02 June, 2018

পুরুষের যে কারণে মাথা টাক হয়ঃ


চুলপড়া সমস্যার চিকিত্সা যত বেশী জরুরী তার চেয়ে বেশী জরুরী রোগীর আস্থা ও ধৈর্য। কারণ ধৈর্য ধরে যথাযথ চিকিত্সা নিতে পারলে অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে।চুলপড়া সমস্যা সব বয়সেই হতে পারে। কি পুরুষ কি মহিলা অথবা কিশোর-কিশোরী। আমি সব সময় বলে আসছি চুলপড়া সমস্যা কোন রোগ নয়। যে কোন রোগ অথবা সমস্যা থেকে চুলপড়তে পারে। এবার আমরা মেল প্যাটার্ন বল্ডনেস বা পুরুষের এক ধরণের চুলপড়া নিয়ে আলোচনা করবো। মেল প্যাটার্ন বল্ডনেস হচ্ছে পুরুষের চুলপড়া সমস্যার অন্যতম একটি ধরন। সাধারণত:জিন ও পুরুষ সেক্স হরমোন হিসাবে খ্যাত টেসটেসটেরনই দায়ী। এধরণের চুলপড়া সমস্যাকে এড্রোজেনেটিক এলোপেসিয়া বলা হয়। এধরণের চুলপড়া সমস্যা বুঝতে বা ডায়াগনোসিস করতে খুব একটা সমস্যা হয়না। হেয়ারলাইন বা কপালের উপরের অংশের চুল ফাকা হয়ে যায় এবং মাথার উপরি ভাগের অংশে চুল কমে যায়। এ ক্ষেত্রে চুলপড়ার ধরণ দেখেই বুঝা যায় এটা হরমোনাল বা বংশগত কারণে চুল পড়ছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ হরমোন জনিত চুলপড়া সমস্যার কোন ভালো চিকিত্সা নেই। কারণ হরমোন পরিবর্তন করে চুলপড়া সমস্যার চিকিত্সা যৌক্তিক নয়। তবে মেলপ্যাটার্ন বল্ডনেস বা পুরুষের চুলপড়া সমস্যার ক্ষেত্রে মার্কিন ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন এ পর্যন্ত দু'টো ঔষধ অনুমোদন দিয়েছে। আশার কথা এ দু'টো ঔষধই এখন বাংলাদেশে তৈরী হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে মিনক্সিডিল। মিনক্সিডিল হচ্ছে এক ধরণের লোশন বা সলিউশন যা সরাসরি মাথার ত্বকে ব্যবহার করতে হয়। এই ঔষধটি হেয়ার ফলিকিউল স্টিমুলেট করে এবং চুলগজাতে সাহায্য করে।এছাড়া এড্রোজেনেটিক এলোপেসিয়ায় আর একটি ঔষধ ব্যবহার করা হয়।এটি হচ্ছে ফিনাস্টেরাইড।এটা এক ধরণের মুখে খাবার ঔষধ। দৈনিক ১ মিলিগ্রাম করে এধরণের ঔষধ সেবন বাঞ্ছনীয়। এই ঔষধটি মিনক্সিডিল অপেক্ষা ভালো এবং চুলপড়া কমাতে সাহায্য করে।পাশাপাশি চুল গজাতেও কার্যকর।তবে যে কথাটি আমি সব সময় বলে থাকি চুলপড়া সমস্যা কোন রোগ নয় এবং চুলপড়া সমস্যার কোন ম্যাজিক চিকিত্সা নেই। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীরা চিকিত্সা নিতে নিতে হতাশ হয়ে পড়ে। ছুটতে থাকে এক ডাক্তার থেকে অন্য ডাক্তারের কাছে। ঔষধও পরিবর্তন করতে হয় বারবার। এতে কাজের কাজ কিছুই হয়না।
স্কিন স্পেশালিষ্টদের প্রতি আস্থা হারিয়ে রোগীরা ছোটে তথাকথিত অপচিকিত্সার দিকে। এজন্য আমরা ডাক্তাররাও কিছুটা দায়ী। রোগীর সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় দেইনা। রোগীর মানসিক অবস্থা ও চুলপড়া নিয়ে হতাশাও বুঝতে চেষ্টা করিনা। ফলে বড় বড় ডাক্তারদের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে রোগীরা। আর একটা কথা মনে রাখতে হবে শুধু ঔষধ দিয়েই চুলপড়া সমস্যার সমাধান হবেনা। চুলপড়া সমস্যার প্রকৃত কারণ জেনে চিকিত্সার পাশাপাশি যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। আর রোগীকে আস্থাশীল করতে না পারলে রোগীও দীর্ঘ মেয়াদী চিকিত্সা নিতে উত্সাহ হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই চুলপড়া সমস্যার চিকিত্সা যত বেশী জরুরী তার চেয়ে বেশী জরুরী রোগীর আস্থা ও ধৈর্য। কারণ ধৈর্য ধরে যথাযথ চিকিত্সা নিতে পারলে অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে।

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন