26 May, 2018

চাঁদপুর জেলার ইতিহাস


সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এ জেলার নাম ছিল ত্রিপুরা জেলা । তখন এ
জেলা ৪টি মহকুমা নিয়ে গঠিত ছিল। ২১টি থানা ও ৩৬২টি ইউনিয়ন ছিল
চাদপুর মহকুমায় ৫টি থানা ছিল । মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ২৮ মার্চ থেকে ৭
এপ্রিল পর্যন্ত চাঁদপুর শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ৭ এপ্রিল সকাল ৯টায় পাক হানাদার।
বাহিনী প্রথম চাদপুরের পুরানবাজার বিমান হামলা চালায়। চাদপুরের বেশ
কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১০টায় চাদপুর সম্পূর্ণরুপে শত্রুমুক্ত
হয়। ১৯৮৪ সালে চাদপুর মহকুমা থেকে জেলার সৃষ্টি হয়।
২. নামকরণ : ১৭৭৯ খ্রি. ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ জরিপকারী মেজর জেমস
রেনেল তৎকালীন বাংলার যে মানচিত্র একেছিলেন তাতে চাদপুর নামে এক
অখ্যাত জনপদ ছিল। তখন চাদপুরের দক্ষিণে নরসিংহপুর নামক (যা বর্তমানে
নদীগর্ভে বিলীন) স্থানে চাদপুরের অফিস আদালত ছিল । পদ্মা ও মেঘনার
সঙ্গমস্থল ছিল বর্তমান স্থান হতে প্রায় ৬০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে। মেঘনা নদীর
ভাঙ্গাগড়ার খেলায় এ এলাকা বর্তমানে বিলীন হয়েছে। বার ভূইয়াদের আমলে
চাদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাদরায়ের দখলে ছিল । এ অঞ্চলে তিনি
একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জে. এম. সেনগুপ্তের মতে,
চাদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাদপুর । অন্যমতে, চাদপুর
শহরের কোড়ালিয়াপুরিন্দপুর মহল্লার চাদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের
নাম । চাদপুর। কারো কারো মতে, শাহ আহমেদ চাদ নামে একজন প্রশাসক
দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদীবন্দর স্থাপন করেছিলেন
তার নামানুসারে নাম হয়েছে চাদপুর
৩. আয়তন : (প্রায়) ১৭৪০৬ বর্গ কি. মি.
৪. লোকসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ২৪১৬০১৮ জন। পুরুষ-১১,৪৫৮৩১ ও মহিলা
১২,৭০১৮১। বৃদ্ধির হার ০.৬১% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ১৪৬৮
৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম : ০৮টি। চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জশাহরাস্তি, হাইমচর,
ফরিদগঞ্জ, কচুয়ামতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর
৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ০৮টি। চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, হাইমচর,
ফরিদগঞ্জ, কচুয়ামতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর
৭. সংসদীয় আসন ০৫টি। (১) কচুয়া উপজেলা ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার
নারায়নপুর ইউনিয়ন। (২) মতলব (উত্তর) উপজেলা ও নারায়নপুর ব্যতীত
মতলব দক্ষিণ উপজেলা। (৩) চাদপুর সদর উপজেলা ও হাইমচর উপজেলা।
(৪) ফরিদগঞ্জ উপজেলা। (৫) হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলা।
৮. হানাদার মুক্ত দিবস : ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর জেলা হানাদার মুক্ত
৮ চাদপুর
হয় ।
৯. বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ : বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গির, ড. রফিকুল ইসলাম, চিত্র
শিল্পী হাসেম খান, নাসির উদ্দিন, জাকারিয়া মিলন, নগেশ চক্রবর্তীআ ন ম
এহসানুল হক মিলন, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, আন্দুল লতিফ খান, মিজানুর
রহমান চৌধুরী ও মুনতাসির মামুন।
১০. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-১৬৯ কি. মি. ও রেলপথে-১৬৫ কি. মি.।
১১. যোগাযোগ ব্যবস্থা : ঢাকা-সায়েদাবাদ, মতিঝিল বাস স্টেশন, ঢাকা-চাদপুর
ঢাকা বাস স্টেশন, আন্তজেলা বাস স্টেশন, তালতলা বাস স্টেশন, হাজীগঞ্জ বাস।
স্টেশন। রেল : চাদপুর রেলওয়ে স্টেশন , হাজীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ :
চাঁদপুর নৌবন্দর, ইচলী লঞ্চ ঘাট ইত্যাদি। এনডব্লিউডি কোড নম্বর : ০৮৪১ ও
পোস্ট কোড-৩৬০০।
১২. পত্রপত্রিকা : দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ, চাঁদপুর দর্পণ, চাদপুর জমিন, চাদপুর প্রবাহ,
চাদপুর সংবাদ, আমার চাদপুর, আলোকিত চাদপুর, সাপ্তাহিক দিবাচিত্র, রূপালী,
হাজীগঞ্জ, দিবাকণ্ঠ, মানব সমাজ, চাদপুর খবর ইত্যাদি।
১৩. পৌরসভা০৭টি ও ইউনিয়ন-৮৭টি।
১৪. উপজেলা ভূমি অফিস-০৮টি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস-৭২টি।
১৫. মৌজার সংখ্যা-১০৪১টি ও গ্রামের সংখ্যা-১৩৬৫টি।
১৬. মোট জমি- ১,৬৭,০০০ হেক্টর । আদর্শ গ্রাম-০৬টি। শিক্ষার হার-৬৮%
১৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-১,০২৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-২৪৯টি,
কলেজ-৪৭টি, কমিউনিটি বিদ্যালয়-৯৩টি ও মাদ্রাসা-১৪৩ টি।
১৮. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-১০,৪০৫টি, মন্দির-১,০২১টি ও গীর্জা-১১৪টি।
১৯. চিকিৎসা কেন্দ্র : সদর হাসপাতাল-০১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-০৮টি ও
ক্লিনিক-২৪টি।
২০. নদনদীর নাম : মেঘনা ও ডাকাতিয়া ।
২১. উল্লেখ যোগ্য ফসল : ধান, পাট, আখ, গম, সরিষামরিচ ও শাকসজি ।
২২. দর্শনীয় স্থান : বড়স্টেশন মোলহেড নদীর মোহনা, জেলা প্রশাসকের বাংলোয়
অবস্থিত দুর্লভ জাতের নাগলিঙ্গম গাছ, ইলিশ চত্বর, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, নীলকুঠি, নৌ বন্দর, হাজীগঞ্জ জামে মসজিদ, পৌর পার্ক,
নদী গবেষণা ইনষ্টিটিউট, অঙ্গীকার (শহীদ স্মৃতি) ইত্যাদি।
২৩. জেলার ঐতিহ্য : ইলিশ মাছ।

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন