06 February, 2019

কাঁঠাল চাষ পদ্ধতি


কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা কাঁঠাল গাছের ফলন নির্ভর করে বাগানের পরিচর্যার ওপর আর পরিচর্যার প্রথমেই আসে সুষম সার ব্যবস্থা। গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করার পর বাগানে সার ব্যবস্থাপনার কাজটি করতে হবে। এর পর হলো সেচ ব্যবস্থা। মাটিতে রসের ঘাটতি হলে প্রয়োজন অনুসারে বাগানে সেচ দিতে হবে। পরে বাগানের রোগবালাই ও পোকা-মাকড় দমন ব্যবস্থাপনা সঠিক ও সময় মতো না নিলে কাঁঠালের ফলন কখনও কখনও শূন্যে নেমে আসতে পারে। নিয়মিত কিছু পরিচর্যার মাধ্যমে এর সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় এবং আকার-আকৃতি উন্নত করা যায়। কাঁঠালের ভালো ফলন পেতে হলে নিয়ম অনুসারে নিম্নলিখিতভাবে বাগানের পরিচর্যা করতে হবে। কাঁঠাল গাছের ফলন সাধারণত এর কা- এবং শাখা-প্রশাখায় উৎপন্ন ফুটস্টকে ধরে কর্তিত বোঁটা বা ডালের গিঁটের মতো উঁচু জায়গা থেকে ফুটস্টক বের হয়। ফুটস্টক যত বেশি হবে কাঁঠালও তত বেশি হবে। এ জন্য সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কা-ে ঝুলে থাকা কাঁঠালের বোঁটার অবশিষ্ট ছোট ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে। কাঁঠাল গাছের জন্য সেচ খুবই গুরত্বপূর্ণ, তাই নভেম্বর থেকে এপ্রিলের ১৫-২০ দিন পর্যন্ত সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের গোড়ার তিন থেকে চার ফুট জায়গা বাদ দিয়ে চারদিকে থালা আকৃর্তি করে সেখানে সেচ দিতে হবে। কাঁঠাল গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না, তাই গাছের গোড়ায় যাতে পানি না দাঁড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কাঁঠাল গাছে বছরে দুইবার সার প্রয়োগ করা উচিত। প্রথম কিস্তি মে মাসে। দ্বিতীয় কিস্তি অক্টোবর-নভেম্বর মাসে। একটি বয়স্ক কাঁঠাল গাছের গোড়ার কমপক্ষে চার ফুট দূরে গোলাকার পদ্ধতিতে কাঁঠাল গাছের সার প্রয়োগ করতে হবে। একটি বয়স্ক কাঁঠাল গাছের ৬০ কেজি গোবর, ১ কেজি ২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১ কেজি ৬০০ গ্রাম টিসপি, ১ কেজি ৩০০ গ্রাম এমপি, ৩০০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। রোগবালাই ব্যবস্থাপনার জন্য অতিরিক্ত ডালপালা ছাঁটাই করে কাঁঠাল গাছের সঠিক আকার দিতে হবে। প্রুনিং এবং ট্রেনিং করতে হবে। প্রুনিং এবং ট্রেনিংয়ে ধারাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। ভাঙা ডালপালা করাত দিয়ে সুন্দর করে কেটে প্রুনিং পেস্ট লাগিয়ে দিতে হবে। কাঁঠালের একটি গুরত্বপূর্ণ রোগ হলো ফল পচা রোগ, এতে ফলের গায়ে বাদামি রঙের দাগের মতো হয়ে ফলের পচন হয় এবং ঝরে পড়ে। এ রোগ দমনের জন্য পুরুষ ও স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরি বের হওয়ার সময় থেকে ১০ দিন পর পর দুই-তিনবার ম্যাকুপ্র্যাক্স বা কুপ্রাভিট অথবা একই গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। কাঁঠালে কা- ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে গাছের গুঁড়িতে গর্ত হয়ে থাকে। এর প্রতিকারের জন্য সুচাল লোহার শলাকা গর্তের ভেতর ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে পোকা মারতে হবে। গর্তের মুখ পরিষ্কার করে এর মধ্যে কেরোসিন বা পেট্রল দিয়ে গর্তের মুখে কাদামাটি দিয়ে বন্ধ করতে হবে। ফুল আসার সময় সুমিথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে দুই মিলি লিটার হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর দুই তিনবার স্প্রে করতে হবে। কাঁঠাল ব্যাগিং করেও ফল ছিদ্রকারী পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। এ জন্য কাঁঠালের পুষ্পমঞ্জরি ফলে পরিণত হওয়ার পর থেকে প্রায় ১ মাস বয়সের কাঁঠাল ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে বোঁটার কাছে ব্যাগের খোলা মুখ দড়ি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে এবং তা ফল সংগ্রহ পর্যন্ত রাখতে হবে। এ জন্য ট্রান্সপারেন্ট পলিথিন ব্যাগ ও কালো পলিথিন ব্যাগ এবং পোলট্রি ফিডের ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। কালো পলিথিনের ভেতর দিয়ে আলো প্রবেশ করতে না পারার কারণে এতে কাঁঠালের রঙ আর্কষণীয় হলুদ হয়ে থাকে। ব্যাগিংয়ের আগে ফলকে নীরোগ এবং পোকার আক্রমণ মুক্ত রাখার জন্য ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে । কাঁঠাল উৎপাদন প্রযুক্তি

কাঁঠাল পুষ্টি মূল্য: আমিষ ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। ভেষজ গুণ: কাঁঠালের শাঁস ও বীজকে চীন দেশে বলবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের শিকড়ের রস জ্বর ও পাতলা পায়খানা নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়। উপযুক্ত জমি ও মাটি:পানি দাঁড়ায় না এমন উঁচু ও মাঝারি সুনিষ্কাষিত উর্বর জমি কাঁঠালের জন্য উপযোগি।জাত পরিচিতি: কাঁঠালের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে তিন ধরণের কাঁঠাল চাষ হয়-খাজা, আদারসা ও গালা। চারা তৈরি: সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকেই চারা তৈরি করা হয়। ভাল পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্ট বড় বীজ বের করে ছাই মাকিয়ে ২/৩ দিন ছায়ায় শুকিয়ে বীজতলায় বপন করলে ২০-২৫ দিনে চারা গজাবে। জ্জ মাসের চারা সতর্কতার সাথে তুলে মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। এছাড়া গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম, চারা কলম এর মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়। চারা রোপণ: ষড়ভূজী পদ্ধতিতে সুস’, সবল ও রোগমুক্ত চারা বা কলম মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য শ্রাবণ মাসে রোপণ করতে হয়। গাছ ও লাইনের দূরত্ব ১২ মিটার করে রাখা দরকার। সার ব্যবস্থাপনা: রোপণের সময় প্রতি গর্তে গোবর ৩৫ কেজি, টিএসপি সার ২১০ গ্রাম, এমওপি সার ২১০ গ্রাম সার প্রয়োগ করতে হয়। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতি গাছের জন্র সারের পরিমান বৃদ্ধি করা দরকার। সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: চারা/ কলমের তাড়াতাড়ি বাড়বাড়তি হওয়ার জন্য পরিমিত ও সময় মতো সেচ প্রদান করা দরকার। পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা: কাঁঠাল পচা রোগ: এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয। এ রোগের আক্রমণে কচ ফলের গায়ে বাদমি রঙের দাগের সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে। প্রতিকার: গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল পুড়ে ফেলতে হয়। ফলিকুর ছত্রাকনাশক ০.০৫% হারে পানিতে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ বার সেপ্র করা দরকার। মুচিঝরা রোগ: ছত্রাকের আক্রমণের কারনে ছোট অবস্থাতেই কালো হয়ে ঝড়ে পড়ে। প্রতিকার: ডাইথেন এম ৪৫ অথবা রিডোমিল এম জেড ৭৫, প্রতিলিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম করে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। ফসল তোলা: ফল পাকতে ১২০-১৫০ দিন সময় লাগে। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ- আষাঢ় মাসে কাঁঠাল সংগ্রহ করা হয়।
কাঁঠাল চাষ



কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এর ইংরেজি নাম Jackfruit বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus. আকারের দিক থেকে কাঁঠাল সবচেয়ে বড় ফল। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কাঁঠালের চাষ হয়। তবে ঢাকার উঁচু অঞ্চল, সাভার, ভালুকা, ভাওয়াল ও মধুপুরের গড়, বৃহত্তর সিলেট জেলার পাহাড়ি এলাকা, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি এলাকায় সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপন্ন হয়।
পুষ্টিগুণ

কাঁঠালে প্রচুর শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন ‘এ’ আছে।

বাজার সম্ভাবনা

কাঁঠাল খুব উপকারী ফল। দামের তুলনায় এত বেশি পুষ্টি উপাদান আর কোন ফলে পাওয়া যায় না। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি ও পাকা কাঁঠাল ফল হিসেবে খাওয়া যায়। এছাড়া কাঁঠালের বীজ ময়দা ও তরকারি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের পাতা ছাগলের প্রিয় খাদ্য। কাঁঠালের ছোবড়া গরুর প্রিয় খাদ্য। এছাড়া কাঁঠাল কাঠ দিয়ে উন্নতমানের আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। তাই কাঁঠালের চাহিদা প্রায় সারাবছরই থাকে। কাঁঠাল চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। এছাড়া দেশের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত উৎপাদন বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সহায়তা দিয়ে থাকে। কাঁঠাল বিদেশে রপ্তানি করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। 

কাঁঠাল উৎপাদন কৌশল

জাত

আমাদের দেশে সাধারণত তিন ধরণের কাঁঠালের জাত চাষ করা হয়-খাজা, আধরসা ও গলা।

তথ্যসূত্র : কৃষি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, জুন ২০০৭,Microfinance for Marginal and Small Farmers (MFMSF) Project, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সেল-১, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ঢাকা।

* চাষের উপযোগী পরিবেশ ও মাটি

জলবায়ুমাটির প্রকৃতি
কাঁঠালের চারা জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোপণ করা হয়।পানি জমে না এমন উঁচু ও মাঝারি উঁচু সুনিষ্কাশিত উর্বর জমি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ, এঁটেল ও কাকুরে মাটিতেও এর চাষ করা যায়।







বংশবিস্তার

১. সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকেই চারা তৈরি করা হয়। এর ফলে গাছের মাতৃবৈশিষ্ট্য বজায় না থাকলেও ফলনে বিশেষ তারতম্য দেখা যায় না।
২. ভালো পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্ট বড় বীজ বের করে ছাই মাখিয়ে ২/৩ দিন ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।
৩. এরপর বীজ বপন করলে ২০-২৫ দিনে চারা গজাবে।
৪. তিন থেকে চার মাস পরে চারা সাবধানে তুলে মূল জমিতে রোপণ করতে হবে।
৫. এছাড়া অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতি, যেমন-গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম এবং টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে কাঁঠালের চাষ করা যায়।
চারা রোপণ

১. চারা রোপণ করার ১০ দিন আগে ১ মি. X ১ মি. মাপের গর্ত তৈরি করতে হবে।
২. মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে গর্তে রাখতে হবে।
৩. গর্তের মাঝখানে চারা লাগাতে হবে।
৪. গাছ ও সারির দূরত্ব ১২মি. X ১২ মি. রাখতে হবে।
৫. চারা লাগিয়ে গোড়া থেকে কিছুটা দূরে খুঁটি পুঁততে হবে। খুঁটির সাথে গাছকে হালকাভাবে বাঁধতে হবে।

সার প্রয়োগ

কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে কাঁঠাল চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকবে। বাড়িতে গবাদি পশু থাকলে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যাবে। নিজের গবাদি পশু না থাকলে পাড়া-প্রতিবেশি যারা গবাদি পশু পালন করে তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যেতে পারে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির আশে-পাশে গর্ত করে সেখানে আবর্জনা, ঝরা পাতা ইত্যাদি স্তুপ করে রেখে আবর্জনা পচা সার তৈরি করা সম্ভব।

সেচ ও নিষ্কাশন

১. চারা লাগানোর সাথে সাথে চারার গোড়ায় পানি দিতে হবে। সকাল বিকাল দু’বার গাছে পানি দিতে হবে।
২. গাছে সার দেবার পরপর পানি দিতে হবে।
৩. বর্ষার সময় গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৪. খরার সময় দুই সপ্তাহ পর পর পানি সেচ দিতে হবে।


রোগবালাই

১. রাইজোপাস অটোকারপি নামের ছত্রাকের আক্রমণে কাঁঠালের মুচি বা ফল পচা রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের আক্রমণে কচি ফলের গায়ে বাদামী রঙ্গের দাগের সৃষ্টি হয় এবং আক্রান্ত ফল শেষ পর্যন্ত ঝরে পড়ে। গাছের পরিত্যক্ত অংশে এ রোগের জীবাণু বেঁচে থাকে এবং তা বাতাসের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।

২. সাধারণত রাইজোপাস নামক ছত্রাকের আক্রমণে কাঁঠালের স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরী ছোট অবস্থাতেই কালো হয়ে ঝরে পড়ে। পুরুষ পুষ্পমঞ্জরী স্বাভাবিকভাবেই কালো হয়ে ঝরে পড়ে।

প্রতিকার

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পোকা দমন না হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।

চাষের সময় পরিচর্যা

১. কাঁঠাল ধরার সময় গাছের গোড়া তালপাতা বা খেজুরের ডাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে।
২. অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে।
৩. দুপুরবেলা গাছের নিচে কিছুটা ছায়া পড়ে। এসময় মাটি কুপিয়ে আলগা করে রাখতে হবে। তাহলে আগাছা কম হবে।
৪. গাছের গোড়ায় আগাছা জমলে তা তুলে ফেলতে হবে।

উৎপাদিত ফলের পরিমাণ

প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় দেড় টন কাঁঠাল পাওয়া যায়।
কাঁঠাল উৎপাদন খরচ

* ১বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ফসল উৎপাদন খরচ

খরচের খাতপরিমাণআনুমানিক মূল্য (টাকা)
বীজ/চারা৫০টি১০০০
জমি তৈরি৩-৪ বার চাষ১০০০
পানি সেচ২-৩ বার৩৫০
শ্রমিক১০ জন১৫০০
সারপ্রয়োজন অনুসারে জৈব সারএই সার বাড়িতেই তৈরি করা সম্ভব। তাই এর জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই।
বিকল্প হিসেবেটিএসপি=২৫ কেজি (১ কেজি=২৩ টাকা)এমপি=২৫ কেজি (১ কেজি=২৮ টাকা)১২০০
কীটনাশকপ্রয়োজন অনুসারে জৈব বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারনিজস্ব/দোকান
জমি ভাড়াএকবছর৪০০০
মাটির জৈব গুণাগুণ রক্ষা ও উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ বাড়তে পারে।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, অক্টোবর ২০০৯

মূলধন

এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে কাঁঠাল চাষের জন্য প্রায় ৭০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। মূলধন সংগ্রহের জন্য ঋণের প্রয়োজন হলে নিকট আত্মীয়স্বজন, সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও)-এর সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।

প্রশিক্ষণ

কাঁঠাল চাষ করার আগে অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে কাঁঠাল চাষ সম্পর্কে খুঁটিনাটি জেনে নিতে হবে। এছাড়া চাষ সংক্রান্ত কোন তথ্য জানতে হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্ধারিত ফি-এর বিনিময়ে কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

ফল মানুষের পুষ্টির যোগান দেয়। এছাড়া কাঁঠাল কাঠ দিয়ে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। প্রতিদিন আমাদের যে পরিমাণ ফল খাওয়া প্রয়োজন আমরা সে পরিমাণ পায় না। কাঁঠাল চাষ করে কিছুটা হলেও সে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
– See more at: http://infokosh.gov.bd/atricle/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B7#sthash.YNMb4Dn2.dpuf

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন