কেন হয় :-
মাইগ্রেন কেন হয় তা পুরোপুরি জানা যায়নি। বলা হয়ে থাকে, রক্তে সেরোটোনিন অথবা ফাইভ এইচটির মাত্রা পরিবর্তিত হলে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনীগুলো আছে সেগুলো মাথাব্যথার প্রারম্ভে স্ফীত হয় এবং ফুলে যায়। তবে এটি বংশগত হতে পারে। এটি পুরুষ অপেক্ষা মহিলাদের বেশি হয়। দুশ্চিন্তা ও মাসিকের সময় এটি বেশি হয়। দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য এই রোগকে ত্বরান্বিত করে।
উপসর্গ :-
মাইগ্রেন বয়ঃসন্ধিকালে শুরু হয় এবং মাঝবয়স পর্যন্ত বারবার আঘাত হানে। রোগী কিছুদিন বা কয়েক মাস পরপর আক্রান্ত হয়। মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি দুই/তিন দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এটি রোগীকে দুর্বল এবং বিপর্যস্ত করে ফেলে। মাইগ্রেনের কয়েকটি ধরন আছে। তার একটি ক্লাসিক্যাল বা সচরাচর মাইগ্রেন। ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেনের শুরুটা অধিকাংশ সময়েই রোগী বুঝতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম হয়। রোগী চোখের সামনে আলোর ঝলকানি, চোখে সর্ষে ফুল দেখে। হাত-পা, মুখের চারপাশে ঝিনঝিনে অনুভূতি হয়। শরীরের এক পাশে দুর্বলতা বা অবশভাব হতে পারে। এরপর শুরু হয় মাথাব্যথা, যা মাথার একপাশের একটি স্থান থেকে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে সেই পাশের পুরো স্থানেই বিস্তৃত হয়। প্রচণ্ড দপদপে ব্যথা রোগীকে কাহিল করে ফেলে। রোগীর প্রচুর ঘাম হয়। বমি কিংবা বমি ভাব হয়। আলো এবং শব্দ একদম সহ্য করতে পারে না। কথা বলতেও অনিচ্ছা প্রকাশ করে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। চুপচাপ অন্ধকার ঘরে থাকতেই রোগী বেশি পছন্দ করে। ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেন ছাড়া মাইগ্রেনকে হেমিপ্লেজিক, অপথালমোপ্লেজিক, কমন মাইগ্রেন ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কমন মাইগ্রেনে সাধারণত দৃষ্টিবিভ্রম থাকে না। ব্যাসিলার আর্টারি মাইগ্রেনে ব্যথা সাধারণত পেছন থেকে শুরু হয়। এর সঙ্গে মাথাঘোরা ভাব থাকে, দৃষ্টিবিভ্রম থাকতে পারে। আবার নাও থাকতে পারে। হেমিপ্লেজিক মাইগ্রেনের ব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এটি সারতে বেশ কিছুদিন সময় নেয়।
চিকিৎসা :-
আজকাল মাইগ্রেনের নানারকম চিকিৎসা আছে। চিকিৎসার লক্ষণ দুটি। প্রথমত তাৎক্ষণিক মাথাব্যথা কমানো এবং দ্বিতীয়ত মাথাব্যথার প্রকোপ কমিয়ে আনা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা। উভয় লক্ষ্য অর্জনে ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। ওষুধও বিভিন্ন ধরনের আছে। তাই সঠিক চিকিৎসা করানো উচিত।
No comments:
Post a Comment