের নাম গ্লাইওমা,

8. মস্তিষ্ক, লিভার প্রভৃতি স্থানে রক্ত নালিকার টিউমারের নাম হেমান জিওমা,

9. ঘাড়, জিহ্বা, বগল প্রভৃতি স্থানের লসিকা নালির টিউমারের নাম লিমফ্যানজিওমা।

10.সাধারণত কম বয়সে সার্কোমা টিউমার দেখা দেয়। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর কার্সিনোমা টিউমার দেখা দেয়।

টিউমারের কারণ :-

• যে সব মহিলা ডিঅ্যান্ডসি বা এমআর করে বা কোনো গাছ-গাছড়া দিয়ে ভ্রূণ নষ্ট করে বা প্রসবকালে যেসব মহিলার প্রচ- কষ্ট হয় বা যে সব মহিলা ঘন ঘন সন্তান প্রসব করে বা যে সব মহিলার অতি অল্প বয়সে বিয়ে হয় সেই সব মহিলার জরায়ুতে আঘাত হেতু, জরায়ু, জরায়ু মুখ, ডিম্বকোষ, স্তন গ্রন্থিতে টিউমার দেখা দিতে পারে। সাধারণত মহিলাদের উপরোক্ত কারণ থেকে নিবৃত থাকা বাঞ্ছনীয়।

• পুরুষদের অ-কোষে কোনো রকম লাগলে অ-কোষ ফুলে শক্ত হয়ে টিউমার দেখা দেয়

• যারা কলকারখানায় চিমনি পরিষ্কার করে তাদের বিভিন্ন স্থানে টিউমার দেখা দেয়

• কোনো কোনো পরিবারে বংশগতভাবে টিউমার দেখা দিতে পারে

• আঘাত, ঘর্ষণ, পেষণ বা উদ্দীপনার ফলে স্থান বিশেষ অ্যাডিনোমা সৃষ্টি হতে পারে

• পুরনো পোড়া ঘায়ে অনেক টিউমার বা ক্যান্সার দেখা দিতে পারে

• আলকাতরা, সেল অয়েল সুট ইত্যাদি রাসায়নিক দ্রব্য চামড়ার উপর প্রদাহ সৃষ্টি করে টিউমার দেখা দিতে পারে

• খাদ্যের পরিপুষ্টির অভাবে লিভারে টিউমার দেখা দিতে পারে

• গায়ক, বংশীবাদক এদের গলায় বা ফুসফুসে টিউমার দেখা দিতে পারে

• ইসট্রিন হরমোনের অভাবে স্তনে টিউমার দেখা দিতে পারে

• জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করার ফলে নারীদের সাধারণ হরমোন বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়, ফলে জরায়ুতে বা স্তনে, যৌন দ্বারে টিউমার দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আলোচিত কারণসমূহ ব্যতীত আরো নানাবিধ কারণে টিউমার দেখা দিতে পারে। হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিতে যাদের সোরা, সিফিলিস, সাইকোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজম সংমিশ্রিত অবস্থায় থাকে তাদের টিউমার দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা পদ্ধতি :- টিউমারের সাধারণ চিকিৎসা অপারেশন। কিন্তু অনেক সময় টিউমার অপারেশন করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার অপারেশন করা নিরাপদ নয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সব রকম টিউমারকে আরোগ্য করা সক্ষম।

ক্যান্সার প্রতিরোধে যা যা করবেন


মদ, বিয়ার ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দিন। এটি দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অ্যালকোহল পানের সঙ্গে অনেক ধরনের ক্যান্সার জড়িত। যেমন- স্তন ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, গলায় ক্যান্সার ইত্যাদি। অ্যালকোহল আমাদের ডিএনএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ধূমপান ত্যাগ করুন :-

প্রথমেই সিগারেট ত্যাগ করার কথা না বললেই নয়। এটি যে মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে তা বলার মতো না। দেহের যে কোষগুলোতে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে, ধূমপান সে কোষগুলোতে ক্যান্সার ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আপনি যেই হোন না কেন, ধূমপান ত্যাগ না করলে ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়।

খাদ্য তালিকা বদলে ফেলুন :-

খাদ্য তালিকা বদলে ফেলে আমরা অনেক সুস্থ জীবন কাটাতে পারি। সবজি, ফল এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের তালিকা তৈরি করুন। এগুলো বাওয়েল ক্যান্সারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবে। তা ছাড়া পুষ্টিকর খাবার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। প্রক্রিয়াজাত খাবার, সম্পৃক্ত ফ্যাট এবং লাল মাংসের কারণে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি বাওয়েল ক্যান্সার হয়।

পারিবারিক ইতিহাস জানুন :-

বংশ বা পরিবারে ক্যান্সারঘটিত কোনো ইতিহাস রয়েছে কিনা তা খুঁজে বের করে জানার চেষ্টা করুন। যেমন- পরিবারের কারো স্তন ক্যান্সার থাকলে আপনারও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূর্যের আলো থেকে নিরাপদ থাকুন :-

সকালে সূর্য উঁকি দিলে কার না মন চায় সেই আলোতে বের হয়ে যেতে। এটা ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে ম্যালিগনান্ট মেলানোমার মতো ত্বকের ক্যান্সারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই উত্তপ্ত সময় সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

রাসায়নিক পদার্থ :-

নানা ধরনের খাবার, দূষিত বায়ু এবং দূষিত পানি থেকে আমরা বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ গ্রহণ করি। এসব পদার্থ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। যেমন- ভবন তৈরির সময় অ্যাসবেসটস নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা ফুসফুস ক্যান্সারের কারণ বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে কাজ করার সময় সাবধানতা অবলম্বনের জন্য হাতে গ্লাভস, মুখে কাপড় পরে কাজ করা উচিত।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন :-

স্বাস্থ্যকর ওজন ভালো, তবে অতিরিক্ত ওজন মোটেও ভালো নয়। নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ ক্যান্সার থেকে দূরে থাকার বড় একটি উপায়। এ ছাড়া ওজনের সঙ্গে দেহের নানা সমস্যাও জড়িত। দেখা গেছে, বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই) অনুযায়ী স্বাভাবিক ওজন অপেক্ষা ৩০ শতাংশ বেশি থাকলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ % বেড়ে যায়।

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা ও সহজ সমাধান


গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা আমাদের দেশে খুবই স্বাভাবিক ব্যপার। অনেককে বছরের প্রায় সময়ই ভূগতে হয় এ সমস্যায়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর প্রতিকার হিসাবে পাওয়া যায় অনেক নামি দামি ওষুধ। কিন্তু আমাদের হাতের কাছের বিভিন্ন প্রকৃতিক জিনিস দিয়ে যদি করা যায় এর নিরাময়, তাহলে বাড়তি টাকা খরচ করার কি দরকার। আসুন এরকম কিছু উপাদানের কথা জেনে নিই:

লং

যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকেন, তবে লং হতে পারে আপনার সঠিক পথ্য। দুইটি লং মুখে নিয়ে চিবাতে থাকুন, যেন রসটা আপনার ভেতরে যায়। দেখবেন এসিডিটি দূর হয়ে গেছে। জিরা এক চা চামচ জিরা নিয়ে ভেজে ফেলুন। এবার এটিকে এমন ভাবে গুড়া করুন যেন পাউডার না হয়ে যায়, একটু ভাঙা ভাঙা থাকে। এই গুড়াটি একগ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিবার খাবারের সময় পান করুন। দেখবেন কেমন ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

গুঁড়

গুঁড় আপনার বুক জ্বালাপোড়া এবং এসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে পারে। যখন বুক জ্বালাপোড়া করবে সাথে সাথে একটুকরো গুঁড় মুখে নিয়ে রাখুন যতক্ষণ না সম্পূর্ণ গলে যায়। তবে ডায়বেটিস রোগিদের ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ। মাঠা দুধ এবং মাখন দিয়ে তৈরী মাঠা একসময় আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় ছিল। এসিডিটি দূর করতে টনিকের মতো কাজ করে যদি এর সাথে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়া যোগ করেন।

পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতার রস গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে বহুদিন ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন পুদিনা পাতার রস বা পাতা চিবিয়ে খেলে এসিডিটি ও বদহজম থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

বোরহানী

বিয়ে বাড়িতে আমাদের বোরহানী না হলে চলেই না। টক দই, বীট লবণ ইত্যাদি নানা এসিড বিরোধী উপাদান দিয়ে তৈরী বলে এটি হজমে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন ভারী খাবারের পর একগ্লাস করে খেতে পারলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে।

তুলসী পাতা

হাজারো গুণে ভরা তুলসী পাতার কথা আপনারা সবাই জানেন। এসিডিটি দূর করতেও এর ভূমিকা অনন্য। যখন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে ৫-৬ টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে দেখবেন এসিডিটি কমে গেছে। তুলসী পাতা যে প্রতিদিন ব্লেন্ড করে পানি দিয়ে খাবেন, তার এসিডিটি হওয়ার প্রবনতা অনেক কমে যাবে।

আঁদা

আঁদাও এমন একটি ভেষজ উপাদান যা আমাদের অনেক কাজে লাগে। প্রতিবার খাদ্য গ্রহনের আধা ঘন্টা আগে ছোট এক টুকরো আঁদা খেলে দেখবেন আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা গায়েব হয়ে গেছে।

দুধ

দুধের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, যা পাকস্থলীর এসিড কমাতে সাহায্য করে। রাতে একগ্লাস দুধ ফ্রিজে রেখে দিয়ে পরদিন সকালে খলি পেটে সেই ঠান্ডা দুধটুকু খেলে সারাদিন এসিডিটি থেকে মুক্ত থাকা যাবে। তবে কারো পেট দুধের প্রতি অতিসংবেদনশীল, এদের ক্ষেত্রে দুধ খেলে সমস্যা আরো বাড়তে পারে।

ভ্যানিলা আইসক্রিম

আইসক্রিম খেতে আমরা সবাই পছন্দ করি। কিন্তু আপনি কি জানেন ভ্যানিলা আইসক্রিম শুধু আমাদের তৃপ্তিই যোগায় না, সাথে এসিডিটি দুর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে! কি এটা শুনে আইসক্রিম খাওয়া আরো বাড়িয়ে দিলেন নাকি? তবে সাবধান আবার ঠান্ডা লাগিয়ে ফেলবেন না কিন্তু।

হৃদরোগ : কারণ ও প্রতিকার


বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে উন্নত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় বা যাচ্ছে হৃদরোগে । আমাদের বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম দরিদ্র দেশ আর এই মারাত্মক রোহের আক্রমণে প্রাণ হারানোর দিক থেকে বাংলাদেশের স্থান জনসমষ্টির আনুপাতিক অবস্থানে তৃতীয় । আমাদের দেশে মূলত উচ্চরক্তচাপ, বাতজ্বর, বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ, জন্মগত হৃদরোগ ও করোনারি হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরণের হৃদরোগী দেখা যায় । তবে আক্রানের সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী হচ্ছে করোনারি হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাক-এর ।

এ রোগে আক্রান্ত লোকেদের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় - ধনী, বিভিন্ন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও বয়স্কদের সংখ্যায় বেশি । আমরা জানি হৃৎপিণ্ডের প্রধান কাজ হচ্ছে শরীরের সর্বাঙ্গে অক্সিজেন সর্বারহ করে জীবনকে বাচিয়ে রাখা । হৃৎপিণ্ড রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে শরীরের সমস্ত কোষে পুষ্টি, অক্সিজেন ও অন্যান্য উপাদান পৌছে দেয় । তবে হৃদপিণ্ডের নিজের সজিবতার জন্যেও দরকার হয় এ সমস্ত উপাদান, যা হৃদপিণ্ড সংগ্রহ করে ধমনীর মাধ্যমে । যে ধমনীর বা আর্টারির মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের কোষ পুষ্টি, অক্সিজেন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে তার নাম 'করোনারি ধমনি' ।

করোনারি ধমনি দুভাগে বিভক্ত যা বিভিন্ন অংশে রক্ত সরবারহ করে । কোনো কারণে এই ধমনীতে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে হৃৎপিণ্ড প্রয়োজিনীয় রক্ত পায় না । ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি বুকে ব্যথা অনুভব করে থাকে । আর যখন এ রক্তপ্রবাহের ব্যহত হওয়াটা সাময়িক হয় তখন আক্রান্ত ব্যক্তি কোন কাজ করলে ব্যথা অনুভব করে । যেমনঃ দ্রুতগতিতে বেশ কিছুক্ষন হাঁটলে । এ ধরনের সমস্যার নাম 'অ্যানজাইনা' । যদি রক্তের প্রবাহ দীর্ঘস্থায়ীভাবে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় তাহলে রোগী মারাত্বকভাবে বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারে । এটিই হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ । করোনারি হৃদ্রোগের ৯৯% কারণটি হচ্ছে 'এথরোস্ক্লেরোসিস' । যার অর্থ করোনারি ধমনির ভেতরে চর্বি বা কোলেস্টেরল জাতীয় কিছু জমা , -ধমনির অভ্যন্তরীণ ব্যস কমে যাওয়া অর্থাৎ নালি সরু হয়ে যাওয়া ।

একটা ধীর প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে এথেরোস্ক্লেরোসিস, যা শুরু হয় পাঁচ বছর বয়সে । আর তা ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে ধরা পড়ে । আট বছর বয়স থেকে সাধারণ মাইক্রোস্কোপ এবং চৌদ্দ বছর বয়সে খালি চোখেই ধরা পড়ে । এ-সব ঝুকিপূর্ণ অবস্থা পরিবর্তন করলে করোনারি হৃদরোগের প্রকাপ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব ।

চুল গজানোর অবিশ্বাস্য পদ্ধতি



চুল গজানোর অবিশ্বাস্য পদ্ধতি লাল হয়ে থাকে চুলই মানুষের সৌন্দর্যের আধার। এই চুল পড়ে গিয়ে টাক হয়ে যান অনেকে। সব বয়সের লোকদের কমবেশি চুল পড়ে থাকে। এমনকি যৌবনেও ঘটে। চুলপড়া একটি সাধারণ রোগ। চিকিৎসকদের মতে, হরমনের পাশাপাশি প্রোটিন (আমিষ) ও ফ্যাটের (চর্বি) অভাবে মানুষের চুল পড়ে। বাড়িতে বসেই এক বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি আপনার চুলের সৌন্দর্য বাড়ান। চুলপড়া রোধ করুন। মাথায় চুল গজান। দইতে চর্বি ও উচ্চ ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে। আমিষ ও চর্বিতে পরিপূর্ণ ডিম। এত প্রোটিন অন্য খাবারে পাওয়া যায় না। এ দই ও ডিম মিশিয়ে চুল পরিচর্যার রেসিপি বানানো যায়। চুলের রুক্ষতা ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে এটা। বিশেষত বাড়িতে বানানো এই রেসিপি চুল পরিষ্কার করে। শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি চুল গজাতে বেশ কার্যকরী। মোটের ওপর এটি চুলকে প্রাণবন্ত, স্নিগ্ধতা ও কোমল করার জন্য তুলনা নেই। ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে এই রেসিপি মাথায় খুলিতে ক্যলসিয়াম ও প্রোটিন সরবরাহ করে। মধুও মাথার চুল বৃদ্ধিতে বেশ কাজে দেয়। এতে উপকারী বেশকিছু উপাদান রয়েছে- যেমন ভিটামিন-ই, কে, সি, বি১, বি২ ও বি৬। আর কলা চুলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে যুদ্ধ করে। ডিম, মধু ও বিয়ারের মিশ্রণ আপনার চুল রক্ষায় অবিশ্বাস্য কাজ করে। বিয়ারে ভিটামিন-বি, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, কপার রয়েছে, যা আপনার চুলকে শক্তিশালী ও চুল গজাতে দারুণ কাজে দেয়। যেভাবে চুলের রেসিপি বানাবেন :- একটি ডিম অথবা এর শুধুমাত্র কুসুম, একটি কলা, এক অথবা দুই কাপ ঘন বিয়ার, এক টেবিল চামচ মধু নিন। এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে লাগান। এক থেকে দুই ঘণ্টা এভাবেই রেখে দিন। মাথা শুকানোর পর সাধারণভাবে ধুয়ে ফেলুন। মাথার চুল বৃদ্ধি করতে সপ্তাহে একবার এটি ব্যবহার করা উচিত।

কাশি কমানোর ৫ ঘরোয়া উপায়



কাশি কমানোর ৫ ঘরোয়া উপায় কাশি কমাতে গার্গল করুন। একটানা কাশি খুব বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। কারই বা সহ্য হয় একটানা খকখক কেশে যেতে? এর থেকে দ্রুত মুক্তির পথ খুঁজি আমরা। সাধারণত ঠান্ডা ও ফ্লুয়ের কারণে কাশি হয়। তবে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, এসিড রিফ্লাক্স, শুষ্ক আবহাওয়া, ধূমপান, এমনকি কিছু ওষুধ সেবনের ফলেও এ সমস্যা তৈরি হতে পারে। লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট উইকি হাউ জানিয়েছে কাশি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায়ের কথা। মধু ব্যবহার করুন মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং গলাব্যথা কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, মধু কখনো কখনো কাশিরোধী ওষুধগুলোর চেয়েও ভালো কাজ করে। মধু শ্লেষ্মা কমাতে সাহায্য করে। তবে এক বছরের নিচের শিশুদের মধু খাওয়াবেন না। এতে খাদ্য বিষাক্ত হওয়ার সমস্যা হতে পারে। কাশি কমাতে এক কাপ লেবুমিশ্রিত চায়ের মধ্যে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। শক্ত ক্যান্ডি খেতে পারেন এক পিস ক্যান্ডি খেয়ে দেখতে পারেন। ক্যান্ডি শক্ত কফ নরম করে দিতে সাহায্য করে এবং কাশি কমায়। হলুদ কাশি নিয়ন্ত্রণে হলুদ রীতিমতো ঐতিহাসিক ঘরোয়া উপাদান! এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়া এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি দ্রুত কাশি কমাতে সাহায্য করে। আদা ও লেবুর শরবত কাশি কমাতে লেবুর শরবতের মধ্যে আদা কুচি মিশিয়ে খেতে পারেন। আদা শ্লেষ্মা দূর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে এক চা চামচ মধুও মেশাতে পারেন। গার্গল করা গার্গল করলে গলাব্যথা কমে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে ১৫ মিনিট ধরে গার্গল করুন। এভাবে বিরতি দিয়ে কয়েকবার করুন। এটি কাশি কমাতে বেশ কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি।

পিঠের ব্যাথা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম


পিঠের ব্যাথা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলুন কিছু নিয়ম প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কর্মপরিধি বেড়ে গেলেও কমে গিয়েছে কায়িকশ্রম। বেশির ভাগ কাজই দেখা যায় চেয়ার-টেবিলভিত্তিক। অনরবরত বসে থাকার ফলে পিঠে ব্যথা করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে সামান্য বিশ্রাম আপনাকে পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু ব্যথা যখন ক্রনিক হয়ে যায় বা ব্যাধির আকার ধারণ করে, তখন বিশ্রামের পাশাপাশি মেনে চলতে হয় বেশ কিছু নিয়ম-কানুনও! পিঠের ব্যথা খুব বেশি হলে প্রথম কাজ হলো পূর্ণ বিশ্রাম গ্রহণ করা। একেবারে না করলেই নয় এমন হাঁটাহাঁটি ছাড়া পায়ের পূর্ণ বিশ্রাম দিন অন্তত দুদিন। ব্যথার জায়গার পাশে বরফ রেখে জায়গাটি ৭-৮ মিনিট ম্যাসাজ করুন, আরাম পাবেন। প্রথম দু একদিন বরফ-চিকিত্সাগ দেয়ার পরও যদি ব্যথা ভালো না হয় তাহলে গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে গরম ভাপ দিয়ে দেখতে পারেন। এ পদ্ধতিতেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে ঠান্ডা-গরম পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। এ পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে প্রথমে ৩০ মিনিট বরফ চিকিত্সা তারপর ৩০ মিনিট ভাপ চিকিত্সা প্রয়োগ করুন। প্রতিবারে অন্তত দুই বার করে দিনে দুই বার। প্রয়োজনবোধে চিকিত্সধকের পরামর্শ নিন। পিঠব্যথার অন্যতম কারণ হলো মাংসপেশীর জড়তা। বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর দুই হাঁটু বিছানা থেকে তুলে বুকের দিকে ভাঁজ করুন, হালকা চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন। এভাবে কয়েকবার করুন, আরাম পাবেন। বিছানা থেকে চট করে উঠে না পড়ে গড়িয়ে নামুন। বিছানার প্রান্তে চলে আসার পর পিঠ শক্ত করে ফেলুন, পা নামিয়ে দিন নিচে এবং দেহকে বিছানা থেকে তুলে আনুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যথা উপশমের জন্য এটা বেশ কার্যকর। ফোম বা গদিতে মোড়া বিছানা পরিহার করুন। সমতল এবং শক্ত বিছানায় শোবার অভ্যাস করুন। মাথার নিচে বালিশ রেখে চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটুর নিচে বালিশ রাখুন। এ পদ্ধতিতে শোয়া ব্যথা উপশমের জন্য কার্যকর। কাজের সময় ব্যথা অনুভূত হলে নিজের সুন্দর স্মৃতিগুলো মনে করুন, দেখবেন ব্যথা কম টের পাচ্ছেন! ক্রনিক পিঠের ব্যথার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত ফলদায়ক। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন, তবে তা অবশ্যই চিকিত্সযকের পরামর্শ সাপেক্ষে।

মাত্র ১১ দিনেই ডায়াবেটিস নির্মূল



ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়, কথাটি শুনলে যে কারোই ভড়কে যাবার কথা, কারণ ডায়াবেটিস একবার দেহে বাসা বাধলে তা কখনোই পরিপূর্ণ ভাবে সারে না, তবে পরিমিত পরিমান খাবার গ্রহন করে তা নিয়ন্ত্রনে রেখে দীর্ঘদিন সুস্হ থাকা সম্ভব, কিন্তু বৃটেনের বিজ্ঞানী রিচার্ড ডটির দাবী মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব।



বৃটেনের রিচার্ড ডটি (৫৯) নামের এক ব্যক্তি বেশ অল্প ক্যালোরিসম্পন্ন খাবার খেয়ে ১১ দিনেই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি কি খাবার খেয়ে এটা করতে পেরেছেন তার একটি চার্ট প্রকাশ করেছেন। যা যা খেতেন, তার তালিকা একেবারেই ছোট। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা কখনও সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না। এমন প্রচলিত ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন রিচার্ড। মানুষ শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে বিভিন্ন ডায়েট পরিকল্পনা করে। কিন্তু তিনি প্রায় অভুক্ত থাকার ডায়েটেই নিরোগ শরীর পেলেন। রিচার্ড লম্বায় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি, তার ওজন ৬৭ কেজি। রুটিনমাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান তিনি। শেষবার যখন পরীক্ষা করালেন, ফলাফলে রীতিমতো চমকে উঠলেন তিনি। রিপোর্টে জানা গেলো, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। রিচার্ডের বংশে কারও ডায়াবেটিস ছিল না। তার ওজনও অতিরিক্ত নয়। তিনি সবসময় সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলেন। জীবনে কখনও সিগারেট স্পর্শ করেননি। এত সব সত্ত্বেও ডায়াবেটিস ধরা পড়লে যে কারও চোখই কপালে উঠবে। রিচার্ডেরও তা-ই হলো। তিনি রীতিমতো কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে এবার শুরু হলো তার নিরন্তর প্রচেষ্টা। ইন্টারনেটে সমাধান খুঁজলেন। নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের তৈরি করা একটি স্বল্প ক্যালোরিসম্পন্ন ডায়েটের সন্ধান পেলেন তিনি।



ওই বিজ্ঞানীদের দাবি, এ ডায়েট অনুসরণে ৮ সপ্তাহেই ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নির্মূল সম্ভব। ওই ডায়েটের মধ্যে ছিল ৬০০ ক্যালোরির মিল্ক শেক ও সুপ এবং ২০০ ক্যালোরির সবজি। আর দিনে ৩ লিটার পানি পান। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই। রিচার্ড জানান, একটা সুপ, দু’টো শেক আর সবুজ শাকসবজি খেয়ে বেঁচে থাকাটাকে প্রথম দিকে বেশ দুঃসাধ্য কাজ মনে হয়েছিল তার কাছে। তবে তিনি হাল ছাড়লেন না। টানা ১১ দিন এ ডায়েট অনুসরণ করলেন। অকল্পনীয় হলেও সত্যি! তার রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে গেল। অর্থাৎ নন-ডায়াবেটিক লেভেলে নেমে এলো ব্লাড সুগার। এ সময়টায় রিচার্ডের ওজন কমেছিল। এরপর তিনি ফের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে দেখলেন তার শরীর থেকে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নির্মূল হয়েছে। দীর্ঘদিন পরও তিনি একেবারেই ডায়াবেটিসমুক্ত। আর ওজনটাকে তিনি ৫৭ কেজির মধ্যেই ধরে রেখেছেন। রিচার্ড ডটির এ সাফল্য নিঃসন্দেহে বিশ্বের কোটি কোটি ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষকে নতুন পথের সন্ধান দেবে। একই বা কাছাকাছি পথ অনুসরণ করে অনেকেই হয়তো নিরোগ জীবন ফিরে পাবেন।

হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় ঘণ্টায় ৫ মিনিট!


হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় ঘণ্টায় ৫ মিনিট! অনেকটা সময় একটানা আমরা অফিসে বা বাড়িতে বসে কাজ করি। ফলে হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটে এবং হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ পরতে থাকে। এতে হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হয়। এছাড়াও পায়ের এবং দেহের নিচের অংশের পেশীগুলোতেও মারাত্মক প্রভাব পরতে থাকে। এ কারণে গবেষকগণ বলেন ঘণ্টায় মাত্র ৫ মিনিট হাঁটলে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করা খুব সহজেই সম্ভব। গবেষণায় দেখা যায় যারা একটানা বসে না থেকে কিছুক্ষণ পর পর উঠে হেঁটে বা ঘুরে আসেন তাদের হৃদপিণ্ড ও মাংসপেশী জনিত সমস্যা অন্যদের তুলনায় অনেক কম থাকে। একজন ইন্ডিয়ান অরিজিন রিসার্চার বলেন,‘একটানা বসে থাকার চাইতে ১ ঘণ্টা পর পর মাত্র ৫ মিনিট হেঁটে নিলে হৃদপিণ্ডের সাথে দেহের নিচের অংশের রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা ঠিক থাকে। এতে করে হৃদপিণ্ডের সুস্থতা নিশ্চিত হয়’।

গরমে সর্দি-কাশি ও তার প্রতিকার



গরমে সর্দি-কাশি ও তার প্রতিকার সর্দি-জ্বর বা কমন কোল্ড বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিচিত একটি রোগ। আমাদের দেশে সম্ভবত এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না যার বছরে অন্তত দু-একবার সর্দি-জ্বর হয়নি। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ কিংবা অফিসপাড়ায় প্রায়ই হাঁচি দিতে থাকা অথবা নাকের পানি মুছতে থাকা লোকজন নজরে পড়ে। ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, চিকিৎসক-প্রকৌশলী আমরা কেউ এ রোগ থেকে মুক্ত নই। একবিংশ শতকেও এ বিরক্তিকর রোগটি থেকে আমরা রেহাই পাইনি।

কারণ :

সর্দি-জ্বর মানবদেহের ঊর্ধ্ব-শ্বাসনালীর ভাইরাসজনিত এক ধরনের সংক্রমণ। ইনফ্লুয়েনজা-এ, ইনফ্লুয়েনজা-বি, প্যারা-ইনফ্লুয়েনজা, এডেনোভাইরাস, রাইনোভাইরাস প্রভৃতি এ রোগের জন্য দায়ী। অনেক ক্ষেত্রে এর সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন ঘটতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেশি মাত্রায় দেখা যায়। একটানা বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা এবং এক ঘরে অনেক লোক গাদাগাদি করে বসবাস করলে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন লোকদেরও এ রোগের ঝুঁকি বেশি। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়।

লক্ষণ :

লক্ষণ দেখেই এ রোগ নির্ণয় করা যায়। সাধারণত কোনো ল্যাবরেটরি পরীক্ষার দরকার হয় না। সর্দি-জ্বর হলে প্রথমে নাকে ও গলায় অস্বস্তি লাগে, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। নাক বন্ধও থাকতে পারে। মাথা ব্যথা, মাথা ভারী বোধ হওয়া, শরীরে ব্যথা, হালকা জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইড-এর বেশি না), গলা ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। কখনো কখনো চোখ লাল হতে পারে এবং চোখ দিয়ে পানি ঝরতে পারে।

চিকিৎসা :

সর্দি-জ্বরের সময় বিশ্রামে থাকতে পারলে ভালো। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি, লেবুর রস, আনারস, পেয়ারা বা আমলকি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। ঠা-া জাতীয় খাবার (আইসক্রিম, ফ্রিজের পানি, কোল্ড ড্রিংকস) পরিহার করতে হবে। গরম চা বা কফি খাওয়া যেতে পারে। এ রোগের চিকিৎসায় সাধারণত এন্টিবায়োটিক-এর প্রয়োজন হয় না। জ্বর ও ব্যথানাশক প্যারাসিটামল এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ কয়েকদিন খেলেই এ রোগ সেরে যায়। তবে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত এন্টিবয়োটিক সঠিক মাত্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে টনসিলের বা ফুসফুসের সংক্রমন হওয়ার ঝুঁকি থাকে বিধায় রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শমত ওষুধ খাওয়ানো উচিত।

প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা :

সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্যদের সংগে বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় বা নাকের পানি মুছতে রুমাল বা টিসু পেপার ব্যবহার করতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত রুমাল বা গামছা অন্যরা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লেষ্মা ফেলা যাবে না। স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করতে হবে এবং বিরূপ পরিবেশে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

মাড়ির কার্যকর হোম প্রতিকার


দাঁতের যত্নে আমরা অনেকেই বেশ অবহেলা করে থাকি। ছোটবেলার দাঁত ব্রাশ করতে আলসেমি করাটা অনেকেই বড় হয়েও ছাড়তে পারেন না। গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ৫৫% পূর্ণবয়স্ক মানুষ আলসেমি করে এবং ঘুমের কারণে রাতের বেলা দাঁত ব্রাশ করেন না। ফলে দাঁতের এবং দাঁতের মাড়ির নানা সমস্যা দেখা দেয়।

দাঁতের সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো মাড়ি থেকে রক্ত পড়া। এই সমস্যা শুরু হলে অনেক চিকিৎসা করেও রেহাই পাওয়া সম্ভব হয় না যদি না আপনি নিজে থেকে সচেতন হয়ে যত্ন নেন। দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া রোধে আপনি করতে পারেন নানা কাজ। এই কাজগুলো তাৎক্ষণিক ভাবে উপশমে কাজে দেবে, এবং মাড়ির সুরক্ষাতেও কাজ করবে।

লবঙ্গ :

ঘরে থাকা সবচাইতে সহজলভ্য এবং মাড়ির রক্ত পরার উপশমে কার্যকরী উপাদানটি হচ্ছে লবঙ্গ। লবঙ্গের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান মাড়ির রক্ত পড়া দ্রুত বন্ধ করে এবং দাঁতের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। মাড়ির রক্ত পড়া রোধে দুটো লবঙ্গ মুখে নিয়ে চিবিয়ে চুষতে থাকুন। দেখবেন মাড়ির রক্ত পড়ার সমস্যা দূর হবে।

অ্যালোভেরা :

অ্যালোভেরার নানা ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানি। এরই মধ্যে মাড়ির সুরক্ষার গুনটিও পড়ে। অ্যালোভেরা পাতা নিয়ে এর ভেতরকার অ্যালোভেরা জেল বের করে মাড়িতে ঘষে নিন। এরপর অ্যালোভেরার জেলটি খানিকক্ষণ মুখে রেখে দিন। তারপর মুখ কুলি করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

নিয়মিত ব্রাশ এবং ফ্লস করা :

অনিয়মিত ব্রাশ করার কারণে অনেক সময় দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়। তাই নিয়মিত ব্রাশ করার অভ্যাস করা উচিৎ। ব্রাশের পাশাপাশি ফ্লস করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ ফ্লসের মাধ্যমে মাড়িতে লেগে থাকা খাদ্যকনা দূর হয় যা ব্রাশ করার পরও রয়ে যায়। তাই মাড়ি থেকে রক্ত পরার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে ব্রাশের পাশাপাশি ফ্লস করুন।

ফল এবং কাঁচা সবজি খাওয়া :

আপেল, পেয়ারা, গাজর, পেঁপে ইত্যাদি ধরণের ফল দারে মাড়ির জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এই ধরনের ফলমূল এবং কাঁচা সবজি খাওয়ার সময় দাঁতের মাড়ির ভেতর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এতে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

লবণ পানির কুলকুচা :

মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে এবং মাড়ির সুরক্ষায় সব চাইতে সহজ একটি ঘরোয়া কাজ হচ্ছে লবণ ও কুসুম গরম পানির কুলকুচা করা। ১ মগ কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিয়ে দিনে ৩ বার কুলকুচা করুন। মাড়ির রক্ত পড়া সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

মানসিক রোগ ও চিকিত্সা


উৎকন্ঠিত হবার মানুষের অনেক যথার্থ কারন থাকে। যেমন আপনার পরিবারের কেউ হঠাৎ কিছু না বলে মোবাইল ফোন বন্ধ করে কোন কারন ছাড়াই যদি বাসায় না ফেরে তাহলে আপনি উৎকন্ঠিত হবেন। অথবা আগামি কাল আপনার একটি জটিল অপারেশন অথবা কোন ধরণের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক হুমকি, বিপদ বা অনাকাঙ্খিত ঘটনার আভাস পেলে আপনি সতর্কিত হবেন, সেটি মোকাবেলা করার জন্য উৎকন্ঠিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রকৃত কারণে উৎকন্ঠিত হওয়াটা কোন অস্বাভাবিকতা নয় বা এটি কোন রোগ ও নয়। উৎকন্ঠা (Anxiety) বা এংজাইটি দুই রকম ভাবে হতে পারে, প্রথমত- উৎকন্ঠিত হবার মতো যথার্থ কোন কারন কোন আসন্ন বিপদ বা ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা) না থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ মনগড়া কারনে অযথা ভীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েন। যেমন স্কুল থেকে আপনার সন্তানটি হারিয়ে যাবে বা কিডনাপ হবে ভেবে স্কুলের গেটের কাছে বসে বসে ঘামেন বা স্কুলের ছাঁদ থেকে পড়ে যাবে ভেবে আপনার সন্তানকে স্কুলেই পাঠানো বন্ধ করে দেন। দ্বিতীয়ত- ভয় পাওয়ার কারন রয়েছে কিন' কারন অপেক্ষা আপনার উৎকন্ঠার পরিমান অস্বাভাবিক বেশি। যেমন- আপনার পাশের ফ্লাটে অল্প বয়সি একজনের হার্ট এটাক হয়েছে শুনে ভাবতে থাকেন আমারও তো বুকে ব্যথা হয়, আমারও হার্ট এটাক হচ্ছে। অথবা কোন বাড়ীতে চুরি হয়েছে শুনে চোরের ভায়ে চারটে কলাপসিবল গেটে আটটি তালা ঝুলিয়েও রাতে ঘুম আসছে না। দিনের পর দিন এভাবে চলতে চলতে আপনি অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন।

মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় উৎকন্ঠা বা এংজাইটি প্রধানত তিন প্রকার-

১. জেনারেলাইজড এংজাইটি ডিসর্ডার - যেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায় সবসময় সবকিছু নিয়ে উৎকন্ঠিত হন।

২. ফোবিক এংজাইটি ডিসর্ডার - কোন বিশেষ বস্তু, প্রানী, পরিবেশ, পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে উৎকন্ঠায় আক্রান্ত হওয়া। যেমন অনেক লোকের ভীড়ে গেলে উৎকন্ঠিত হওয়া (Agoraphobia) , তাই ভীড়ের জায়গা এড়িয়ে চলেন তারা। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি ঐ বস্তু বা পরিস্থিতির সম্মুখীন না হলে উৎকন্ঠিত হন না।

৩. প্যানিক ডিসর্ডার - কোন বস্তু বা পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়েও মাঝে মাঝে নিজের কল্পনা প্রসুত কারনে উৎকন্ঠিত হওয়া, যেমন রাতে শুয়ে আছে, হঠাৎ আজ রাতে যদি আমার হার্ট এটাক হয় এটা ভেবেই নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দিলেন। এক্ষেত্রে উৎকন্ঠিত হবার মত নূন্যতম কোন বাস্তু বা ঘটনাই উপস্থিত নেই।

উৎকন্ঠার লক্ষণ নানা রকম হতে পারে -

• ভীতি গ্রস্থ হওয়া

• খিটখিটে মেজাজ

• সামান্য শব্দে উত্তেজিত হওয়া

• অস্থিরতা

• মনোযোগের অভাব

• ভুল পথে চিন্তা করা

• মুখ-জিহবা শুকিয়ে যাওয়া ও পানি পিপাসা পাওয়া

• ঢোক গিলতে অসুবিধা হওয়া

• পেটে অস্বস্তি বোধ করা

• পেট ফাঁপা ভাব

• বারবার বাথরুমে যাওয়া

• বুকে চাপ অনুভব করানিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া

• বুক ধরফর করা

• মেয়েদের পিরিয়ডের সমস্যা হওয়া

• হাত পা এর কাপুঁনি হওয়া - বিশেষত হাতের আঙ্গুল কাঁপা

• মাথা ব্যথা,গা ব্যথা,হাত পা জ্বালা করা

• ইনসমনিয়া (ঘুম কম হওয়া),হঠাৎ ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে জেগে উঠাদুঃশ্চিন্তা করা

• দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো

• বসে বসে পা নাড়ানো

• ক্ষিধে কমে যাওয়া

• বিষন্নতা

• অবসেশন - বিশেষ কিছু নিয়ে ক্রমাগত ও বারবার চিন্তা করা (রাতে শোবার পর কয়েকবার উঠে দেখা দরজা বন্ধ করা হয়েছে কি না)

• উৎকন্ঠায় আক্রান্ত হওয়ার কারন - বিশেষ বস্তু, প্রাণী, ভীড়, সামাজিকতা ইত্যাদি এড়িয়ে চলা

• ঘাম হওয়া,বমি বমি ভাব হওয়া

• হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসা

• মৃত্যুভয় পাওয়া ইত্যাদি

সবগুলো লক্ষণ যে একই ব্যক্তির মধ্যে একসাথে পাওয়া যাবে তা কিন্তু নয়, বরং উৎকন্ঠার প্রকারভেদে কিছু লক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন সময় দেখা যায়।

মানসিক অসুস্থতার মধ্যে উৎকন্ঠা বা Anxiety নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য। তবে কেবলমাত্র ওষুধ প্রয়োগ করে এ রোগের লক্ষণগুলো কমিয়ে রাখা যায় কিন্তু পুরোপুরি নিরাময় করবার জন্য বেশ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরন করা যেতে পারে, যেমন –

• সাইকোথেরাপি বা মনোচিকিৎসা - মনোচিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে।

• আচরণ পরবর্তন করার প্রক্রিয়া (Behaviour therapy)।

• শিথিলায়ন প্রক্রিয়া (Relaxation technique)।

• মেডিটেশন।

• আত্মসম্মোহন।

• যোগব্যায়াম - কমপক্ষে বিশ মিনিট করে প্রতিদিন।

• প্রয়োজন মতো ঘুমানো।

• খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন অভ্যাসের পরিবর্তন - সহজপাচ্য খবার ও প্রচুর পানি পান করা।

• ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় পরিহার করা ও অতিরিক্ত মদ্যপান কমানো।

• বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এন্টি-এংজাইটি ওষুধ সেবন।

• চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কারনে -অকারনে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করা।

মনে রাখতে হবে একজন উৎকন্ঠিত রোগীর জন্য - উপসর্গ, রোগীর বয়স ইত্যাদি ভেদে উপরের প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে বাছাই করে চিকিৎসাপদ্ধতি প্রদান করা হয়।

এংজাইটি থেকে সৃষ্টি হতে পারে বিষন্নতার মতো কঠিন মানসিক ব্যাধি, এছাড়া এংজাইটি আমাদের যাপিত জীবনের গুণগত মান কমিয়ে দেয় বহুলাংশে, তাই উৎকন্ঠা নিয়ে উৎকন্ঠিত হবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তাই দেরি না করে উৎকন্ঠা কমানোর জন্য মেনে চলুন কিছু নিয়ম কানুন, মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম চর্চা করতে পারেন আর প্রয়োজনে সহায়তা নিন চিকিৎসকের।

ফাটা ঠোটের প্রতিকার


ফাটা ঠোটের প্রতিকার সাচ টাইমস: শীত মৌসুমে খুবই আদর-যত্নে রাখতে হয় ঠোঁট। ঠোঁট ফাটা দেখতে যেমন খারাপ লাগে তেমনি ঠোঁট ফেটে যাওয়ার যন্ত্রণাও কম নয়। ঠোঁটের সুরক্ষায় কী কী করবেন তা জানার আগে জেনে নিন কী কী করা যাবে না। ঠোঁট সজীব রাখতে অভ্যাসবশত বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না। এতে ঠোঁট আরও শুকিয়ে যায়। এর বদলে সঙ্গে একটা লিপ-বাম বা লিপ-জেল রাখুন এবং ঠোঁট শুকনো লাগলেই একটু মেখে নিন। আর হাত-মুখ ধোয়ার সময় বা দাঁত মাজার সময় কোনোভাবেই যাতে ঠোঁটে জোরে জোরে ঘষা-মাজা না লাগে তা খেয়াল রাখা দরকার। এ সময় নরম ঠোঁটে আঁচড় পড়লে তা ভোগাতে পারে। এ ছাড়া শীতকালে ম্যাট ধরনের লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা, শীতে ম্যাট লিপস্টিকে ঠোঁট দুখানা আরও প্রাণহীন মনে হতে পারে। শীতে গ্লসওয়ালা লিপস্টিকই ঠোঁট সজীব রাখবে এবং এতে আপনার সাজও প্রাণবন্ত লাগবে। গোলাপ-মধুর লিপ-প্যাক : শীতে ঠোঁটের যত্নে ঘরে বসে নিজেই নিজের জন্য তৈরি করে নিতে পারেন সাশ্রয়ী লিপ-প্যাক। কিছু গোলাপের পাপড়ি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে নিন। এবার পাপড়িগুলো ভালো করে চটকে নিয়ে সঙ্গে খানিকটা মধু মিশিয়ে একটা মণ্ড তৈরি করে ফেলুন। মণ্ড তৈরি হয়ে গেলে তা আলতো করে ওপরের ও নিচের ঠোঁটে মাখুন। ঠোঁটের ওপর মণ্ডটা শুকিয়ে যেতে ধরলে পানি দিয়ে করলে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। মধু ঠোঁটকে পুষ্টি জোগাবে এবং গোলাপ পাপড়ির রস কোমল ঠোঁট দুটোকে গোলাপি আভায় রাঙিয়ে তুলবে। সরষে-ঘিতে ঠোঁটের যত্ন : রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাতের তালুতে একটু সরিষার তেলের সঙ্গে সামান্য একটু ঘি নিয়ে আঙুলে ডগায় করে আলতোভাবে ঠোঁটে মেখে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজতে আয়নার সামনে দাঁড়ালেই টের পাবেন ঠোঁটের এই যত্নের সুফল। মাঝেমধ্যে এই টোটকায় আপনার ঠোঁট বাড়তি চমক দেখাবে আপনাকে। রাতের বেলায় ঠোঁটের যত্ন : ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁটকাঠির রঙের প্রলেপ তুলে ফেলেছেন। এবার বিছানায় যাওয়ার পালা। কিন্তু ঠোঁটকে একটু বাড়তি সময় দিন। একটুখানি দুধ-মালাই দিয়ে ঠোঁট দুটো আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। সামান্য কিছুক্ষণ এমন ম্যাসাজে ঠোঁটে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং দুধ-মালাই থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে আপনার ঠোঁট।

চুলের যত্ন, সৌন্দর্য পরামর্শ


আপনার কালো চুল কি দিনে দিনে খয়েরি বা লাল হয়ে যাচ্ছে ? তাহলে এবার সাবধান হবার সময় এসে গেছে। এই সমস্যাটা আজকাল অনেকের মধ্যেই খুব দেখা যাচ্ছে। মনে রাখবেন যদি আপনার চুলের প্রাকৃতিক রঙ কালো হয় তবে চুল আপনা থেকেই লাল হয়ে যাওয়া সাধারণ ঘটনা নয়।

কী কী কারণে চুল লাল হতে থাকে?

১) চুলের ড্যামেজ বা অপুষ্টির কারণে চুল কালো থেকে লাল হয়ে যায়। সূর্যের রশ্মির ক্ষতিকর UV ray আমাদের চুলের ড্যামেজ করে আর চুল লাল করার জন্য একটা বিশেষ কারণ।

২) যে পানি আপনি ব্যবহার করছেন সেটাও একটা বিশেষ কারণ হতে পারে। পানিতে ক্লোরিন বা আইরন থাকলে চুলের ভালো রকমের ক্ষতি করে।

৩) আপনি যে প্রোডাক্ট চুলে লাগান তাতে যদি পেরক্সাইড থাকে সেটা চুলের ভীষণ ক্ষতি করে।

৪) চুলে ভীষণ গরম কিছু লাগালে যেমন হেয়ার স্ট্রেটনার অথবা হেয়ার কার্লার এইসব বেশি ব্যবহার করলে চুল বাদামি রঙের হতে থাকে।

৫) চুলে অনেক বেশি পরিমানে আর ঘন ঘন মধু লাগালেও চুল তার স্বাভাবিক রঙ হারিয়ে ফেলে।

প্রতিকারঃ

সমস্যা যখন আছে তার প্রতিকারও আছে। কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু সমস্যা এড়ানো যাবে। তাহলে দেখে নেয়া যাক এর প্রতিকারগুলো –

১) রোদে বের হওয়ার আগে আর গোসলের পরে চুলে লাগিয়ে নিতে হবে লিভ-অন কন্ডিশনার বা হেয়ার সেরাম। এটা চুলকে রোদ আর পলিউশনের হাত থেকে আপনার চুলকে বাঁচাবে।

২) যদি সারাদিন বা অনেক সময়ের জন্য রোদে বের হতে হয় তাহলে মাথাটা একটা স্কার্ফ দিয়ে বা ওড়না দিয়ে ভালো করে ঢেকে নিতে হবে। আপনি ব্যবহার করতে পারেন ফ্লোরাল স্কার্ফ এতে আপনাকে দারুন স্টাইলিশ দেখাবে আর আপনি সবার মধ্যমনি হয়ে উঠবেন। একেই বোধ হয় বলে রথ দেখা আর কলা বেচা মানে স্টাইল আর স্বাস্থ্য দুটোই একসাথে।

৩) চুলের জন্য কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে হারবাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে।

৪) ভেজা চুলে রাস্তায় বের হবেন না। এতে বাইরের ধুলো ময়লা সব চুলে আটকে থাকবে আর এর ফলে চুল রুক্ষ আর ফ্রিজি হয়ে যাবে। তাই বাইরে বের হবার আগে চুল শুকিয়ে বের হতে হবে। তাই বলে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকানো উচিত নয়।চুল শুকানোর জন্য সেরাম লাগিয়ে নিয়ে মাঝে মাঝে মোটা চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে হবে এতে চুল শুকিয়ে যাবে।

৫) সান ড্যামেজের হাতে থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই আছেন যারা ছাতা ব্যবহার করেন না কিন্তু আমাদের দেশের এরকম আবহাওয়াতে ছাতা ব্যবহার অতি আবশ্যক।

৬) এটা বলার দরকার রাখে না কিন্তু হেলদি ডায়েট অবশ্যই বজায় রাখতে হবে আর প্রচুর পরিমান পানি পান করতে হবে।

হোম রেমেডিঃ

১) শ্যাম্পুর সাথে একটু কোকো মিশিয়ে নিয়ে লাগানো যেতে পারে। চুল ধোওয়ার জন্য সয়া সস আর অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে এই মিশ্রণটা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

২) সপ্তাহে একদিন করে প্রোটিনরিচ হেয়ার মাস্ক লাগাতে হবে। এর জন্য একটা ডিম ফেটিয়ে নিয়ে এর সাথে এক কাপ টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবারে এই মিশ্রণটাকে ৩০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। এবারে শ্যাম্পু করার আগে এটা লাগিয়ে নিন ও কম করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।

নারকেলের জল অনেক সুবিধা


ঋতুতে এখন হেমন্ত চলছে। শীতের আগমন হবে কিছুদিন পরেই। কিন্ত আজকাল আবহাওয়াটা ভিন্ন। খুব গরম পড়ছে কখনো, আবার হুট করে বৃষ্টিও হচ্ছে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টায় মানুষ বিভিন্ন ধরণের অসুখে ভোগে, কারণ বাইরের খোলা খাবার ও কোমল পানীয়ের সাথে ঋতু পরিবর্তনের ব্যাপারটাও টের পায় শরীর।। কিন্তু আমরা এইসব বাইরের খাবার বর্জন করে যদি ঘরের খাবার খাই ও পানীয় হিসেবে ডাবের পানি পান করি তা কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারি। ডাবের পানির উপকারিতা অনেক, এটি সাহায্য করে অনেক রোগ নিরাময় করতে। জেনে নিন ডাবের পানির ব্যাবহার সম্পর্কে। এই ঋতুতে প্রতিদিন ডাবের পানি আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ, সতেজ ও চনমনে।

১. গরমে হাইড্রেশনের সমস্যায় ডাবের পানি কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।

২. ডাবের পানি কলেরা প্রতিরোধ বা উপশমে কাজ করে।

৩. হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. ব্যায়ামের পর ডাবের পানি পান করলে শরীরের ফ্লুইডের ভারসাম্য বজায় থাকে।

৫. ঘামাচি, ত্বক পুড়ে গেলে বা র্যা শের সমস্যায় ডাবের পানি লাগালে আরাম পাবেন।

৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।

৭. ব্লাড সার্কুলেশন ভালো করতে ডাবের পানি উপকারী।

৮. ডাবের পানি গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে।

৯. বদহজম দূর করে।

১০. কোলাইটিস, গ্যাসট্রিক, আলসার, ডিসেন্ট্রি ও পাইলসের সমস্যায় কাজে দেয়।

১১. ঘন ঘন বমি হলে ডাবের পানি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

১২. ডাবের পানিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

১৩. কিডনীতে পাথর সমস্যা দূর করতে ডাবের পানি ঔষুধ হিসেবে কাজ করে।

চিনা বাদাম হার্টকে সুস্থ রাখে


পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে চিনাবাদাম সমৃদ্ধ ডায়েট রক্তের ড়্গতিকারক এলডিএল কোলেস্টোরেল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। শুধু তাই নয় চিনাবাদামের ফ্যাট ড়্গতিকারক ট্রাইগিস্নসারাইডের মাত্রাও হ্রাস করে কিন্তু রক্তের উপকারী এইচডিএল কোলেস্টোরেলের মাত্রা বৃদ্ধি করে না। পর্যবেড়্গক দলের প্রধান পেনি ক্রিস-ইথারটনের মতে চিনাবাদামের চর্বির পরিমাণ বেশি হলেও তা মনোআনসেচুরেটেড ধরনের চর্বি যা হার্টের জন্য ভালো। তবে যেহেতু বাদামের চর্বি অত্যধিক খাদ্য ক্যালরিসম্পন্ন তাই মেদবাহুল্য রোধে এর ব্যবহার সীমিত রাখা বাঞ্ছনীয়।

28 May, 2018

রসুন উকুনের চৌদ্দ গোষ্ঠী ধংস করে!


# উকুনের যন্ত্রণায় অস্থির হননি এমন নারী এ উপমহাদেশে পাওয়া যাবে না। উকুনের যন্ত্রণায় অনেকের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। অনেকে অনেক টাকা পয়সা খরচও করে ফেলেছেন। কিন্তু কিছুতেই মাথার চুল থেকে উকুন দূর করতে পারছেন না। তবে এবার সব বাদ দিয়ে একটা শেষ চেষ্টা করে দেখুন। ফল ভালো হলে বেশ কয়েকদিন ব্যবহার করুন। দেখবেন উকুনের চৌদ্দ গোষ্ঠী ধংস হয়ে গেছে।

# মাঝারি আকারের ২টি রসুন পাটায় বেটে বা ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর তাতে এক চামচ নারিকেল তেল, কয়েক ফোঁটা লেবু ও আদার রস মিশিয়ে নিন। এবার এ মিশ্রণটিকে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। প্রায় আধঘণ্টা রাখার পর উষ্ণ গরম দিয়ে চুল ধুয়ে ভালো করে আঁচড়ে নিন। এভাবে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ বার করলে ব্যবহার করলে আপনি সহজেই উকুনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তবে চুলে ময়লা হলেই উকুন বাসা বাঁধে। তাই সপ্তাহে অন্তত ২ বার শ্যাম্পু করুন। তাহলে উকুনের সমস্যা কোনোদিনই আর দেখতে পাবেন না।

স্তন ক্যানসার


অক্টোবর দুনিয়াজুড়ে স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস হিসেবে পরিচিত। স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে ম্যামোগ্রামের গুরুত্ব অনেক। লক্ষণ প্রকাশের বেশ আগেই স্তন ক্যানসার নির্ণয় করা যায় বলেই ‘স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাম’ বর্তমান সময়ের আলোচিত পরীক্ষা। কারণ, দ্রুত শনাক্ত করা গেলেই উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করে দ্রুত স্তন ক্যানসার নিরাময় করাও সম্ভব।

স্তনের একটি বিশেষ ধরনের স্বল্পমাত্রার এক্স-রেকে বলা হয় ম্যামোগ্রাম। ক্যানসারসহ নানা রোগ নির্ণয় করতে এ পরীক্ষা করা হয়। দুই ধরনের ম্যামোগ্রাম প্রচলিত। যেমন প্রচলিত (কনভেনশনাল) ফিল্ম স্ক্রিন ও ডিজিটাল ম্যামোগ্রাম, যার মধ্যে ডিজিটাল ম্যামোগ্রামই দ্রুত এবং প্রাথমিক পর্যায়ের স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে বেশ কার্যকর। হাত দিয়ে অনুভব করা যায় না এমন প্রাথমিক ক্যানসারও ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব।

আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির নির্দেশনা অনুযায়ী ৪০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারী, যাঁদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করানো দরকার। এমনটাই মত দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী সব নারীর প্রতি দুই বছরে অন্তত একবার ম্যামোগ্রাম করা উচিত। ৭০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের জন্যও চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী এ পরীক্ষা করা যেতে পারে।

ম্যামোগ্রাম করার সময় স্তনকে একটি প্লাস্টিক প্লেটের ওপর রাখা হয়। স্তনের উচ্চতা ও গঠন অনুযায়ী এই প্লেটের ওপরে স্তনকে বসানো হয়। দ্বিতীয় একটি প্লেটের মাধ্যমে ওপর থেকে স্তনকে চাপ দেওয়া হয়। এই চাপ প্রয়োগের কারণে স্তনকোষ প্লেট দুটির মাঝখানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে স্তনে সামান্যতম সমস্যা থাকলে সেটিও এক্স-রেতে ধরা পড়ে। প্রতিটি স্তনের জন্য ওপর থেকে দুটি এবং পাশ থেকে দুটি করে মোট চারটি এক্স-রে নেওয়া হয়। পুরো পরীক্ষায় প্রায় ১০ মিনিট সময় লাগে। পরীক্ষাটি রোগীর জন্য খানিকটা অস্বস্তিকর। এতে সামান্য ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করলে এবং পিরিয়ড শেষ হওয়ার ঠিক পরপরই এ পরীক্ষা করলে মোটামুটি ব্যথা ছাড়াই ম্যামোগ্রাম করা সম্ভব।

খুব স্বল্পসংখ্যক নারীর ম্যামোগ্রামের ফলাফল খারাপ হতে পারে। তবে যেকোনো সমস্যা চিহ্নিত হলেই তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, ধারাবাহিক ম্যামোগ্রাম প্রথম পরীক্ষার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান ও আগের ম্যামোগ্রামের সঙ্গে তুলনা করে স্তন ক্যানসারের সামান্যতম লক্ষণও দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হতে পারে।

ডায়াবেটিক নারীদের মা হওয়ার প্রস্তুতি


ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রজননক্ষম রোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হচ্ছেন নারী। গর্ভকালীন ২ থেকে ৫ শতাংশ নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। এঁদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ মা গর্ভজনিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন এবং ১২ দশমিক ৫ শতাংশ মা গর্ভধারণের আগে থেকেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন।

যেসব ডায়াবেটিক নারী সন্তান ধারণ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত সতর্কতা ও সঠিক পূর্বপ্রস্তুতি। কেননা, ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা যেমন রেটিনা-কিডনি-স্নায়ু-রক্তনালির রোগ গর্ভকালীন জটিলতর হতে পারে। যাঁদের শর্করা নিয়ন্ত্রিত নয়, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন গর্ভকালীন জটিলতার ঝুঁকি বেশি। যেমন: গর্ভপাত, প্রি-একলাম্পসিয়া, মেয়াদের আগেই প্রসব ইত্যাদি। মায়ের রক্তে উচ্চ শর্করা গর্ভের শিশুর বিভিন্ন ক্ষতি ঘটাতে পারে, যেমন: গর্ভে মৃত্যু, বিকলাঙ্গতা, স্থূলতা, প্রসবকালীন বিভিন্ন আঘাত ইত্যাদি।



ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের প্রস্তুতি কমপক্ষে তিন মাস আগে শুরু করা জরুরি।



মানসিক প্রস্তুতি

সন্তান ধারণের পরিকল্পনার সময়ই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রত্যেক মা এবং তাঁর পরিবারের সবার বিস্তারিত ও সঠিকভাবে জেনে নেওয়া উচিত যে কীভাবে ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ একে অপরকে প্রভাবিত করে, কী কী জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং তা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কী।



সঠিক খাদ্যাভ্যাস

সন্তান ধারণের আগে থেকেই শর্করা নিয়ন্ত্রণে সুষম কিন্তু পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন। গর্ভধারণ পরিকল্পনা শুরু থেকে গর্ভকালীন ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ মিলিগ্রাম ফলিত অ্যাসিড ট্যাবলেট সেবন করুন, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা প্রতিরোধে উপকারী। রক্তশূন্যতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।



সঠিক ওজন

গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে সঠিক ওজনে আসুন। যাঁদের বিএমআই ২৭ বা তার বেশি, তাঁদের ওজন কমানো জরুরি।



শর্করা নিয়ন্ত্রণ

বাড়িতে নিয়মিত খাওয়ার আগে ও দুই ঘণ্টা পর রক্তের শর্করা মাপুন এবং এগুলো যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ এবং ৮ দশমিক ৫-এর নিচে রাখুন। গড় এইচবিএ১সি ৬ দশমিক ৫-এর নিচে অর্জন করুন। শর্করার সঠিক মাত্রা অর্জন করতে গর্ভধারণের তিন মাস আগে থেকে মুখে খাওয়ার ওষুধ পরিবর্তন করে ইনসুলিন ব্যবহার শুরু করুন।



আনুষঙ্গিক ওষুধ

যাঁরা উচ্চরক্তচাপের জন্য থায়াজিড এআরবি-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করছেন, তাঁরা গর্ভধারণের আগেই এগুলো পাল্টে নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।

গর্ভধারণের সময় রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ খাওয়া যাবে না।



ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা

গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনার জটিলতা, কিডনি জটিলতা, বিভিন্ন রক্তনালির রোগ আছে কি না, তা শনাক্ত করে প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন। কেননা, গর্ভকালীন এসব বেড়ে যেতে পারে। ধূমপান বা অ্যালকহল অবশ্যই পরিহার করতে হবে।



অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ

কিডনির জটিলতা অর্থাৎ রক্তে ক্রিয়েটিনিন ২ মিলিগ্রাম বা তার বেশি, সিসিআর ৪৫ মিলি/মিনিট-এর কম, প্রস্রাবে আমিষের পরিমাণ দিনে ২ গ্রাম বা তার বেশি, রেটিনা জটিলতার সর্বোচ্চ ধাপ, রক্তনালিজনিত হূদেরাগ, এইচবিএ১সি ১০ শতাংশ বা তার বেশি—এই সব ক্ষেত্রে গর্ভধারণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ডায়াবেটিক নারীদের মা হওয়ার প্রস্তুতি


ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রজননক্ষম রোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হচ্ছেন নারী। গর্ভকালীন ২ থেকে ৫ শতাংশ নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। এঁদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ মা গর্ভজনিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন এবং ১২ দশমিক ৫ শতাংশ মা গর্ভধারণের আগে থেকেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন।

যেসব ডায়াবেটিক নারী সন্তান ধারণ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত সতর্কতা ও সঠিক পূর্বপ্রস্তুতি। কেননা, ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা যেমন রেটিনা-কিডনি-স্নায়ু-রক্তনালির রোগ গর্ভকালীন জটিলতর হতে পারে। যাঁদের শর্করা নিয়ন্ত্রিত নয়, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন গর্ভকালীন জটিলতার ঝুঁকি বেশি। যেমন: গর্ভপাত, প্রি-একলাম্পসিয়া, মেয়াদের আগেই প্রসব ইত্যাদি। মায়ের রক্তে উচ্চ শর্করা গর্ভের শিশুর বিভিন্ন ক্ষতি ঘটাতে পারে, যেমন: গর্ভে মৃত্যু, বিকলাঙ্গতা, স্থূলতা, প্রসবকালীন বিভিন্ন আঘাত ইত্যাদি।



ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের প্রস্তুতি কমপক্ষে তিন মাস আগে শুরু করা জরুরি।



মানসিক প্রস্তুতি

সন্তান ধারণের পরিকল্পনার সময়ই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রত্যেক মা এবং তাঁর পরিবারের সবার বিস্তারিত ও সঠিকভাবে জেনে নেওয়া উচিত যে কীভাবে ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ একে অপরকে প্রভাবিত করে, কী কী জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং তা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় কী।



সঠিক খাদ্যাভ্যাস

সন্তান ধারণের আগে থেকেই শর্করা নিয়ন্ত্রণে সুষম কিন্তু পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন। গর্ভধারণ পরিকল্পনা শুরু থেকে গর্ভকালীন ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ মিলিগ্রাম ফলিত অ্যাসিড ট্যাবলেট সেবন করুন, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা প্রতিরোধে উপকারী। রক্তশূন্যতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।



সঠিক ওজন

গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে সঠিক ওজনে আসুন। যাঁদের বিএমআই ২৭ বা তার বেশি, তাঁদের ওজন কমানো জরুরি।



শর্করা নিয়ন্ত্রণ

বাড়িতে নিয়মিত খাওয়ার আগে ও দুই ঘণ্টা পর রক্তের শর্করা মাপুন এবং এগুলো যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ এবং ৮ দশমিক ৫-এর নিচে রাখুন। গড় এইচবিএ১সি ৬ দশমিক ৫-এর নিচে অর্জন করুন। শর্করার সঠিক মাত্রা অর্জন করতে গর্ভধারণের তিন মাস আগে থেকে মুখে খাওয়ার ওষুধ পরিবর্তন করে ইনসুলিন ব্যবহার শুরু করুন।



আনুষঙ্গিক ওষুধ

যাঁরা উচ্চরক্তচাপের জন্য থায়াজিড এআরবি-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করছেন, তাঁরা গর্ভধারণের আগেই এগুলো পাল্টে নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।

গর্ভধারণের সময় রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ খাওয়া যাবে না।



ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা

গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনার জটিলতা, কিডনি জটিলতা, বিভিন্ন রক্তনালির রোগ আছে কি না, তা শনাক্ত করে প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন। কেননা, গর্ভকালীন এসব বেড়ে যেতে পারে। ধূমপান বা অ্যালকহল অবশ্যই পরিহার করতে হবে।



অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ

কিডনির জটিলতা অর্থাৎ রক্তে ক্রিয়েটিনিন ২ মিলিগ্রাম বা তার বেশি, সিসিআর ৪৫ মিলি/মিনিট-এর কম, প্রস্রাবে আমিষের পরিমাণ দিনে ২ গ্রাম বা তার বেশি, রেটিনা জটিলতার সর্বোচ্চ ধাপ, রক্তনালিজনিত হূদেরাগ, এইচবিএ১সি ১০ শতাংশ বা তার বেশি—এই সব ক্ষেত্রে গর্ভধারণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি


মায়ের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ গার্হস্থ্যঅর্থনীতি কলেজের ‘শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা বাসার।

তিনি বলেন, “একজন মা যে কেবল মাত্র গর্ভকালীন অবস্থায় নিজের যত্ন নেবেন তা নয়। স্তন্যদানেরসময় এমনকি সন্তান যখন একটু বেড়ে উঠে অর্থাৎ প্রাক-স্কুলগামী পর্যায়েও মাকে সন্তানের পাশাপাশি নিজের যত্ন নিতে হয়।”

অধিকাংশ মা এই বিষয়ে উদাসীন বলে ৩৫ বছরের পরেই তাদের হাড়ের ক্ষয়সহ নানারকমের শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়।



গর্ভাবস্থায় মায়ের যত্ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য মায়ের পুষ্টির চাহিদা, স্বাভাবিকের থেকে অনেক খানি বেড়ে যায়। তাই এই সময় মায়ের সঠিক পুষ্টি সরবারহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”

এ সময় মায়ের খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন রুমানা বাসার।

- গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন হরমনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ায় মাকে অতিরিক্ত খাবার ও ক্যালোরি দেওয়া প্রয়োজন। গর্ভকালীন শেষ তিন মাসে ভ্রূণের বর্ধন দ্রুত হয় বলে এই সময় সব ধরণের পুষ্টি উপাদান সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়।

- গর্ভের সন্তানের অঙ্গ ও গ্রন্থির গঠন, বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ গ্রাম অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের পরামর্শ দেন রুমানা বাসার।

