12 July, 2018

সিরাজগঞ্জ জেলার ইতিহাস



১. সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : ১৭৯০ সালে মোমেনশাহী জেলার কালেক্টর সাহেব বিশাল ।
মোমেনশাহী জেলার স্থানে স্থানে থানা স্থাপনের তাগিদে ঢাকা রেভিনিউ
বোর্ডের কাছে পরানগঞ্জ, কটিয়াদী, চাদপুর, সিরাজগঞ্জ, জগন্নাথগঞ্জ, শের
মদন, শের দিবার দিযাশের মাচরা প্রভৃতি স্থানের প্রস্তাব পেশ করেন।
১৭৯২ সালের মধ্যে সিরাজগঞ্জসহ এসব এলাকায় প্রথম বিলেতি পাল্টানের
থানা স্থাপিত হয়। ১৮৪৫ সালে মোমেনশাহী জেলায় ধরমচান্দ ঘোষ প্রথম ।
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হয়ে আসেন। ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনশাহী জেলার পূর্ব
ও পশ্চিম দিকে দুটি মহকুমা স্থাপনের প্রস্তাব করেন। শেরপুর, সিরাজগঞ্জ,
হাজীপুর ও পিংনাসহ ৪ থানা নিয়ে ১৮৪৫ সালে জামালপুর মহকুমা এবং
নিকলীবাজিতপুরফতেপুর ও মাদারগঞ্জ এই ৪ থানা নিয়ে হুসেনপুর বা
নিকলী মহকুমা স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। ১৮৪৫ সালের এপ্রিল মাসে।
সরকার সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর মহকুমা দুইটি স্থাপনের অনুমতি দেন। ফলে
১৮৪৫ সালে বিশাল মোমেনশাহী জেলার অধীনে জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ
নামে দুটি মহকুমার সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীকালে মোমেনশাহী জেলাকে
বিভক্ত করে ১৮৬৫ সালে কিশোরগঞ্জ, ১৮৬৯ সালে টাঙ্গাইল এবং ১৮৮২
সালে নেত্রকোনা মহকুমা সৃষ্টি করা হয়েছিল। ১৮২৮ সালে রাজশাহীর
একাংশ নিয়ে পাবনা জেলার পতন হয়েছিল। সিরাজগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের
দাবীর প্রেক্ষিতে ১৮৫৫ সালে যমুনা নদীর গতি পরিবর্তনের কারণে
সিরাজগঞ্জ থানাকে পাবনা জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৭৫ সালে রায়গঞ্জ
থানাকে সিরাজগঞ্জ মহকুমার অন্তর্ভুক্ত করে সিরাজগঞ্জের প্রশাসনিক বিস্তৃতি
ঘটানো হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে সিরাজগঞ্জ জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

২. নামকরণ : বেলকুচি থানার সিরাজউদ্দিন চৌধুরী নামক একজন (ভুস্বামী)
জমিদার ছিলেন। তিনি তার নিজ মহালে একটি 'গঞ্জ' স্থাপন করেন। তার
নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় সিরাজগঞ্জ। তার নামে নামকরণকৃত
সিরাজগঞ্জ স্থানটি নদীভাঙ্গনে বিলীন হয়। পরবর্তীতে তিনি ভূতের দিয়ার
মৌজা নিলামে খরিদ করেন। তিনি ভূতের দিয়ার মৌজাকেই নতুনভাবে
সিরাজগঞ্জ নামে নামকরণ করেন। ফলে ভূতের দিয়ার মৌজাই সিরাজগঞ্জ
নামে স্থায়ী রূপ লাভ করে।

৩. আয়তন : (প্রায়) ২৪৯৭.৯২ বর্গ কি. মি.।

৪. লোকসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ৩০,৯৭৪৯৩ জন। পুরুষ- ১৫,৫১,৩৬৮ ও
মহিলা১৫,৪৬,১২১। বৃদ্ধির হার : ১.৩৮% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ১২৯০
জন।

৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম ঃ ০৯টি । সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি,
তারাশ, কামারখন্দ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, চৌহালী ও শাহজাদপুর।

৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ১২টি । সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, তারাশ,
কামারখন্দ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, চৌহালী, শাহজাদপুর, সলংগাবঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম ও এনায়েতপুর।

৭. সংসদীয় আসন : ০৬টি। (১) কাজিপুর উপজেলা ও সিরাজগঞ্জ সদর
উপজেলার নিম্নবর্ণিত ইউনিয়নসমূহ হ মেছড়ারতনকান্দি, বাগবাটি ও
ছোনগাছা। (২) নিম্নবর্ণিত ইউনিয়নসমূহ ব্যতীত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা
মেছড়ারতনকান্দি, বাগবাটি, ছোনগাছা ও কামারখন্দ উপজেলা। (৩)
রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা। (৪) উল্লাপাড়া উপজেলা । (৫) বেলকুচি ও
চৌহালী উপজেলা । (৬) শাহজাদপুর উপজেলা।

৮. পৌরসভা০৬টি ও ইউনিয়ন-৮২টি।

৯. বিশিষ্ট ব্যক্তি : মাওলানা আব্দল হামিদ খান ভাসানী, মো: মজিবুর রহমান,
যাদব চন্দ্র চক্রবর্তীসৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, রজনী কান্ত সেন,
আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ মনসুর আলীফতেহ লোহানী,
ফজলে লোহানী, মকবুলা মথুর, আন্দুল মমিন তালুকদার, অমূল্যনাথ লাহিরী,
সূচিত্রা সেন, মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ, আন্দুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, গোলাম
মকসূদ হিলালী প্রমূখ।
১০. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে- ১৪২ কি. মি. ও রেলপথে-৩০১ কি. মি.।

১১. যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : ঢাকামহাখালী বাস স্টেশন, সিরাজগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন, ঢাকাসিরাজগঞ্জ বাস স্টেশন। রেল : ঢাকাসিরাজগঞ্জ
রেলওয়ে স্টেশন, সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। এনডব্লিউডি কোড নম্বর:
০৭৫১, পোস্ট কোড-৬৭০০।

১২. পত্র-পত্রিকা : দৈনিক যমুনা সেতু, দোলনচাপাযমুনা প্রবাহ, চাদতারা,
সীমান্ত বাজার, যুগের কথাসিরাজগঞ্জ কণ্ঠ, কলম সৈনিক, সাপ্তাহিক সাহসী
জনতা ও জীবনধাতা ।

১৩. উপজেলা ভূমি অফিস-০৯টি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস-৭২টি।

১৪. মৌজার সংখ্যা-১,৪৭২টি ও গ্রামের সংখ্যা-২,১৮০টি।

১৫. মোট জমি- ১,৯৫,৯৩৭ হেক্টর, শিক্ষার হার-৬৮%।

১৬. উল্লেখযোগ্য ফসল : ধান, আখ, কলা ও পান।

১৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-১৫৬৩টি, উচ্চ বিদ্যালয়-৩৭৪টি,
কলেজে-৭৭টি, মাদ্রাসা-৩৫৬টি ও অন্যান্য স্কুল-০৪টি।

১৮. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-৩,৯১৬টি ও মন্দির-৪৫টি।

১৯. চিকিৎসা কেন্দ্র : হাসপাতাল-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-০৮টি, উপ
স্বাস্থ্য কেন্দ্র-১৫টি ও ক্লিনিক-০৯টি।

২০. নদনদীর নাম : যমুনাকরতোয়া, বড়াল ইত্যাদি।

২১. দর্শনীয় স্থান : বঙ্গবন্ধু সেতু, শাহজাদপুর কুঠিবাড়ি, শাহ মখদুম মসজিদ,
মিন্ধ-ভিটা ও নৌবন্দর, সলঙ্গা ইসমাইল হোসেন সিরাজীর বানীকুঞ্চ, গণিত
সম্রাট যাদব চক্রবর্তীর বাসভবন, হযরত এনায়েতপুরীর মাজার, হাটিকুয়বুল।
মন্দির।

২২. জেলার ঐতিহ্য : তাত শিল্প ও যমুনা সেতু জেলার ঐতিহ্য বহন করে আছে।

No comments:

Post a Comment

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...