02 June, 2018

শীতে পা ফাটা ও খুশকিতে করণীয়


শীতে আর্দ্রতা কম থাকায় ত্বকের শুষ্কতা বেড়ে যাওয়ায় এবং ধুলাবালি থেকে আসার পর মাথা পরিষ্কার না করলে খুশকি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কারোই খুশকি হতে পারে। খুশকি হলে- মাথা চুলকাবে এবং মাথা থেকে সাদা ছোট পাতলা আবরণ বের হবে,যা কাপড়ে লেগে থাকতে পারে। দীর্ঘদিন খুশকি থাকলে গোড়া থেকে চুল পড়ে যেতে পারে।
যে কারণে মাথা অপরিষ্কার হয়:
অপরিচ্ছন্ন থাকলে খুশকি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে শীতে মাথার তালুর চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে খুশকি হতে পারে। বংশগত কারণেও খুশকি হয়। এমন হলে তা নির্মূল করা কঠিন। নিয়মিত শ্যাম্পু, লোশন ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। ছত্রাক-ব্যাকটেরিয়া দিয়ে খুশকি হলে তা দূর করা সম্ভব। খুশকি ছোঁয়াচে। এটি একজন থেকে অন্যজনে ছড়াতে পারে। এ জন্য খুশকি আছে এমন ব্যক্তির চিরুনি, টাওয়েল অন্য ব্যক্তির ব্যবহার না করা উত্তম।
চিকিৎসা সপ্তাহে দু'তিনবার পাইরিথ্রিয়ন, কিটোকোনাজল বা টার জাতীয় শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধোয়া ভালো। খুশকির পরিমাণ বেশি হলে বা মাথা বেশি চুলকালে মাথা থেকে চামড়া নিয়ে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করা ভালো। যদি ছত্রাক দিয়ে হয় তবে মুখে ছত্রাকনাশক ঔষধ যেমন কিটোকোনাজল, ফ্লুকোনাজল, ইটরোকোনাজল নির্দিষ্ট মেয়াদে খেতে হবে। এ ছাড়া কিটোকোনাজল গ্রুপের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। খুশকি থেকে চুল পড়ে গেলে স্ক্যাল্প লোশন ক্লোবিটাসল মাথায় ব্যবহার করতে হবে। ফাঙ্গাস থেকে খুশকি হলে কিটোকোনাজল লোশন ব্যবহার করতে হবে। শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধোয়া সম্ভব না হলে নরমাল সাবান দিয়েও মাথা পরিষ্কার রাখা যায়।
খুশকি থেকে জটিলতা
বাচ্চাদের এ জটিলতা হয় বেশি। ব্যাকটেরিয়া দিয়ে ইনফেকশন হয়ে সারভাইকাল লিল্ফম্ফ নোড ফুলে যায়। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা প্রয়োজন। বিশেষ করে যে বাচ্চারা এটোপিক, বংশগতভাবে ঠাণ্ডার ধাত আছে অর্থাৎ শীত এলে সর্দি-কাশি, চুলকানি বা অ্যাজমায় আক্রান্ত হয় তারা এ জটিলতায় ভোগে বেশি।
এ ছাড়া বাচ্চাদের চামড়া পাতলা বলে সহজেই ব্যাকটেরিয়া দেহে ঢুকে যেতে পারে। শুধু খুশকি নয়, মাথায় সোরিয়াসিসও হতে পারে। বংশগত ও দুরারোগ্য একটি অসুখের নাম সোরিয়াসিস, যা মাথার তালুতেও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তালু থেকে চটা বা চামড়াগুলো একটু মোটা হয়ে ওঠে এবং ওঠার সময় রক্তপাত হয়, যা খুশকিতে হয় না। এটি ছেলেমেয়ে যে কারও হতে পারে এবং বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে ৪০-৪৫ বছর পর্যন্ত বেশি হয়। স্টেরয়েড জাতীয় শ্যাম্পু, ক্রিম ও লোশন এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। পা ফেটে গেলে শীতের শুষ্কতায় পা ফেটে যাওয়া বা ক্র্যাকড সোলের অনেক রোগী পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা খালি পায়ে হাঁটে তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অধিক। কারণ এ অবস্থায় পা সরাসরি পরিবেশের সংস্পর্শে আসে এবং ত্বক দেহে পানি ধরে রাখতে পারে না। এ ছাড়া অ্যাকজিমার জন্যও পা ফেটে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অ্যাকজিমার চিকিৎসা করাতে হবে। সাধারণত ভেসেলিন ফাটা পায়ে নিয়মিত লাগালে সাত দিনে ভালো হয়ে যায়। ফাটা বেশি হলে স্যালিসাইলিক এসিডের সঙ্গে ভেসেলিন লাগিয়ে ব্যবহার করা যায়। সঙ্গে স্টেরয়েড ক্রিম লাগাতে হয়। রাতে ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানিতে লোশন মিশিয়ে লাগালে পা ফাটা কমে যায়।

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন