03 February, 2019

বাগেরহাট জেলার ইতিহাস

সৃষ্টির প্রেক্ষাপট : বাগেরহাট ১৮৪২ সালে খুলনা মহকুমার অন্তর্ভুক্ত একটি থানা।
ছিল। ১৮৬৩ সালে বাগেরহাট যশোর জেলার অন্তর্ভুক্ত মহকুমায় রূপান্তরিত
হয়। ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলার সৃষ্টি হয়।
২. নামকরণ : একসময় বাগেরহাটের নাম ছিল খলিফাতাবাদ বা প্রতিনিধির শহর।
খানজাহান আলী (র.) গৌড়ের সুলতানদের প্রতিনিধি হিসেবে এ অঞ্চল শাসন
করতেন। কেউ কেউ মনে করেন, বরিশালের শাসক আগা বাকের এর
নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। কেউবা মনে করেন, পাঠান জায়গীরদার বাকির
ধা এর নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। আবার কারো মতে, বাঘ শব্দ হতে
বাগেরহাট হয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, খানজাহান আলী (র:) এর একটি বাগ,
ফার্সি শব্দ-অর্থ বাগান বা বাগিচা ছিল। এ বাগ শব্দ হতে বাগেরহাট হয়েছে।
কারো মতে নদীর বাঁকে হাট বসতো বিধায় বাকেরহাট হতে বাগেরহাট হয়েছে।
৩. আয়তন : (প্রায়) ৩,৯৫৯ বর্গ কি. মি.।
৪. লোকসংখ্যা : মোট-(প্রায়) ১৪,৭৬০৯০ জন। পুরুষ-৭,৪০১৩৮ ও মহিলা
৭,৩৫,৯৫২। বৃদ্ধির হার র -০.৪৭% ও ঘনত্ব (বৰ্গ কি. মি.) : ৩৭৩ জন।
৫. উপজেলার সংখ্যা ও নাম.  ০৯টি। বাগেরহাট সদর, মোল্লাহাট, চিতলমারী,
কচুয়া, রামপাল, মংলা, শ্বরনখোলা, মোড়লগঞ্জ ও ফকিরহাট।
৬. থানার সংখ্যা ও নাম : ৯টি। বাগেরহাট, মোল্লারহাট, ফকিরহাট, মংলা, কচুয়া
রামপাল, শ্বরণখোলা, মোড়লগঞ্জ ও চিতলমারী।
৭. সংসদীয় আসন : ০৪টি। (১) ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা ।
(২) বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলা । (৩) রামপাল ও মোংলা উপজেলা।
(৪) মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা।
৮. বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ : কাজী আজগর আলীরুহুল আমিন, ড: শেখ গাউছ মিয়া,
আবু বকর সিদ্দিক, মহেন্দ্রনাথ রায়, শেখ আব্দুল আজিজ, ড. নিলীমা ইব্রাহীম,
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাইদ, অধ্যাপক রফিক, ডা: মোজাম্মেল হোসেন, ডা:
মোহাম্মদ তারেক, শেখ আলতাফ আলীরফিকুল ইসলাম খোকন, আবুল
খায়ের, তালুকদার আব্দুল খালেক, স ম কবির আহমদ মধু প্রমূখ।
৯. ঢাকা থেকে দূরত্ব : সড়ক পথে-৩৭০ কি. মি. ও রেলপথে-৬৬০ কি. মি.।
১০. যোগাযোগ ব্যবস্থা : বাস : ঢাকা-বাগেরহাট-ঢাকা বাস স্টেশন, কেন্দ্রীয় বাস
স্টেশন কাটাখালী, মোড়লগঞ্জ বাস স্টেশন। রেল। : বাগেরহাট রেলওয়ে
স্টেশন । এনডব্লিউডি কোড নম্বর : ০৪০১ ও পোস্ট কোড-৯৩০০।
১১. পত্রপত্রিকা : দৈনিক সুন্দরবন, দড়াটানা, দক্ষিণ কণ্ঠ, সাপ্তাহিক খানজাহান,
বনাঞ্চল, পানগুছি ও মোংলা।
১২. পৌরসভা০৩টি ও ইউনিয়ন-৭৫টি।
১৩. উপজেলা ভূমি অফিস-০৯টি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস-৪০টি ।
১৪. মৌজার সংখ্যা-৭২৯টি ও গ্রামের সংখ্যা-১,০৪৭টি।
১৫. মোট জমি- ২,১২,২৮২.৫৯ হেক্টর।
১৬. আদর্শ গ্রাম-১৮টি। শিক্ষার হার-৪৮%।
১৭. উল্লেখযোগ্য ফসল : ধান, গম, সরিষাভুট্টা, তুলা ও আখ ।
১৮. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : প্রাথমিক বিদ্যালয়-১,০৯০টি, উচ্চ বিদ্যালয়-২৫৮টি,
মাধ্যমিক বিদ্যালয়-২৮২টি, কলেজ-৩৩ টি, মাদ্রাসা-২৪৫টি ও অন্যান্য স্কুল
১১টি।
১৯. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ-৩,৬২৮টি।
২০. চিকিৎসা কেন্দ্র : হাসপাতাল-১১টি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-০৯টি, ইউনিয়ন।
স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ-৫৬টি, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্ৰ৫৬ক্লিনিক-২৪টি ও
কমিউনিটি ক্লিনিক-১৫৩টি ।
২১. নদনদীর নাম : হরিণঘাটা, মধুমতি, মংলা, বালেশ্বরী, পাথুরিয়াশীলা ইত্যাদি।
২২. দর্শনীয় স্থান : সুন্দরবন, করমজল, হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, খাঞ্জেলী দিঘী ও
মাজার, ষাটগুম্বজ মসজিদ, অযোধ্যার মঠ, দড়াটানা সেতু, মংলা পোর্ট. সেন্ট
পলস মিশন, মেছের শাহ মাজার, লক্ষীখালি গোপাল সাধুর আশ্রম ও কালা।
চাদের মাজার ।
২৩. জেলার ঐতিহ্য : বাগেরহাটের অতি প্রাচীন স্থান পানিঘাটে প্রাপ্ত কষ্টি পাথরের
অষ্টাদশ ভূজা দেবীমূর্তি, মরগা খালের তীরে খানজাহান আলী (র:) এর পাথর
ভর্তি জাহাজ ভিড়বার স্থান জাহাজঘাটায় মাটিতে গ্রোথিত পাথরে উৎকীর্ণ
অষ্টাদশ ভূজা মহিষ মদিণী দেবীমূর্তি, চিতলমারী উপজেলাধীন খরমখালি গ্রামে
প্রাপ্ত কৃষ্ণ প্রস্তরের বিষ্ণু মুর্তি ইত্যাদি নিদর্শন এখানে হিন্দু সভ্যতা বিকাশের
পরিচয় বহন করে। ১৪৫০ সালে খানজাহান আলী খাঞ্জেলী দীঘি খনন করান।
যা আজও জেলার ঐতিহ্য বহন করে।

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন