21 November, 2018

মসজিদ ও সালাতের স্থান ২, মুসলিম শরিফের

১১৪২ আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি কোনও লোককে মসজিদে হারানো বস্তুর ঘোষণা দিতে শুনবে, তখন সে বলবে, আল্লাহ তোমাকে তা ফিরিয়ে না দিন। কেননা মসজিদ এর জন্য তৈরি হয়নি।
১১৪৩ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে উপরোক্তরুপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
১১৪৪ হাজ্জাজ ইবনু শাঈর (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি মসজিদে উচ্চস্বরে হারানো জিনিস খুঁজল এবং বলল, লাল উটের দিকে ডাকল কে? (অর্থাৎ কে সেটি পেয়েছে?) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এটি যেন না পাও। মসজিদ যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যই তা ব্যবহৃত হবে।
১১৪৫ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন, তখন এক ব্যাক্তি দাড়িয়ে বলল, লাল উটটির দিকে ডাকল কে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (তোমার উট) তুমি যেন না পাও। মসজিদ যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যই ব্যবহৃত হবে।
১১৪৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) বুরায়দা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত সম্পন্ন করলেন, তখন জনৈক বেদুঈন এসে মসজিদে দরজা দিয়ে তাঁর মাথা ঢুকাল। অতঃপর রাবী উপরোক্ত হাদিসের অনুরুপ বর্ণনা করলেন। মুসলিম বলেন, সনদে উল্লেখিত শায়বা হল, শায়বা ইবনু না’আমা থেকে মিস’আর, হুসায়ম, জারীর প্রমুখ কুফাবাসী রাবীগন হাদিস বর্ণনা করেছেন।
১১৪৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করতে দাড়ায়, তখন শয়তান ভুলাবার জন্য তাঁর নিকট আগমন করে। শেষ পর্যন্ত সে কয় রাক’আত পড়ল, তা তাঁর মনে থাকে না। যখন এরুপ হবে, তখন দুটি সিজদা (সাহু) করবে।
১১৪৮ আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মাদ ইবনু রুমহ (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে উপরোক্ত হাদিসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১১৪৯ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন আযান হতে থাকে, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পলায়ন করে, যাতে সে আযান শুন্তে না পায়। যখন আযান শেষ হয়ে, যায়, তখন সে ফিরে আসে। যখন তা তাকবীর আরম্ভ হয়, তখন আবার সে পলায়ন করে এবং তাকবীর শেষে ফিরে এসে সালাত আদায়কারীর অন্তরে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে। সে বলে, এই কথা স্মরণ কর, ঐ কথা স্মরণ কর, যা তার স্মরণ ছিল না। শেষ পর্যন্ত সে কত রাক’আত সালাত আদায় করেছে, তা ভুলে যায়। যখন তোমাদের কেউ কত রাক’আত সালাত আদায় করেছে তা ভুলে যাবে, তখন সে বসা অবস্হায় দুটি সিজদা করবে।
১১৫০ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালাতের আযান হতে থাকে, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পনায়ন করে। অতঃপর রাবী পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তিনি এতে আরো বর্ণনা করেন যে, সে তার মনে বহু আশা-বাসনার উদ্রেক করে এরং এমন এমন কাজ স্মরণ করায়, যা তার স্মরণ ছিল না।
১১৫০ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালাতের আযান হতে থাকে, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পনায়ন করে। অতঃপর রাবী পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তিনি এতে আরো বর্ণনা করেন যে, সে তার মনে বহু আশা-বাসনার উদ্রেক করে এরং এমন এমন কাজ স্মরণ করায়, যা তার স্মরণ ছিল না।
১১৫২ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু বুহায়না আল-আসা’দী (রাঃ) (তিনি ছিলেন আবদুল মুত্তালিব গোত্রের মিত্র) থেকে বর্ণিত যে,তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাতে প্রথম বৈঠকে ভুলে দাঁড়িয়ে গেলেন। যখন সালাত শেষ করলেন, তখন সালাম ফিরানোর পূর্বে বসা অবস্হায় দুটি সিজদা করলেন। প্রত্যেক সিজদা তাকবীর বললেন। লোকেরাও তাঁর সাথে দুটি সিজদা করল। তা (প্রথম) বৈঠক ভুল করার পরিবর্তে ছিল।
১১৫৩ আবূ রাবী আয যাহরানী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মালিক ইবনু বুহায়না আল আযদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসালাতের প্রথম দুই রাকআতের পর বসার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দাঁড়িয়ে গেলেন। তারপর তিনি সালাত আদায় করে যেতে লাগলেন। যখন তিনি সালাতের শেষ পর্যায়ে ছিলেন তখন সালাম ফিরানোর পূর্বে তিনি সিজদা করলেন, তারপর সালাম ফিরালেন।
