30 March, 2018

সমার্থক শব্দ


১/ অগ্নি ---------- অনল, পাবক, আগুন, দহন, সর্বভূক, শিখা, হুতাশন, বহ্নি, বৈশ্বানর, কৃশানু, বিভাবসু, সর্বশুচি ।
২/ অন্ধকার ----------- আঁধার, তমঃ, তমিস্রা, তিমির, আন্ধার, তমস্র, তম ।
৩/ অতনু -------- মদন, অনঙ্গ, কাম, কন্দর্প ।
৪/ আকাশ ------------------আসমান, অম্বর, গগন, নভোঃ, নভোমণ্ডল, খগ, ব্যোম, অন্তরীক্ষ ।
৫/ আলোক --------------------আলো, জ্যোতি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা।
৬/ ইচ্ছা ------------------ আকাঙ্ক্ষা, অভিলাষ, অভিরুচি, অভিপ্রায়, আগ্রহ, স্পৃহা, কামনা, বাসনা, বাঞ্চা, ঈপ্সা, ঈহা ।
৭/কপাল ------------------------------ ললাট , ভাগ্য, অদৃষ্ট, নিয়তি, অলিক ।
৮/ কোকিল ------------------ পরভৃত, পিক, বসন্তদূত ।
৯/ কন্যা ------------------ মেয়ে, দুহিতা, দুলালী, আত্মজা, নন্দিনী, পুত্রী, সূতা, তনয়া ।
১০/ গরু ------------------- গো, গাভী, ধেনু ।
১১/ঘোড়া -------------------- অশ্ব, ঘোটক, তুরগ, বাজি, হয়, তুরঙ্গ, তুরঙ্গম ।
১২/ঘর ---------------------- গৃহ, আলয়, নিবাস, আবাস, আশ্রয়, নিলয়, নিকেতন, ভবন, সদন, বাড়ি, বাটী, বাসস্থান।
১৩/ চক্ষু -------------------- চোখ, আঁখি, অক্ষি, লোচন, নেত্র, নয়ন, দর্শনেন্দ্রিয় ।
১৪/ চন্দ্র ------------------------ চাঁদ, চন্দ্রমা, শশী, শশধর, শশাঙ্ক, শুধাংশু, হিমাংশু, সুধাকর, সুধাংশু, হিমাংশু, সোম, বিধু, ইন্দু, নিশাকর, নিশাকান্ত, মৃগাঙ্ক, রজনীকান্ত ।
১৫/ চুল -------- ---- চিকুর, কুন্তল, কেশ, অলক ।
১৬/ জননী ----------------মা, মাতা, প্রসূতি, গর্ভধারিণী, জন্মদাত্রী ।
১৭/ দিন --------- দিবা, দিবস, দিনমান ।
১৮/ দেবতা -------------- অমর, দেব, সুর, ত্রিদশ, অমর, অজর, ঠাকুর ।
১৯/দ্বন্দ্ব ---------------------- বিরোধ, ঝগড়া, কলহ, বিবাদ, যুদ্ধ ।
২০/তীর ----------------------- কূল, তট, পাড়, সৈকত, পুলিন, ধার, কিনারা ।
২১/নারী -------------------- রমণী, কামিনী, মহিলা, স্ত্রী, অবলা, স্ত্রীলোক, অঙ্গনা, ভাসিনী, ললনা, কান্তা, পত্নী, সীমন্তনী ।
২২/ নদী ------------ তটিনী, তরঙ্গিনী, প্রবাহিনী, শৈবালিনী, স্রোতস্বতী, স্রোতস্বিনী, গাঙ, স্বরিৎ, নির্ঝরিনী, কল্লোলিনী ।
২৩/নৌকা --------------- নাও, তরণী, জলযান, তরী।
২৪/ পণ্ডিত ----------- বিদ্বান, জ্ঞানী, বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ ।
২৫/পদ্ম ---------- কমল , উৎপল, সরোজ, পঙ্কজ, নলিন, শতদল,রাজীব, কোকনদ, কুবলয়, পুণ্ডরীক, অরবিন্দ, ইন্দীবর, পুষ্কর, তামরস, মৃণাল, সরসিজ, কুমুদ।
২৬/ পৃথিবী --------------- ধরা, ধরিত্রী, ধরণী, অবনী, মেদিনী, পৃ, পৃথ্বী, ভূ, বসুধা, বসুন্ধরা, জাহান, জগৎ, দুনিয়া, ভূবন, বিশ্ব, ভূ-মণ্ডল ।
২৭/পর্বত --------------- শৈল, গিরি, পাহাড়, অচল, অটল, অদ্রি, চূড়া, ভূধর, নগ, শৃঙ্গী, শৃঙ্গধর, মহীধর, মহীন্দ্র ।
২৮/পানি ------------------ জল, বারি, সলিল, উদক, অম্বু, নীর, পয়ঃ, তোয়, অপ, জীবন, পানীয় ।
২৯/ পুত্র ----------------------- তনয়, সুত, আত্মজ, ছেলে, নন্দন ।
৩০/ পত্নী ---------------------- জায়া, ভার্যা, ভামিনী, স্ত্রী, অর্ধাঙ্গী, সহধর্মিণী, জীবন সাথী, বউ, দারা, বনিতা, কলত্র, গৃহিণী, গিন্নী ।
৩১/পাখি ----------------------- পক্ষী, খেচর, বিহগ, বিহঙ্গ, বিহঙ্গম, পতত্রী, খগ, অণ্ডজ, শকুন্ত, দ্বিজ ।
৩২/ফুল ------------ পুষ্প, কুসুম, প্রসূন, রঙ্গন ।
৩৩/বৃক্ষ ------------ গাছ, শাখী, বিটপী, অটবি, দ্রুম, মহীরূহ, তরু, পাদপ ।
৩৪/ বন --------------- অরণ্য, জঙ্গল, কানন, বিপিণ, কুঞ্জ, কান্তার, অটবি, বনানী, গহন ।
৩৫/ বায়ু -------------- বাতাস, অনিল, পবন, হাওয়া, সমীর, সমীরণ, মারুত, গন্ধবহ ।
৩৬/ বিদ্যুত ------------- বিজলী, ত্বড়িৎ, ক্ষণপ্রভা, সৌদামিনী, চপলা, চঞ্চলা, দামিনী, অচিরপ্রভা, শম্পা।
৩৭/মানুষ -------------- মানব, মনুষ্য, লোক, জন, নৃ, নর ।
৩৮/ মাটি ------------ ক্ষিতি, মৃত্তিকা ।
৩৯/মেঘ -------------- জলধর, জীমৃত, বারিদ, নীরদ, পয়োদ, ঘন, অম্বুদ, তায়দ, পয়োধর, বলাহক, তোয়ধর ।
৪০/ রাজা --------- নরপতি, নৃপতি, ভূপতি, বাদশাহ ।
৪১/ রাত ------------- রজনী, নিশি, যামিনী , রাত্রি ।
৪২/শরীর ------------- দেহ, বিগ্রহ, কায়, কলেবর, গা, গাত্র, তনু, অঙ্গ, অবয়ব।
৪৩/ সর্প ------------- সাপ, অহি, আশীবিষ, উরহ, নাগ, নাগিনী, ভুজঙ্গ, ভুজগ, ভুজঙ্গম, সরীসৃপ, ফণী, ফণাধর, বিষধর, বায়ুভুক ।
৪৪/ স্ত্রী ------------------ পত্নী, জায়া, সহধর্মিণী, ভার্যা, বেগম, বিবি, বধূ ।
৪৫/ স্বর্ণ ------------- সোনা, কনক, কাঞ্চন, সুবর্ণ, হেম, হিরণ্য, হিরণ ।
৪৬/স্বর্গ -------------- দেবলোক, দ্যুলোক, বেহেশত, সুরলোক, দ্যু, ত্রিদশালয়, ইন্দ্রালয়, দিব্যলোক, জান্নাত ।
৪৭/ সাহসী ---------- নির্ভীক, অভীক ।
৪৮/ সাগর --------- সমুদ্র, সিন্ধু, অর্ণব, জলধি , জলনিধি, বারিধি, পারাবার, রত্নাকর, বরুণ, দরিয়া, পারাবার, বারীন্দ্র, পাথার, বারীশ, পয়োনিধি, তোয়ধি, বারিনিধি, অম্বুধি ।
৪৯/ সূর্য -------- রবি, সবিতা, দিবাকর, দিনমনি, দিননাথ, দিবাবসু, অর্ক, ভানু, তপন, আদিত্য, ভাস্কর, মার্তণ্ড, অংশু, প্রভাকর, কিরণমালী, অরুণ, মিহির, পুষা, সূর, মিত্র, দিনপতি, বালকি, অর্ষমা ।
৫০/হাত ------------- কর, বাহু, ভুজ, হস্ত, পাণি ।
৫১/ হস্তী -------------- হাতি, করী, দন্তী, মাতঙ্গ, গজ, ঐরাবত, দ্বিপ, দ্বিরদ, বারণ, কুঞ্জর, নাগ ।
৫২/ লাল ---------- লোহিত , রক্তবর্ণ।
৫৩/ঢেউ ---------- তরঙ্গ, ঊর্মি, লহরী, বীচি, মওজ।

বিপরীত শব্দ



অকর্মক --- সকর্মক ।
অজ্ঞ ----- প্রাজ্ঞ ।
অধিত্যকা -----উপত্যকা ।
অক্ষম ---- সক্ষম ।
অতিকায় ---- ক্ষুদ্রকায়।
অনন্ত ---- সান্ত ।
অগ্র ---- পশ্চাৎ ।
অতিবৃষ্টি ---- অনাবৃষ্টি ।
অনুকূল ---- প্রতিকূল ।
অগ্রজ --- অনুজ ।
অতীত --- – ভবিষ্যত ।
অনুগ্রহ ------ –নিগ্রহ ।
অণু ---- বৃহৎ ।
অদ্য ---- কল্য ।
অচল ---- – সচল ।
অধঃ ---- – ঊর্ধ্ব ।
অনুরক্ত --- – বিরক্ত ।
অচলায়তন --- সচলায়তন ।
অধম ---- উত্তম ।
অনুরাগ ---বিরাগ ।
অচেতন --- সচেতন ।
অধমর্ণ --- উত্তমর্ণ ।
অনুলোম --- প্রতিলোম ।
অলীক --- – সত্য ।
অশন ---- অনশন ।
অস্তগামী --- উদীয়মান ।
অল্পপ্রাণ --- –মহাপ্রাণ ।
অসীম --- সসীম
অস্তি --- – নাস্তি/নেতি ।
অহিংস ---- – সহিংস ।

আকর্ষণ --- – বিকর্ষণ ।
আধার --- – আধেয় ।
আরোহণ --- – অবরোহণ ।
আকুঞ্চন --- – প্রসারণ ।
আপদ --- সম্পদ ।
আর্দ্র --- –শুষ্ক ।
আগত --- অনাগত।
আবশ্যক --- –অনাবশ্যক ।
আর্য --- – অনার্য ।
আগমন ---- প্রস্থান ।
আবশ্যিক ---- – ঐচ্ছিক ।
আলস্য – শ্রম।
আবাদি ---- – অনাবাদি ।
আজ –---কাল ।
আলো –----- আঁধার ।
আত্ম --- - পর ।
আবাহন -বির্সজন ।
আশীর্বাদ --- অভিশাপ ।
আত্মীয় –--- অনাত্মীয় ।
আবির্ভাব –-- তিরোভাব ।
আসক্ত –--- নিরাসক্ত ।
আদি –--অন্ত ।
আবির্ভূত ---- তিরোহিত ।
আসামি –--- ফরিয়াদী ।
আদিম – --- অন্তিম ।
আবিল –--- অনাবিল।
আস্তিক –--- নাস্তিক ।
আদ্য ---- – অন্ত্য ।
আবৃত ---উন্মুক্ত।
আস্থা---অনাস্থা ।

ইচ্ছুক – --- অনিচ্ছুক।
ইদানীন্তন --- -তদানীন্তন ।
ইহকাল --- - পরকাল ।
ইতর --- ভদ্র ।
ইষ্ট --- –অনিষ্ট ।
ইহলোক–--- পরলোক ।
ইতিবাচক --- – নেতিবাচক।
ইহলৌকিক --- পারলৌকিক ।

ঈদৃশ -- তাদৃশ।
ঈষৎ --- অধিক ।

উক্ত --- অনুক্ত ।
উত্তরায়ণ --- দক্ষিণায়ন।
উন্নত --- অবনত ।
উগ্র --- সৌম্য ।
উত্তাপ --- শৈত্য ।
উন্নতি ---- অবনতি ।
উচ্চ ---নীচ ।
উত্তীর্ণ ---অনুত্তীর্ণ ।
উন্নীত -- - অবনমিত ।
উজান --- ভাটি ।
উত্থান -- পতন ।
উন্নয়ন --- অবনমন ।
উঠতি--- পড়তি ।
উত্থিত--- পতিত ।
উন্মুখ ---- বিমুখ ।
উঠন্ত --- পড়ন্ত ।
উদয় --- অস্ত ।
উন্মীলন -- --নিমীলন ।
উৎকৃষ্ট --- নিকৃষ্ট ।
উদ্ধত --- বিনীত/ নম্র ।
উপকর্ষ---অপকর্ষ।
উৎকর্ষ --- অপকর্ষ ।
উপচয় ---- অপচয় ।
উৎরাই --- চড়াই ।
উদ্যত ---বিরত ।
উপকারী --- অপকারী ।
উত্তম --- অধম ।
উদ্যম -- বিরাম ।
উপকারিতা --- অপকারিতা ।
উত্তমর্ণ ---অধমর্ণ ।
উর্বর --- ঊষর।
উপচিকীর্ষা --- অপচিকীর্ষা ।
উত্তর -- দক্ষিণ ।
উষ্ণ --- শীতল ।
-- পুনরায় আরম্ভ ।

ঊর্ধ্ব -- --অধঃ ।
ঊর্ধ্বগতি --- অধোগতি ।
ঊষা --- সন্ধ্যা ।
ঊর্ধ্বতন ---- অধস্তন ।
ঊর্ধ্বগামী ---অধোগামী ।

ঋজু -- বক্র ।

একান্ন -- পৃথগান্ন ।
একাল -- সেকাল ।
একূল -- ওকূল।
এখন -- তখন ।

ঐকমত্য -- মতভেদ ।
ঐশ্বর্য --দারিদ্র্য ।
ঐহিক -- পারত্রিক ।
ঐক্য --অনৈক্য ।
ও ।
ওস্তাদ -- সারগেদ ।

ঔদার্য --- কার্পণ্য ।
ঔচিত্য -- অনৌচিত্য ।
ঔজ্জল্য --ম্লানিমা ।
ঔদ্ধত্য --বিনয় ।

কচি ---ঝুনা ।
কুৎসিত -- সুন্দর ।
কৃশাঙ্গী -- স্থূলাঙ্গী ।
কদাচার -- সদাচার ।
কুফল --- সুফল
কৃষ্ণ --- শুভ্র/গৌর।
কনিষ্ঠ --জ্যেষ্ঠ ।
কুবুদ্ধি --সুবুদ্ধি ।
কৃষ্ণাঙ্গ -- শ্বেতাঙ্গ ।
কপট --সরল/অকপট ।
কুমে -- সুমে ।
কোমল --কঠিন ।
কপটতা ---সরলতা ।
ক্রন্দন ---- হাস্য ।
কু --- সু ।
কর্মঠ -- অকর্মণ্য ।
কুলীন -- অন্ত্যজ ।
ক্রোধ -- প্রীতি ।
কল্পনা -- বাস্তব ।
কুশাসন -- সুশাসন ।
ক্ষণস্থায়ী - -- দীর্ঘস্থায়ী ।
কাপু -- বীরপু।
কুশিক্ষা --- সুশিক্ষা ।
ক্ষীপ্র -- মন্থর ।
কুঞ্চন ---প্রসারণ।
কৃতজ্ঞ ---অকৃতজ্ঞ ।
ক্ষীয়মান ---বর্ধমান ।
কুটিল - -- সরল ।
কৃপণ -- বদান্য ।
কুৎসা --- প্রশংসা ।
কৃশ -- স্থূল ।

খ্যাত -- - অখ্যাত ।
খুচরা --- পাইকারি ।
খেদ -- হর্ষ ।
খ্যাতি -- অখ্যাতি ।

গঞ্জনা ---প্রশংসা ।
গূঢ় -- ব্যক্ত ।
গৌণ -- মুখ্য ।
গতি -- স্থিতি ।
গুপ্ত --প্রকাশিত ।
গৌরব --- অগৌরব ।
গদ্য --পদ্য ।
গৃহী --সন্ন্যাসী ।
গ্রামীণ -- নাগরিক ।
গণ্য --- নগণ্য
গ্রহন ----- বর্জন ।
গ্রাম্য -- শহরে
গরল-- অমৃত ।
গৃহীত --বর্জিত ।
গ্রাহ্য --- অগ্রাহ্য ।
গরিমা-- লঘিমা ।
গেঁয়ো --শহুরে ।
গরিষ্ঠ -- লঘিষ্ঠ ।
গোপন -- প্রকাশ ।

ঘাটতি -- বাড়তি।
ঘাত-- প্রতিঘাত ।
ঘৃণা--শ্রদ্ধা ।

চক্ষুষ্মান -- অন্ধ।
চল--- অচল ।
চিরায়ত -- সাময়িক ।
চঞ্চল --স্থির ।
চলিত --অচলিত/সাধু ।
চ্যূত -- অচ্যূত
চড়াই - উৎরাই ।
চিন্তনীয় --- অচিন্ত্য/অচিন্তনীয়।
চতুর -- নির্বোধ ।
চুনোপুটি --রুই - কাতলা ।

ছটফটে -- শান্ত ।

জঙ্গম -- স্থাবর ।
জল ---- স্থল
জোড় -- বিজোড় ।
জড় -- চেতন ।
জলে -- স্থলে ।
জোয়ার -- ভাটা ।
জটিল -- সরল ।
জলচর -- স্থলচর।
জ্যোৎস্না -- অমাবস্যা ।
জনাকীর্ণ -- জনবিরল ।
জাতীয়-- বিজাতীয় ।
জ্ঞাত --- অজ্ঞাত ।
জন্ম --- মৃত্যু ।
জাল -- আসল ।
জ্ঞানী -- মূর্খ ।
জিন্দা --- মুর্দা
জমা -- খরচ ।
জ্ঞেয় -- অজ্ঞেয়।
জ্যেষ্ঠা-- কনিষ্ঠা ।
জরিমানা -- বকশিশ ।
জীবন -- মরণ ।
জাগ্রত - --ঘুমন্ত/সুপ্ত।
জীবিত -- মৃত ।
জাগরণ - --সুপ্ত। ।
জৈব -- অজৈব।

ঠুনকো--মজবুত ।

ডুবন্ত -- ভাসন্ত ।

তীক্ষ্ণ -- স্থুল ।
তদীয় --- মদীয়
তন্ময় -- মন্ময় ।
তীব্র -- - মৃদু ।
তিমির ---- আলোক ।
তস্কর -- সাধু ।
তিরস্কার-- - পুরস্কার ।
তুষ্ট - -- রুষ্ট ।
তাপ -- --শৈত্য ।
তীর্যক -- -- ঋজু ।
ত্বরিত -- - - শ্লথ ।

দক্ষিণ -- -- বাম ।
দুর্জন ---- সুজন
দৃঢ় -- - শিথিল ।
দণ্ড -- পুরস্কার।
দুর্দিন -- সুদিন ।
দৃশ্য -- অদৃশ্য ।
দাতা -- -- গ্রহীতা ।
দুর্নাম-- -- সুনাম ।
দেনা --- -- পাওনা ।
দুর্বুদ্ধি ---- সুবুদ্ধি ।
দিবস -- রজনী ।
দোস্ত --- -- দুশমন ।
দেশী -- বিদেশী ।
দীর্ঘ -- হ্রস্ব।
দুর্লভ -- -- সুলভ ।
দুর্ভাগ্য -- সৌভাগ্য।
দিবা ---- রাত্রি ।
দুর্মতি -- অপরকে দিয়ে কাজ উদ্ধার ।
দুর্ভাগ্য -- সৌভাগ্য ।
দোষ -- গুন ।
দোষী ---- নির্দোষ
দিবাকর -- নিশাকর ।
দুর্মতি --সুমতি ।
দীর্ঘায়ু -- স্বল্পায়ু ।
দুষ্কৃতি -- সুকৃতি ।
দ্বিধা -- নির্দ্বিধা/ দ্বিধাহীন ।
দুঃশীল --- সুশীল
দুষ্ট -- শিষ্ট ।
দ্বৈত --অদ্বৈত ।
দুরন্ত -- শান্ত ।
দূর -- নিকট ।
দ্যুলোক-- ভূলোক ।
দুর্গম --সুগম ।
দ্রুত -- মন্থর ।

ধনাত্মক -- ঋণাত্মক ।
ধারালো -- ভোঁতা ।
ধূর্ত -- বোকা ।
ধনী -- নির্ধন/দরিদ্র ।
ধার্মিক-- অধার্মিক ।
ধৃত -- মুক্ত ।
ধবল -- শ্যামল ।

নিন্দা -- প্রশংসা ।
নতুন -- পুরাতন ।
নির্মল -- মলিন ।
নির্লজ্জ -- সলজ্জ ।
নিয়োগ -- বরখাস্ত ।
নিরক্ষর-- স্বাক্ষর ।
নবীন --- প্রবীণ ।
নিশ্চয়তা--- অনিশ্চয়তা।
নিরবলম্ব -- স্বাবলম্ব ।
নর --নারী ।
নশ্বর -- অবিনশ্বর
নীরস -- সরস ।
নিরস্ত্র --সশস্ত্র ।
নিশ্চেষ্ট -- সচেষ্ট।
নৈঃশব্দ্য -- সশব্দ ।
নাবালক -- সাবালক ।
নিরাকার -- সাকার ।
নিঃশ্বাস-- প্রশ্বাস ।
নির্দয় --- সদয়
নৈতিকতা -- অনৈতিকতা।
নিকৃষ্ট -- উৎকৃষ্ট ।
নির্দিষ্ট -- অনির্দিষ্ট ।
নৈসর্গিক -- কৃত্তিম।
নিত্য -- অনিত্য ।
নির্দেশক -- অনির্দেশক ।
ন্যায় --- অন্যায় ।
ন্যূন -- অধিক ।

পক্ষ -- বিপক্ষ ।
পূণ্যবান -- পূণ্যহীন ।
প্রফুল্ল -- ম্লান ।
পটু -- অপটু ।
পুরস্কার -- তিরস্কার।
পণ্ডিত --- মূর্খ
পুষ্ট-- ক্ষীণ।
পতন -- উত্থান ।
প্রবেশ --- প্রস্থান ।
পূর্ণিমা-- অমাবস্যা ।
প্রভু --ভৃত্য ।
পথ --বিপথ ।
পূর্ব -- পশ্চিম ।
পবিত্র --অপবিত্র ।
পূর্ববর্তী -- পরবর্তী ।
প্রসন্ন -- বিষণ্ণ।
পরকীয় --স্বকীয় ।
পূর্বসূরী -- উত্তরসূরী ।
প্রসারণ -- সংকোচন/আকুঞ্চন ।
পরার্থ -- স্বার্থ ।
পূর্বাহ্ণ --- অপরাহ্ণ ।
প্রাচ্য -- প্রতীচ্য ।
পরিকল্পিত -- অপরিকল্পিত ।
প্রকাশিত --অপ্রকাশিত ।
প্রাচীন --অর্বাচীন।
পরিশোধিত-- অপরিশোধিত ।
প্রকাশ --গোপন ।
প্রতিকূল--অনুকূল ।
পরিশ্রমী --- অলস ।
প্রকাশ্যে -- নেপথ্যে ।
প্রায়শ -- কদাচিৎ ।
পাপ -- পূণ্য ।
প্রজ্জলন -- নির্বাপণ ।
প্রারম্ভ -- শেষ ।
পাপী -- নিষ্পাপ ।
প্রত্যক্ষ -- পরোক্ষ ।
প্রীতিকর -- অপ্রীতিকর ।
পার্থিব--অপার্থিব।
প্রধান -- অপ্রধান ।

ফলন্ত/ফলনশীল --- নিস্ফলা ।
ফলবান -- নিস্ফল ।
ফাঁপা --- নিরেট ।

বক্তা --- শ্রোতা ।
বাধ্য--অবাধ্য ।
বন্দনা -- গঞ্জনা ।
বিফল -- সফল ।
বামপন্থী-- ডানপন্থী ।
বন্দী -- মুক্ত ।
বিফলতা -- সফলতা ।
বাস্তব -- কল্পনা ।
বদ্ধ-- মুক্ত ।
বিবাদ -- সুবাদ ।
বাল্য -- বার্ধক্য ।
বিয়োগান্ত-- মিলনান্ত ।
বন্ধন ---মুক্তি
বাহুল্য -- স্বল্পতা ।
বন্ধুর -- মসৃণ ।
বাহ্য -- আভ্যন্তর ।
বিলম্বিত -- দ্রুত ।
বিরহ --মিলন ।
বয়োজ্যেষ্ঠ -- বয়োজ্যেষ্ঠ ।
বন্য -- - পোষা ।
বিজেতা -- বিজিত ।
বিদ্বান --মূর্খ ।
বিষাদ --আনন্দ/ হর্ষ ।
বরখাস্ত-- বহাল ।
বিধর্মী -- স্বধর্মী।
বিস্তৃত -- সংক্ষিপ্ত ।
বিনয় --ঔদ্ধত্য।
ব্যক্ত --গুপ্ত ।
বর্ধিষ্ণু --- ক্ষয়িষ্ণু ।
ব্যর্থ --- সার্থক ।
বহির্ভূত--- অন্তর্ভূক্ত ।
বিপন্ন ---- নিরাপদ ।
ব্যর্থতা --- সার্থকতা ।
বিপন্নতা --- নিরাপত্তা ।
বাদি --- বিবাদি ।
ব্যষ্টি --- সমষ্টি ।

ভক্তি----- অভক্তি ।
ভূত --- ভবিষ্যত ।
ভূমিকা ---- উপসংহার ।
ভাসা --- ডোবা ।
ভীরু --- নির্ভীক ।
ভোগ --- ত্যাগ ।
ভেদ --- অভেদ ।

অমঙ্গল --- অমঙ্গল ।
মহাত্মা --- দুরাত্মা ।
মঞ্জুর ----- নামঞ্জুর
মানানসই --- বেমানান ।
মতৈক্য --- মতানৈক্য ।
মান্য --- অমান্য ।
মসৃণ --- খসখসে ।
মিতব্যয়ী --- অমিতব্যয়ী ।
মূর্ত --- বিমূর্ত ।
মহৎ -- নীচ ।
মৌখিক --- লিখিত ।
মিথ্যা --- সত্য ।
মৌলিক --- যৌগিক ।
মহাজন --- খাতক ।
মিলন --- বিরহ ।

যত্ন --- অযত্ন ।
যুদ্ধ --- শান্তি ।
যৌথ --- একক ।
যশ --- অপযশ ।
যোগ ------ বিয়োগ ।
যৌবন --- বার্ধক্য ।
যুক্ত --- বিযুক্ত ।
যোগ্য --- অযোগ্য ।
যোজন ---- বিয়োজন ।
যুগল --- একক ।

রক্ষক --- ভক্ষক ।
রোদ ---- বৃষ্টি ।
রমণীয় ---- কুৎসিত ।
রাজি ---- নারাজ ।
রুগ্ন ---- সুস্থ ।
রোগ ---- নিরোগ ।
রুদ্ধ --- মুক্ত ।
রসিক ---- বেরসিক ।
রাজা ---- প্রজা।
রুষ্ট --- তুষ্ট ।

লাজুক ---- নির্লজ্জ ।
লেন --- দেন ।
লঘু --- গুরু ।
লেজ ---- মাথা ।
লৌকিক ---- অলৌকিক ।
লেনা --- দেনা ।
লব --- হর ।

শিষ্ট ---- অশিষ্ট ।
শঠ --- সাধু ।
শুষ্ক --- সিক্ত ।
শিষ্য --- গুরু ।
শঠতা --- সাধুতা ।
শূণ্য --- পূর্ণ ।
শায়িত --- উত্থিত ।
শীত ---- গ্রীষ্ম ।
শোভন----- অশোভন ।
শয়ন ---- উত্থান।
শীতল ---- উষ্ণ ।
শ্বাস---- প্রশ্বাস ।
শারীরিক ---- মানসিক ।
শুক্লপক্ষ ---- কৃষ্ণপক্ষ ।
শ্রী---- বিশ্রী ।
শুচি ---- অশুচি ।
শালীন ---- অশালীন ।
শ্লীল ---- অশ্লীল ।
শাসক ---- শাসিত ।
শুদ্ধ --- অশুদ্ধ ।
শিক্ষক --- ছাত্র ।
শুভ্র --- কৃষ্ণ ।

সংকীর্ণ --- প্রশস্ত ।
সদৃশ ----- বিসদৃশ ।
সাহসিকতা ---- ভীরুতা ।
সংকোচন --- প্রসারণ ।
সিক্ত --- শুষ্ক ।
সংকুচিত --- প্রসারিত ।
সধবা --- বিধবা ।
সন্ধি --- বিগ্রহ ।
সুকৃতি --- দুষ্কৃতি ।
সংক্ষিপ্ত --- বিস্তৃত ।
সন্নিধান --- ব্যবধান ।
সুগম ---- দুর্গম ।
সংক্ষেপ --- বিস্তার ।
সুন্দর --- কুৎসিত ।
সফল ---- বিফল ।
সংক্ষেপিত --- বিস্তারিত ।
সুদর্শন --- কুদর্শন ।
সবল --- দুর্বল ।
সংগত --- অসংগত ।
সবাক --- নির্বাক ।
সুধা --- জাগ্রত ।
সংযত --- অসংযত ।
সমতল --- অসমতল ।
সুপ্ত --- জাগ্রত ।
সংযুক্ত --- বিযুক্ত ।
সমষ্টি --- ব্যষ্টি ।
সুশীল ---- দুঃশীল ।
সংযোজন --- বিয়োজন ।
সমাপ্ত --- আরম্ভ ।
সুশ্রী --- কুশ্রী ।
সংশ্লিষ্ট --- বিশ্লিষ্ট ।
সম্পদ --- বিপদ ।
সুষম --- অসম ।
সংশ্লেষণ --- বিশ্লেষণ ।
সম্প্রসারণ --- সংকোচন ।
সুসহ ---- দুঃসহ ।
সংহত --- বিভক্ত ।
সম্মুখ --- পশ্চাত ।
সুস্থ ---- দুস্থ ।
সংহতি --- বিভক্তি ।
সরব --- নিরব ।
সূক্ষ্ম --- স্থূল ।
সকর্মক ---- অকর্মক ।
সকাল --- বিকাল ।
সৃষ্টি --- ধ্বংস।
সরল --- জটিল ।
সশস্ত্র ---নিরস্ত্র ।
সৌখিন --- পেশাদার ।
সক্রিয় --- নিষ্ক্রিয় ।
সস্তা --- আক্রা ।
সৌভাগ্যবান ---দুর্ভাগ্যবান/ভাগ্যহত ।
সক্ষম---অক্ষম।
সসীম --- অসীম ।
স্তুতি--- নিন্দা ।
সচল --- নিশ্চল ।
সহযোগ--- অসহযোগ ।
স্তাবক ---নিন্দুক ।
সচেতন --- অসচেতন ।
সহিষ্ণু--- অসহিষ্ণু ।
স্থাবর--- জঙ্গম ।
সচেষ্ট ---নিশ্চেষ্ট ।
সাঁঝ ---সকাল ।
স্থলভাগ ---জলভাগ ।
সচ্চরিত্র --- দুশ্চরিত্র।
স্নিগ্ধ---রুক্ষ ।
সাকার ---নিরাকার ।
সজাগ ---নিদ্রিত ।
স্বনামী ---বেনামী ।
সজ্জন ---দুর্জন ।
সাদৃশ্য --- বৈসাদৃশ্য ।
স্বর্গ --- নরক ।
সজ্ঞান --- অজ্ঞান ।
সাফল্য ---ব্যর্থতা ।
স্বাতন্ত্র্য---সাধারণত্ব ।
সঞ্চয়--- অপচয় ।
স্বাধীন ---পরাধীন ।
সাবালক --- নাবালক ।
সতী --- অসতী ।
স্বার্থপর ---পরার্থপর ।
সত্বর --- ধীর ।
সাম্য --- বৈষম্য ।
স্মৃতি ---বিস্মৃতি ।
সুয়ো--- দুয়ো ।
সদাচার--- কদাচার ।
সাহসী --- ভীরু ।
সদর ---অন্দর ।
সার্থক--- নিরর্থক।

হরণ--- পূরণ।
হাল --- সাবেক।
হৃদ্যতা--- শত্রুতা।
হ্রস্ব ---দীর্ঘ ।
হালকা --- ভারি ।
হাজির ---গরহাজির ।
হিত --- অহিত ।
হ্রাস--- বৃদ্ধি ।
হার ---জিত ।
হিসেবি ---বেহিসেবি ।

বাগধারা



অকাল কুষ্মাণ্ড--- অপদার্থ, অকেজো ।
অষ্টরম্ভা----- ফাঁকি ।
অক্কা পাওয়া ----- মারা যাওয়া ।
অথৈ জলে পড়া ---- খুব বিপদে পড়া ।
অগাধ জলের মাছ ---- সুচতুর ব্যক্তি ।
অকূল পাথার ---- ভীষণ বিপদ ।
অর্ধচন্দ্র ---- গলা ধাক্কা ।
অন্ধকারে ঢিল মারা ---- আন্দাজে কাজ করা ।
অন্ধের যষ্ঠি ---- একমাত্র অবলম্বন ।
অমৃতে অরুচি --- দামি জিনিসের প্রতি বিতৃষ্ণা ।
অন্ধের নড়ি–একমাত্র অবলম্বন ।
অগস্ত্য যাত্রা –চির দিনের জন্য প্রস্থান ।
অগ্নিশর্মা ---- নিরতিশয় ক্রুদ্ধ।
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী ---- সামান্য বিদ্যার অহংকার।
অগ্নিপরীক্ষা –কঠিন পরীক্ষা ।
অনধিকার চর্চা – সীমার বাইরে পদক্ষেপ ।
অগ্নিশর্মা – ক্ষিপ্ত ।
অরণ্যে রোদন --- নিষ্ফল আবেদন ।
অগাধ জলের মাছ ---- খুব চালাক ।
অহি-নকুল সম্বন্ধ --- ভীষণ শত্রুতা।
অমাবস্যার চাঁদ--- দুর্লভ বস্তু।
অন্ধকার দেখা --- দিশেহারা হয়ে পড়া ।
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট --- লোভে ক্ষতি ।
অদৃষ্টের পরিহাস – বিধির বিড়ম্বনা, ভাগ্যের নিষ্ঠুরতা ।
অনুরোধে ঢেঁকি গেলা ---- অনুরোধে দুরূহ কাজ সম্পন্ন করতে সম্মতি দেয়া ।

আকাশ কুসুম –অসম্ভব কল্পনা ।
আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া --- দুর্লভ বস্তু প্রাপ্তি।
আকাশ পাতাল – প্রভেদ, প্রচুর ব্যবধান ।
আদায় কাঁচকলায় – শত্রুতা ।
আকাশ থেকে পড়া –অপ্রত্যাশিত ।
আদা জল খেয়ে লাগা – প্রাণপণ চেষ্টা করা।
আকাশের চাঁদ – আকাঙ্ক্ষিত বস্তু ।
আক্কেল গুড়ুম – হতবুদ্ধি, স্তম্ভিত ।
আগুন নিয়ে খেলা – ভয়ঙ্কর বিপদ ।
আমড়া কাঠের ঢেঁকি --- অপদার্থ ।
আগুনে ঘি ঢালা –রাগ বাড়ানো ।
আকাশ ভেঙে পড়া --- ভীষণ বিপদে পড়া ।
আঙুল ফুলে কলাগাছ –অপ্রত্যাশিত ধনলাভ ।
আমতা আমতা করা – ইতস্তত করা, দ্বিধা করা ।
আঠার আনা – সমূহ সম্ভাবনা ।
আটকপালে – হতভাগ্য ।
আঠার মাসের বছর– দীর্ঘসূত্রিতা ।
আহ্লাদে আটখানা – খুব খুশি ।
আলালের ঘরের দুলাল –অতি আদরে নষ্ট পুত্র ।
আক্কেল সেলামি – নির্বুদ্ধিতার দণ্ড ।
আকাশে তোলা --- অতিরিক্ত প্রশংসা করা ।
আষাঢ়ে গল্প - আজগুবি কেচ্ছা ।

ইঁদুর কপালে – নিতান্ত মন্দভাগ্য ।
ইলশে গুঁড়ি –গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি।
ইঁচড়ে পাকা – অকালপক্ব ।
ইতর বিশেষ –পার্থক্য ।

উত্তম মধ্যম –প্রহার ।
উড়ে এসে জুড়ে বসা – অনধিকারীর অধিকার ।
উড়নচন্ডী –অমিতব্যয়ী ।
উজানে কৈ –সহজলভ্য ।
উভয় সংকট – দুই দিকেই বিপদ ।
ঊনপাঁজুড়ে --- অপদার্থ ।
উলু বনে মুক্ত ছড়ানো --- অপাত্রে/অস্থানে মূল্যবান দ্রব্য প্রদান।
উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে – একের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো ।
উড়ো চিঠি – বেনামি পত্র ।
ঊনপঞ্চাশ বায়ু - পাগলামি ।

এক ক্ষুরে মাথা মুড়ানো --- একই স্বভাবের ।
একাদশে বৃহস্পতি –সৌভাগ্যের বিষয় ।
এক চোখা –পক্ষপাতিত্ব, পক্ষপাতদুষ্ট।
এক বনে দুই বাঘ –প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী।
এক মাঘে শীত যায় না --- বিপদ এক বারই আসে না, বার বার আসে ।
এলোপাতাড়ি --- বিশৃঙ্খলা ।
এলাহি কাণ্ড -- বিরাট আয়োজন ।
এসপার ওসপার--- মীমাংসা।

ওজন বুঝে চলা --- অবস্থা বুঝে চলা।
ওষুধে ধরা --- প্রার্থিত ফল পাওয়া।

কচুকাটা করা --- নির্মমভাবে ধ্বংস করা।
কেঁচো খুড়তে সাপ --- বিপদজনক পরিস্থিতি ।
কচু পোড়া -- অখাদ্য ।
কই মাছের প্রাণ --- যা সহজে মরে না ।
কচ্ছপের কামড় --- যা সহজে ছাড়ে না।
কুঁড়ের বাদশা -- খুব অলস ।
কলম পেশা --- কেরানিগিরি।
কাক ভূষণ্ডী -- দীর্ঘজীবী ।
কলুর বলদ --- এক টানা খাটুনি ।
কেতা দুরস্ত --- পরিপাটি ।
কথার কথা --- গুরুত্বহীন কথা ।
কাছা আলগা ---- অসাবধান।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব --- অসম্ভব বস্তু ।
কাঁচা পয়সা --- নগদ উপার্জন ।
কপাল ফেরা -- সৌভাগ্য লাভ ।
কাকতাল --- আকস্মিক/দৈব যোগাযোগজাত ঘটনা ।
কূপমণ্ডুক --- সীমাবদ্ধ জ্ঞান সম্পন্ন, ঘরকুনো ।
কত ধানে কত চাল --- হিসেব করে চলা ।
কাঠের পুতুল --- নির্জীব, অসার ।
কড়ায় গণ্ডায় ----- পুরোপুরি।
কথায় চিঁড়ে ভেজা --- ফাঁকা বুলিতে কার্যসাধন ।
কান খাড়া করা --- মনোযোগী হওয়া ।
কান পাতলা --- সহজেই বিশ্বাসপ্রবণ ।
কানকাটা --- নির্লজ্জ ।
কাছা ঢিলা -- অসাবধান ।
কান ভাঙানো --- কুপরামর্শ দান ।
কুল কাঠের আগুন --- তীব্র জ্বালা ।
কান ভারি করা --- কুপরামর্শ দান ।
কেঁচো খুড়তে সাপ --- সামান্য থেকে অসামান্য পরিস্থিতি ।
কাপুড়ে বাবু -- বাহ্যিক সাজ ।
কেউ কেটা --- সামান্য ।
কেঁচে গণ্ডুষ -- পুনরায় আরম্ভ ।

খয়ের খাঁ -- চাটুকার ।
খণ্ড প্রলয় --- ভীষণ ব্যাপার ।
খাল কেটে কুমির আনা --- বিপদ ডেকে আনা ।

গড্ডলিকা প্রবাহ --- অন্ধ অনুকরণ ।
গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো --- কোনো দায়িত্ব গ্রহণ না করা ।
গদাই লস্করি চাল -- অতি ধীর গতি, আলসেমি ।
গুরু মারা বিদ্যা --- যার কাছে শিক্ষা তারই উপর প্রয়োগ ।
গণেশ উল্টানো -- উঠে যাওয়া, ফেল মারা ।
গোকুলের ষাঁড় -- স্বেচ্ছাচারী লোক ।
গলগ্রহ -- পরের বোঝা স্বরূপ থাকা ।
গোঁয়ার গোবিন্দ -- নির্বোধ অথচ হঠকারী ।
গরিবের ঘোড়া রোগ -- অবস্থার অতিরিক্ত অন্যায় ইচ্ছা ।
গোল্লায় যাওয়া -- নষ্ট হওয়া, অধঃপাতে যাওয়া ।
গরমা গরম -- টাটকা ।
গোবর গণেশ -- মূর্খ ।
গরজ বড় বালাই -- প্রয়োজনে গুরুত্ব ।
গোলক ধাঁধা -- দিশেহারা ।
গরু খোঁজা -- তন্ন তন্ন করে খোঁজা ।
গোঁফ খেজুরে -- নিতান্ত অলস ।
গরু মেরে জুতা দান --- বড় ক্ষতি করে সামান্য ক্ষতিপূরণ ।
গোড়ায় গলদ-- শুরুতে ভুল ।
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল -- প্রাপ্তির আগেই আয়োজন ।
গৌরচন্দ্রিকা -- ভূমিকা ।
গা ঢাকা দেওয়া -- আত্মগোপন ।
গৌরীসেনের টাকা --- বেহিসাবী অর্থ ।
গায়ে কাঁটা দেওয়া -- রোমাঞ্চিত হওয়া ।
গুড়ে বালি -- আশায় নৈরাশ্য ।
গাছে তুলে মই কাড়া -- সাহায্যের আশা দিয়ে সাহায্য না করা ।

ঘোড়ার ডিম --- অবাস্তব।
ঘাটের মরা -- অতি বৃদ্ধ ।
ঘোড়া রোগ -- সাধ্যের অতিরিক্ত সাধ ।
ঘটিরাম -- আনাড়ি হাকিম ।
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া -- মধ্যবর্তীকে অতিক্রম করে কাজ করা ।
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো -- নিজ খরচে পরের বেগার খাটা ।
ঘোড়ার ঘাস কাটা -- অকাজে সময় নষ্ট করা ।
ঘর ভাঙানো --- সংসার বিনষ্ট করা ।

চুনকালি দেওয়া --- কলঙ্ক ।
চক্ষুদান করা -- চুরি করা ।
চশমখোর -- চক্ষুলজ্জাহীন ।
চক্ষুলজ্জা -- সংকোচ।
চর্বিত চর্বণ-- পুনরাবৃত্তি ।
চোখের বালি -- চক্ষুশূল ।
চাঁদের হাট -- আনন্দের প্রাচুর্য ।
চোখের পর্দা -- লজ্জা।
চিনির বলদ --- ভারবাহী কিন্তু ফল লাভের অংশীদার নয় ।
চোখ কপালে তোলা -- বিস্মিত হওয়া ।
চামচিকের লাথি --- নগণ্য ব্যক্তির কটূক্তি ।
চোখ টাটানো --- ঈর্ষা করা ।
চিনির পুতুল --- শ্রমকাতর ।
চোখে ধুলো দেওয়া -- প্রতারণা করা ।
চুঁনোপুটি -- নগণ্য ।
চোখের চামড়া -- লজ্জা ।
চুলোয় যাওয়া -- ধ্বংস ।
চোখের মণি -- প্রিয়।
চিনে/ছিনে জোঁক --- (নাছোড়বান্দা)

ছ কড়া ন কড়া -- সস্তা দর ।
ছক্কা পাঞ্জা -- বড় বড় কথা বলা ।
ছা পোষা -- অত্যন্ত গরিব।
ছিঁচ কাদুনে --- অল্পই কাঁদে এমন ।
ছাই ফেলতে ভাঙা কুলা -- সামান্য কাজের জন্য অপদার্থ ব্যক্তি ।
ছিনিমিনি খেলা -- নষ্ট করা ।
ছেলের হাতের মোয়া -- সহজলভ্য বস্তু ।
ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা -- নগণ্য স্বার্থে দুর্নাম অর্জন।

জগাখিচুড়ি পাকানো -- গোলমাল বাধানো ।
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ -- উভয় সঙ্কট ।
জিলাপির প্যাঁচ -- কুটিলতা ।

ঝড়ো কাক -- বিপর্যস্ত ।
ঝাঁকের কৈ -- এক দলভুক্ত ।
ঝিকে মেরে বউকে বোঝানো -- একজনের মাধ্যমে দিয়ে অন্যজনকে শিক্ষাদান ।
ঝোপ বুঝে কোপ মারা -- সুযোগ মত কাজ করা ।

টনক নড়া -- চৈতন্যোদয় হওয়া ।
টেকে গোঁজা -- আত্মসাৎ করা ।
টাকার কুমির -- ধনী ব্যক্তি ।
টুপভুজঙ্গ -- নেশায় বিভোর ।

ঠাঁট বজায় রাখা -- অভাব চাপা রাখা ।
ঠুঁটো জগন্নাথ -- অকর্মণ্য ।
ঠোঁট কাটা -- বেহায়া ।
ঠেলার নাম বাবাজি -- চাপে পড়ে কাবু।
ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় -- আদর্শহীনতার প্রাচুর্য ।

ডুমুরের ফুল -- দুর্লভ বস্তু ।
ডান হাতের ব্যাপার --খাওয়া .
ডাকের সুন্দরী -- খুবই সুন্দরী ।
ডামাডোল -- গণ্ডগোল ।
বাঁ হাতের ব্যাপার- ঘুষ গ্রহণ ।

ঢাক ঢাক গুড় গুড় -- গোপন রাখার চেষ্টা ।
ঢেঁকির কচকচি -- বিরক্তিকর কথা ।
ঢাকের কাঠি -- মোসাহেব, চাটুকার ।
ঢি ঢি পড়া -- কলঙ্ক প্রচার হওয়া।
ঢাকের বাঁয়া -- অপ্রয়োজনীয় ।
ঢিমে তেতালা -- মন্থর ।

তালকানা -- বেতাল হওয়া ।
তুলসী বনের বাঘ -- ভণ্ড ।
তাসের ঘর -- ক্ষণস্থায়ী ।
তুলা ধুনা করা -- দুর্দশাগ্রস্ত করা ।
তামার বিষ -- অর্থের কু প্রভাব ।
তুষের আগুন-- দীর্ঘস্থায়ী ও দুঃসহ যন্ত্রণা।
তালপাতার সেপাই -- ক্ষীণজীবী ।
তীর্থের কাক -- প্রতীক্ষারত ।
তিলকে তাল করা -- বাড়িয়ে বলা ।
ভূশণ্ডির কাক- দীর্ঘজীবী ।

থ বনে যাওয়া -- স্তম্ভিত হওয়া ।
থরহরি কম্প -- ভীতির আতিশয্যে কাঁপা ।

দা-কুমড়া -- ভীষণ শত্রুতা ।
দেঁতো হাসি -- কৃত্তিম হাসি ।
দহরম মহরম -- ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ।
দাদ নেওয়া -- প্রতিশোধ নেয়া ।
দুধে ভাতে থাকা -- খেয়ে-পড়ে সুখে থাকা ।
দুকান কাটা -- বেহায়া ।
দিনকে রাত করা -- সত্যকে মিথ্যা করা ।
দুধের মাছি -- সু সময়ের বন্ধু ।
দু মুখো সাপ -- দু জনকে দু রকম কথা বলে পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টিকারী।

ধরাকে সরা জ্ঞান করা -- সকলকে তুচ্ছ ভাবা ।
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে -- সত্য গোপন থাকে না ।
ধড়া-চূড়া -- সাজপোশাক।
ধর্মের ষাঁড় -- যথেচ্ছাচারী ।
ধরি মাছ না ছুঁই পানি -- কৌশলে কার্যাদ্ধার ।

ননীর পুতুল -- শ্রমবিমুখ ।
নামকাটা সেপাই -- কর্মচ্যূত ব্যক্তি ।
নয় ছয় -- অপচয় ।
নথ নাড়া -- গর্ব করা ।
নাটের গুরু -- মূল নায়ক ।
নেই আঁকড়া -- একগুঁয়ে ।
নাড়ি নক্ষত্র -- সব তথ্য ।
নগদ নারায়ণ -- কাঁচা টাকা/ নগদ অর্থ ।
নিমক হারাম -- অকৃতজ্ঞ ।
নেপোয় মারে দই -- ধূর্ত লোকের ফল প্রাপ্তি ।
নিমরাজি -- প্রায় রাজি ।

পটল তোলা -- মারা যাওয়া।
পুঁটি মাছের প্রাণ -- যা সহজে মরে যায় ।
পগার পার -- আয়ত্তের বাইরে পালিয়ে যাওয়া ।
পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটা -- বড় রকমের চুরি ।
পটের বিবি -- সুসজ্জিত ।
পুকুর চুরি -- পুরোনো প্রসঙ্গে কটাক্ষ করা ।
পত্রপাঠ -- অবিলম্বে/সঙ্গে সঙ্গে ।
পোঁ ধরা -- অন্যকে দেখে একই কাজ করা ।
পালের গোদা -- দলপতি ।
পোয়া বারো -- অতিরিক্ত সৌভাগ্য ।
পাকা ধানে মই -- অনিষ্ট করা ।
প্রমাদ গোণা -- ভীত হওয়া ।
পাখিপড়া করা -- বার বার শেখানো ।
পায়াভারি -- অহঙ্কার ।
পাততাড়ি গুটানো -- জিনিসপত্র গোটানো ।
পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা -- অপরকে দিয়ে কাজ উদ্ধার ।
পাথরে পাঁচ কিল -- সৌভাগ্য ।
পরের ধনে পোদ্দারি -- অন্যের অর্থের যথেচ্ছ ব্যয় ।

ফপর দালালি -- অতিরিক্ত চালবাজি ।
ফুলের ঘাঁয়ে মূর্ছা যাওয়া -- অল্পে কাতর ।
ফুলবাবু -- বিলাসী ।
ফোড়ন দেওয়া -- টিপ্পনী কাটা ।
ফেউ লাগা -- আঠার মতো লেগে থাকা ।

বক ধার্মিক -- ভণ্ড সাধু ।
বাজখাঁই গলা -- অত্যন্ত কর্কশ ও উঁচু গলা ।
বইয়ের পোকা -- খুব পড়ুয়া ।
বাড়া ভাতে ছাই -- অনিষ্ট করা ।
বগল বাজানো -- আনন্দ প্রকাশ করা ।
বায়াত্তরে ধরা -- বার্ধক্যের কারণে কাণ্ডজ্ঞানহীন ।
বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো -- সহজে খুলে যায় এমন ।
বিদ্যার জাহাজ -- অতিশয় পণ্ডিত ।
বসন্তের কোকিল -- সুদিনের বন্ধু ।
বিশ বাঁও জলে -- সাফল্যের অতীত ।
বিড়াল তপস্বী -- ভণ্ড সাধু ।
বিনা মেঘে বজ্রপাত -- আকস্মিক বিপদ ।
বর্ণচোরা আম -- কপট ব্যক্তি ।
বাঘের দুধ -- দুঃসাধ্য বস্তু ।
বরাক্ষরে -- অলক্ষুণে ।
বাঘের চোখ -- দুঃসাধ্য বস্তু ।
বাজারে কাটা -- বিক্রি হওয়া ।
বিসমিল্লায় গলদ -- শুরুতেই ভুল ।
বালির বাঁধ -- অস্থায়ী বস্তু ।
বুদ্ধির ঢেঁকি -- নিরেট মূর্খ ।
ব্যাঙের আধুলি -- সামান্য সম্পদ ।
বাঁধা গৎ -- নির্দিষ্ট আচরণ ।
ব্যাঙের সর্দি -- অসম্ভব ঘটনা ।

ভরাডুবি -- সর্বনাশ ।
ভাঁড়ে ভবানী -- নিঃস্ব অবস্থা ।
ভস্মে ঘি ঢালা -- নিষ্ফল কাজ ।
ভূতের ব্যাগার -- অযথা শ্রম ।
ভাদ্র মাসের তিল -- প্রচণ্ড কিল ।
ভূঁই ফোড় -- হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ।
ভানুমতীর খেল -- অবিশ্বাস্য ব্যাপার ।
ভিজে বিড়াল -- কপটাচারী ।
ভাল্লুকের জ্বর -- ক্ষণস্থায়ী জ্বর ।
ভূশন্ডির কাক -- দীর্ঘজীবী ।

মগের মুল্লুক -- অরাজক দেশ ।
মুখে দুধের গন্ধ -- অতি কম বয়স ।
মণিকাঞ্চন যোগ -- উপযুক্ত মিলন ।
মুস্কিল আসান -- নিষ্কৃতি ।
মন না মতি -- অস্থির মানব মন ।
মেনি মুখো -- লাজুক ।
মড়াকান্না -- উচ্চকণ্ঠে শোক প্রকাশ ।
মাকাল ফল -- অন্তঃসারশূণ্য ।
মাছের মায়ের পুত্রশোক -- কপট বেদনাবোধ ।
মিছরির ছুরি -- মুখে মধু অন্তরে বিষ ।
মশা মারতে কামান দাগা -- সামান্য কাজে বিরাট আয়োজন ।
মুখে ফুল চন্দন পড়া -- শুভ সংবাদের জন্য ধন্যবাদ ।
মুখ চুন হওয়া -- লজ্জায় ম্লান হওয়া ।
মেছো হাটা -- তুচ্ছ বিষয়ে মুখরিত ।

যক্ষের ধন -- কৃপণের ধন ।
যমের অরুচি -- যে সহজে মরে না ।

রত্নপ্রসবিনী -- সুযোগ্য সন্তানের মা ।
রাবণের গুষ্টি -- বড় পরিবার ।
রাঘব বোয়াল -- সর্বগ্রাসী ক্ষমতাবান ব্যক্তি ।
রায় বাঘিনী -- উগ্র স্বভাবের নারী ।
রাবণের চিতা -- চির অশান্তি ।
রাজ যোটক -- উপযুক্ত মিলন ।
রাশভারি -- গম্ভীর প্রকৃতির ।
রাহুর দশা -- দুঃসময় ।
রাই কুড়িয়ে বেল -- ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে বৃহৎ ।
রুই-কাতলা -- পদস্থ বা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ।
রাজা উজির মারা -- আড়ম্বরপূর্ণ গালগল্প ।

লগন চাঁদ -- ভাগ্যবান ।
লাল বাতি জ্বালা -- দেউলিয়া হওয়া ।
ললাটের লিখন -- অমোঘ ভাগ্য ।
লাল হয়ে যাওয়া -- ধনশালী হওয়া।
লাল পানি -- মদ ।
লেজে গোবরে -- বিশৃঙ্খলা ।
লেফাফা দুরস্ত -- বাইরের ঠাট বজার রেখে চলেন যিনি ।

শকুনি মামা -- কুটিল ব্যক্তি ।
শিরে সংক্রান্তি -- বিপদ মাথার ওপর ।
শাঁখের করাত -- দুই দিকেই বিপদ ।
শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়া -- আলস্যে সময় নষ্ট করা ।
শাপে বর -- অনিষ্টে ইষ্ট লাভ ।
শরতের শিশির -- সুসময়ের বন্ধু ।
শিকায় ওঠা -- স্থগিত ।
শত্রুর মুখে ছাই -- কুদৃষ্টি এড়ানো ।
শিঙে ফোঁকা -- মরা ।
শ্রীঘর -- কারাগার ।
শিবরাত্রির সলতে -- একমাত্র সন্তান ।

ষোল কলা -- পুরোপুরি ।

সবুরে মেওয়া ফলে -- ধৈর্যসুফল মিলে ।
সাতেও নয়, পাঁচেও নয় -- নির্লিপ্ত ।
সরফরাজি করা -- অযোগ্য ব্যক্তির চালাকি ।
সাপের পাঁচ পা দেখা -- অহঙ্কারী হওয়া ।
সাত খুন মাফ -- অত্যধিক প্রশ্রয় ।
সোনায় সোহাগা -- উপযুক্ত মিলন ।
সাত সতের -- নানা রকমের ।
সাক্ষী গোপাল -- নিষ্ক্রিয় দর্শক ।
সাপের ছুঁচো গেলা -- অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে কাজ করা ।
সখাত সলিলে -- ঘোর বিপদে পড়া ।
সেয়ানে সেয়ানে -- চালাকে চালাকে ।
সব শেয়ালের এক রা -- ঐকমত্য ।
সবে ধন নীলমণি -- একমাত্র অবলম্বন ।

হাটে হাঁড়ি ভাঙা -- গোপন কথা প্রকাশ করা ।
হাতের পাঁচ -- শেষ সম্বল ।
হাতটান -- চুরির অভ্যাস ।
হীরার ধার -- অতি তীক্ষ্ণবুদ্ধি ।
হ য ব র ল -- বিশৃঙ্খলা ।
হোমরা চোমরা -- গণ্যমান্য ব্যক্তি ।
হাতুড়ে বদ্যি -- আনাড়ি চিকিৎসক ।
হিতে বিপরীত -- উল্টো ফল ।
হরিলুট -- অপচয় ।
হাড় হদ্দ -- নাড়ি নক্ষত্র/সব তথ্য ।
হস্তীমূর্খ -- বুদ্ধিতে স্থূল ।
হালে পানি পাওয়া -- সুবিধা করা ।
হাড়ে দুর্বা গজানো -- হাড়ে দুর্বা গজানো ।
হাড় হাভাতে -- মন্দভাগ্য ।
হরি ঘোষের গোয়াল -- বহু অপদার্থ ব্যক্তির সমাবেশ ।

বাক্য সংকচোন বা এক কথায় প্রকাশ


১/ অকালে পেকেছে যে- অকালপক্ক্ব ।
২/ অক্ষির সম্মুখে বর্তমান- প্রত্যক্ষ ।
৩/ অভিজ্ঞতার অভাব আছে যার- অনভিজ্ঞ ।
৪/ অহংকার নেই যার- নিরহংকার ।
৫/অশ্বের ডাক- হ্রেষা ।
৬/অতি কর্মনিপুণ ব্যক্তি- দক্ষ ।
৭/অনুসন্ধান করবার ইচ্ছা- অনুসন্ধিৎসা ।
৮/ অনুসন্ধান করতে ইচ্ছুক যে- অনুসন্ধিৎসু ।
৯/ অপকার করবার ইচ্ছা- অপচিকীর্ষা ।
১০/ অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে কাজ করে যে- অবিমৃষ্যকারী ।
১১/অতি শীতও নয়, অতি উষ্ণও নয়- নাতিশীতোষ্ণ ।
১২/অবশ্য হবে/ঘটবে যা- অবশ্যম্ভাবী ।
১৩/অতি দীর্ঘ নয় যা- নাতিদীর্ঘ ।
১৪/ অতিক্রম করা যায় না যা- অনতিক্রমনীয়/অনতিক্রম্য ।
১৫/ যা সহজে অতিক্রম করা যায় না- দুরতিক্রমনীয়/দুরতিক্রম্য ।
১৬/অগ্রে জন্মেছে যে- অগ্রজ।
১৭/অনুতে/পশ্চাতে/পরে জন্মেছে যে- অনুজ ।
১৮/অরিকে দমন করে যে- অরিন্দম ।
১৯/ অন্য উপায় নেই যার- অনন্যোপায় ।
২০/ অনেকের মাঝে একজন- অন্যতম ।
২১/ অন্য গাছের ওপর জন্মে যে গাছ- পরগাছা ।
২২/আচারে নিষ্ঠা আছে যার- আচারনিষ্ঠ ।
২৩/ আপনাকে কেন্দ্র করে চিন্তা যার- আত্মকেন্দ্রীক ।
২৪/ আকাশে চরে যে- খেচর ।
২৫/আকাশে গমন করে যে- বিহগ, বিহঙ্গ ।
২৬/ আপনার রং লুকায় যে/যার প্রকৃত বর্ণ ধরা যায় না- বর্ণচোরা।
২৭/ আয় অনুসারে ব্যয় করে যে- মিতব্যয়ী ।
২৮/ আপনাকে পণ্ডিত মনে করে যে- পণ্ডিতম্মন্য ।
২৯/আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত- আদ্যন্ত ।
ইতিহাস রচনা করেন যিনি- ঐতিহাসিক ।
৩১/ ইতিহাস বিষয়ে অভিঞ্জ যিনি- ইতিহাসবেত্তা।
৩২/ ইন্দ্রকে জয় করেছে যে- ইন্দ্রজিৎ ।
৩৩/ইন্দ্রিয়কে জয় করেছে যে- জিতেন্দ্রিয়ি।
৩৪/ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস আছে যার- আস্তিক ।
৩৫/ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই যার- নাস্তিক ।
৩৬/ঈষৎ আমিষ/আঁষ গন্ধ যার- আঁষটে ।
৩৭/ উপকার করবার ইচ্ছা- উপচিকীর্ষা।
৩৮/উপকারীর উপকার স্বীকার করে যে- কৃতজ্ঞ।
৩৯/উপকারীর উপকার স্বীকার করে না যে- অকৃতজ্ঞ।
৪০/উপকারীর অপকার করে যে- কৃতঘ্ন।
৪১/একই সময়ে বর্তমান- সমসাময়িক।
৪২/একই মায়ের সন্তান- সহোদর ।
৪৩/এক থেকে আরম্ভ করে- একাদিক্রমে।
৪৪/ একই গুরুর শিষ্য- সতীর্থ।
৪৫/ কথায় বর্ণনা যায় না যা- অনির্বচনীয় ।
৪৬/কোনভাবেই নিবারণ করা যায় না যা- অনিবার্য।
৪৭/সহজে নিবারণ করা যায় না যা/কষ্টে নিবারণ করা যায় যা- দুর্নিবার ।
৪৮/ সহজে লাভ করা যায় না যা/কষ্টে লাভ করা যায় যা- দুর্লভ।
৪৯/কোন কিছুতেই ভয় নেই যার- নির্ভীক, অকুতোভয় ।
৫০/ক্ষমার যোগ্য- ক্ষমার্হ ।
৫১/ কেউ জানতে না পারে এমনভাবে- অজ্ঞাতসারে
৫২/ গোপন করার ইচ্ছা- জুগুপ্সা ।
৫৩/ চক্ষুর সম্মুখে সংঘটিত- চাক্ষুষ ।
৫৪/চৈত্র মাসের ফসল- চৈতালি ।
৫৫/জীবিত থেকেও যে মৃত- জীবন্মৃত ।
৫৬/জানার ইচ্ছা- জিজ্ঞাসা ।
৫৭/জানতে ইচ্ছুক- জিজ্ঞাসু ।
৫৮/ জ্বল জ্বল করছে যা- জাজ্বল্যমান ।
৫৯/ জয় করার ইচ্ছা- জিগীষা ।
৬০/ জয় করতে ইচ্ছুক- জিগীষু ।
৬১/জানু পর্যন্ত লম্বিত- আজানুলম্বিত।
৬২/ তল স্পর্শ করা যায় না যার- অতলস্পর্শী ।
৬৩/ তীর ছোঁড়ে যে- তীরন্দাজ।
৬৪/ দিনে যে একবার আহার করে- একাহারী ।
৬৫/ দীপ্তি পাচ্ছে যা- দীপ্যমান ।
৬৬/ নষ্ট হওয়াই স্বভাব যার- নশ্বর ।
৬৭/নদী মেখলা যে দেশের- নদীমেখলা ।
৬৮/ নৌকা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে যে- নাবিক ।
৬৯/নিজেকে যে বড়ো মনে করে- হামবড়া ।
৭০/ নূপুরের ধ্বনি- নিক্কণ ।
৭১/ পা থেকে মাথা পর্যন্ত- আপাদমস্তক ।
৭২/ প্রিয় বাক্য বলে যে নারী- প্রিয়ংবদা।
৭৩/ পূর্বজন্ম স্মরণ করে যে- জাতিস্মর ।
৭৪/ পান করার যোগ্য- পেয় ।
৭৫/ পান করার ইচ্ছা- পিপাসা ।
৭৬/ ফল পাকলে যে গাছ মরে যায়- ওষধি ।
৭৭/ বিদেশে থাকে যে- প্রবাসী ।
৭৮/ বিশ্বজনের হিতকর- বিশ্বজনীন ।
৭৯/ব্যাকরণ জানেন যিনি- বৈয়াকরণ ।
৮০/ বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে গবেষণায় রত যিনি- বৈজ্ঞানিক ।
৮১/ বেদ-বেদান্ত জানেন যিনি- বৈদান্তিক ।
৮২/ বয়সে সবচেয়ে বড়ো যে- জ্যেষ্ঠ ।
৮৩/ বয়সে সবচেয়ে ছোটো যে- কনিষ্ঠ ।
৮৪/ ভোজন করার ইচ্ছা- ‍বুভুক্ষা ।
৮৫/ মৃতের মত অবস্থা যার- মুমূর্ষু ।
৮৬/ মুষ্টি দিয়ে যা পরিমাপ করা যায়- মুষ্টিমেয় ।
৮৭/ মৃত্তিকা দ্বারা নির্মিত- মৃন্ময় ।
৮৮/ মর্মকে পীড়া দেয় যা- মর্মন্তুদ ।
৮৯/ মাটি ভেদ করে ওঠে যা- উদ্ভিদ ।
৯০/ মৃত গবাদি পশু ফেলা হয় যেখানে- ভাগাড় ।
৯১/ মন হরণ করে যা- মনোহর ।
৯২/ মন হরণ করে যে নারী- মনোহারিণী ।
৯৩/ যা দমন করা যায় না- অদম্য ।
৯৪/ যা দমন করা কষ্টকর- দুর্দমনীয় ।
৯৫/ যা নিবারণ করা কষ্টকর- দুর্নিবার।
৯৬/ যা পূর্বে ছিল এখন নেই- ভূতপূর্ব।
৯৭/ যা বালকের মধ্যেই সুলভ- বালকসুলভ ।
৯৮/ যা বিনা যত্নে লাভ করা গিয়েছে- অযত্নলব্ধ ।
৯৯/ যা ঘুমিয়ে আছে- সুপ্ত ।
১০০/ যা বার বার দুলছে- দোদুল্যমান।
১০২/ যা দীপ্তি পাচ্ছে- দেদীপ্যমান ।
১০৩/ যা সাধারণের মধ্যে দেখা যায় না- অনন্যসাধারণ ।
১০৪/ যা পূর্বে দেখা যায় নি- অদৃষ্টপূর্ব ।
১০৫/ যা কষ্টে জয় করা যায়- দুর্জয় ।
১০৬/ যা কষ্টে লাভ করা যায়- দুর্লভ ।
১০৭/ যা অধ্যয়ন করা হয়েছে- অধীত ।
১০৮/ যা অনেক কষ্টে অধ্যয়ন করা যায়- দুরধ্যয় ।
১০৯/ যা জলে চরে- জলচর ।
১১০/ যা স্থলে চরে- স্থলচর ।
১১১/ যা জলে ও স্থলে চরে- উভচর ।
১১২/ যা বলা হয় নি- অনুক্ত ।
১১৩/ যা কখনো নষ্ট হয় না- অবিনশ্বর ।
১১৪/ যা মর্ম স্পর্শ করে- মর্মস্পর্শী ।
১১৫/ যা বলার যোগ্য নয়- অকথ্য ।
১১৬/ যার বংশ পরিচয় এবং স্বভাব কেউই জানে না- অজ্ঞাতকুলশীল ।
১১৭/ যা চিন্তা করা যায় না- অচিন্তনীয়, অচিন্ত্য ।
১১৮/ যা কোথাও উঁচু কোথাও নিচু- বন্ধুর।
১১৯/ যা সম্পন্ন করতে বহু ব্যয় হয়- ব্যয়বহুল ।
১২০/ যা খুব শীতল বা উষ্ণ নয়- নাতিশীতোষ্ণ ।
১২১/ যার বিশেষ খ্যাতি আছে- বিখ্যাত।
১২২/ যা আঘাত পায় নি- অনাহত ।
১২৩/ যা উদিত হচ্ছে- উদীয়মান।
১২৪/ যা ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে- বর্ধিষ্ণু ।
১২৫/ যা পূর্বে শোনা যায় নি- অশ্রুতপূর্ব।
১২৬/ যা সহজে ভাঙ্গে- ভঙ্গুর ।
১২৭/ যা সহজে জীর্ণ হয়- সুপাচ্য ।
১২৮/ যা খাওয়ার যোগ্য- খাদ্য ।
১২৯/ যা চিবিয়ে/চর্বণ করে খেতে হয়- চর্ব্য ।
১৩০/ যা চুষে খেতে হয়- চোষ্য ।
১৩১/ যা লেহন করে খেতে হয়/লেহন করার যোগ্য- লেহ্য ।
১৩২/ যা পান করতে হয়/পান করার যোগ্য- পেয় ।
১৩৩/ যা পানের অযোগ্য- অপেয় ।
১৩৪/ যা বপন করা হয়েছে- উপ্ত ।
১৩৫/ যা বলা হয়েছে- উক্ত ।
১৩৬/ যার অন্য উপায় নেই- অনন্যোপায় ।
১৩৭/ যার কোন উপায় নেই- নিরুপায়।
১৩৮/ যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে- প্রত্যুৎপন্নমতি ।
১৩৯/ যার সর্বস্ব হারিয়ে গেছে- সর্বহারা, হৃতসর্বস্ব ।
১৪০/ যার কোনো কিছু থেকেই ভয় নেই- অকুতোভয়।
১৪১/ যার আকার কুৎসিত- কদাকার ।
১৪২/ যার কোন শত্রু নেই/জন্মেনি- অজাতশত্রু ।
১৪৩/ যার দাড়ি/শ্মশ্রু জন্মে নি- অজাতশ্মশ্রু ।
১৪৪/ যার কিছু নেই- অকিঞ্চন ।
১৪৫/ যে কোন বিষয়ে স্পৃহা হারিয়েছে- বীতস্পৃহ ।
১৪৬/ যে শুনেই মনে রাখতে পারে- শ্রুতিধর ।
১৪৭/ যে বাস্তু থেকে উৎখাত হয়েছে- উদ্বাস্তু ।
১৪৮/ যে নারী নিজে বর বরণ করে নেয়- স্বয়ংবরা ।
১৪৯/ যে গাছে ফল ধরে, কিন্তু ফুল ধরে না- বনস্পতি ।
১৫০/ যে রোগ নির্ণয় করতে হাতড়ে মরে- হাতুড়ে ।
১৫১/ যে নারীর সন্তান বাঁচে না/যে নারী মৃত সন্তান প্রসব করে- মৃতবৎসা ।
১৫২/ যে গাছ অন্য কোন কাজে লাগে না- আগাছা।
১৫৩/ যে গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় করে বাঁচে- পরগাছা ।
১৫৪/ যে পুরুষ বিয়ে করেছে- কৃতদার ।
১৫৫/ যে মেয়ের বিয়ে হয়নি- অনূঢ়া ।
১৫৬/ যে ক্রমাগত রোদন করছে- রোরুদ্যমান (স্ত্রীলিঙ্গ- রোরুদ্যমানা) ।
১৫৭/ যে ভবিষ্যতের চিন্তা করে না বা দেখে না- অপরিণামদর্শী ।
১৫৮/ যে ভবিষ্যৎ না ভেবেই কাজ করে/অগ্র পশ্চাত বিবেচনা না করে কাজ করে যে- অবিমৃশ্যকারী ।
১৫৯/ যে বিষয়ে কোন বিতর্ক/বিসংবাদ নেই- অবিসংবাদী ।
১৬০/ যে বন হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ- শ্বাপদসংকুল ।
১৬১/ যিনি বক্তৃতা দানে পটু- বাগ্মী ।
১৬২/ যে সকল অত্যাচারই সয়ে যায়- সর্বংসহা ।
১৬৩/ যে নারী বীর সন্তান প্রসব করে- বীরপ্রসূ ।
১৬৪/ যে নারীর কোন সন্তান হয় না- বন্ধ্যা ।
১৬৫/ যে নারী জীবনে একমাত্র সন্তান প্রসব করেছে- কাকবন্ধ্যা ।
১৬৬/ যে নারীর স্বামী প্রবাসে আছে- প্রোষিতভর্তৃকা ।
১৬৭/ যে স্বামীর স্ত্রী প্রবাসে আছে- প্রোষিতপত্নীক ।
১৬৮/ যে পুরুষের চেহারা দেখতে সুন্দর- সুদর্শন (স্ত্রীলিঙ্গ- সুদর্শনা) ।
১৬৯/ যে রব শুনে এসেছে- রবাহুত ।
১৭০/ যে লাফিয়ে চলে- প্লবগ ।
১৭১/ যে নারী কখনো সূর্য দেখেনি- অসূর্যম্পশ্যা ।
১৭২/ যে নারীর স্বামী মারা গেছে- বিধবা ।
১৭৩/ যে নারীর সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে- নবোঢ়া ।
১৭৪/ লাভ করার ইচ্ছা- লিপ্সা ।
১৭৫/ শুভ ক্ষণে জন্ম যার- ক্ষণজন্মা ।
১৭৬/ শত্রুকে/অরিকে দমন করে যে- অরিন্দম ।
১৭৭/ শত্রুকে বধ করে যে- শত্রুঘ্ন ।
১৭৮/ সম্মুখে অগ্রসর হয়ে অভ্যর্থনা- প্রত্যুদ্গমন ।
১৭৯/ সকলের জন্য প্রযোজ্য- সর্বজনীন ।
১৮০/ সকলের জন্য হিতকর- সার্বজনীন।
১৮১/ স্ত্রীর বশীভূত হয় যে- স্ত্রৈণ ।
১৮২/ সেবা করার ইচ্ছা- শুশ্রুষা।
১৮৩/ হনন/হত্যা করার ইচ্ছা- জিঘাংসা।
১৮৪/ হরিণের চামড়া- অজিন।
১৮৫/ হাতির ডাক- বৃংহতি।

27 March, 2018

ভূতের গল্প


পৃথিবীতে ভুত বলতে কিছু নেই, ভুত শব্দটা কাল্পনিক। কেউ যদি বলে ভুত দেখেছে তাহলে সেই কথা আমি বিশ্বাস করি না শুধু মাত্র নিজের কল্পনায় সৃষ্টি। পৃথিবীতে জ্বীনের অস্তিত্ব আছে এই কথা সবারই জানা। মানুষ ও জ্বীন সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। জ্বীনেরা যে কোন সময় যে কোন রূপ ধারণ করতে পারে বলেই জানি। তারা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি বছর বেচে থাকে, দুই হাজার বছর আড়াই হাজার বছর অথবা তার চেয়েও বেশি। জ্বীনদের মধ্যে ভাল-খারাপ দুটোই আছে।

অনেক গবেষকের মতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়াতে ও ফিলিপাইন জ্বীনেদের বসবাসের সংখ্যা অনেক বেশি। এই দেশ গুলোর বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে পাহাড় ও জঙ্গল। এই কারণেই জ্বীনেরা নাকি তাদের বসবাসের জন্য এই দেশ গুলোকে বেছে নিয়েছে। বর্তমানে মালয়েশিয়াতে আমার অবস্থান। আমার নিজ চোখে দেখা ভয়ংকর কিছু ঘটনা সবাইকে জানাবো।

প্রথম যখন মালয়েশিয়া আসলাম একটি তিন তলা বাড়িতে থাকতাম। ৩য় তলায় আমি এবং আমার এক বন্ধু থাকতাম। ২য় তলায় দু’টি কক্ষ, কক্ষ দু’টিতে আরো দু’জন বাঙালি থাকতো। নিচ তলায় রান্না করার ঘর এবং বাকি অংশ ফাকা। একদিন রান্না করছিলাম, বাড়িতে আর কেউ ছিল না সেই সময়। উপরে আমার কক্ষে মোবাইলের রিং-টোন বাজছে, ফোন করেছে কেউ। রান্না ঘর থেকে বের হতেই দেখলাম একটি মেয়ে সামনের দিকে হেটে যাচ্ছে। আমি পিছু নিতেই সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেল। আমি দ্রুত সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে কাউকে দেখতে পেলাম না। ভাবলাম ২য় তলায় যে বড় ভাই থাকে তার বান্ধবী হতে পারে কক্ষে প্রবেশ করেছে হয়তো। রাতে ২য় তলায় যে দুইজন থাকে তারা বাড়ি ফেরার পর তাদের জিজ্ঞাসা করলাম তাদের কক্ষে কোনো মেয়ে আছে কিনা? তারা বলল নাতো। কেন কী হয়েছে? আমি ঘটনা বললাম তারা বলল ও আচ্ছা সমস্যা নেই। আমরাও অনেক দিন দেখেছি। আমি বুঝতে পারলাম ওটা জ্বীন ছিল। তারা বলল ভয় পেয়না ওটা কারো ক্ষতি করে না, ভাল জ্বীন।

দেড় মাস পর সেই বাড়িটা ছেড়ে নতুন আরেকটি বাড়ি ভাড়া করলাম। নতুন যেই বাড়িটি ভাড়া করেছিলাম সেই বাড়িতে প্রায় সাত-আট বছর কেউ থাকত না। বাড়ির সামনে বড় বড় ঘাস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়িটি ছিল খুব সুন্দর দু’তলা বাড়ি, ভাড়াও কম। বাড়িওয়ালার শর্ত ঘাস পরিস্কার সহ যা যা সমস্যা আছে আমাদের ঠিক করে নিতে হবে। আমরা রাজি হলাম। দু’দিনে বাড়ি গুছিয়ে নিলাম। বাড়িতে উঠার কিছুদিন পর বাড়িতে আমি একা দিনের বেলা,আমার কক্ষের দরজা খোলা রেখে গান শুনছিলাম। নিচ থেকে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলেই আমার কক্ষ দেখা যায়। হটাৎ আমার দৃষ্টি পড়ল সিড়ির দিকে। দেখতে পেলাম কে জানি একজন উপরের দিকে উঠল। আমাকে দেখেই আবার নিচে নেমে গেল। যা দেখছি অনেক লম্বা আকৃতির। চেহারা দেখতে পাইনি।

পড়নে ছিল কালো রঙের কাপড়। দেখার সাথে সাথে আমি কক্ষ থেকে বের হয়ে দু’তলা থেকে নিচ তলা নামলাম। কিন্তু নিচে কেউ ছিল না। আগের বাড়িতে এক দৃশ্য দেখলাম এই বাড়িতেও একই রকম ঘটনা। আমার মনে হল আমার মনের ভুলও তো হতে পারে। তবে না আমি নিশ্চিত কিছু দেখেছি। আসে পাশের পরিচিত বাঙালি যারা অনেক বছর যাবত মালয়েশিয়া আছে তাদের অনেকর সাথে এই বিষয়ে কথা বললাম তারা অনেকই স্বীকার করলেন তাদের চোখে দেখা এরকম কিছু ঘটনার কথা। অনেকে বললেন তারাও নাকি অনেক দেখেছে। কেউ কেউ বলল এখন তো কম দেখা যায় আগে আরো বেশি ছিল। যারা ১৯৯২ সালে মালয়েশিয়াতে এসেছেন তারা বলল এখন তো অনেক ঘর বাড়ি বিল্ডিং হয়েছে আগে তো এইসব কিছুই ছিল না জঙ্গল ছাড়া, আমরা পাম বাগানে কাজ করতাম। তখন এগুলা নাকি বেশি চোখে পড়ত। যারা মালয়েশিয়ান তারাও অনেকে স্বীকার করলেন জ্বীন দেখার কথা। মালয়েশিয়ার স্থানীয় ভাষায় হাংতু (জ্বীন)। গম্বাক নামক এলাকায় নাকি বেশি চোখে পড়ে।

কিছুদিন আগের ঘটনা প্রাইভেট কারে করে তিনজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম মালাক্কা। রাত প্রায় তিনটার সময় আমরা কুয়ালালামপুরের উদ্দেশ্যে ফিরছিলাম। পাহাড়ি পথ। দূর দুরান্তে কোনো ঘর-বাড়ি নেই। গাড়ির চলাচল তেমন একটা ছিল না। হটাত আমরা দেখতে পেলাম চারজন লোক একটি লাশ নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে। আমরা অবাক হলাম। এমন নির্জন পথে লাশ নিয়ে যাচ্ছে দৌড়ে দৌড়ে তাও আবার মাত্র চারজন। গাড়ি থামিয়ে আমরা দেখতে গেলাম। আমরাও দৌড়ে তাদের কাছে যেতেই তাদের পায়ের দিকে নজর পড়ল। দেখলাম পা দেখা যায়না। তারা লাশ নিয়ে শুন্যের উপর দৌড়ে যাচ্ছে। ঘটনা বুঝতে পেরে আমরা আর কাছে গেলাম না দৌড়ে আবার গাড়িতে এসে বসে পড়লাম। আমরা তিনজন নিজ চোখে এমন ভয়ংকর একটা ঘটনা দেখলাম।


ভংকর কবরের গল্প


গা শিউরানো জ্যান্ত কবর দেওয়ার ঘটনা অনেক ঘটেছে, জেনে হোক বা না জেনে। একটা সময় ছিল, যখন কাউকে শাস্তি হিসেবে কোনো কফিনে ভরে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হতো। তবে সব সময় যে শাস্তির জন্যই জ্যান্ত কবর দেওয়া হতো, তা নয়; কখনো কখনো ভুলে জ্যান্ত মানুষকে মৃত মনে করে কবর দিয়ে দেওয়া হতো। এভাবে কবর দেওয়ার ফলে বেশির ভাগ সময়ই জীবিত মানুষটা মাটির নিচেই দম বন্ধ হয়ে কিংবা খাবারের অভাবে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মারা পড়ে। মৃত্যুর আগেই যদি ভুলে জ্যান্ত কবর দিয়ে দেওয়া হয়_এই ভয়ে জর্জ ওয়াশিংটন মৃত্যুশয্যায় ভৃত্যদের শপথ করান, তাঁর মৃত্যুর পর ১২ দিন পার না হলে যেন তাঁকে কবর না দেওয়া হয়। ১৮৯০ সালের দিকে অনেক রোগীকেই মৃত মনে করে মর্গে পাঠিয়ে দেওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে।


♦ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৮৫১ সালে মারা যান ভার্জিনিয়া ম্যাকডোনাল্ড। কিন্তু তাঁকে কবর দিয়ে দেওয়ার পর মায়ের মনে হতে থাকে, তাঁর মেয়ে বুঝি এখনো বেঁচে আছে। ভার্জিনিয়ার কফিনটি তুলে আনার পর দেখা যায়, 'মৃত' ভার্জিনিয়ার হাত দুটি ক্ষতবিক্ষত। কফিনের গায়ে আঁচড়ের ধরন দেখেই অনুমান করা যায়, কতটা চেষ্টা করেছিল সে কফিন থেকে বেরিয়ে আসার।


♦ ১৮৯৬ সালে 'মৃত' ঘোষণার পর ম্যাডাম ব্লনডেনকে সমাহিত করা হয় একটি স্কুলের নিচে। কিন্তু স্কুলের বাচ্চারা যখন মাটির নিচ থেকে শব্দ শুনতে পাওয়ার অভিযোগ করে, তখন আবার কফিন ওপরে তুলে আনা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, সে সময় ব্লনডেন ছিলেন জীবনের অন্তিম মুহূর্তে, অল্প অল্প শ্বাস নিতে নিতেই ত্যাগ করেন শেষ নিশ্বাস।


♦ ১৮৮৬ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর অনুসারে, কলিন্স নামের একটি ছোট্ট মেয়ে হঠাৎ মারা যাওয়ার পর তাকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু পরে আবার তার কফিন খোলার পর দেখা যায়, তার হাত, পা আর মুখের অভিব্যক্তি ছিল ভীষণ অস্বাভাবিক, যা তাকে জীবন্ত কবর দেওয়ার ব্যাপারটি প্রমাণ করে।


♦ ১৮৮৯ সালে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের একটি খবরে গ্রেনোবলে সমাহিত করা একটি অজ্ঞাত লোকের কাহিনী ছিল। লোকটিকে মৃত ঘোষণা করার পর যখন তাঁর কফিনটি মাটিতে রাখা হচ্ছিল, তখন হঠাৎই ভেতর থেকে গোঙানি আর হাতড়ানোর শব্দ শোনা যায়। কিন্তু যতক্ষণে কফিনটি খুলে তাঁকে বের করে আনা হয়, ততক্ষণে তিনি দম বন্ধ হয়ে মারাই গেছেন। প্রায় একই ধরনের ঘটনার খবর প্রকাশিত হয় ১৮৩৮ সালে, দ্য সানডে টাইমসে।


♦ ১৮৭৭ সালে দ্য ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে এক মহিলার কথা বলা হয়, যাঁকে মৃত ঘোষণার পর সমাহিত করা হয়। কিছুদিন পর যখন আরেকটি মৃতদেহ দাফনের জন্য তাঁর কবর খোঁড়া হয়, তখন দেখা যায়, তাঁর শরীরটি ভীষণ বাঁকানো। এমন ঘটনা ঘটে ১৮৮৪ সালে মিস হকওয়াল্টের বেলায়ও।


♦ ১৮৭১ সালে ১৭ বছর বয়সী ম্যারি নোরাহ বেস্টকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তবে ধারণা করা হয়, তার মৃত্যুতে অনেকে উপকৃত হবে বলেই হয়তো তাকে তড়িঘড়ি সমাহিত করা হয়েছিল। ১৮৮১ সালে কফিন খুলে ম্যারির কঙ্কালটি পাওয়া যায় বসা অবস্থায়!


♦ ১৯০১ সালে মাদাম ববিন ইয়েলো ফিভারে আক্রান্ত হন। সে সময় তিনি ছিলেন গর্ভবতী। তাঁকে মৃত ঘোষণার পর যখন সমাহিত করা হচ্ছিল, তখন তাঁর নার্সের মনে হচ্ছিল, যেন তাঁর শরীরটা গরম আর পেশিগুলোও খুব একটা শক্ত নয়। পরে তার কফিন খুলে দেখা যায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। তিনি সেখানেই একটি বাচ্চা প্রসব করেছেন আর তারা দুজনই শ্বাস আটকে মারা যায়।

ভুতের গল্প ভয়ংকর এক



মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব তবে মানুষের সকল কাজই কিন্তু সেরা হয় না। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে যারা পৃথিবীকে আলোকময় করেছে আবার এমন কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব পৃথিবীতে ঘটেছে যাদের কাজ ও কর্ম দ্বারা পৃথিবী কলঙ্কিত হয়েছে। তবে সুখের সাথে একথা বলা যায় যে, তাদের সংখ্যা খুব বেশী নয়। যে সকল ব্যক্তির কর্মে মানবতা কলঙ্কিত হয়েছে তাদের মধ্যে পুরুষ যেমন আছে তেমনি আছে নারী। আর তেমনই একজন নারী হচ্ছেন ইলচ কোচ। এই নারী এতটাই জঘন্য ছিলেন যে, তাকে সম্বোধন করা হয় বুখেন ওয়ার্ল্ডের ডাইনি হিসেবে। ইলচ কোচ ছিল জঘন্যতম একজন খুনি মহিলা। সে কারাগারে বন্দীদের হত্যা করতো এবং তাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষণ করতো। ইলচ কোচ ১৯০৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে জার্মানির ডেরেসডেনে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিল কারখানার একজন কর্মচারী। তিনি শৈশবে একজন সদা হাস্যোজ্জল বালিকা ছিলেন। জার্মানি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলে ১৯৩২ সালে তিনি নাজি পার্টিতে যোগদান করেন। কোচের স্বামীর নাম ছিল কার্ল ওট্টো। যিনি পেশায় ছিলেন একজন কারারক্ষী। কোচ নিজেও ছিলেন ক্যাম্পের একজন সুপার ভাইজার। ১৯৩৬ সালে বার্লিনে তিনি এক ক্যাম্পের সুপার ভাইজার ও নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৩৭ সালে তিনি কার্ল ওট্টোকে বিবাহ করেন। ১৯৪০ সালে কোচ একটি ইনডোর ক্রীড়া কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময় পর্যন্তই কোচের ভাল সময় এবং এর পরের গল্পগুলো শুধুই অন্ধকার জগতের। কোচ যখন ক্যাম্পের সুপারভাইজার ছিল তখন সে এক হৃদয় বিদারক ও নির্মম খেলায় মেতে উঠে। কোচের দায়িত্বে থাকা ক্যাম্পে যখন কোন নতুন বন্দী আনা হতো তখন সে সেই বন্দী গুলোকে সুন্দরভাবে পরখ করতো এবং দেখে রাখতো। কোচ সকল বন্দীদের দেখে যে সকল বন্দীদের শরীরে ট্যাটু অংকিত থাকতো এবং যাদের গায়ের রং ভাল তাদেরকে আলাদা করে রাখতো। এরপর এক সময় কোচ মেতে উঠতো পৈশাচিক নেশায়। তার দেখা যেসকল বন্দীদের শরীরে ট্যাটু ছিল তাদেরকে সে নির্মম ভাবে হত্যা করতো এবং তাদের চামড়া সমূহ তাদের গা থেকে ছাড়িয়ে নিত তারপর এই বর্ণিল চামড়াগুলো তার কাছে সংরক্ষণ করতো।

এছাড়াও সে যে সকল বন্দীদের চামড়া সুন্দর তাদের সে হত্যা করতো এবং তাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগ ুলো সে সংরক্ষণ করতো। তবে তার সবচেয়ে প্রিয় শখ ছিল সুন্দর চামড়া ওয়ালা বন্দীদের হত্যা করে তাদের শরীরের চামড়া দিয়ে কুশন কভার, সাইড ল্যাম্প, বালিশের কভারসহ অনন্যা জিনিস তৈরি করা। সে এই সকল বন্দীদের শরীরের চামড়া দিয়ে বালিশের কভার, বিছানা চাদর, টেবিলের কাপড়, কুশন কভার ইত্যাদি তৈরি করেছিল। কোচ নিজে ক্যাম্পের সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা এবং তার স্বামীও একই ক্যাম্পে দায়িত্বে থাকায় সে এই জঘন্য কাজগুলো সহজেই করতে পেরেছিল। দীর্ঘ দিন এভাবে নির্মমতার পর কুখ্যাত এই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় ১৯৪৩ সালের ২৪ অগাস্ট। কিন্তু তার এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের কোনও প্রমাণ তখন পাওয়া যায়নি। ফলে সঠিক প্রমাণের অভাবে জেল থেকে ছাড়া পায় কোচ কিন্তু তার স্বামী দোষী বিবেচিত হন এবং তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কোচ চলে যায় লুদুইগবার্গ শহরে। সেখানে বসবাস করার সময় আমেরিকার সৈন্যরা তাকে আবার গ্রেফতার করে ১৯৪৫ সালের ৩০ জুন। পুনরায় গ্রেফতার হবার পর আবার বিচারের মুখোমুখি করা হয় কোচকে। দ্বিতীয়বার বিচারের সময় প্রকাশিত হতে থাকে তার নানান কুকীর্তির কথা। তিনি স্বীকার করেন তার নানান লোমহর্ষক কাহিনীর কথা। পুলিশ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি তার বিভিন্ন প্রকারের জিনিস সমূহ। বিচারে কোচ দোষী বিবেচিত হওয়ায় ১৯৪৭ সালের ৩০ জুন আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। কিন্তু নিজের প্রতি অভিমান ও জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা হয়ে জেলে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন রোচ। আর এভাবেই দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় নরপিশাচ বুখেনওয়ার্ল্ডের ডাইনি।

একটি সত্য ঘটনা


আমার বাড়ি বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পাশেই। ছোটবেলা থেকে গ্রামে গঞ্জে থেকে মানুষ আমি ভূতের ভয় নেই বললেই চলে । অনেকের মুখে শুনেছি সন্ধ্যার পর কীর্তনখোলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা পাওয়া যায়। আমি কখনো এসব বিশ্বাস করতাম না। সেবার মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একটা কাজে। এক পরিচিত চাচার মোটর নৌকায় গিয়েছিলাম।

বাসায় ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। চাচার গঞ্জে কাজ ছিলো দেখে আমাকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে দেয়। আমাকে
জিজ্ঞেস করেছিলেন সমস্যা হবে নাকি। আমি না করি। চাচাকে বিদায় দিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলাম। সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে। খুব দ্রুতই রাতের আঁধারে চারপাশ ঢেকে যাবে।

আমার সাথে কোনও আলো নেই। তবে বাড়ি খুব একটা দুরের পথ না। বাকা পথে গেলে ১৫ মিনিট। আর সোজা রাস্তা দিয়ে গেলে ২৫-৩০ মিনিট লাগবে। সেইদিন বাংলাদেশের সাথে ইংল্যান্ডের খেলা ছিল। তাই আমি সময় বাঁচানোর জন্য বাকা পথ যাকে আমরা বলি শর্ট রাস্তা ধরে হাঁটা দিলাম। হনহন করে হাঁটছি।

সবাই মনে হয় বাংলাদেশের খেলা দেখছে। কাউকেই দেখলাম না পথে। প্রায় ৪-৫ মিনিট হাঁটার পর আমার পাশের একটা ঝুপে ধপ করে কি যেন পড়লো। বলতে ভুলে গেছি, শর্ট রাস্তাটা একটু জঙ্গলা টাইপের এলাকার মধ্য দিয়ে। চারপাশে ঝি ঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। আওয়াজটা শুনেই আমি থেমে গেলাম।
একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম ২০ সেকেন্ড। কান খাঁড়া করে শোনার চেষ্টা করলাম কিসের আওয়াজ হল। কিন্তু কোনও শব্দ হল না আর। আমি নাছোড়বান্দা। আস্তে আস্তে পা টিপে এগিয়ে গেলাম ঝোপের দিকে। অনেকেই ভাববেন হয়তো মিথ্যা বলছি। কিন্তু ভাই আমি আসলেই অনেক সাহসী ছিলাম।

একা হাতে গভীর রাতে ২টা চোর একসাথে পিটাইছি। ভয় ডর খুব কম। যাই হোক, ঝোপের পাশে দাঁড়িয়ে উকি দিলাম। উকি দিয়েই চমকে উঠলাম। ঐ পাশে দেখলাম একটা সাদা কাপড় পড়া মহিলা ঝুঁকে আছে কিছু একটার উপর। দেখে মনে হল কোনও চারপেয়ে জানোয়ার। অন্ধকার হতে যাচ্ছে। দৃষ্টি পরিষ্কার না।

মহিলার পাশ থেকে গচ গচ শব্দ হচ্ছিলো। হাড় ভাঙার আওয়াজ কানে এলো। কড়মড় করে কি যেন খাচ্ছে। আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম, ঐ কেডা রে ? কেডা হেইখানে ?
সাথে সাথে পাই করে আমার দিকে ঘুরে গেলো মহিলাটা। ওটার চেহারা দেখার সাথে সাথে মনে হল কলিজাটা এক লাফে গলায় উঠে এলো। বহু কষ্টে নিজেকে দাঁড় করে রাখলাম। মহিলার বয়স বুঝতে পারি নি, তবে সাদা চুল, সাদা কাপড়, এবং সাড়া মুখে লেগে থাকা রক্ত এবং সামনে পড়ে থাকা একটা মাঝারি সাইজের গরুর মৃত দেহ দেখে কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।

এরপর শুধু এতটুকু মনে আছে যে জ্ঞান হারাবার আগে জোরে কয়েকবার লা ইলাহা ইলাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর বলেছিলাম। মহিলাটা চোখের পলকে মরা গরুটা রেখে আমার দিকে এগিয়ে এলো। এরপরে আমার কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে আবিষ্কার করি আমাদের বাড়ির উঠানে। সামনে এলাকার সব মুরুব্বী এবং গঞ্জের বড় হুজুর বসে আছে। উনাদের কাছে শুনতে পাই রাতে রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে আমাদের বাড়ির ৩ বাড়ির পরের রহমত আলি চাচা আমাকে দেখতে পান। এরপর আরও মানুষের সাহায্যে আমাকে বাসায় নিয়ে আসেন।

আশ্চর্যের ব্যাপার যে সেইদিন আমার থেকে একটু দূরে একটা আধ খাওয়া গরুর মৃত দেহ পাওয়া যায়। গরুটির শরীরের বাকি অংশ পাওয়া গেলেও মাথা থেকে পেট পর্যন্ত ছিল না।

ভংকর রাত


তখন গরমকাল চলছে। মামাতো ভাই খুলনাতে থাকে। ভাবি প্রায় সময়ই ফোনে একেবারে কানটা ঝালাফালা করে দেয় খুলনাই আসার জন্য। পড়াশুনা চলাকালীন অনার্স একসাথেই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করি। মামাতো ভাই অন্য ডিপার্টমেন্ট এ থাকলেও আমার এই বান্ধবিটার সাথে চুটিয়ে প্রেম করেছে চার বছর। পরে ফলশ্রুতিতে বিয়ে। এখন চাকুরীর সুবাদে দুজনেই খুলনাতে। অবশ্য আমি এখনো বিয়ে করিনি। তবে অতি শীঘ্রই হয়তো ফাঁন্দে পড়তে হতে পারে।

মামাতো ভাই আর বান্ধবী ভাবীর প্যান প্যানানির জন্য অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটি নিলাম। ফোনে ওদেরকে বললাম আমি আগামিকালই খুলনা আসছি। যাক প্লান মত সব ঠিকঠাক করে গুছিয়ে নিলাম। ভাবলাম রাতেই রওনা হবো। কারন একেতো গরম কাল তার উপর দিনের বেলাতে প্রখর রোদ। ড্রাইভারকে ঠিকঠাক ভাবে বলে দিলাম, আমি আজ রাতেই খুলনা রওনা হচ্ছি। সোন্ধাই খাবার খাওয়ার পর মা আমাকে যথারিতী সাবধানতার উপদেশ বানী দিতে লাগলো। সাথে একটা মাদুলীও দিল। আমিতো ওটা দেখে অবাক হয়ে গেছে। মা, তুমিনা সেই আগের মানুষই রয়ে গেলে। এসব তাবিজ কবুজকে কি কেও এখন বিশ্বাস করে। মায়ের সোজা জবাব কেও না বিশ্বাস করুক আমি করি। তুই এটা সাথে করে খুলনা নিয়ে যাবি। কি আর করা যথারিতী মায়ের হুকুম মেনে আমি আর আমার ড্রাইভার কাদের গাড়ীতে গিয়ে উঠলাম।

ঘড়িতে রাত নয়টা মত বাঁজে। ঢাকা শহরের কোলাহল থেকে বেশ খানিকটা দুরে চলে এসেছি। এমনিতেই ভরা পূনির্মা রাত তার উপর এই লং ড্রাইভ, বেশ রোমান্টিক করে দিচ্ছে বটে। ড্রাইভারের পাশের সিটেই আমি বসে। পুরো গাড়ীতে আমি আর ড্রাইভার কাদের ছাড়া কেও নাই। মাঝে মাঝে কাদেরের সাথে কথা হচ্ছে আর একশো থেকে একশো বিশ বেগে ছুটে চলেছে গাড়ি। কাদের কিছুক্ষন পর একটি গানের সিডি বের করে বাজাতে লাগলো। এমনি সময় ফোনটা বেজে উঠলো। ছোট আপু ফোন করেছে। হ্যালো জুথি বল... ভাইয়া তোরা কতদূর এখন, একা যেতে কোন সমস্যা হচ্ছেনা তো? আমার জবাব, আরে না। টেনশন নিসনা, পৌছে ফোন দেব। আর বাবাকে একটু বুঝিয়ে বলিস। রাখি। ফোনটা রেখে দিলাম। ফোনটা রাখতে রাখতেই জীবন নিয়ে কেমন যেন বিচিত্র অনুভূতি হতে লাগলো। ছুটে চলা জীবনের গাড়ীর শো শো শব্দে নচিকেতার গানটার মত মনে হল- রাত বলে যায় যায়, ডাক দিয়ে যায়। চোঁখের পাতাই যেন কত কিছুই ভেসে উঠছে। শো শো করে ছুটে চলছে গাড়ী, আর জসনা ছড়াচ্ছে চাঁদ। রাত এগারোটা মত বাজতে বাজতেই কাদের বলে উঠলো- স্যার আমরা এখন ফেরী পার হবো। টাকা পয়সার হিসাব চুকিয়ে দিয়েই কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা ফেরীতে উঠলাম। কিছুসময় পরে ফেরীটা গাড়ীতে ভরলে আসতে আসতে টার্ন করলো। তারপর এক সময় মাঝ নদীতে। জসনা ভরা চাঁদনী রাতে এই নদীর পানি যেন অপরুপ রুপের শোভা ছড়াতে লাগলো। কাদের বলল স্যার দেখছেন কত সুন্দর লাগছে চাঁদ আর নদীর পানির ঢেও গুলোকে।

আমরা ফেরী পার হয়ে গেছি। আবারো হায় ওয়েতে ছুটতে শুরু করেছে আমাদের গাড়ী। কিছু দুর পর পর একটি দুটি গাড়ীর হেডলাইট দেখা যাচ্ছে। আমার চোঁখটা কেমন অবশ অবশ লাগছে। গাড়ীর ছিটেই হেলান দিলাম চোখ বুঝে। কিছুদুর যেয়েই হঠাত্‍ করেই কাদের গাড়ীর ব্রেকটা এমন ভাবে ধরলো, যেন পুরো গাড়ীটাই উল্টে পড়ে যাবার মত অবস্থা। এই কি হৈছে কাদের, এত জরে কি গাড়ীর ব্রেক ধরে কেও। কাদেরের জবার স্যার আমার দোষনা, ওনার জন্যই সব কিছু। এবার আমি আস্তে আস্তে গাড়ীর সামনে তাকিয়ে দেখি একটি বিশ থেকে বাইশ বছরের মেয়ে একটা বাচ্চা কোলে করে দাড়িয়ে আছে। ঘড়িতে রাত একটা। মেয়েটি সাদা শাড়ী পরে আছে। তার আঁচলের এক অংশ মাটির সাথে গড়াগড়ি খাচ্ছে। চুলগুলো এলোমেলো আর কান্না ভেজা চোঁখ। আমি গাড়ির দরজাটা খুলে নিচে নেমে বললাম- কি ব্যাপার, আপনি হঠাত্‍ করে একটা বাচ্চা কোলে করে আমার গাড়ির সামনে আসলেন কেন? মেয়েটি কান্না জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো স্যার আমাকে বাঁচান। আমার স্বামী নয়তো আমাকে আর আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলবে। আমি কোন মতে বাড়ী থেকে পালিয়ে এসেছি। সামনেই আমার বাবার বাড়ী। আপনি দয়া করে আমাকে একটু আপনার গাড়ীতে নিয়ে চলুন। আমি বললাম, দেখুন আপনি পথ থেকে সরে দাড়ান। আমি আপনাকে গাড়ীতে নিতে পারবোনা। এই কথা বলার সাথে সাথে মেয়েটি তার এক হাতে বাচ্চাটিকে বুকে নিয়ে আর এক হাতে আমার পা জড়িয়ে ধরলো। কাদের ওপাশ থেকে বলল- স্যার আমাদের গাড়ির পিছনের ছিটতো খালি পড়ে আছে। আমরা না হয় এই বিপদ থেকে একটু ওকে সাহায্য করি। আর সামনেই তো ওর বাবার বাড়ী। আমরা ওখানেই ওকে নামিয়ে দেবো। কাদেরের এই কথা শুনে মেয়েটিকে গাড়িতে উঠতে বললাম। মেয়েটি বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে পিছনের ছিটে উঠে বসলো।

আমাদের গাড়ী কিছুক্ষন চলতেই থাকলো। এর মাঝে একবারো পিছন ফিরে তাকানো হয়নি। হঠাত্‍ করেই মনে হলো মেয়েটিতো কিছুদুর পরেই নামতে চেয়েছিল। আমি গাড়ির মিররের দিকে চেয়ে দেখার চেষ্টা করলাম মেয়েটির কি অবস্থা দেখার জন্য। কিন্তু আয়নার ভিতরেতো কোন কিছুই দেখা যায়না। আমি একটু ভালো ভাবে আয়নার দিকে চোখ দিলাম। দেখলাম দু টো লাল চোঁখ দেখা যায়। কিছুক্ষন পর দেখি মেয়েটি তার কোলের বাচ্চাটাকে মাথা নিচের দিকে দিয়ে ধরে আছে। আমি ঘামতে শুরু করেছি। এবার দেখি মেয়েটি বাচ্চাটির দু পা দুটি হাত দিয়ে ধরে টেনে ছিড়তে লাগলো। মেয়েটির লাল চোঁখ আর অদ্ভূত চাওনি কি যে ভয়ংকর, বলে বোঝানো যাবেনা। কাদের তার আপন মনে ড্রাইভ করে চলে যাচ্ছে। ও কি ভয়ংকর। বাচ্চাটির মাথার দিকটার মুখের মাংসগুলো খেতে শুরু করেছে মেয়েটি। মুখে রক্তের লালা ঝরছে। আমি যে আয়নাতে এটি দেখছি মেয়েটি এখনো সেটি খেয়াল করেনি। ভাবতে থাকলাম কাদের যদি এখন এই দৃশ্য দেখে তাহলে একটা অঘটন ঘটে যাবে। আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। এবার আমি আয়নার দিকে তাকাই। হঠাত্‍ করেই আয়নাটির ভিতরে তার লাল চোঁখে চোখ পড়ে যায়। বিভস্য রক্তের লালা জড়ানো চেহারা নিয়ে সে আমার দিকে তাকায়।

08 March, 2018

রবি সিমের দারুন অফার


রবি সিমে এখন পাবেন দারুন সব মিনি মিনিট বান্ডেল প‍্যাক । কারণ এখন রবি সিমে পাবেন মাত্র ২টাকায় ৮মিনিট ৮টাকায় ১৮মিনিট এবং ১২টাকায় ৪০মিনিট টকটাইম ।
রবি 2.50 টাকায় ৮মিনিট টকটাইম বান্ডেল প‍্যাক
আপনি পাবেন 6 মিনিট টকটাইম যা রবি থেকে রবি এবং এয়ারটেল নাম্বারে ব্যবহার করতে পারবেন ।
বান্ডেল প‍্যাকটির মেয়াদ পাবেন 4 ঘন্টা ।
বান্ডেল প‍্যাকটি কিনতে ডায়াল করুন *8666*002#
রবি 6 টাকায় ১৮মিনিট টকটাইম বান্ডেল প‍্যাক । আপনি পাবেন মাত্র ৬টাকায় ১৮মিনিট টকটাইম যা রবি থেকে রবি ও এয়ারটেল নাম্বারে ব‍্যাবহার করতে পারবেন ‌ ।
রবি ১৮মিনিট প‍্যাকটির মৃল‍্য 6 টাকা ।
বান্ডেল প‍্যাকটির মেয়াদ 6 ঘন্টা
টকটাইম ফান্ডের প‍্যাকটা কিনতে ডায়াল করুন *8666*055#
রবি ১২টাকায় ৪০মিনিট টকটাইম বান্ডেল প‍্যাক । আপনি পাবেন মাত্র ১১টাকায় ৪০মিনিট টকটাইম যা রবি থেকে রবি ও এয়ারটেল নাম্বারে ব‍্যাবহার করতে পারবেন ‌ ।
রবি ৪০মিনিট প‍্যাকটির মৃল‍্য ১২ টাকা ।
বান্ডেল প‍্যাকটির মেয়াদ ১২ ঘন্টা
টকটাইম ফান্ডের প‍্যাকটা কিনতে ডায়াল করুন *8666*1010#
রবি ফান্ডের মিনিট ব‍্যালেন্স চ‍্যাক করতে ডায়ার করুন *222*2#
আপনি মিনিট বান্ডেল প‍্যাকটি যতগুলি ততবার কিনতে পারবেন ।

07 March, 2018

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনী


বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)

(৫৭০-৬৩২ খ্রি.)

সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
যে মহামানবের সৃষ্টি না হলে এ ধরাপৃষ্ঠের কোনো কিছুই সৃষ্টি হতো না, যার পদচারণে লাখ পৃথিবী ধন্য হয়েছে; আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসা, অন্তরের পবিত্রতা, আত্মার মহত্ত্ব, ধৈর্য্য, ক্ষমতা, সততা, নম্রতা, বদান্যতা, মিতাচার, আমানতদারি, সুরুচিপূর্ণ মনোভাব, ন্যায়পরায়ণতা, উদারতা ও কঠোর কর্তব্যনিষ্ঠা ছিল যার চরিত্রের ভূষণ; যিনি ছিলেন একাধারে ইয়াতিম হিসেবে সবার স্নেহের পাত্র, স্বামী হিসেবে প্রেমময়, পিতা হিসেবে স্নেহের আধার, সঙ্গী হিসেবে বিশ্বস্ত; যিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়ী, দূরদর্শী সংস্কারক, ন্যায়বিচারক, মহৎ রাজনীতিবিদ বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি এমন এক সময় পৃথিবীর বুকে আবির্ভূত হয়েছিলেন যখন আরবের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা অধঃপতনের চরম সীমায় নেমে গিয়েছিল।
জন্ম
৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট মোতাবেক ১২ রবিউল আউয়াল রোজ সোমবার প্রত্যুষে আরবের মক্কা নগরীতে সমভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মাতা আমেনার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রচলিত ধারনা মোতাবেক, উনার জন্ম ৫৭০ খৃস্টাব্দে। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা মন্টগোমারি ওয়াট তার পুস্তকে ৫৭০ সনই ব্যবহার করেছেন। তবে উনার প্রকৃত জন্মতারিখ বের করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাছাড়া মুহাম্মদ(সা.) নিজে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি. এজন্যই এ নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ রয়েছে। এমনকি জন্মমাস নিয়েও ব্যপক মতবিরোধ পাওয়া যায় । যেমন, এক বর্ণনা মতে, উনার জন্ম ৫৭১ সালের ২০ বা ২২ শে এপ্রিল। সাইয়েদ সোলাইমান নদভী, সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে শেষোক্ত মতই ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেশী নির্ভরযোগ্য। যাই হোক, নবীর জন্মের বছরেই হস্তী যুদ্ধের ঘটনা ঘটে এবং সে সময় সম্রাট নরশেরওয়ার সিংহাসনে আরোহনের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই। জন্মের ৫ মাস পূর্বে পিতা আবদুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। আরবের তৎকালীন অভিজাত পরিবারের প্রথানুযায়ী তাঁর লালন-পালন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অর্পিত হয় বনী সা’দ গোত্রের বিবি হালিমার ওপর। এ সময় বিবি হালিমার আরেক পুত্রসন্তান ছিল, যার দুধ পানের মুদ্দত তখনো শেষ হয়নি। বিবি হালিমা বর্ণনা করেন ‘শিশু মুহামমদ কেবলমাত্র আমার ডান স্তনের দুধ পান করত। আমি তাঁকে আমার বাম স্তনের দুধ দান করতে চাইলেও, তিনি কখনো বাম স্তন হতে দুধ পান করতেন না।’ আমার বাম স্তনের দুধ তিনি তাঁর অপর দুধ ভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন।’ দুধ পানের শেষ দিবস পর্যন্ত তাঁর এ নিয়ম বিদ্যমান ছিল। ইনসাফ ও সাম্যের মহান আদর্শ তিনি শিশুকালেই দেখিয়ে দিয়েছেন। মাত্র ৫ বছর তিনি ধাত্রী মা হালিমার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এরপর ফিরে আসেন মাতা আমেনার গৃহে। ৬ বছর বয়সে তিনি মাতা আমেনার সাথে পিতার কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে মদিনা যান এবং মদিনা থেকে প্রত্যাবর্তনকালে ‘আবওয়া’নামক স্থানে মাতা আমেনা ইন্তেকাল করেন। এরপর ইয়াতিম মুহাম্মদ (সা.) এর লালন-পালনের দায়িত্ব অর্পিত হয় ক্রমান্বয়ে দাদা আবদুল মোত্তালিব ও চাচা আবু তালিবের ওপর। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ যে মহামানব আবির্ভূত হয়েছেন সারা জাহানের রহমত হিসেবে; তিনি হলেন আজন্ম ইয়াতিম এবং দুঃখ-বেদনার মধ্য দিয়েই তিনি গড়ে ওঠেন সত্যবাদী, পরোপকারী এবং আমানতদারি হিসেবে।
শৈশব ও কৈশোর কাল
তত্কালীন আরবের রীতি ছিল যে তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে মোহাম্মদকেও হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। এই শিশুকে ঘরে আনার পর দেখা যায় হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য – শিশু মোহাম্মদ কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর হালিমা শিশু মোহাম্মদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামী বিশ্বাসমতে এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে – একদিন শিশু নবীর বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা জমজম কূপের পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হয়। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে সিনা চাকের ঘটনা হিসেবে খ্যাত।
এই ঘটনার পরই হালিমা মুহাম্মাদকে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে মদীনায় যাবেন। সম্ভবত কোন আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। আমিনা ছেলে, শ্বশুর এবং দাসী উম্মে আয়মনকে নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। তিনি মদীনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে আরওয়া নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মাতার মৃত্যুর পর দাদা আবদুল মোত্তালেব শিশু মুহাম্মাদকে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদাই মুহাম্মাদের দেখাশোনা করতে থাকেন। মোহাম্মদের বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র আবু তালিবকে মোহাম্মদের দায়িত্ব দিয়ে যান।

আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। মুহাম্মাদের বয়স যখন ১২ ব্ছর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারলেননা। যাত্রাপথে বসরা পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাঁবু ফেললেন। সে সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী বসরা অনেক দিক দিয়ে সেরা ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে জারজিস সামে এক খ্রিস্টান পাদ্রী ছিলেন যিনি বুহাইরা বা বহিরা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গীর্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিহ্নিত করেন। ফুজ্জারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন নবীর বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তাঁর কিছু করার ছিলনা। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।

নবুয়ত-পূর্ব জীবন
আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, খেয়ানতপ্রবণতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্যই হিলফুল ফুজুল নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এতে যোগদান করেন এবং এই সংঘকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তরুণ বয়সে মুহাম্মাদের তেমন কোন পেশা ছিলনা। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল বনি সা’দ গোত্রের। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদ অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। এতই খ্যাতি তিনি লাভ করেন যে তার উপাধি হয়ে যায় আল আমিন এবং আল সাদিক যেগুলোর বাংলা অর্থ হচ্ছে যথাক্রমে বিশ্বস্ত এবং সত্যবাদী। ব্যবসায় উপলক্ষ্যে তিনি সিরিয়া, বসরা, বাহরাইন এবং ইয়েমেনে বেশ কয়েকবার সফর করেন। মুহাম্মাদের সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদীজার পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।
খাদীজা মাইছারার মুখে মুহাম্মাদের সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের কাছে বিয়ের ব্যাপরে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন জানাবেন। মুহাম্মাদ তাঁর চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদীজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৫। খাদীজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোন বিয়ে করেননি। খাদীজার গর্ভে মুহাম্মাদের ৬ জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে যার মধ্যে ৪ জন মেয়ে এবং ২ জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসেম, যয়নাব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম’, ফাতিমা এবং আবদুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামী যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে এবং একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সবাই নবীর জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে।

মুহাম্মাদের বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা’বা গৃহের পূনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মানের সময় যখন হাজরে আসওয়াদ (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্ব পেয়ে মুহাম্মাদ অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।


নবুওয়ত প্রাপ্তি
চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ নবুওয়ত লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই স্রষ্টা তার কাছে ওহী প্রেরণ করেন। নবুওয়ত সম্বন্ধে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় আজ-জুহরির বর্ণনায়। জুহরি বর্ণিত হাদীস অনুসারে নবী সত্য দর্শনের মাধ্যমে ওহী লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর নবী প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তাঁর স্ত্রী খাদিজা নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। এমনি এক ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিব্রাইল তার কাছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী নিয়ে আসেন। জিব্রাইল তাঁকে এই পংক্তি কটি পড়তে বলেন:
“পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।”

উত্তরে নবী জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিব্রাইল তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও মুহাম্মাদ নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেয়ার পর মুহাম্মাদ পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। অবর্তীর্ণ হয় কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত। প্রথম অবতরণের পর নবী এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গ্রহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাবেন, “আমাকে আবৃত কর”। খাদিজা নবীর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাঁকে নবী হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য মুহাম্মাদকে নিয়ে খাদিজা নিজ চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফেলের কাছে যান। নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন নবী। তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তাঁর কাছে দ্বিতীয় বারের মত ওহী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় সূরা মুদ্দাস্‌সির-এর কয়েকটি আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন মুহাম্মাদ। এই ইসলাম ছিল জীবনকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়ার জন্য প্রেরিত একটি আদর্শ ব্যবস্থা। তাই এর প্রতিষ্ঠার পথ ছিল খুবই বন্ধুর। এই প্রতিকূলততার মধ্যেই নবীর মক্কী জীবন শুরু হয়।


মক্কী জীবন

প্রত্যাদেশ অবতরণের পর নবী বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে; কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের ভীত ধ্বংস করা ব্যাতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোন উপায় ছিলনা। তাই প্রথমে তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে গোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন। মুহাম্মাদের আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন খাদিজা। এরপর মুসলিম হন মুহাম্মাদের চাচাতো ভাই এবং তার ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর আলী, ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ মেনে নেয়নি, এ সভাতে শুধু একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো আলী। ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধূ আবু বকর। এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এবং এই প্রচারকাজ চলতে থাকে সম্পূর্ণ গোপনে।

প্রকাশ্য দাওয়াত
তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরণের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল। নবী সাফা পর্বতের ওপর দাড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল। কিন্তু এতে সকলে তার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায় এবং এই সময় থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার শুরু হয়।

মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন
বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে নির্যাতন শুরু করে: প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কুটতর্ক এবং যুক্তি। এক সময় ইসলামী আন্দোলনকে সহায়হীন করার প্রচেষ্টা শুরু হয় যাকে সফল করার জন্য একটি নেতিবাচক ফ্রন্ট গড়ে উঠে। একই সাথে গড়ে তোলা হয় সাহিত্য ও অশ্লীল গান-বাজনার ফ্রন্ট, এমনকি একং পর্যায়ে মুহাম্মাদের সাথে আপোষেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু মুহাম্মাদ তা মেনে নেননি; কারণ আপোষের শর্ত ছিল নিজের মত ইসলাম পালন করা, সেক্ষেত্র তার ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই ভেস্তে যেতো।
ইথিওপিয়ায় হিজরত
ধীরে ধীরে যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চরম রূপ ধারণ করে, তখন নবী কিছু সংখ্যক মুসলিমকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে পাঠান। সেখান থেকেও কুরাইশরা মুসলিমদের ফেরত আনার চেষ্টা করে, যদিও তৎকালীন আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশীর কারণে তা সফল হয়নি।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ
এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল উমর ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ। নবী সবসময় চাইতেন যেন আবু জেহেল ও উমরের মধ্যে যেকোন একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। তার এই ইচ্ছা এতে পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবিচেত হচ্ছিল। এরপর একসময় নবীর চাচা হামযা ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়।
একঘরে অবস্থা
এভাবে ইসলাম যখন শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলছে তখন মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার অনুসারী সহ সহ গোটা বনু হাশেম গোত্রকে একঘরে ও আটক করে। তিন বছর আটক থাকার পর তারা মুক্তি পায়।
দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন
কিন্তু মুক্তির পরের বছরটি ছিল মুহাম্মাদের জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী খাদিজা ও চাচা আবু তালিব মারা যায়। দুঃখের সময়ে নবী মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপরে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফ যান (অবশ্য তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে নবীকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েননি; নব নব সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।

মি’রাজ তথা উর্দ্ধারোহন
এমন সময়েই কিছু শুভ ঘটনা ঘটে। ইসলামী ভাষ্যমতে এ সময় মুহাম্মাদ এক রাতে মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত মসজিদুল আকসায় যান; এই ভ্রমণ ইতিহাসে ইসরা নামে পরিচিত। কথিত আছে, মসজিদুল আকসা থেকে তিনি একটি বিশেষ যানে করে উর্দ্ধারোহণ করেন এবং মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করেন, এছাড়া তিনি বেহেশ্‌ত ও দোযখ সহ মহাবিশ্বের সকল স্থান অবলোকন করেন। এই যাত্রা ইতিহাসে মি’রাজ নামে পরিচিত। এই সম্পূর্ণ যাত্রার সময়ে পৃথিবীতে কোন সময়ই অতিবাহিত হয়নি বলে বলা হয়।
মদীনায় হিজরত
এরপর আরও শুভ ঘটনা ঘটে। মদীনার বেশকিছু লোক ইসলামের প্রতি উৎসাহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তারা মূলত হজ্জ্ব করতে এসে ইসলামে দাওয়াত পেয়েছিল। এরা আকাব নামক স্থানে মুহাম্মাদের কাছে শপথ করে যে তারা যে কোন অবস্থায় নবীকে রক্ষা করবে এবং ইসলামে প্রসারে কাজ করবে। এই শপথগুলো আকাবার শপথ নামে সুপরিচিত। এই শপথগুলোর মাধ্যমেই মদীনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং একসময় মদীনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়। মদীনা তথা ইয়াসরিবে অনেক আগে থেকে প্রায় ৬২০ সাল পর্যন্ত গোত্র গোত্র এবং ইহুদীদের সাথে অন্যদের যুদ্ধ লেগে থাকে। বিশেষত বুয়াছের যুদ্ধে সবগুলো গোত্র যুদ্ধে অংশ নেয়ায় প্রচুর রক্তপাত ঘটে। এ থেকে মদীনার লোকেরা বুঝতে সমর্থ হয়েছিল যে, রক্তের বিনিময়ে রক্ত নেয়ার নীতিটি এখন আর প্রযোজ্য হতে পারেনা। এজন্য তাদের একজন নেতা দরকার যে সবাইকে একতাবদ্ধ করতে পারবে। এ চিন্তা থেকেই তারা মুহাম্মাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, যদিও আমন্ত্রণকারী অনেকেই তখনও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি। এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ ও আবু বকর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় হিজরত করেন। তাদের হিজরতের দিনেই কুরাইশরা মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হত্যার পরিকল্পনা করেছিল যদিও তা সফল হয়নি। এভাবেই মক্কী যুগের সমাপ্তি ঘটে।
মাদানী জীবন
নিজ গোত্র ছেড়ে অন্য গোত্রের সাথে যোগদান আরবে অসম্ভব হিসেবে পরিগণিত হত। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সেরকম নয়, কারণ এক্ষেত্রে ইসলামের বন্ধনই শ্রেষ্ঠ বন্ধন হিসেবে মুসলিমদের কাছে পরিগণিত হত। এটি তখনকার যুগে একটি বৈপ্লবিক চিন্তার জন্ম দেয়। ইসলামী পঞ্জিকায় হিজরতের বর্ষ থেকে দিন গণনা শুরু হয়। এজন্য ইসলামী পঞ্জিকার বর্ষের শেষে AH উল্লেখিত থাকে যার অর্থ: After Hijra।
স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও সংবিধান প্রণয়ন
মুহাম্মাদ মদীনায় গিয়েছিলেন একজন মধ্যস্থতাকারী এবং শাসক হিসেবে। তখন বিবদমান দুটি মূল পক্ষ ছিল আওস ও খাযরাজ। তিনি তার দায়িত্ব সুচারুরুপে পালন করেছিলেন। মদীনার সকল গোত্রকে নিয়ে ঐতিহাসিক মদীনা সনদ স্বাক্ষর করেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংবিধান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এই সনদের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে সকল রক্তারক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এমনকি এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নীতির গোড়াপত্তন করা হয় এবং সকল গোত্রের মধ্যে জবাবদিহিতার অনুভুতি সৃষ্টি করা হয়। আওস, খাযরাজ উভয় গোত্রই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। এছাড়াও প্রধানত তিনটি ইহুদী গোত্র (বনু কাইনুকা, বনু কুরাইজা এবং বনু নাদির)। এগুলোসহ মোট আটটি গোত্র এই সনদে স্বাক্ষর করেছিল। এই সনদের মাধ্যমে মদীনা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)হন তার প্রধান।
মক্কার সাথে বিরোধ ও যুদ্ধ
মদীনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই মক্কার সাথে এর সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হতে থাকে। মক্কার কুরাইশরা মদীনা রাষ্ট্রের ধ্বংসের জন্য যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করতে থাকে। মুহাম্মাদ(স)মদীনায় এসে আশেপাশের সকল গোত্রের সাথে সন্ধি চুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপনে অগ্রণী ছিলেন। কিন্তু মক্কার কুরাইশরা গৃহত্যাগী সকল মুসলিমদের সম্পত্তি ক্রোক করে। এই অবস্থায় ৬২৪ সালে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)৩০০ সৈন্যের একটি সেনাদলকে মক্কার একটি বাণিজ্যিক কাফেলাকে বাঁধা দেয়ার উদ্দেশ্যে পাঠায়। কারণ উক্ত কাফেলা বাণিজ্যের নাম করে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। কুরাইশরা তাদের কাফেলা রক্ষায় সফল হয়। কিন্তু এই প্রচেষ্টার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য যুদ্ধের ডাক দেয়। আত্মরক্ষামূলক এই যুদ্ধে মুসলিমরা সৈন্য সংখ্যার দিক দিয়ে কুরাইশদের এক তৃতীয়াংশ হয়েও বিজয় অর্জন করে। এই যুদ্ধ বদর যুদ্ধ নামে পরিচিত যা ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ তারিখে সংঘটিত হয়। মুসলিমদের মতে এই যুদ্ধে আল্লাহ মুসলিমদের সহায়তা করেছিলেন। যাহোক, এই সময় থেকেই ইসলামের সশস্ত্র ইতিহাসের সূচনা ঘটে। এরপর ৬২৫ সালের ২৩ মার্চে উহুদ যুদ্ধ সংঘটিতে হয়। এতে প্রথম দিকে মুসলিমরা পরাজিত হলেও শেষে বিজয়ীর বেশে মদীনায় প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কুরাইশরা বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও চূড়ান্ত মুহূর্তের নীতিগত দূর্বলতার কারণে পরাজিতের বেশে মক্কায় প্রবেশ করে। ৬২৭ সালে আবু সুফিয়ান কুরাইশদের আরেকটি দল নিয়ে মদীনা আক্রমণ করে। কিন্তু এবারও খন্দকের যুদ্ধে মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয়। যুদ্ধ বিজয়ে উৎসাহিত হয়ে মুসলিমরা আরবে একটি প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়। ফলে আশেপাশের অনেক গোত্রের উপরই মুসলিমরা প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।
মদীনার ইহুদিদের সাথে সম্পর্ক
কিন্তু এ সময় মদীনার বসবাসকারী ইহুদীরা ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য হুমকী হয়ে দেখা দেয়। মূলত ইহুদীরা বিশ্বাস করতনা যে, একজন অ-ইহুদী শেষ নবী হতে পারে। এজন্য তারা কখনই ইসলামের আদর্শ মেনে নেয়নি এবং যখন ইসলামী রাষ্ট্রের শক্তি বুঝতে পারে তখন তারা এর বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)প্রতিটি যুদ্ধের পরে একটি করে ইহুদী গোত্রের উপর আক্রমণ করেন। বদর ও উহুদের যুদ্ধের পর বনু কাইনুকা ও বনু নাদির গোত্র সপরিবারে মদীনা থেকে বিতাড়িত হয়; আর খন্দকের পর সকল ইহুদীকে মদীনা থেকে বিতাড়ন করা হয়। মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এই ইহুদী বিদ্বেশের দুটি কারণের উল্লেখ পাওয়া যায়, একটি ধর্মীয় এবং অন্যটি রাজনৈতিক। ধর্মীয় দিক দিয়ে চিন্তা করলে আহলে কিতাব হয়েও শেষ নবীকে মেনে না নেয়ার শাস্তি ছিল এটি। আর রাজনৈতিকভাবে চিন্তা করলে, ইহুদীরা মদীনার জন্য একটি হুমকী ও দুর্বল দিক ছিল। এজন্যই তাদেরকে বিতাড়িত করা হয়।
হুদাইবিয়ার সন্ধি
মুহাম্মদ (সা.) হন ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সভাপতি। তিনি যে একজন দূরদর্শী ও সফল রাজনীতিবিদ এখানেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মদিনার সনদ নাগরিক জীবনে আমূল পরিবর্তন আনে এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থাপিত হয় ঐক্য। বিশ্বনবী (সা.) তলোয়ারের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেননি বরং উদারতার মাধ্যমেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর ও নবদীক্ষিত মুসলমানগণের (সাহাবায়ে কেরাম) চালচলন, কথাবার্তা, সততা ও উদারতায় মুগ্ধ হয়ে যখন দলে দলে লোকেরা ইসলাম গ্রহণ করতে লাগল তখন কুরাইশ নেতাদের মনে হিংসা ও শত্রুতার উদ্রেক হয়। অপরদিকে মদিনার কতিপয় বিশ্বাসঘাতক মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাধান্য সহ্য করতে না পেরে গোপনভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। কাফিরদের বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার জন্যই মুহাম্মদ (সা.) তলোয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ফলে ঐতিহাসিক বদর, উহুদ ও খন্দকসহ অনেকগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং এসব যুদ্ধের প্রায় সবগুলোতেই মুসলমানগণ জয়লাভ করেন। বিশ্বনবী (সা.) মোট ২৭টি যুদ্ধে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ৬২৭ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ষষ্ঠ হিজরিতে ১৪০০ নিরস্ত্র সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে মুহাম্মদ (সা.) মাতৃভূমি দর্শন ও পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা রওনা দেন। কিন্তু পথিমধ্যে কুরাইশ বাহিনী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ইসলামের ইতিহাসে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামে পরিচিত। সন্ধির শর্তাবলির মধ্যে এ কথাগুলোও উল্লেখ ছিল যে- (১) মুসলমানগণ এ বছর ওমরা আদায় না করে ফিরে যাবে
(২) আগামী বছর হজে আগমন করবে, তবে ৩ দিনের বেশি মক্কায় অবস্থান করতে পারবে না
(৩) যদি কোনো কাফির স্বীয় অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত মুসলমান হয়ে মদিনায় গমন করে তাহলে তাকে মক্কায় ফিরিয়ে দিতে হবে। পক্ষান্তরে মদিনা হতে যদি কোনো ব্যক্তি পলায়নপূর্বক মক্কায় চলে আসে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হবে না
(৪) প্রথম থেকে যে সকল মুসলমান মক্কায় বসবাস করছে তাদের কাউকে সাথে করে মদিনায় নিয়ে যাওয়া যাবে না।
(৫) আরবের বিভিন্ন গোত্রগুলোর এ স্বাধীনতা থাকবে যে, তারা উভয় পক্ষের (মুসলমান ও কাফির) মাঝে যাদের সঙ্গে ইচ্ছা সংযোগ স্থাপন করতে পারবে
(৬) সন্ধিচুক্তির মেয়াদের মধ্যে উভয় পক্ষ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে যাতায়াতের সম্পর্ক
চালু রাখতে পারবে। এছাড়া কুরাইশ প্রতিনিধি সুহায়েল বিন আমর সন্ধিপত্র থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এবং ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বাক্য দুটি কেটে দেয়ার জন্য দাবি করেছিল। কিন্তু সন্ধিপত্রের লেখক হযরত আলী (রা.) তা মেনে নিতে রাজি হলেন না। অবশেষে বিশ্বনবী (সা.) সুহায়েল বিন আমরের আপত্তির প্রেক্ষিতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম’ এবং ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বাক্য দুটি নিজ হাতে কেটে দেন এবং এর পরিবর্তে সুহায়েল বিন আমরের দাবি অনুযায়ী ‘বিছমিকা আল্লাহুম্মা’ লিখতে নির্দেশ দেন। সুতরাং বাহ্যিক দৃষ্টিতে এ সন্ধি মুসলমানদের জন্য অপমানজনক হলেও তা মুহাম্মদ (সা.) কে অনেক সুযোগ ও সুবিধা ও সাফল্য এনে দিয়েছিল। এ সন্ধির মাধ্যমে কুরাইশরা মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক সত্তাকে একটি স্বাধীন সত্তা হিসেবে স্বীকার করে নেয়। সন্ধির শর্তানুযায়ী অমুসলিমগণ মুসলমানদের সাথে অবাধে মেলামেশার সুযোগ পায়। ফলে অমুসলিমগণ ইসলামের মহৎ বাণী উপলব্ধি করতে থাকে এবং দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে। এ সন্ধির পরই মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন রাজন্যবর্গের নিকট ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পত্র প্রেরণ করেন এবং অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের কাছে পত্র প্রেরণ
রাসূল (সাঃ)সারা বিশ্বের রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। সুতরাং পৃথিবীর সব জায়গায় ইসলামের আহ্বান পৌঁছ দেয়া তাঁর দায়িত্ব ছিল। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর কুরাইশ ও অন্যান্য আরব গোত্রগুলো থেকে আশ্বস্ত হয়ে এ কাজে মননিবেশ করেন। সেসময়ে পৃথিবীর প্রধান রাজশক্তিগুলো ছিল ইউরোপের রোম সাম্রাজ্য (the holy roman empire),এশিয়ার পারস্য সাম্রাজ্য এবং আফ্রিকার হাবশা সাম্রাজ্য। এছাড়াও মিশরের ‘আযীয মুকাউকিস’,ইয়ামামার সর্দার এবং সিরিয়ার গাসসানী শাসনকর্তাও বেশ প্রতাপশালী ছিল। তাই ষষ্ঠ হিজরীর জিলহজ্জ মাসের শেষদিকে একইদিনে এদেঁর কাছে ইসলামের আহ্বানপত্রসহ ছয়জন দূত প্রেরণ করেন।
প্রেরিত দূতগণের তালিকা
দাহিয়া ক্বালবী (রাঃ) কে রোমসম্রাট কায়সারের কাছে।
আবদুল্লাহ বিন হুযাফা (রাঃ)কে পারস্যসম্রাট পারভেজের কাছে।
হাতিব বিন আবূ বুলতা’আ (রাঃ) কে মিশরৈর শাসনকর্তার কাছে।
আমর বিন উমাইয়া (রাঃ) কে হাবশার রাজা নাজ্জাশীর কাছে।
সলীত বিন উমর বিন আবদে শামস (রাঃ) কে ইয়ামামার সর্দারের কাছে।
শুজাইবনে ওয়াহাব আসাদী (রাঃ) কে গাসসানী শাসক হারিসের কাছে।
শাসকদের মধ্য হতে শুধুমাত্র বাদশাহ নাজ্জাসী ছাড়া আর কেউ ইসলাম গ্রহণ করেননি।
মক্কা বিজয়
দশ বছরমেয়াদি হুদাইবিয়ার সন্ধি মাত্র দু’বছর পরেই ভেঙ্গে যায়। খুযাআহ গোত্র ছিল মুসলমানদের মিত্র, অপরদিকে তাদের শত্রু বকর গোত্র ছিল কুরাইশদের মিত্র। একরাতে বকর গোত্র খুযাআদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। কুরাইশরা এই আক্রমণে অন্যায়ভাবে বকর গোত্রকে অস্ত্র দিয়ে সহয়োগিতা করে। কোন কোন বর্ণনামতে কুরাইশদের কিছু যুবকও এই হামলায় অংশগ্রহণ করে। এই ঘটনার পর মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের কাছে তিনটি শর্তসহ পত্র প্রেরণ করেন এবং কুরাইশদেরকে এই তিনটি শর্তের যে কোন একটি মেনে নিতে বলেন। শর্ত তিনটি হলো;
কুরাইশ খুযাআ গোত্রের নিহতদের রক্তপণ শোধ করবে।
অথবা তারা বকর গোত্রের সাথে তাদের মৈত্রীচুক্তি বাতিল ঘোষণা করবে।
অথবা এ ঘোষণা দিবে যে, হুদায়বিয়ার সন্ধি বাতিল করা হয়েছে এবং কুরাইশরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।

কুরাইশরা জানালো যে, তারা শুধু তৃতীয় শর্তটি গ্রহণ করবে। কিন্তু খুব দ্রুত কুরাইশ তাদের ভুল বুঝতে পারলো এবং আবু সুফয়ানকে সন্ধি নবায়নের জন্য দূত হিসেবে মদীনায় প্রেরণ করলো। কিন্তু মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন এবং মক্কা আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু করলেন।
৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ (সঃ) দশ হাজার সাহাবীর বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কাভিমুখে রওয়ানা হলেন। সেদিন ছিল অষ্টম হিজরীর রমজান মাসের দশ তারিখ। বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষ ছাড়া মোটামুটি বিনাপ্রতিরোধে মক্কা বিজিত হলো এবং মুহাম্মাদ (সঃ) বিজয়ীবেশে সেখানে প্রবেশ করলেন। তিনি মক্কাবাসীর জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন। তবে দশজন নর এবং নারী এই ক্ষমার বাইরে ছিল। তারা বিভিন্নভাবে ইসলাম ও মুহাম্মাদ (সঃ)এর কুৎসা রটাত। তবে এদের মধ্য হতেও পরবর্তিতে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়। মক্কায় প্রবেশ করেই মুহাম্মাদ (সঃ) সর্বপ্রথম কাবাঘরে আগমন করেন এবং সেখানকার সকল মূর্তি ধ্বংস করেন। মুসলমানদের শান-শওকত দেখে এবং মুহাম্মাদ (সঃ)এর ক্ষমাগুণে মুগ্ধ হয়ে অধিকাংশ মক্কাবাসীই ইসলাম গ্রহণ করে। কোরআনে এই বিজয়ের ঘটনা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।

মক্কা বিজয়ের পর
যে মক্কা থেকে বিশ্বনবী (সা.) নির্যাতিত অবস্থায় বিতাড়িত হয়েছিলেন, সেখানে আজ তিনি বিজয়ের বেশে উপস্থিত হলেন এবং মক্কাবাসীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন। মক্কা বিজয়ের দিন হযরত ওরম ফারুক (রা.) কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানকে গ্রেফতার করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সম্মুখে উপস্থিত করেন। কিন্তু তিনি তাঁর দীর্ঘদিনের শত্রুকে হাতে পেয়েও ক্ষমা করে দেন। ক্ষমার এ মহান আদর্শ পৃথিবীর ইতিহাসে আজও বিরল। মক্কায় আজ ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীয়মান। সকল অন্যায়, অসত্য, শোষণ ও জুলুমের রাজত্ব চিরতরে বিলুপ্ত।
৬৩১ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক দশ হিজরিতে মুহাম্মদ (সা.) লক্ষাধিক মুসলিম সৈন্য নিয়ে বিদায় হজ সম্পাদন করেন এবং হজ শেষে আরাফাতের বিশাল ময়দানে প্রায় ১,১৪,০০০ সাহাবির সম্মুখে জীবনের অন্তিম ভাষণ প্রদান করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে ‘বিদায় হজের ভাষণ’ নামে পরিচিত। বিদায় হজের ভাষণে বিশ্বনবী (সা.) মানবাধিকার সম্পর্কিত যে সনদপত্র ঘোষণা করেন দুনিয়ার ইতিহাসে তা আজও অতুলনীয়। তিনি দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন
(১) হে বন্ধুগণ, স্মরণ রেখ, আজিকার এ দিন, এ মাস এবং এ পবিত্র নগরী তোমাদের নিকট যেমন পবিত্র, তেমনি পবিত্র তোমাদের সকলের জীবন, তোমাদের ধন-সম্পদ, রক্ত এবং তোমাদের মান-মর্যাদা তোমাদের পরস্পরের নিকট। কখনো অন্যের ওপর অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করবে না।
(২) মনে রেখ, স্ত্রীদের ওপর তোমাদের যেমন অধিকার আছে, তোমাদের ওপরও স্ত্রীদের তেমন অধিকার আছে ।
(৩) সাবধান, শ্রমিকের মাথার ঘাম শুকানোর পূর্বেই তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক পরিশোধ করে দেবে ।
(৪) মনে রেখে যে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না ।
(৫) চাকর-চাকরানিদের প্রতি নিষ্ঠুর হয়ো না। তোমরা যা খাবে, তাদের তাই খেতে দেবে, তোমরা যা পরিধান করবে, তাদের তাই (সমমূল্যের) পরিধান করতে দেবে।
(৬) কোনো অবস্থাতেই ইয়াতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করবে না। এমনিভাবে মানবাধিকার সম্পর্কিত বহু বাণী তিনি বিশ্ববাসীর উদ্দেশে পেশ করে যান। তিনি হলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী, মানবজাতির একমাত্র আদর্শ এবং বিশ্ব জাহানের রহমত হিসেবে প্রেরিত।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর নবুয়্যতের ২৩ বছরের আন্দোলনে আরবের একটি অসভ্য ও বর্বর জাতিকে একটি সভ্য ও সুশৃঙ্খল জাতিতে পরিণত করেছিলেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার সাধন করেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চিরাচরিত গোত্রীয় পার্থক্য তুলে দিয়ে, তিনি ঘোষণা করেন, ‘অনারবের ওপর আরবের এবং আরবের ওপর অনারবদের; কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গের এবং শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের কোনো পার্থক্য নেই। বরং তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে অধিক মুত্তাকিন।’ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি সুদকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং জাকাতভিত্তিক অর্থনীতির মাধ্যমে এমন একটি অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক তাদের আর্থিক নিরাপত্তা লাভ করেছিল। সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর কোনো মর্যাদা ও অধিকার ছিল না। বিশ্বনবী (সা.) নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করলেন এবং ঘোষণা করলেন ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।’ নারী জাতিকে শুধুমাত্র মাতৃত্বের মর্যাদাই দেননি, উত্তরাধিকার ক্ষেত্রেও তাদের অধিকারকে করেছেন সমুন্নত ও সুপ্রতিষ্ঠিত। ক্রীতদাস আযাদ করাকে তিনি উত্তম ইবাদত বলে ঘোষণা করেন। ধর্মীয় ক্ষেত্রে যেখানে মূর্তিপূজা, অগ্নিপূজা এবং বিভিন্ন বস্তুর পূজা আরববাসীদের জীবনকে কলুষিত করেছিল সেখানে তিনি আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেন। মোদ্দা কথা তিনি এমন একটি অপরাধমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেখানে কোনো হানাহানি, রাহাজানি, বিশৃঙ্খলা, শোষণ, জুলুম, অবিচার, ব্যভিচার, সুদ, ঘুষ ইত্যাদি ছিল না।


মূল নিবন্ধ: মুহাম্মাদের (সঃ) মৃত্যু
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পর হিজরী ১১ সালের সফর মাসে মুহাম্মদ (সাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বরের তাপমাত্রা প্রচন্ড হওয়ার কারণে পাগড়ির ওপর থেকেও উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছিল। অসুস্থ অবস্থাতেও তিনি এগারো দিন নামাজের ইমামতি করেন। অসুস্থতা তীব্র হওয়ার পর তিনি সকল স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আয়েশা (রাঃ)এর কামরায় অবস্থান করতে থাকেন। তাঁর কাছে সাত কিংবা আট দিনার ছিল, মৃত্যুর একদিন পূর্বে তিনি এগুলোও দান করে দেন। বলা হয়, এই অসুস্থতা ছিল খাইবারের এক ইহুদি নারীর তৈরি বিষ মেশানো খাবার গ্রহণের কারণে। এ মহামানব ১২ রবিউল আওয়াল, ১১ হিজরি মোতাবেক ৭ জুন, ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি হলেন সর্বশেষ নবী ও রাসূল। পৃথিবীর বুকে কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নবীর আবির্ভাব হবে না। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। আলী (রাঃ) তাকেঁ গোসল দেন এবং কাফন পরান। আয়েশ (রাঃ)এর কামরার যে স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন, জানাযার পর সেখানেই তাকেঁ দাফন করা হয়। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) গোটা মুসলিম জাতিকে উদ্দেশ করে বলে গিয়েছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে গেলাম। যত দিন তোমরা এ দুটি জিনিসকে আঁকড়ে রাখবে তত দিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহর কিতাব অর্থাৎ কোরআন আর অপরটি হলো আমার সুন্নাহ অর্থাৎ হাদিস।’ বিশ্বনবী (সা.) এর জীবনী লিখতে গিয়ে খ্রিষ্টান লেখক ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেছেন, ‘He was the mater mind not only of his own age but of all ages’ অর্থাৎ মুহাম্মদ (সা.) যে যুগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাকে শুধু সে যুগেরই একজন মনীষী বলা হবে না, বরং তিনি ছিলেন সর্বকালের, সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী।
শুধুমাত্র ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুরই নন, পৃথিবীর বুকে যত মনীষীর আবির্ভাব ঘটেছে প্রায় প্রত্যেকেই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে তাঁদের মূল্যবান বাণী পৃথিবীর বুকে রেখে গেছেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সূরা-আহযাব, আয়াত-২১)।

বর্তমানে অশান্ত, বিশৃঙ্খল ও দ্বন্দ্বমুখর আধুনিক বিশ্বে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শকে অনুসরণ করা হলে বিশ্বে শান্তি ও একটি অপরাধমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা নিঃসন্দেহে সম্ভব।

ইসলামী বর্ণনামতে মুহাম্মদ (সা) এর অলৌকিকত্ব
ব্যতিক্রমের প্রতি আকর্ষন মানুষের স্বভাবজাত, অন্যদিকে অলৌকিকত্বের প্রভাব আমাদের লৌকিক জীবনে সুদূর প্রসারী। আরবী মু’জেযা শব্দের অর্থ আসাধারন বিষয়, অলৌকিকত্ব। মুহাম্মদের [স.] অসংখ্য মু’জেযার মধ্যে প্রকাশ্য মু’জেযার সংখ্যা দশ হাজারেরও অধিক। ব্যাখ্যাকারীগণ মুহাম্মদের [স.] মু’জেযাগুলোকে তিনভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করেছেনঃ
প্রথমত যা তাঁর দেহ হতে বহির্ভূত। যথা- চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া, বৃক্ষ নিকটে আসা, ঊট ও হরিনের অভিযোগ ইত্যাদি।
দ্বিতীয়ত যা তাঁর দেহসম্পৃক্ত যথা- ‘মহরে নবুওয়াত’ যা হলো দুই কাঁধের মাঝখানে আল্লাহর রাসূল মোহাম্মাদ (সঃ) বাক্যটি লেখা ছিল মৃত্যুর আগে পর্যন্ত। তৃতীয়ত তাঁর নৈতিক ও চারিত্রিক গুণাবলী যথা- নির্ভিক, অকুতোভয়, দানশীল, সত্য ভাষণকারী, দুনিয়াবিমুখ ইত্যাদি।
আল কোরানের সুরা ক্বামারে মুহাম্মদের [স.] আংগুল দ্বারা চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়ার কথা বলা আছে। বদর যুদ্ধের আগের দিন বদর নামক স্থানে পৌঁছে মুহাম্মদ [স.] বললেন ‘এটা আমুকের শাহাদাতের স্থান, এটা অমুকের (কাফেরের) হত্যার স্থান… সাহাবীরা (রা.) বলেন ‘রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার জন্য যে স্থান দেখিয়েছেন, তার সামান্য এদিক সেদিক হয়নি।’ (মুসলিম) বিভিন্ন যুদ্ধে আকাশের ফেরেশতাগন অংশগ্রহন করতো। যা আল্লাহর সাহায্য ও রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মু’জেযার প্রমান। হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন- ‘ ওহুদের যুদ্ধের দিন আমি রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ডানে বামে সাদা পোষাকের দু জন কে (জিব্রাইল, মিকাইল) দেখলাম যাদের কে আর কোন দিন দেখেনি। (বুখারী, মুসলিম) সাহাবীর ভাংগা পা রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্পর্শে ভালো হওয়া আরো একটি মু’জেযা। সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক (রাঃ) এর পা ভেংগে গেলে তিনি তা রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জানালে রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পায়ের উপর হাত বুলালেন। সাহাবী বলেন- ‘এতে আমার পা এমনভাবে সুস্থ হয়ে গেলো যেন তাতে আমি কখনো আখাতই পাইনি। (বুখারী) স্বল্প খাদ্যে হাজার মানুষের পরিতৃপ্ত ভোজন হওয়া প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উল্লেখযোগ্য মু’জেযা। এরুপ বহু ঘটনা বহু সাহাবী বর্ণনা করেছেন। খন্দকের যুদ্ধের সময় যখন রাসুলুল্লাহ! সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সকল সাহাবীগন ক্ষুধায় অস্থির ও দুর্বল হয়ে পরেছিলেন তখন জাবের (রাঃ) একটি বকরীর বাচ্চা জবাই করলেন আর এক সা পরিমান জবের রুটি তৈরি করলেন আর তা দিয়েই সবাই তৃপ্তিতে খেলেন। সাহাবী জাবের (রাঃ) আল্লাহর শপথ করে বলেন- ‘সকলে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে চলে যাওয়ার পরও চুলায় গোশত ভর্তি ডেকচি ফুটছিল এবং রুটি হচ্ছিল।’ (বুখারী, মুসলিম)

05 March, 2018

ইংরেজী শেখার বই ডাউনলোড করুন

  বইটি   ডাউনলোড করুন এখান থেকে

 

---------------------------------------------

বইটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন




-----------------------------------------------------------------
 বইটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...