১. সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৭৬৫ সালে কৌশলে বাংলা,
বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করতে সমর্থ হয়। এ সময় হতেই নদীয়া
তথা মেহেরপুর ইংরেজদের শাসনাধীনে চলে যায়। ১৭৯৬ সালে নদীয়া ও
যশোরের সীমানা নির্দিষ্ট হলেও পরবর্তীতে তা কয়েকবার পরিবর্তন হয়।
যশোরের সঙ্গে নদীয়া তথা । কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
১৮৫৪ বা ১৮৫৭ সালে মেহেরপুর মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭
সালে দেশভাগের সময় করিমপুর, তেহট্ট ও চাপড়া ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
শুধুমাত্র গাংনী ও মেহেরপুর সদর নিয়ে মেহেরপুর মহকুমা গঠিত হয়।
১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর জেলার মর্যাদা লাভ করে।
২. নামকরণ : বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূতিকাগার অস্থায়ী রাজধানী
ঐতিহাসিক সবার
মুজিবনগর মেহেরপুরে অবস্থিত বলে মেহেরপুর
ভৈরব নদীর পূর্ব তীরে এই প্রাচীন শহরটি অনেক পুরানো
ইতিহাসের স্বাক্ষর। ষোড়শ শতাব্দীতে মেহের আলী শাহ নামক একজন
বুজুর্গ দরবেশ মেহেরপুর শহর স্থাপন করেন বলে প্রচলিত আছে। এই
দরবেশের নামানুসারেই স্থানটির নাম হয়েছে মেহেরপুর।
৩. আয়তন ঃ (প্রায়) ৭১৬ বর্গ কি. মি.।
৪. লোকসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ৬,৫৫,৩৯২ জন। পুরুষ-৩২৪,৬৩৪ ও মহিলা
৩,৩০,৭৫৮। বৃদ্ধির হার : ১.০২% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ৮৭২ জন।
৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম : ০৩টি। মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী।
৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ০৩টি। মেহেরপুর, মুজিবনগর ও গাংনী ।
৭. সংসদীয় আসন : ০২টি। (১) মেহেরপর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা।
(২) গাংনী উপজেলা।
৮. হানাদার মুক্ত দিবস : ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর জেলা হানাদার
মুক্ত হয় ।
৯. বিশিষ্ট ব্যক্তি : আজাদ শাহ, আ ক ম ইদ্রিস আলীসাধক আতাহার শাহ,
ড. আন্দুর রশিদ, আব্দুল মান্নান, আরজান সাহ, কিরন কুমার ঘোষ, মীর
মোজাফফর আলীপ্রসেনজিৎ বোস বাবুয়া, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ড.
গোলাম কিবরিয়া, ভবানন্দ মজুমদার, নূরুল হক, মো: শাহ আলম, মো:
জয়নাল আবেদীন, আশরাফ মাহমুদ প্রমুখ ।
১০. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-২৯৬ কি. মি.।
১১ . যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : ঢাকা-গাবতলীমেহেরপুর- বাস স্টেশন, কেন্দ্রীয়
বাস স্টেশন মেহেরপুর। এনডব্লিউডি কোড নম্বর : ০৭৯১, পোস্ট কোড
৭১০০।
১২. পত্রপত্রিকা : দৈনিক আযান, মেহেরপুর, সাপ্তাহিক মুজিবনগর, চুম্বক,
পরিচয়, পচিমাঞ্চলমেহেরপুর, পাক্ষিক সীমান্ত, মাসিক সাধক, পল্লীশ্রী।
১৩. পৌরসভা০২টি ও ইউনিয়ন-১৮টি।
১৪. উপজেলা ভূমি অফিস-০৩টি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস-১৮টি ।
১৫. মৌজার সংখ্যা-১৯৯টি ও গ্রামের সংখ্যা-২৫৯টি ।
১৬. মোট জমি-৬০,১৮৩ হেক্টর ।
১৭. শিক্ষার হার-৩১%।
১৮. উল্লেখযোগ্য ফসল : ধান, আখ, তামাক, পাট, গম, ভুট্টা, সরিষা ও ডাল ।
১৯. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-২৮০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-৮১টি,
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়-৩৬টি, কলেজ-০৬টি ও মাদ্রাসা-২৫টি।
২০. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-৯৩০টি, মন্দির-৬৫টি ও গীর্জা-২৫টি।
২১. চিকিৎসা কেন্দ্র : হাসপাতাল-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-১১টি, উপ
স্বাস্থ্য কেন্দ্র-৪৩টি, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র-১২টি, ক্লিনিক-৭২টি ও
কমিউনিটি ক্লিনিক-৪১২টি ।
২২. নদনদীর নাম : ভৈরব, কাজলাছেউটিয়া ও মাথাভাঙ্গা।
২৩দর্শনীয় স্থান ; জীবননগর স্মৃতিসৌধ ও ঐতিহাসিক আম্রকানন, মুজিবনগর
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স, পৌর ঈদগাহ, মেহেরপুর পৌর কবরস্থান,
মেহেরপুর পৌর হল, মেহেরপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ, আমদহ গ্রামের স্থাপত্য
নিদর্শন, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, আমঝুপি নীলকুঠি, ভাটপাড়ার নীলকুঠি,
সাহারবাটি ও ভবানন্দপুর মন্দির।
২৪. জেলার ঐতিহ্য : বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের ছোট একটি জেলা
মেহেরপুর। এ জেলার রয়েছে প্রায় দু'হাজার বছরের প্রাচীন ইতিহাস ও
ঐতিহ্য। বিশেষত ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের
ঘটনায় মেহেরপুরের মুজিবনগর সূতিকাগারের ভূমিকা পালন করায় এ
জেলার ইতিহাস হয়েছে অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল
No comments:
Post a Comment