কেমন আছিস? তোকে এই কথাটা বলবো ভেবে বলতে পারি নি। খুব ভয়ে ছিলাম,যদি আমাদের ফ্রেন্ডশিপ টা নষ্ট হয়ে যায়। ছোট বেলা থেকেই তোকে দেখে আসছি।তোর ভালো লাগা,খারাপ লাগা,সব কিছুই আমি বুঝি। তোকে কেউ না বুঝলেও আমি তো তোকে বুঝি।
. তুই আমাকে পছন্দ করতি তাও আমি জানতাম।কিন্তু,তুই তো আমায় বলতে পারতি।এতো দিন বলিস নি কেন? আমাকে বললেই পারতি,সুপ্তির সাথে মিথ্যা ভালবাসায় জড়ানোর কি দরকার ছিল? আমিও তোকে খুব পছন্দ করি বুদ্ধ। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। সারাটা জীনব তোর সাথে কাটাতে চাই।
. জানি না এই চিঠি পড়ার পর কি করবি? তবুও আমি আমার মনের কথা টা বলে ফেললাম।একটু ভেবে দেখিস।
. ইতি
তোর অপেক্ষায়
মিথিলা
. . কয়েক মাস আগে.....
. কলেজে একদিন-
# বিক্ষোভঃ কি রে কেমন আছিস?
# মিথিলাঃ ভাল।তুই?
-- হুমমম ভাল। ক্লাস নেই তোর?
-- না। তোর?
-- না এখন নেই।
-- আবার মিথ্যা বলিস?
-- আরে আছে তো। কিন্তু যাবো না।
-- কেন জাবি না?
-- ভালো লাগে না। তাছাড়া তোকে একা রেখে কি করে যাই বল তো?
-- আচ্ছা ঠিক আছে।যেতে হবে না।তুই বস, এখনে আমার একটা নতুন ফ্রেন আসবে। তোর সাথে পরিচয় করে দেই।
-- ঠিক আছে।কিন্তু কি নাম উনার?
-- সুপ্তি। কাল পরিচয় হয়েছি। ঐ দেখ সুপ্তি আসছে।
. দূরে তাকিয়ে দেখলাম একটা মেয়ে আসছে।
. কাছে আসার পর,
মিথিলাঃ সুপ্তি, এই হলো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড বিক্ষোভ। আর বিক্ষোভ, এই হল সুপ্তি। যার কথা তোকে এখনে বললাম।
. # বিক্ষোভঃ হ্যাল,আমি বিক্ষোভ। মিথিলার ছোট বেলার বন্ধু।
# সুপ্তিঃ আমি সুপ্তি।মিথিলার বন্ধু।
. তখন থেকেই আমারা দুই বন্ধু থেকে তিন বন্ধু হয়ে গেলাম। সময় পেলে আমারা তিন বন্ধু মিলে গল্প করি।একসাথে পড়াশুনা করি।সব কাজই প্রায় এক সাথে করি। খুব জমে উঠেছিলো আমাদের বন্ধুত্ব। সারাক্ষণ গল্প,আর মারামারি করেই কাটছিল সময় গুলো।মনে হতো এইটাই বুঝি বন্ধুত্ব। আর এই বন্ধুত্বই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক।
. শুরু থেকেই সুপ্তি বুঝতে পারছিলো যে,আমি মিথিলাকে পছন্দ করি। একথা মিথিলাও জানত।মিথিলাও আমায় পছন্দ করতো।কিন্তু কেউ সাহস করে
বলতে পারছিলাম না।ভয় একটায় যদি আমাদের এই শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক বন্ধুত্ব। এই ভয়ে বলার সহস হয়ে উঠে নি।
. সুপ্তু ছিল অনেক সাহসী এবং বুদ্ধিমতী একটা মেয়ে। ও আমাকে মিথিলার কথা বললে আমি সব সত্য কথা বলে দেই,মনের সব কথা শেয়ারহ করি। সুপ্তি আমার আর মিথিলার মিল করার জন্য একটা মিথ্যা ভালবাসার জাল বুনে। শুরু হয় আমার আর সুপ্তির ভালবাসা।এই কথা মিথিলা কে বলার মিথিলা খুশী হলেও মন থেকে এটা মেনে নিতে পারে নি।খুব অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল মিথিলা কে।
. চলতে থাকে আমার আর সুপ্তির সাজানো ভালবাসার নাটক।আমাদের এই মিথ্যা ভালবাসা আমার একদমই ভাল লাগতো না।কেমন জানি মনে হতো। ভাবতাম যদি মিথিলা সহ্য না করতে পেরে দূরে কোথাও যায়।সব সময় এই কথা ভালতাম।তাই সুপ্তির থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতাম। এই নিয়ে প্রায় আমার মন খারাপ থাকত। আমার মন খারাপ মিথিলা কোখনোই সহ্য করতে পারতো না। তাই প্রায় আমার কাছে মন খারাপের কারন জানতে চাইতো। কিন্তু আমি কিছু বলি না। কি বলবো আমি...??? কি বলার আছে আমার...???
. মিথিলা ভাবতো ওকে না পাওয়ার ব্যাথাই আমার মন খারাপের আসল করন।ও কাছে থাকলে আমি আরো ভেঙ্গে পরবো।তাই মিথিলা এক কঠিন পরীক্ষায় নামে।ও আমার কাছে দূরে থাকার জন্য বাবার পছন্দ করা পাত্রের সাথে বিয়ে করার জন্য মত দেয়।চলে যেতে চায় আমার জীবন থেকে।
. মিথিলার বিয়ের দুই দিন আগের রাতে..... আমি আর সুপ্তি গেলাম মিথিলার বাসায়।আমাদের দেখে ও যেন কেমন করতে লাগলো। কি একটা দূঃখ যেন ওর মনে। পরে আমি আর সুপ্তি আমাদের মিথ্যা ভালবাসার কথা বললাম।আমার মনের সব ভালবাসার কথা বললাম মিথিলা কে। সবটাই ছিল সাজানো একটা নাটক। কিন্তু এতে কোন কাজ হল না। কারন,আমরা অনেক দেরি করে ফেলেছি। খালি হতে চলে আসতে হয়।কিন্তু, আমি নিরাশ হই নি।আমি মানতে পারি নি যে,আমি মিথিলা কে পাব না।
. বিয়ের আগের দিন..... লাল খামের ভিতরে নীল রঙ এর কাগজে মিথিলার লিখা ওই চিঠিসহ কিছু অশ্রু। খুব খুশী হয়ে আমি আর সুপ্তি গেলাম মিথিলার বাসায়।মিথিলা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।ও বাসায় সব কিছু বলেছে।পরিবারের লোকজন মেনেও নিয়েছে। আমি তো অবাক...!!! আমি ফিরে পেলাম আমার ভালবাসা মিথিলা কে। আর সুপ্তি কেন জানি মুখ ভাড় করে চলে গেল। তবে,কি সুপ্তি মিথ্যা ভালবাসার আড়ালে আমাকে ভালবেসেছে...... ....???
No comments:
Post a Comment