12 July, 2018

চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ইতিহাস



১. সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : ১৯১৩ সালে পূর্ণিমা ও দিনাজপুর জেলা ভেঙ্গে মালদহ জেলা।
গঠিত হয়। কিন্তু, ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত এটিকে কোন কালেক্টরেটের অধীনে দেয়া।
হয়নি। এ সময় শিবগঞ্জ ও কালিয়াচক থানাদ্বয় অপরাধপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে
কুখ্যাত ছিল। নবাবগঞ্জ তখন শিবগঞ্জ থানার অধীনে একটি পুলিশ ফাড়ি ছিল।
মাত্র। ১৮৭৩ সালে মুন্সেফ চৌকি শিবগঞ্জ থেকে নবাবগঞ্জে স্থানান্তরিত হয় এবং
তারও কিছুদিন পর ১৮৯৯ সালে নবাবগঞ্জ থানায় উন্নীত হয়। থানা প্রতিষ্ঠিত
হওয়ার পর থেকেই নবাবগঞ্জ ও তার পাশ্ববর্তী থানাগুলো নিয়ে একটি স্বতন্ত্র
মহকুমা গঠনের পরিকল্পনা ও প্রয়াস চলতে থাকে। ১৮৭৬ সাল পর্যন্ত নবাবগঞ্জ
অঞ্চল রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং ১৮৭৬ থেকে ১৯০৫ সাল সময়ে
বিহারের ভাগলপুরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইতোমধ্যে ১৯০৩ সালে ১২ জন ওয়ার্ড
কমিশনারের সমন্বয়ে নবাবগঞ্জ মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয় । ১৯০৫ সালে
বঙ্গভঙ্গের সময় তদানীন্তন পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশসহ এ অঞ্চলটি আবার
রাজশাহী বিভাগের সাথে যুক্ত করা হয়। যদিও তা মালদহ জেলার অন্তর্গত
থাকে। ১৯০৬ সালে নবাবগঞ্জে সাবরেজিষ্ট্রি অফিস স্থাপিত হলে এখানে কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পায়। সরকারি কাজকর্মের সুবিধার জন্য ‘চাঁপাই' গ্রামে অবস্থিত ডাকঘরটি ১৯২৫ সালে নবাবগঞ্জ শহরে স্থানান্তর করা হয় এবং তার নাম রাখা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ১৯৮৪ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় উন্নীত করা হয়।

২. নামকরণ : চাপাইনবাবগঞ্জের নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, প্রাক-ব্রিটিশ আমলে
এ অঞ্চলে ছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের বিহারভূমি। এবং এর অবস্থান ছিল ।
বর্তমান সদর উপজেলার দাউদপুর মৌজায়। নবাবরা তাঁদের পাত্ৰমিত্র ও
পরিষদসহ এখানে শিকার করতে আসতেন বলে এ স্থানের নাম হয় নবাবগঞ্জ ।
বলা হয়ে থাকে যে, বাংলাবিহার উড়িষ্যার নবাব সরফরাজ খাঁ ১৭৩৯-৪০
সালে একবার শিকারে এসে যে স্থানটিতে ছাউনি ফেলেছিলেন সে জায়গাটিই
পরে নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত পায়। অনেকের মতে নবাব আলীবর্দী খার আমলে
নবাবগঞ্জ নামকরণ হয়। অষ্টাদশ শতকের প্রথম ও মধ্যভাগে বর্গীয় ভয়ে
পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকজন ব্যাপকভাবে এ এলাকায় এসে বসতি স্থাপনের ফলে।
স্থানটি এক কর্মব্যস্ত জনপদে পরিণত হয়। কালক্রমে নবাবগঞ্জের নাম চারদিকে
ছড়িয়ে পড়ে। নবাবগঞ্জের ডাকঘর চাপাই গ্রামে অবস্থিত হওয়ায় নবাবগঞ্জ তখন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামে পরিচিত হয়।

৩. আয়তন : (প্রায়) ১,৭০২.৫৬ বর্গ কি. মি.।

৪. লোকসংখ্যা : মোট- (প্রায়) ১৬,৪৭,৫২১ জন। পুরুষ-৮,১০,২১৮ ও মহিলা
৮,৩৭,৩০৩ । বৃদ্ধির হার : ১.৪৪% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ৯৬৮ জন।

৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম : ৫টি। চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর,
নাচোল ও ভোলাহাট

৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ০৫টি। নবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, নাচোল ও
ভোলাহাট।

৭. সংসদীয় আসন। : ০৩টি। (১) শিবগঞ্জ উপজেলা। (২) ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর
উপজেলা। (৩) চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা।
৮. পৌরসভা-০৪টি ও ইউনিয়ন-৪৫টি ।

৯. বিশিষ্ট ব্যক্তি : দিয়ানতুল্লাহ চৌধুরী ওরফে লুকা চৌধুরী, গিরিশ চন্দ্র সিংহ,
রফিক মন্ডল, গণিতজ্ঞ প্রফেসর আন্দুর রহিম, ড. জহুরুল হক, বাবু অভয় প্রদ।
মুখার্জী, ইলা মিত্র, রমেশ মিত্র, কুতুব উদ্দিন ও রফিকুন্নবী।

১০. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-৩২০ কি. মি. ও রেলপথে-৪১৭ কি. মি.।

১১. যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : চাপাইনবাবগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন, শিবগঞ্জ বাস
স্টেশনউদয়ন মোড়, ঢাকা- মহাখালী, কল্যাণপুর-চাপাইনবাবগও বাস
স্টেশন। রেল : ঢাকা-কমলাপুর, বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, নবাবগঞ্জ
রেলওয়ে স্টেশন, নবাবগঞ্জ, আমনুরা রেলওয়ে স্টেশন, নবাবগঞ্জ । এনডব্লিউডি
কোড নম্বর : ০৭৮১ ও পোস্ট কোড-৬৩০০।

১২. পত্রপত্রিকা : সাপ্তাহিক গৌড়সংবাদ, সোনামসজিদ।

১৩. উপজেলা ভূমি অফিস-০৫টি।

১৪. মৌজার সংখ্যা৪৩০টি ও গ্রামের সংখ্যা-১,১৩৬টি।

১৫. আদর্শ গ্রাম-১৪টি । শিক্ষার হার-৬৭%।

১৬শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-২১২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-৬৮২টি,
কলেজ-৫২টি, মাদ্রাসা-১৩৪টি ও ক্যাডেট কলেজ-০১টি।

১৭. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-১০৪০৫টি, মন্দির-১,০২১টি ও গীর্জা-১১৪টি।

১৮. হাসপাতাল : হাসপাতাল-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-০৪টি, ক্লিনিক-২৪টি
ও পারিবারিক কল্যাণ কেন্দ্র-২০টি।

১৯. নদনদীর নাম : পদ্মামহানন্দাপুনর্ভরা ও পাগলা ।

২০ . উল্লেখযাগ্য ফসল: ধান, পাট, ইক্ষু, গম, পান ও ডাল ।

২১. দর্শনীয় স্থান : গৌড়ের বিখ্যাত ছোট সোনা মসজিদ ও তৎসংলগ্ন বীরশ্রেষ্ঠ
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর সমাধি, তোহাখানা ইত্যাদি।

২২. জেলার ঐতিহ্য : আম ও লিচু জেলার ঐতিহ্য বহন করে।

No comments:

Post a Comment

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে শিবগঞ্জ উপজেলাবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

 বিসমিল্লাহর রাহমানির রাহিম ঈদ বয়ে আনুক সবার জীনবে সুখ শান্তি ও কল্যাণের বার্তা ঈদের দিনের মতো সুন্দর হোক প্রতিটি দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক...