08 August, 2016

কম্পিউটারের যাবতীয় সকল বই ওয়েব সাইট ডিজাইন এবং সকল মোবাইলের কোড সব বই এখান থেকে ডাউনলোড করুন

সকল ধরনের ইসলামিক পিডিএফ বই ডাউনলোড করুন এখান থেকে

প্রাইমারি স্কুল এবং হাই স্কুলের সকল ধরনের বই ডাউনলোড করুন এখান থেকে

07 August, 2016

সৎ লোকের দোয়া

এ পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষকে প্রেরণ
করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। কিন্তু
মানুষ তাদের কর্তব্য ভুলে গিয়ে বিভিন্ন
অন্যায় অপকর্মে লিপ্ত হয়। এরূপ মানুষ
আল্লাহর নিকট ঘৃনিত এবং জনসমাজেও
ধিকৃত। তবে যারা আল্লাহর নির্দেশ
মেনে চলে, তাঁর অনুগত থেকে ইবাদত-
বন্দেগী করে, আল্লাহ তাদের
ভালবাসেন, তাদের যেকোন দো‘আ কবুল
করেন। এ সম্পর্কেই নিম্নের হাদীছ।-
উসায়র ইবনু আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত,
তাকে ইবনু জাবিরও বলা হয়, তিনি বলেন,
ইয়েমেনের বসবাসকারীদের পক্ষ থেকে
ওমর (রাঃ)-এর নিকট সাহায্যকারী দল
আসলে তিনি তাদেরকে প্রশ্ন করতেন,
তোমাদের মাঝে উয়াইস ইবনু আমির
আছে কি? অবশেষে (একদিন) উয়াইস
(রাঃ) এসে গেলেন। তাকে তিনি (ওমর)
প্রশ্ন করলেন, আপনি কি উয়াইস ইবনু
আমির? সে বলল হ্যাঁ। ওমর (রাঃ) আবার
বললেন, ‘মুরাদ’ সম্প্রদায়ের উপগোত্র
‘কারনের’ লোক? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, আপনার কি কুষ্ঠরোগ
হয়েছিল, তা হ’তে সুস্থ হয়েছেন এবং
মাত্র এক দিরহাম পরিমাণ স্থান বাকী
আছে? তিনি বলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন,
আপনার মা জীবিত আছে কি? তিনি
বললেন, হ্যাঁ। তিনি (ওমর) বললেন,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমি বলতে
শুনেছি, ‘ইয়ামানের সহযোগী দলের সাথে
উয়াইস ইবনু আমির নামক এক লোক
তোমাদের নিকট আসবে। সে ‘মুরাদ’
জাতির উপজাতি ‘কারনের’ লোক। তার
কুষ্ঠরোগ হবে এবং তা হ’তে সে মুক্তি
পাবে, শুধুমাত্র এক দিরহাম পরিমাণ
স্থান ছাড়া। তার মা বেঁচে আছে, সে
তার মায়ের খুবই অনুগত। সে (আল্লাহর
উপর ভরসা করে) কোন কিছুর শপথ করলে
তা আল্লাহ তা‘আলা পূরণ করে দেন। তুমি
যদি তাকে দিয়ে তোমার গুনাহ মাফের
জন্য দো‘আ করাবার সুযোগ পাও তাহ’লে
তাই করবে’। ওমর (রাঃ) বলেন, কাজেই
আমার অপরাধ ক্ষমার জন্য আপনি দো‘আ
করুন। অতএব তিনি (উয়াইস) ওমরের
অপরাধের ক্ষমা চেয়ে দো‘আ করলেন।
ওমর (রাঃ) তাকে বললেন, আপনি কোথায়
যেতে চান? তিনি বললেন, কূফা (যাবার
ইচ্ছা আছে)। তিনি (ওমর) বলেন, আমি
সেখানকার গভর্ণরকে আপনার
(সাহায্যের) জন্য লিখে দেই? তিনি
বললেন, আমার নিকট গরীব-মিসকীনদের
মাঝে বসবাস করাই বেশী পসন্দীয়। পরের
বছর কূফার এক নেতৃস্থানীয় লোক হজ্জে
এলো। তার সাথে ওমরের দেখা হ’লে
তিনি উয়াইস সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন
করলেন। সে বলল, আমি তাকে এরকম
অবস্থায় দেখে এসেছি যে, তার ঘরটা
অত্যন্ত জীর্ণ অবস্থায় আছে এবং তার
জীবন-যাপনের উপকরণসমূহ খুবই নগণ্য। ওমর
(রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে
বলতে শুনেছি, ‘উয়াইস ইবনু আমির নামক
এক লোক ইয়ামানের সাহায্যকারী দলের
সাথে তোমাদের নিকট আসবে। সে ‘মুরাদ’
জাতির উপজাতি ‘কারন’ বংশীয় লোক।
তার কুষ্ঠ রোগ হবে এবং তা থেকে সে
মুক্তি পাবে, শুধুমাত্র এক দিরহাম
পরিমাণ স্থান ছাড়া। তার মা বেঁচে
আছে এবং সে তার মায়ের খুবই অনুগত।
সে (আল্লাহর উপর ভরসা করে) কোন
কিছুর শপথ করলে তা আল্লাহ পূরণ করে
দেন। তুমি যদি তোমার গুনাহ মাফের জন্য
তাকে দিয়ে দো‘আ করানোর সুযোগ পাও,
তাহ’লে তাই করবে’। লোকটি ফিরে এসে
উয়াইসের নিকট গিয়ে বলল, আমার
অপরাধ ক্ষমার জন্য আপনি দো‘আ করুন।
তিনি (উয়াইস) বললেন, এইমাত্র মঙ্গলময়
সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করেছেন; বরং
আপনি আমার অপরাধ ক্ষমার জন্য দো‘আ
করুন। তিনি বললেন, আপনি কি ওমরের
সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সে বলল, হ্যাঁ।
তার জন্য উয়াইস দো‘আ করলেন।
উয়াইসের মর্যাদা সম্পর্কে লোকেরা
সচেতন হ’লে সেখান থেকে উয়াইস অন্য
স্থানে চলে গেলেন। হাদীছটি ইমাম
মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
মুসলিমের আরেক বর্ণনায় উসায়র ইবনু
জাবির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, ওমর (রাঃ)-
এর নিকট কূফার অধিবাসীরা একটি
সাহায্যকারী দল পাঠায়। দলের এক লোক
উয়াইসকে বিদ্রূপ করত। ওমর (রাঃ)
বললেন, এখানে ‘কারন’ বংশীয় কেউ
আছে কি? ঐ ব্যক্তিটি উঠে আসলে ওমর
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
ইয়েমেন থেকে উয়াইস নামে এক লোক
তোমার নিকট আসবে। সে তার মাকে
ইয়ামানে একা রেখে আসবে। তার
কুষ্ঠরোগ হবে। সে আল্লাহর নিকট দো‘আ
করবে, আল্লাহ তার রোগমুক্তি দান
করবেন, শুধুমাত্র এক দীনার অথবা এক
দিরহাম পরিমাণ স্থান ছাড়া। তোমাদের
মধ্যে যে কেউ তার দেখা পেলে, তাকে
দিয়ে সে যেন তার গুনাহ মাফের জন্য
দো‘আ করায়’।
মুসলিমের আরেক বর্ণনায় ওমর (রাঃ)
হ’তে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি,
‘পরবর্তীদের (তাবিঈ) মধ্যে উয়াইস
নামে এক সৎ লোক হবে। তার মা বেঁচে
আছে। তার শরীরে কুষ্ঠের চিহ্ন থাকবে।
তার নিকট গিয়ে নিজের গুনাহ মাফের
জন্য তাকে দিয়ে প্রার্থনা করাও’
(মুসলিম হা/২৫৪২/২২৫) ।
পরিশেষে বলব, আল্লাহ আমাদেরকে
উয়াইস ইবনু আমিরের মত সৎ কর্মশীল
বান্দা হওয়ার তাওফীক দান করুন- আমীন!
মুসাম্মাৎ শারমীন আখতার

মৃত ব্যক্তির জন্য প্রশংসার সুফল

মৃত ব্যক্তির প্রতি সত্যবাদী এক
জামাআত মুসলিমের উত্তম প্রশংসা,
কমপক্ষে দু’জন পরিচিতি সামর্থ্যবান ও
জ্ঞানসম্পন্ন প্রতিবেশীর প্রশংসা, যা
মৃত ব্যক্তির জন্য জান্নাত অপরিহার্য
করে দেয়। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
হাদিস তুলে ধরা হলো-
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের নিকট দিয়ে একটি জানাজা
গেল অতপর তার উত্তম প্রশংসা করা
হলো, উত্তম প্রশংসা মুখে মুখে হতে
থাকলো; তারা বললো আমাদের জানা
মতে সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে
ভালোবাসত। অতপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বললেন, অপরিহার্য হয়ে গেল। অপরিহার্য
হয়ে গেল। অপরিহার্য হয়ে গেল।
অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের নিকট দিয়ে একটি
জানাজা নিয়ে যাওয়া হলো, ঐ
জানাজায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হলো (ঐ
জানাজার নিন্দা মুখে মুখে লেগে
থাকলো, তারা বললো লোকটি আল্লাহর
দ্বীনের ব্যাপারে কতই না খারাপ ছিল!)
অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বললেন, অপরিহার্য হয়ে
গেল। অপরিহার্য হয়ে গেল। অপরিহার্য
হয়ে গেল।
হজরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন,
আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান
হোক। একটি জানাজার প্রশংসা করা
আপনি তিনবার অপরিহার্য হয়ে গেল
বললেন। অপর জানাজায় নিন্দা
জ্ঞাপনেও আপনি তিনবার অপরিহার্য
হলে গেল বললেন?
অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা যার উত্তম
প্রশংসা করলে তার জান্নাত অপরিহার্য
হয়ে গেল ও তোমরা যার নিন্দা করলে
তার জন্য জাহান্নাম অপরিহার্য হয়ে
গেল। আর তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর
সাক্ষী, তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর
সাক্ষী, তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর
সাক্ষী। (মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে
দুনিয়ার জীবনে উত্তম কাজ, আল্লাহ ও
তাঁর রাসুলের ভালোবাসা লাভে কুরআন-
সুন্নাহ মোতাবেক আমলি জিন্দেগি
অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

মুমিনের কিরামত

বনী ইসরাঈলের জনৈক ব্যক্তি অপর এক
ব্যক্তির নিকট এক হাযার স্বর্ণমুদ্রা কর্য
চাইলে কর্যদাতা বলল, কয়েকজন লোক
নিয়ে আস, আমি তাদেরকে সাক্ষী
রাখব। গ্রহীতা বলল, ‘আল্লাহই সাক্ষী
হিসাবে যথেষ্ট’। কর্যদাতা পুনরায় বলল,
তবে একজন যামিনদার উপস্থিত কর! সে
বলল, ‘আল্লাহই যামিনদার হিসাবে
যথেষ্ট’। তখন কর্যদাতা বলল, তুমি ঠিকই
বলেছ। তারপর সে নির্ধারিত সময়ে
পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাযার
স্বর্ণমুদ্রা ধার দিল। অতঃপর সে
(গ্রহীতা) সমুদ্রযাত্রা করল এবং তার
(ব্যবসায়িক) প্রয়োজন পূরণ করল।
পরিশোধের সময় ঘনিয়ে আসলে সে
যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে নির্ধারিত
সময়ে কর্যদাতার নিকট এসে পৌঁছতে
পারে। কিন্তু সে কোন যানবাহন পেল না।
তখন সে এক টুকরো কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র
করল এবং কর্যদাতার নামে একখানা
চিঠি ও এক হাযার দীনার ওর মধ্যে পুরে
ছিদ্রটি বন্ধ করে দিল। তারপর ঐ
কাষ্ঠখণ্ডটা সমুদ্র তীরে নিয়ে গিয়ে
বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি তো জান, আমি
অমুকের নিকট এক হাযার স্বর্ণমুদ্রা কর্য
চাইলে সে আমার কাছ থেকে যামিনদার
চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহই
যামিনদার হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে
রাযী হয়ে যায় (এবং আমাকে ধার দেয়)।
তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী
চেয়েছিল, আমি বলেছিলাম, সাক্ষী
হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তাতে সে
রাযী হয়ে যায়। আমি তার প্রাপ্য তার
নিকট পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে
যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা
করলাম, কিন্তু পেলাম না। আমি ঐ এক
হাযার স্বর্ণমুদ্রা তোমার নিকট আমানত
রাখছি। এই বলে সে কাষ্ঠখণ্ডটা
সমুদ্রবক্ষে নিক্ষেপ করল। তৎক্ষণাৎ তা
সমুদ্রের মধ্যে ভেসে চলে গেল। অতঃপর
লোকটি ফিরে গেল এবং নিজের শহরে
যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজতে লাগল।
ওদিকে কর্যদাতা (নির্ধারিত দিনে) এ
আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়তবা
ঋণগ্রহীতা তার পাওনা টাকা নিয়ে
কোন নৌযানে চড়ে এসে পড়েছে।
ঘটনাক্রমে ঐ কাষ্ঠখণ্ডটা তার নযরে
পড়ল, যার ভিতরে স্বর্ণমুদ্রা ছিল। সে তা
পরিবারের জ্বালানির জন্য বাড়ী নিয়ে
গেল। যখন কাঠের টুকরাটা চিরল, তখন ঐ
স্বর্ণমুদ্রা ও চিঠিটা পেয়ে গেল।
কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাযার
স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে (পাওনাদারের নিকট)
এসে হাযির হ’ল। সে বলল, আল্লাহ্র কসম!
আমি তোমার (প্রাপ্য) মাল যথাসময়ে
পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে যানবাহনের
খোঁজে সর্বদা চেষ্টিত ছিলাম। কিন্তু
যে জাহাযটিতে করে আমি এখন এসেছি
এর আগে আর কোন জাহাযই পাইনি (তাই
সময়মত আসতে পারলাম না)। কর্যদাতা
বললেন, তুমি কি আমার নিকট কিছু
পাঠিয়েছিলে? ঋণগ্রহীতা বলল, আমি
তো তোমাকে বললামই যে, এর আগে আর
কোন জাহাযই পাইনি। অতঃপর ঋণদাতা
বলল, আল্লাহ পাক আমার নিকট তা
পৌঁছিয়েছেন, যা তুমি পত্রসহ
কাষ্ঠখণ্ডে পাঠিয়েছিলে। কাজেই এক
হাযার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে আনন্দচিত্তে
ফিরে যাও।
{আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত, ছহীহ
বুখারী হা/২২৯১, ‘যামিন হওয়া’ অধ্যায়,
অনুচ্ছেদ-১}।

হযরত খিযির আঃ ও মুসা নবীর কাহিনী

হযরত ইবনু আব্বাস (রা:) হ’তে বর্ণিত
তিনি বলেন, হযরত উবাই ইবনু কা‘ব (রা:)
রাসূলুল্লাহ (সা:) হ’তে আমাদের নিকট
বর্ণনা করেছেন যে, হযরত মূসা (আঃ)
একদা বনী ইসরাঈলের এক সমাবেশে
ভাষণ দিতে দাঁড়ালে তাঁকে জিজ্ঞেস
করা হ’ল, কোন ব্যক্তি সর্বাধিক
জ্ঞানী? তিনি বললেন, আমিই সর্বাধিক
জ্ঞানী। জ্ঞানকে আল্লাহর দিকে
সোপর্দ না করার কারণে আল্লাহ্ তাকে
তিরস্কার করে বললেন, বরং দু’সাগরের
সঙ্গমস্থলে আমার এক বান্দা আছে,
যিনি তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী।
হযরত মূসা (আঃ) বললেন, ‘হে আমার
প্রতিপালক! তার নিকট পৌছাতে কে
আমাকে সাহায্য্ করবে? কখনো সুফইয়ান
এভাবে বর্ণনা করেছেন, আমি কিভাবে
তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারি? তখন
বলা হ’ল, তুমি একটি থলিতে করে একটি
মাছ নাও। যেখানে তুমি মাছটি হারাবে,
সেখানেই আমার সে বান্দা আছে।
অতঃপর হযরত মূসা (আঃ) একটি মাছ
ধরলেন এবং থলিতে রাখলেন।অতঃপর
মাছ নিয়ে তাঁর সঙ্গী ইউশা বিন নূনকে
সাথে নিয়ে চললেন।শেষ পর্যন্ত তারা
একটি পাথরের কাছে পৌছলেন এবং
তার উপর মাথা রেখে বিশ্রাম নিলেন।
মূসা (আঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন। এ সময় মাছটি
থলি থেকে বের হয়ে লাফিয়ে সমুদ্রে
চলে গেল।অতঃপর সে সমুদ্রে সুড়ঙ্গের মত
পথ করে নিল।আর আল্লাহ্ মাছটির চলার
পথে পানির প্রবাহ থামিয়ে দিলেন।ফলে
তার গমনপথটি সুড়ঙ্গের মত হয়ে গেল।
অতঃপর তারা উভয়ে অবশিষ্ট রাত এবং
পুরো দিন পথ চললেন।
পরদিন সকালে হযরত মূসা (আঃ) তার
সাথীকে বললেন, আমরা তো সফরে
ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আমাদের খাবার
নিয়ে এস।হযরত মূসা (আঃ)-কে আল্লাহ্
যে স্থানে যাবার কথা বলেছিলেন, সেই
স্থান অতিক্রম করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি
কোনরূপ ক্লান্তিবোধ করেননি। সাথী
ইউশা বিন নুন তখন বলল, আপনি কি ভেবে
দেখেছেন, যে পাথরটির নিকট আমরা
বিশ্রাম নিয়েছিলাম সেখানেই মাছটি
অদ্ভুতভাবে সমুদ্রের মধ্যে চলে গেছে।
কিন্তু আমি মাছটির কথা আপনাকে
বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। মূলত: শয়তানই
আমাকে এ কথা ভুলিয়ে দিয়েছে।
বর্ণনাকারী বলেন, পথটি মাছের জন্য
ছিল একটি সুড়ঙ্গের মত আর তাঁদের জন্য
ছিল আশ্চর্যজনক ব্যাপার।
হযরত মূসা (আঃ) বললেন, আমরা তো
সেই স্থানটিরই অনুসন্ধান করছি।অতঃপর
তারা তাদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললেন
এবং ঐ পাথরের নিকটে পৌঁছে দেখলেন,
এক ব্যক্তি কাপড় মুড়ি দিয়ে বসে আছেন।
মূসা (আঃ) তাঁকে সালাম দিলেন। তিনি
সালামের জবাব দিয়ে বললেন, এখানে
সালাম কি করে এলো? তিনি বললেন,
আমি মূসা। খিযির জিজ্ঞেস করলেন,
আপনি কি বনী ইসরাঈল বংশীয় মূসা?
মূসা (আঃ) বললেন, হ্যাঁ। আমি এসেছি
এজন্য যে, সত্য পথের যে জ্ঞান
আপনাকে দান করা হয়েছে, তা হ’তে
আপনি আমাকে শিক্ষা দিবেন। খিযির
বললেন, হে মূসা! আমার আল্লাহ্ প্রদত্ত
কিছু জ্ঞান আছে, যা আপনি জানেন না।
আর আপনিও আল্লাহ্ প্রদত্ত এমন কিছু
জ্ঞানের অধিকারী, যা আমি জানি না।
মূসা (আঃ) বললেন, আমি কি আপনার
সাথী হ’তে পারি? খিযির বললেন,
‘আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্যধারণ
করতে পারবেন না। যে বিষয় আপনার
জ্ঞানের আওতাধীন নয় সে বিষয়ে
আপনি ধৈর্যধারণ করবেন কেমন করে?’
মূসা (আঃ) বললেন, ‘ইনশাআল্লাহ্ আপনি
আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার
কোন আদেশ আমি অমান্য করব না’ (কাহফ
৬৭-৬৯) ।
অতঃপর তাঁরা দু’জনে সাগরের কিনারা
ধরে হেঁটে চললেন। তখন একটি নৌকা
তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তারা
তাদেরকে নৌকায় তুলে নেওয়ার জন্য
অনুরোধ করলেন। তারা খিযির-কে
চিনতে পেরে বিনা ভাড়ায় তাঁদেরকে
নৌকায় তুলে নিলো। যখন তাঁরা দু’জনে
নৌকায় চড়লেন, তখন একটি চড়ুই পাখি
এসে নৌকাটির কিনারায় বসল এবং
সমুদ্র থেকে এক ফোঁটা বা দুই ফোঁটা
পানি পান করল। খিযির বললেন, ‘হে মুসা!
আমার ও আপনার জ্ঞানের দ্বারা
আল্লাহ্ জ্ঞান হ’তে ততটুকুও কমেনি যত
টুকু এ পাখিটি তাঁর ঠোটের দ্বারা
সাগরের পানি হ্রাস করেছে’।
তখন খিযির একটি কুড়াল নিয়ে
নৌকাটির একটা তক্তা খুলে ফেললেন।
মূসা (আঃ) অকস্মাৎ দৃষ্টি দিতেই
দেখতে পেলেন যে, তিনি কুড়াল দিয়ে
একটি তক্তা খুলে ফেলেছেন। তখন তিনি
তাঁকে বললেন, আপনি একি করলেন? এ
লোকেরা বিনা ভাড়ায় আমাদেরকে
নৌকায় তুলে নিলো, আর আপনি
তাদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য নৌকা
ছিদ্র করে দিলেন? আপনি তো একটি
গুরুতর কাজ করলেন। খিযির বললেন, আমি
কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে
ধৈর্যধারণ করতে পারবেন না। মূসা (আঃ)
বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে
অপরাধী করবেন না এবং আমার এ
ব্যবহারে আমার প্রতি কঠোর হবেন না।
মূসা (আঃ)-এর পক্ষ থেকে প্রথম এ কথাটি
ছিল ভুলক্রমে।
অতঃপর তাঁরা যখন উভয়ে সমুদ্র পার
হলেন, তখন তারা একটি বালকের পাশ
দিয়ে অতিক্রম করলেন, যে অন্যান্য
বালকদের সাথে খেলা করছিল।খিযির
ছেলেটির মাথা দেহ হ’তে ছিন্ন করে
ফেললেন। হযরত মুসা (আঃ) বললেন,
আপনি একটি নিষ্পাপ শিশুকে বিনা
অপরাধে হত্যা করলেন? আপনি খুবই
খারাপ একটা কাজ করলেন। খিযির
বললেন, আমি কি বলিনি যে, আপনি
আমার সাথে ধৈর্যধারণ করতে পারবেন
না। মূসা (আঃ) বললেন, এরপর যদি আমি
আপনাকে আর কোন প্রশ্ন করি, তাহ’লে
আমাকে আর সঙ্গে রাখবেন না।অতঃপর
উভয়ে চলতে লাগলেন। চলতে চলতে তাঁরা
একটি জনপদের অধিবাসীদের নিকট
পৌঁছে তাদের নিকট কিছু খাবার
চাইলেন। কিন্তু জনপদ বাসী তাদের
দু’জনের মেহমানদারী করতে অস্বীকার
করল।সেখানে তারা একটি প্রাচীর
দেখতে পেলেন, যা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম
হয়েছিল।হযরত খিযির প্রাচীরটি
মেরামত করে সুদৃঢ় করে দিলেন।হযরত মুসা
(আঃ) বললেন, এই বসতির লোকদের নিকট
এসে আমরা খাবার চাইলাম।তারা
মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল।অথচ
আপনি এদের দেয়াল সোজা করে
দিলেন।আপনি তো ইচ্ছা করলে এর জন্য
পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন।হযরত
খিযির বললেন, এবার আমার এবং
আপনার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেল।এক্ষণে
যে বিষয়ে আপনি ধৈর্যধারণ করতে
পারেননি, আমি এর তাৎপর্য বলে দিচ্ছি।
নৌকাটির ব্যাপার ছিল এই যে, সেটি
ছিল কয়েকজন দরিদ্র ব্যক্তির।তারা
সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত।আমি
নৌকাটিকে ত্রুটিযুক্ত করে দিতে
চাইলাম। কারণ, তাদের সামনে ছিল এক
রাজা, যে ভাল নৌকা পেলেই
জোরপূর্বক কেড়ে নিত। তারপর যখন
এটাকে দখল করতে লোক আসল, তখন
ছিদ্রযুক্ত দেখে ছেড়ে দিল। অতঃপর
নৌকাওয়ালারা একটা কাঠ দ্বারা
নৌকাটি মেরামত করে নিলো।আর
বালকটি সূচনা লগ্নেই ছিল কাফের। আর
সে ছিল তার ঈমানদার বাবা- মার বড়ই
আদরের সন্তান । আমি আশঙ্কা করলাম
যে, সে বড় হয়ে অবাধ্যতা ও কুফরি
দ্বারা তাদেরকে কষ্ট দিবে। অতঃপর
আমি ইচ্ছা করলাম যে, তাদের
পালনকর্তা তাদেরকে তার চেয়ে
পবিত্রতায় ও ভালবাসায় ঘনিষ্ঠতর
একটি শ্রেষ্ঠ সন্তান দান করুন।আর
প্রাচীরের ব্যাপার এই যে, সেটি
ছিল নগরের দু’জন ইয়াতীম বালকের। এর
নীচে ছিল তাদের গুপ্তধন। তাদের পিতা
ছিলেন সৎকর্ম পরায়ণ। সুতরাং আপনার
পালনকর্তা দয়াপরবেশ হয়ে ইচ্ছা পোষণ
করলেন যে, তারা যৌবনে পদার্পণ করে
নিজেদের গুপ্তধন উদ্ধার করুক। আমি
নিজ ইচ্ছায় এসব করিনি। আপনি যে
বিষয়গুলোতে ধৈর্যধারণ করতে
পারেননি, এই হ’ল তার ব্যাখ্যা ।
(কাহফ ৭৯-৮২; ছহীহ বুখারী হা/৩৪০১
‘নবীদের কাহিনী’অধ্যায়, ‘খিযিরের
সাথে মূসা (আঃ)-এর কাহিনী’অনুচ্ছেদ,
মুসলিম হা/২৩৮০, ‘ফাযায়েল’অধ্যায়,
অনুচ্ছেদ-৪৬)।gg

06 August, 2016

জিপি বন্ধ সিমের অফার

এখন জিপি সিমে ৫ টাকায় ৫০০ মেগাবাইট ইন্টারনেট ।
যাদের জিপি সিম ২ থেকে ৩ মাসের বেশী বন্ধ  আছে শুধু তারাই পাবে এ অফার। আপনি এ অফার পাচ্ছেন কি না তা জানার জন্য মেসেজ দিতে হবে এভাবে BHK 01743976533 তার পর 9999 নাম্বারে পাঠাতে হবে।




পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...