- ভ্রুনের অস্থির গঠন ও দৃঢ়তার জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দরকার। গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি’র অভাব হলে মায়ের হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ভ্রুনের দেহে ব্যবহৃত হয়, এর ফলে মায়ের হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায় অর্থাৎ অস্টিওপোরোসিস দেখা দেয়। তাই মায়ের উচিত প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসজাতীয় খাবার গ্রহণ করা।

- গর্ভাবস্থায় মায়ের দেহে লৌহের চাহিদা বেড়ে যায়। লৌহের অভাবে মায়ের রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়।

- এইসময় মৌল বিপাক হাড় ও থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, তাই দৈনিক ১২৫ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন গ্রহণ করা উচিত।

- এছাড়াও এই সময়ে ভিটামিন এ, বি, থায়ামিন, রিভোফ্লাভিনসহ অন্যান্য ভিটামিনের চাহিদা বেড়ে যায় বলে জানান রুমানা বাসার।



গর্ভবতী মায়ের যে ধরণের খাদ্য খাওয়া প্রয়োজন

- এইসময় বাড়তি ক্যলরির চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম শস্যজাতীয় খাদ্য ও পাঁচ গ্রাম তেল খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে দৈনিক ১০ ক্যালরি, দ্বিতীয় তিন মাসে দৈনিক ৯০ ক্যালরি ও শেষ তিন মাসে দৈনিক ২০০ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত।

- গর্ভকালীন ৯ মাসে মায়ের প্রকৃত ওজন ১০ থেকে ১১ কেজি বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। তবে ওজন বেশি বৃদ্ধি পেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে জানান রুমানা বাসার।

- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের জন্য এক গ্লাস দুধ বা ৫০ গ্রাম ছোট মাছ, ২০০ গ্রাম সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন এ’র জন্য রঙিন সবজি, কলিজা, ভিটামিন ডি’র জন্য কড মাছের যকৃতের তেল, তৈলাক্ত মাছ খাওয়া উচিত।

- প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য ডিম, মাছ, মাংস; লৌহ ও ফলিক অ্যাসিডের জন্য কলিজা, সবুজ শাক, টমেটো; ভিটামিন সি’র জন্য আমলকী, পেয়ারা, লেবু খাওয়া জরুরি।

- গর্ভবতী মায়ের দেহে ও জরায়ুতে রসের পরিমাণ বেড়ে যায় তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা দরকার।

গর্ভাবস্থায় অনেকেই একবারে বেশি খেতে পারেন না। তাই তাদেরকে একটু পর পর খাওয়ার পরামর্শ দেন রুমানা বাসার।

স্তন্যদানকারী মায়ের যত্ন প্রসঙ্গের রুমানা বাসার বলেন, “গর্ভবতী মায়ের তুলনায় স্তন্যদানকারী মায়ের পুষ্টি চাহিদা বেশি। এই সময় মাকে প্রচুর ক্যালরি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে দিতে হবে।”

- দুধের প্রোটিন তৈরির জন্য মায়ের অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।

- মায়ের খাদ্যে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে মায়ের হাড়ের ক্যালসিয়াম দুধের ক্যালসিয়াম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফলে মা অসুস্থ হয়ে পরেন। তাই মায়েদের খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামজাতীয় খাবার রাখা উচিত।

- ৮৫০ মি.লি মায়ের দুধে ৩০০ মাইক্রোগ্রাম রেটিনল বা ভিটামিন এ থাকে। তাই প্রতিদিন অতিরিক্ত ৩০০ মি.গ্রা ভিটামিন এ খাওয়া প্রয়োজন।

- এই সময় মায়ের তরলজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়াও জরুরি।



স্তন্যদানকারী মায়ের যে ধরণের পুষ্টি প্রয়োজন

- খাদ্যের ৫টি বিভাগ থেকে নির্ধারিত খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

- দুধ ও দুধজাতীয় খাবার, যেমন- ক্ষীর, পায়েস, দই, মিষ্টি ইত্যাদি থেকে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও রিবোফ্লেভিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

- ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির জন্য সবুজ ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

- শিশুকে দুধ খাওয়ানোর আগে ও পরে মাকে তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। এতে মায়ের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

প্রাক-স্কুলগামী ও স্কুলগামী শিশুর মায়েদের যত্ন

রুমানা বাসার বলেন, “এইসময় শিশুরা খুব চঞ্চল হয়। মাকে প্রায় সারাক্ষণই শিশুর পেছনে ছোটাছুটি করতে হয়। তাই এই সময়ও মায়ের নিজের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।”

এই সময় মায়েদের ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন রুমানা বাসার। এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন। কারণ দুরন্ত সন্তানের পেছনে ছুটাছুটি করার জন্য দ্রুত হাড়ক্ষয় দেখা দিতে পারে মায়ের।

কেবলমাত্র সঠিক উপায়ে সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করার মাধ্যমে মায়ের অকাল বার্ধক্য কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি জানান।

কর্মজীবী মায়েদের ঘরে বাইরে সব কাজই সময়মতো ঠিকঠাক সামলে নিতে হয়। এর জন্য মাকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়। নানান কাজের ভীড়ে মা নিজের যত্ন নিতে পারেন না। এমনকি সঠিক পরিমাণ খাদ্যও গ্রহণ করতে পারেন না।

তাই কর্মজীবী মায়েদের কিছুক্ষণ পর পর খাবার খেতে হবে। অর্থাৎ অফিসে ও বাড়িতে কাজের ফাঁকে টিফিনের মতো করে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

যে সকল নারীরা একটু বেশি বয়সে মা হন তাদের ক্ষেত্রে খাবারের তালিকাটা কিছুটা ভিন্ন হয়। তাদের খাবারের তালিকায় প্রোটিনজাতীয় খাবার কিছুটা কম রাখার পরামর্শ দেন রুমানা বাসার। এছাড়াও তিনি ওই সকল মায়েদের সঠিকভাবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট মেনে চলতে বলেন।

প্রসূতি মায়ের বুক জ্বালাপোড়া


গর্ভাবস্থায় ১৭ থেকে ৪৫ শতাংশ নারী বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় আক্রান্ত হন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম সন্তান জন্মের সময় এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, আর গর্ভকালীন সময়ের প্রথম ও শেষ তিন মাসে থাকে সবচেয়ে প্রকট। গর্ভাবস্থায় রক্তে প্রচুর প্রোজেস্টেরন হরমোন পরিপাকতন্ত্রের পেশির চলন ধীর করে দেয়, একই সঙ্গে খাদ্যনালির ভাল্ব নমনীয়তাকেও বিনষ্ট করে। ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপর দিকে এসে খাদ্যনালিতে ঢুকে পড়ে এবং বুক জ্বলে। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই সমস্যা থেকে কিছুটা রেহাই মেলে। ভাজাপোড়া ও চর্বি তেলযুক্ত খাবার এবং ক্যাফেইন যথাসম্ভব পরিহার করুন। একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে খান। খাবার পরই না শুয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করা বা সোজা হয়ে বসে বই পড়া বা টিভি দেখা উচিত। মাথার নিচে একটু উঁচু বালিশ দিয়ে শোবেন। তার পরও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ন।

প্রসূতি মায়ের বুক জ্বালাপোড়া


গর্ভাবস্থায় ১৭ থেকে ৪৫ শতাংশ নারী বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় আক্রান্ত হন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম সন্তান জন্মের সময় এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, আর গর্ভকালীন সময়ের প্রথম ও শেষ তিন মাসে থাকে সবচেয়ে প্রকট। গর্ভাবস্থায় রক্তে প্রচুর প্রোজেস্টেরন হরমোন পরিপাকতন্ত্রের পেশির চলন ধীর করে দেয়, একই সঙ্গে খাদ্যনালির ভাল্ব নমনীয়তাকেও বিনষ্ট করে। ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপর দিকে এসে খাদ্যনালিতে ঢুকে পড়ে এবং বুক জ্বলে। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই সমস্যা থেকে কিছুটা রেহাই মেলে। ভাজাপোড়া ও চর্বি তেলযুক্ত খাবার এবং ক্যাফেইন যথাসম্ভব পরিহার করুন। একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে খান। খাবার পরই না শুয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করা বা সোজা হয়ে বসে বই পড়া বা টিভি দেখা উচিত। মাথার নিচে একটু উঁচু বালিশ দিয়ে শোবেন। তার পরও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ন।

প্রসূতি মায়ের বুক জ্বালাপোড়া


গর্ভাবস্থায় ১৭ থেকে ৪৫ শতাংশ নারী বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় আক্রান্ত হন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম সন্তান জন্মের সময় এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, আর গর্ভকালীন সময়ের প্রথম ও শেষ তিন মাসে থাকে সবচেয়ে প্রকট। গর্ভাবস্থায় রক্তে প্রচুর প্রোজেস্টেরন হরমোন পরিপাকতন্ত্রের পেশির চলন ধীর করে দেয়, একই সঙ্গে খাদ্যনালির ভাল্ব নমনীয়তাকেও বিনষ্ট করে। ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপর দিকে এসে খাদ্যনালিতে ঢুকে পড়ে এবং বুক জ্বলে। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই সমস্যা থেকে কিছুটা রেহাই মেলে। ভাজাপোড়া ও চর্বি তেলযুক্ত খাবার এবং ক্যাফেইন যথাসম্ভব পরিহার করুন। একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে খান। খাবার পরই না শুয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করা বা সোজা হয়ে বসে বই পড়া বা টিভি দেখা উচিত। মাথার নিচে একটু উঁচু বালিশ দিয়ে শোবেন। তার পরও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ন।

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...