30 May, 2018

গরমে সর্দি-কাশি ও তার প্রতিকার



গরমে সর্দি-কাশি ও তার প্রতিকার সর্দি-জ্বর বা কমন কোল্ড বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিচিত একটি রোগ। আমাদের দেশে সম্ভবত এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না যার বছরে অন্তত দু-একবার সর্দি-জ্বর হয়নি। রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ কিংবা অফিসপাড়ায় প্রায়ই হাঁচি দিতে থাকা অথবা নাকের পানি মুছতে থাকা লোকজন নজরে পড়ে। ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, চিকিৎসক-প্রকৌশলী আমরা কেউ এ রোগ থেকে মুক্ত নই। একবিংশ শতকেও এ বিরক্তিকর রোগটি থেকে আমরা রেহাই পাইনি।

কারণ :

সর্দি-জ্বর মানবদেহের ঊর্ধ্ব-শ্বাসনালীর ভাইরাসজনিত এক ধরনের সংক্রমণ। ইনফ্লুয়েনজা-এ, ইনফ্লুয়েনজা-বি, প্যারা-ইনফ্লুয়েনজা, এডেনোভাইরাস, রাইনোভাইরাস প্রভৃতি এ রোগের জন্য দায়ী। অনেক ক্ষেত্রে এর সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন ঘটতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেশি মাত্রায় দেখা যায়। একটানা বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা এবং এক ঘরে অনেক লোক গাদাগাদি করে বসবাস করলে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন লোকদেরও এ রোগের ঝুঁকি বেশি। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়।

লক্ষণ :

লক্ষণ দেখেই এ রোগ নির্ণয় করা যায়। সাধারণত কোনো ল্যাবরেটরি পরীক্ষার দরকার হয় না। সর্দি-জ্বর হলে প্রথমে নাকে ও গলায় অস্বস্তি লাগে, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। নাক বন্ধও থাকতে পারে। মাথা ব্যথা, মাথা ভারী বোধ হওয়া, শরীরে ব্যথা, হালকা জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইড-এর বেশি না), গলা ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। কখনো কখনো চোখ লাল হতে পারে এবং চোখ দিয়ে পানি ঝরতে পারে।

চিকিৎসা :

সর্দি-জ্বরের সময় বিশ্রামে থাকতে পারলে ভালো। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি, লেবুর রস, আনারস, পেয়ারা বা আমলকি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। ঠা-া জাতীয় খাবার (আইসক্রিম, ফ্রিজের পানি, কোল্ড ড্রিংকস) পরিহার করতে হবে। গরম চা বা কফি খাওয়া যেতে পারে। এ রোগের চিকিৎসায় সাধারণত এন্টিবায়োটিক-এর প্রয়োজন হয় না। জ্বর ও ব্যথানাশক প্যারাসিটামল এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ কয়েকদিন খেলেই এ রোগ সেরে যায়। তবে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উপযুক্ত এন্টিবয়োটিক সঠিক মাত্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে টনসিলের বা ফুসফুসের সংক্রমন হওয়ার ঝুঁকি থাকে বিধায় রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শমত ওষুধ খাওয়ানো উচিত।

প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা :

সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্যদের সংগে বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় বা নাকের পানি মুছতে রুমাল বা টিসু পেপার ব্যবহার করতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত রুমাল বা গামছা অন্যরা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লেষ্মা ফেলা যাবে না। স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করতে হবে এবং বিরূপ পরিবেশে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

No comments:

Post a Comment

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...