১১৫৪ মুহাম্মদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) আবূ সাইদ খুদূরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার সালাতে সন্দেহ পতিত হয় এবং সে স্থির করতে ব্যর্খ হয় যে তিন রাকআত পড়েছে, তিন না চার রাকআত, তখন সে সন্দেহ পরিত্যাগ করবে এবং যে-কয় রাকআতের উপর দ্রির প্রত্যয় হয় সেটিই ধারণ করবে। তারপর সালাম ফিরাবার পূর্বে দুটি সিজদা করবে যদি তার পাঁচ রাকআতই পড়া হয়েগিয়ে থাকে, তবে এই দুই সিজদা মিলে ছয় রাকআত হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত পূর্ণ চার রাকআতই হয়, তবে দুই সিজদা! শয়তানের মুখে মাটি পড়ার কারণ হবে।
১১৫৫ আহমাদ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু ওয়াহাব (রহঃ) যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) থেকে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন। এতে বর্ণিত হয়েছে যে, সালামের পুর্বে দুটি সিজদা করবে। যেমন সূলায়মান ইবনু বিলাল বলেছেন।
১১৫৬ আবূ শায়বার দুই পূত্র আবূ বাকর ও উসমান এবং ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- (এক বার) সালাত আদায় করলেন। ইবরাহীম বলেন, ঐ সালাতের কিছু বেশ-কম হয়েগেল। যখন সালাম ফিরালেন, তখন বলা হল, ইয়া রাসুলুল্লাহ সালাতে কি কোনও নতূন হুকুম হয়েছে? তিনি বললেন, সেটি কি? তারা বলল, আপনি এরুপ এরুপ করছেন। তখন তিনি ম্বীয় পদদ্বয় ঘূরালেন এবং কিবলা মূখী হয়ে দুটি সিজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। এরপর আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, সালাতে যদি নতূন কোনও হুকুম হত, তবে আমি তোমাদের জানিয়ে দিতাম। কথা হচ্ছে, আমিও একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভূল কর, আমিও তেমনি ভূল করে থাকি। অতএব, আমি যদি ভূল করি, তোমারা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিরে। আর তোমাদের কারও যদি সালাতে সন্দেহ হয়, তবে ভেবে-চিন্তে যেটি সঠিক মনে হবে, তার ভিত্তিতে সালাত পূর্ণ করে নিবে। তারপর দুটি সিজদা করবে।
১১৫৭ আবূ কুরায়ব, মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মানসূর সুত্রে বর্ণিত যে, তিনি কিঞ্চিত শাব্দিক পরিবর্তনের সাথে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন। (হাদিস নম্বরঃ ১১৫৬)
১১৫৮ আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান আদ দারিমী ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) মানসূর সুত্রে বর্ণিত যে, তিনি উপরোক্ত রুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে বর্ণনার শব্দে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
১১৫৯ মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না, ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) মানসূর থেকে সামান্য শব্দ পরিবর্তনের সাথে উপরোক্ত রুপ হাদীস বর্ণনা করেন।
১১৬০ উবায় দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল-আম্বরী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের সালাত পাচ রাকআত পড়লেন। যখন সালাম ফিরালেন, তখন তাকে বলা হল, সালাত কি বেড়ে গেছে? তিনি বললেন, কি রুপে? তারা বলল, আপনি পাঁচ রাকআত পড়েছেন। তখন তিনি দুটি সিজদা করলেন।
১১৬১ ইবনু নুমায়র ও উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রাঃ) ইবরাহীম ইবনু সুওয়ায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আলকামা আমাদেরকে নিয়ে ষূহরের সালাত পাঁচ রাকআত আদায় করলেন। যখন সালাম ফিরালেন, তখন লোকেরা বলল, হে আবূ শিবল (আলকামার কুনিয়াত)! আপনি পাচ রাকআত পড়েছেন। তিনি বললেন, কক্ষণও নয়। আমি (ঐরুপ) করি নি। তারা বলল, অবশ্যই (আপনি পাচ রাকআত পড়েছেন)। বর্ণনাকারী সুওয়ায়দ বলেন, আমি তাদের এক পার্শে ছিলাম। তখন আমি ছেলে মানুষ! আমি বললাম, হ্যা। তখন তিনি ফিরলেন এবং দুটি সিজদা করে সালাম ফিরালেন। তারপর বললেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাদের নিয়ে পাচ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। যখন সালাত শেষ করলেন লোকেরা ফিসফিস করতে লাগল। তিনি বললেন, তোমাদের কি হয়েছে? তারা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত কি বৃদ্ধি পেয়েছে? তিনি বললেন, না। তারা বলল, আপনি পাচ রাকআত পড়েছেন। তখন তিনি ঘূরে বসলেন এবং সিজদা করে সালাম ফিরালেন। তারপর বললেন, আমি তোমাদরই মত একজন মানুষ। তোমরা যে রুপ ভুলে যাও, আমিও তদ্রুপ ভুলে যাই। ইবনু নূমায়রের বর্ণনায় এটূকু বেশী আছে অতএব, তোমাদের কেউ যখন ভূলে যাবে, তখন দুটি সিজদা করবে।
১১৬২ আওন ইবনু সাল্লাম আল কুফী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সহ পাঁচ রাকআত সালাত আদায় করলেন। আমরা বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাত কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেন, কির রুপে? তারা বলল, আপনি পাচ রাক’আত পড়েছেন। তিনি বললেন, আমি তোমাদের মতই একজন মানূয। তোমরা যেমন স্মরণ রাখ, আমিও তেমনি স্মরণ রাখি। তোমরা যে রুপ ভুলে যাও, আমিও সে রুপ ভূলে যাই। এরপর ভূলের জন্য দুটি সিজদা করলেন।
১১৬৩ মিনজাব ইবনুল হারিস আত তামীমী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-একবার সালাত আদায় করলেন। কিন্তু সালাতে কিছু বেশী অথবা কম হল। বর্ণনাকারী ইবরাহীম বলেন, এই বেশী অথবা কমের সন্দেহটি আমার। বলা হল (লোকেরা বলল), ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাতে কি কিছু বাড়ানো হয়েছে? তিনি বললেন, আমি তোমাদের মতই মানুষ বৈ কিছু নই। তোমাদের মতই আমি ভুলে যাই। কাজেই তোমাদের কেউ যদি (সালাতে) ভূলে যায়, তবে বসা অবস্হায় দুটি সিজদা করে নিবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুরে বসে দুটি সিজদা করলেন।
১১৬৪ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভুলের সিজদাদ্বয় সালাম ও কথাবার্তা সস্পন্ন করার পর করেছিলেন।
১১৬৫ কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। (সালাতের নির্ধারিত রাকাআত থেকে) বেশী করলেন কিংবা কম করলেন। বর্ণনাকারী ইবরাহীম বলেন, আল্লাহর কসম! এ সন্দেহ আমার স্মরণের ক্রটির জন্য হয়েছে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সালাতে নতুন কিছু হয়েছে কি? তিনি বললেন, না। তখন তিনি যা করেছেন (বেশী কিংবা কম), আমরা তা বললাম। তিনি বললেন, যখন কোন ব্যাক্তি (সালাতে) কিছু বেশী কিংবা কম করবে, তখন দুটি সিজদা (সাহু) করে নিবে। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি দুটি সিজদা (সাহু) করলেন।
১১৬৬ আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে যুহর অথবা আসরের সালাত আদায় করলেন এবং দু-রাকআত পড়েই সালাম ফিরালেন। অতঃপর তিনি একটি খর্জ্যুর কাণ্ডের খুটির নিকট আসলেন, যা মসজিদের পশ্চিম দিকে লাগানো ছিল। এবং এর সাথে হেলান দিয়ে রাগান্নিত অবস্হায় দাঁড়ালেন। জামাআতে আবূ বকর ও উমার (রাঃ) ও উপস্হিত ছিলেন। তারাও কথা বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। আর যাদের তাড়াতাড়ি করে যাওয়ার ছিল তাঁরা এই বলে চলেগেল যে, সালাত কমে গিয়াছে। তখন যুল-ইয়াদায়ন নামক জনৈক ব্যাক্তি দাড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাত (এর রাকআত) কমে গিয়েছে, না আপনি ভূলে গেছেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডানে ও বামে তাকিয়ে বললেন, যুল-ইয়াদায়ন বলে কি? লোকেরা বলল, সে সত্য বলেছে আপনি দু-রাকআতই পড়েছেন। তখন তিনি (আরো) দুই রাকআত পড়লেন এবং সালাম ফিরালেন। তারপর তাকবীর বললেন ও সিজদা (সাহু) করলেন। অতঃপর তাকবীর বললেন ও মাথা উঠালেন। আবার তাকবীর বললেন ও সিজদা করলেন। এরপর পূনরায় তাকবীর বললেন ও মাথা উঠালেন। মুহাম্মাদ ইবনু (রহঃ) বলেন, ইমরান ইবনু হুসায়ন (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে,তিনি বলেছেন, এবং সালাম ফিরালেন।
১১৬৭ আবূ রাবী আয-যাহরানী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে উপরোক্ত রুপ বর্ণনা করেছেন।
১১৬৮ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-আমাদেরকে আসরের সালাত পড়ালেন এবং দুই রাক’আত আদায় করেই সালাম ফিরালেন। তখন যুল-ইয়াদাইন দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহু! সালাত কি হরাস করা হয়েছে, না আপনি ভুলেগেছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর কোনোটাই হয়নি। যুল-ইয়াদায়ন (রাঃ)বললেন, যে কোনও একটি অবশ্যই হয়েছে, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, যুল-ইয়াদায়ন কি সত্য বলেছে? তারা বলল, জী হ্যা, ইয়া রাসুলুল্লাহহ! তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-অবশিষ্ট সালাত পূর্ণ করলেন এবং সালাম ফিরানোর পর বসা অবস্হায় দুটি সিজদা (সাহু) করলেন।
১১৬৯ হাজ্জাজ ইবনু শাঈর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত দুই রাকআত পড়ে সালাম ফিরালেন। তখন বনূ সুলায়ম-এর জনৈক ব্যাক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাত কি হরাস করা হয়েছে, না আপনি ভূলে গেছেন? রাবী হাদীসের পরবর্তী অংশ বর্ণনা করেন।
১১৭০ ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুহরের সালাত আদায় করছিলাম। তিনি দুই রাকআত আদায় করেই সালাম ফিরিয়ে দিলেন। তখন সুলায়ম গোত্রের জনৈক দারিয়ে গেল। তারপর রাবী উপরোক্তরুপ অবশিষ্ট হাদীসটি বর্ণনা করলেন।
১১৭১ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত তিন রাকআত পড়ে সালাম ফিরালেন। তারপর নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন (কিঞ্চিত) লম্বা দুই হস্ত বিশিষ্ট খিরবাক নামক জনৈক ব্যাক্তি তাঁর উদ্দেশ্যে উঠে দাড়ালেন। এবং ‘হে আল্লাহর রাসুল’ বলে সম্মোধন করে বিষয়টি সম্পর্কে তাকে জানালেন। তিনি চাঁদর হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে রাগান্বিত হয়ে বেরিয়ে এলেন। লোকদের নিকট এসে বললেন, এই লোকটি কি সত্য বলছে? তারা বলল, জী হ্যা। তারপর তিনি এক রাকঅত আদায় করে সালাম ফিরালেন এবং দুটি সিজদা (সাহু) করে পূনরায় সালাম ফিরালেন।
১১৭২ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত তিন রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালেন। এরপর উঠে হুজরার মধ্যে প্রবেশ করলেন। ইত্যবসরে র্দীর্ঘ দুই হাত বিশিষ্ট জনৈক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সালাত কি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে? তখন তিনি রাগান্নিত হয়ে বের হয়ে এলেন এবং তিনি যে রাকআতটি ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেটি আদায় করলেন। এবং সালাম ফিরালেন। এরপর দুটি সিজদা (সাহু) করে পূনরায় সালাম ফিরালেন।
১১৭৩ যুহায়র ইবনু হারব, উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। যে সূরায় সিজদার আয়াত রয়েছে, তাও পাঠ করতেন এবং সিজদা (তিলাওয়াত) করতেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এমনকি আমাদের কেউ কেউ (ভিড়ের দরুন) কপাল রাখার জায়গাও পেতনা।
১১৭৪ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কখনও কখনও কুরআন তিলাওয়াত করতে গিয়ে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং আমাদের নিয়ে সিজদা করতেন। ভিড়ের কারণে আমাদের কেউ কেউ সিজদার জায়গাও পেত না। এ ছিল সালাতের বাইরের ঘটনা।
১১৭৫ মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না ও মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-সূরা ওয়ান নাজমি পাঠ করলেন এবং সিজদা করলেন। তাঁর সাথে যারা ছিলেন, তারাও সকলে সিজদা করলেন। কিন্তু এক বৃদ্ধা (উমায়্যা ইবনু খালফ) সিজদা করল না। সে এক মুষ্টি মাটিও পাথর কুচি উঠিয়ে কপালে লাগাল এবং বলল, আমার জন্য এটই যথেষ্ট। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি দেখেছি, পরবর্তীতে (বদরের যুদ্ধে) সে কাফির অবস্হায় নিহত হয়।
১১৭৬ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া, ইয়াহইয়া ইবনু আইউব কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, তিনি যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ)-কে ইমামের সাথে কিরা-আত পাঠ সম্পর্কে করলেন। তিনি বললেন, ইমামের সাথে কোনও কিরাআত নেই এবং আরও বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখে সুরা ওয়ান নাজমি ইযা হাওয়া পাঠ করলাম, কিন্তু তিনি সিজদা করলেন না।
১১৭৭ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহিয়া (রহঃ) আবূ সালামা ইবনু আব্দুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) সালাতে ‘ইযাস ছামাআ ইনশাক্কাত’ পাঠ করলেন এবং সিজদা করলেন। তারপর সালাত শেষ করে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সূরায় সিজদা করেছেন।
১১৭৮ ইবরাহীম ইবনু মূসা ও মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উপরোক্ত রুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১১৭৯ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আমর আন নাকিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইযাস সামাউন শাক্কাত এবং ইকরা বিসমি রাব্বিকা সূরা দ্বয়ে সিজদা করেছি।
১১৮০ মুহাম্মদ ইবনু রুমহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইযাস সামাউন শাক্কাত এবং ইকরা বিসমি রাব্বিকা পাঠ করে সিজদা করেছেন।
১১৮১ হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উপরোক্ত রুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১১৮২ উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয আল আম্বারী ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আলা (রহঃ) আবূ রাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সাথে ইশার সালাত আদায় করলাম। তিনি সালাতে ‘ইযাস সামাউন শাক্কাত’ পাঠ করলেন এবং সিজদা করলেন। (সালাত শেষে) আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটি কিসের সিজদা? তিনি বললেন, এ সিজদাটি আমি আবূল কাসিম (রাসুলের কুনিয়াত)-এর পিছনেও করেছি। সুতরাং আমি এটি তাঁর সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত (মৃত্যু পর্যন্ত) করতে থাকবে। ইবনু আবদুল আ’লা (রহঃ) বলেন, (তিনি বলেছেন) আমি এই সিজদা সর্বদা করতে থাকব।
১১৮৩ আমর আন-নাকিদ, আবূ কামিল ও আহমাদ ইবনু আবদা আত তায়মী সুত্রে বর্ণিত, তিনি উপরোক্ত রুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এরা “ আবূল কাসিম” এর পিছনেঁ কথাটি বলেননি।
১১৮৪ মুহাষ্মাদ ইবনুল মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ রাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে ‘ইযাস সামাউন শাক্কাত’ পাঠ করে সিজদা করতে দেখলাম। আমি বললাম, আপনি এ সূরায় সিজদা করেন? তিনি বললেন, হ্যা। আমি আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ সূরায় সিজদা করতে দেখেছি। সুতরাং আমি তাঁর সাথে মুলাকাত (মৃত্যু) পর্যন্ত এস সূরায় সিজদা করতে থাকব। শুবা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, (এই সূরায়) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-(সিজদা করতেন)? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
১১৮৫ মুহাম্মাদ ইবনু মা”মার ইবনু রিবঈ আল-কায়সী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনুুয যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেন, বাম পা-খানি বিছিয়ে দিতেন। এবং বাম হাত বাম উরুর উপর ও ডান হাত খানি ডান উরুর উপর রাখতেন, আর আঙ্গুল (তর্জনী) দ্বারা ইশারা করতেন।
১১৮৬ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দুআ করার জন্য বসতেন, তখন ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন এবং বাম হাত বাম উরুর উপর। শাহাদাত আংগুলি (তর্জনী) দ্বারা ইশারা করতেন এবং বৃদ্ধাংগুলোকে মধ্যমার উপর রাখতেন। আর বামহাতের তালূ দ্বারা বাম হাঁটু আকড়িয়ে ধরতেন।
১১৮৭ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেন, তখন দু হাত দুই হাঁটুর উপর রাখতেন এবং ডান হাতের বৃদ্ধাংগুলির পাশের (শাহাদত) আংগুলি উঠিয়ে তা দ্বারা(ইংগিতে) দুঁআ করতেন। আর বাম হাত খানি বাম হাঁটুর উপর বিছিয়ে রাখতেন।
১১৮৮ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, তিনি বলেন, রাসূলূঁল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহুদ পড়ার জন্য বসতেন, তখন তার বাম হাত বাম হাঁটুর উপর এবং ডান হাত ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। আর (ডান হাতের আংগুল দ্বারা) তিপ্পান্ন বানিয়ে শাহাদাত আংগুলি দ্বারা ইশারা করতেন।
১১৮৯ ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আলী ইবনু আবদুর রহমান মুআবী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) আমাকে সালাতে কংকর নিয়ে খেলা করতে দেখলেন। আমি সালাত শেষ করার পর তিনি আমাকে নিষেধ করলেন এবং বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রুপ করতেন তুমিও তদ্রুপ কর। আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকি রুপ করতেন? তিনি বললেন, তিনি যখন সালাতে বসতেন, তাঁর ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন এবং সমস্ত আংগুল গুটিয়ে রেখে বৃদ্ধাংগুলির নিকটস্হ আংগুল দ্বারা ইশারা করতেন। আর বাম হাতের তালুখানি বাম উরুর উপর রাখতেন।
১১৯০ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আলী ইবনু আব্দুর রহমান মুআবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)-এর পার্শে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেছি। তারপর উপরোক্ত- হাদীস সদৃশ বর্ণনা করেন।
১১৯১ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ মা’মার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মক্কায় একজন আমীর ছিলেন, তিনি দুটি সালাম বলতেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রহঃ) বলেন, তা কোথা থেকে পেয়েছেন? হাকাম তাঁর রিওয়ায়াতে বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দুটি সালাম) করতেন।
১১৯২ আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, জনৈক আমীর অথবা ব্যাক্তি (সালাত শেষ করার জন্য) দুটি সালাম ফিরালেন। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কোথেকে তিনি তা হাসিল করেছেন?
১১৯৩ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার ডান দিকে ও বাম দিকে সালাম করতে দেখতাম। এমন কি সালাম করাকালীন তাঁর গন্ড দেশের ওভ্রতাও দেখতাম।
১১৯৪ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেঁন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের সমাপ্তি তাঁর তাকবীর দ্বারা বুঝতে পারতাম।
১১৯৫ ইবনু আবূ উমার (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের সমাপ্তি তাকবীর দ্বারাই বুঝতে পারতাম। আমর বলেন, আমি আবূ মাবাদকে এ বিষয়টি আবার জ্ঞাত করালে তিনি তা অশিকার করেন এবং যে, আমি তা তোমার নিকট বলি নি। অথচ তিনি তা আমার নিকট বলেছিলেন।
১১৯৬ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, ফরয সালাতের পর উচ্চকন্ঠে যিকির করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় প্রচলিত ছিল। এবং আমি যখন তা শুনতাম, তখন বুঝতাম যে, লোকেরা সালাত শেষে করেছে।
১১৯৭ হারুন ইবনু সাঈদ ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-আমার ঘরে এলেন। আমার নিকট তখন এক ইয়াহুদী ন্ত্রীলোক বসা ছিল। সে বলছিল তোমরা কি জান যে, কবরে তোমাদের পরীক্ষা হবে? আয়িশা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষ্মিত হলেন এবং বললেন, ইয়াহুদিরাই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তারপর আমরা কয়েকদিন অতিবাহিত করলাম। পরে একদিন রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি জান যে, এই মর্মে আমার নিকট ওহী নাযিল হয়েছে, তোমরা কবরে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কবরের আযাব থেকে প্রার্থনা করতে শুনেছি।
১১৯৮ হারুন ইবনু সাঈদ, হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ও আমর ইবনু সাওয়াদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তারপর থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে শুনেছি।
১১৯৯ যুহায়র ইবনু হারব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনার দুজন ইয়াহুদী বৃদ্ধা আমার কাছে এল এবং বলল, কবরবাসীদের কবরের মধ্যে আযাব দেওয়া হয়। আমি তাদের মিথ্যাবাদিনী বলতে আমার মনে চাইল না। তারা চলে যাওয়ার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে এলেন। আমিা তাঁকে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! মদিনার দু-জন বৃদ্ধা ইয়াহুদী আমার নিকট এসেছিল। তারা বলেছে, কবরের মধ্যে কবরবাসীদের আযাব দেওয়া হয়। তিনি বললেন, তারা সত্য বলেছেন তাদের এরুপ আযাব দেওয়া হয় যে, তা জীবজন্তুরা শুনতে পায়। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি তাকে প্রত্যেক সালাতে কবর আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে দেখেছি।
১২০০ হান্নাদ ইবনুল সারী (রহঃ) আয়িশা (রাঃ)থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এতে আছে, আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি শুনেছি,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতে কবর আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।
১২০১ আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার সালাতে দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে শুনেছি।
১২০২ নাসর ইবনু আলী আন-জাহযামী, ইবনু নুমায়র, আবূ কুরায়ব ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ সালাতে-তাশাহুদ পড়বে, তখন চারটি বিষয় থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। বলবে- হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জীবন-মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে।
১২০৩ আবূ বাকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) নাবী সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালাতে এই দুআ পড়তেন- হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পানাহ চাই কবর আযাব থেকে, তোমার কাছে পানাহ চাই মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং তোমার কাছে পানাহ চাই জীবন-মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পানাহ চাই, পাপকার্য ও ঝণগ্রস্ততা থেকে। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এক ব্যাক্তি তাকে বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি ঋণগ্রস্ততা থেকে এত বেশী আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন কেন? তিনি বললেন, মানুষ যখন ঝণগ্নস্ত হয়, তখন মিথ্যা কথা বলে এবং ওয়াদা করে ওয়াদা করে ওয়াদা খেলাফ করে।
১২০৪ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আখেরী বৈঠক তাশাহুদ শেষ করবে, তখন আল্লাহর নিকট চারটি জিনিস থেকে আশ্রয় চাইবে। জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জীবন-মরণের ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে।
১২০৫ হাকাম ইবনু মূসা ও আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) আওযাঈ (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সুত্রে বর্ণনা করেন। তারা বলেন, যখন তোমাদের কেউ তাশাহুদ শেষ করবে, এতে আখেরী বৈঠকের কথা নেই।
১২০৬ মুহাম্মাদ হবনূল-মূসান্না (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট পানাহ চাই কবর আযাব থেকে জাহান্নামের আযাব থেকে, জীবন-মরণে বিপর্যয় থেকে দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। -
১২০৭ মুহাম্মদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ) আবূ হুরায়ারা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর, আল্লাহর নিকট কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর, আল্লাহর নিকট মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং আল্লাহর নিকট জীবন-মরনের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর।
১২০৮ মুহাম্মাদ ইবনু আববাদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নযী থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১২০৯ মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ (রহঃ), আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
১২১০ মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর আযাব, জাহান্নামের আযাব ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
১২১১ কুতয়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে যেমন কুরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন তেমনি এক দু’আও শিক্ষা দিতেন বলতেন, বল (হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট পানাহ চাই জাহান্নামের আযাব থেকে, আমি তোমার নিকট পানাহ চাই কবরের আযাব থেকে, আমি তোনার নিকট পানাহ চাই মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং আমি তোমার নিকট পানাহ –চৗই জীবন-মরনের ফিতনা থেকে।) মুসলিম ইবনু হাজ্জাজ (রহঃ) বলেন, আমি জানতে পেরেছি, তাঊস তার পুত্রকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তোমার সালাতে এই দুআ পড়েছ? সে বলল, না। তিনি বললেন, তোমার সালাত আবার আদায় কর। কেননা, (তোমার পিতা) তাঊস এই হাদীসটি তিনজন অথবা চারজন রাবী থেকে বর্ণনা করেছেন।
১২১২ দাঊদ ইবনু রাশীদ (রহঃ) সাওবান- (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার সালাত শেষ করতেন, তখন তিনবার ইস্তিগফার- করতেন এবং বলতেন- “হে আল্লাহ! তুমি শান্তিময় এবং অেমা থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমান্বিত ও সষ্মানিত’”। ওয়ালীদ বলেন, আমি আওযাঈকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইস্তিগফার কেমন করে? তিনি বললেন, আস্তাগফিরুল্লাহ, বলবে।
১২১৩ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও নূমায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে (আরবি) আল্লাহুম্মা আন্তাস সালাম অয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা জাল জালালে অয়াল ইকরাম এই দু’আ পাঠ করার পরিমাণের চেয়ে বেশী বসতেন না।
১২১৪ ইবনু নুমায়র আসিম (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইয়া জাল জালালে অয়াল ইকারাম বলেছেন।
১২১৫ আব্দুল ওয়ারিস ইবনু আব্দুস সামাদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনূরূপ বর্ণনা করেছেন।
১২১৬ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) মুগীর ইবনু শূবার আযাদকৃত গোলাম ও ওয়াররাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা ইবনু শুবা (রহঃ) মুআবিয়া (রহঃ)-কে লিখে পাঠালেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষে সালাম ফিরিয়ে বলতেন – “আল্লাহ ভিন্ন কোন মাবুদ নেঁই। তিনি একক। তার কোন অংশীদার নেই। রাজঁত্ব তাঁরই এবং প্রশংর্সাও তাঁরই প্রাপ্য। তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও, তা কেউই রোধ করতে পারে না। এবং তুমি যা রোধ কর, তা কেউ করতে পারে না। আর কোন সম্পদশালীর সস্পদ তোমার আযাব থেকে তাকে রক্ষা করতে পারবে না”।
১২১৭ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও আহমাদ ইবনু সিনান (রহঃ) মুগীরা (রহঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আবূ বাকর ও আবূ কুরায়ব তাঁদের রিওয়ায়াতে বলেন যে, মুগীরা (রহঃ) হাদীসটি আমাকে লিখিয়ে দেন। তারপর আমি তা মুআবিয়ার নিকট লিখে পাঠাই।
১২১৮ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) মুগীরা ইবনু শু’বার আযাদকৃত গোলাম ওয়াররাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা ইবনু শু-বা (রহঃ) মুআবিয়া (রহঃ) নিকট যে পত্র খানি লিখেছিলেন, তা ওয়াররাদ লিখেছেন। (এতে ছিল যে,) আমি শুনেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে সালাম ফিরিয়ে বলতেন, পরবর্তী অংশ উপরোক্ত আবূ বাকর ও আবূ কুরায়বের হাদীসের অনুরুপ।
১২১৯ হামিদ ইবনু উমার আল বাকরাবী ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না মুগীরা ইবনু শু’বার কাতিব (লেখক) ওয়ারারাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীরা (রহঃ) মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিকট লিখলেন, পরবর্তী অংশ মনসূর ও আ’মাশের অনুরুপ।
১২২০ ইবনু আবূ উমর আল মাক্কী আবদা ইবনু আবূ লূবাবা ও আবদুল মালিক ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা মুগীরা ইবনু শু’বা (রহঃ)-এর কাতিব (লেখক) ওয়াররাদকে বলতে শুনেছেন, মুআবিয়া (রাঃ) মুগীরা (রহঃ) কে লিখে পাঠান যে, তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে শুনেছ এরুপ কিছু আমাকে লিখে জানাও। তখন তিনি তাঁকে লিখলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি, তিনি সালাত শেষ করে বলতেন “‏লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অয়াহদাহু লা সারিকা লাহু লাহুল মূলক অয়া লাহুল হামদ অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির”
১২২১ মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, ইবনু যুবায়র (রহঃ) প্রত্যেক সালাতের পর সালাম ফিরাবার সময় বলতেন- আল্লাহ ছাড়া! কোন মা-বুদ নেই। তিনি এক। তাঁর কোন অংশীদার নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনই সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারও শক্তি-সামর্থ্য নেই। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। আর আমরা তাঁকে ছাড়া অন্যকারও বন্দেগী করি না। তাঁরই সমস্ত নিয়ামাত, সমস্ত অনুগ্রহ ও সমস্ত উত্তম প্রশংসা। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। আনুগত্য একমাত্র তাঁরই উদ্দেশ্যে। যদিও তা কাফিরগণ অপছন্দ করে”। ইবনুুয-যুবায়র (রহঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক (ফরয) সালাতের পর এই কালিমা-ই তাওহীদ পাঠ করতেন।
১২২২ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) হিশাম ইবনু উরওয়ার আযাদকৃত গোলাম আবূয যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু যূবাইর (রাঃ) প্রত্যেক সালাতের পর ইবনু নূমায়রের হাদীসের অনুরুপ-কালিমা তাওহীদ পাঠ করতেন। তিনি প্রত্যেক সালাতের পর এই “কালিমা তাওহীদ”, পাঠ করতেন।
১২২৩ ইয়া’কুব ইবনু ইবরাহীম আদ দাওরাকী (রহঃ) আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনুুয যুবায়র (রহঃ) কে এই মিম্বারের উপর দাড়িয়ে খুতবা দান করতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সালাত শেষে সালাম ফিয়িয়ে বলতেন পররর্তী অংশ হিশাম ইবনু উরওয়ার হাদীসের অনুরুপ বর্ননা করেছেন।
১২২৪ মুহাম্মাদ ইবনু সালামা আল মুরাদী (রহঃ) যূবায়র মাক্কী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনুুয যুবায়র (রহঃ)-কে সালাতের পর সালাম ফিরিয়ে বলতে শুনেছেন- পরবর্তী অংশ হিশাম ও হাজ্জাজের বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ। এই দীসের শেষে রয়েছে যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
১২২৫ আসিম ইবনু নাযার আত তায়মী ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। হাদীসটির শব্দ কুতায়বা থেকে গৃহীত- তিনি বলেন একদা দরিদ্র মুহাজিরগণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্হিত হয়ে বললেন, ধনী লোকেরা উচ্চ মর্যাদা ও নিয়ামাত নিয়োগেলেন, তিনি বললেন, তা কেমন করে? তারা বললেন, তাঁরা সালাত আদায় করেন যেরুপ আমরা সালাত আদায় করি, তাঁরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করেন, যে রুপ আমরা সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করি। এবং তাঁরা সাদাকা করেন, আমরা সাদাকা করতে পারি না। তারা (দাস-দাসী) আযাদ-করেন, আযাদ করেন, আমরা (দাস-দাসী) আযাদ করতে পারি না। রাসূলৃল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু শিক্ষা দিবনা, যদ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রগামীদের মর্যাদা লাভ করবে এবং অন্যদের থেকে অগ্রগামী থাকবে? আর তোমাদের অপেক্ষা কেউ শ্রেষ্ঠ হতে পারবে না-অবশ্য যারা তোমাদের মত করবে তাদের কথা ভিন্ন। তারা বললেন, নিশ্চয়ই, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর তেত্রিশবার করে সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবর ও আল-হামদুলিল্লাহ পড়বে। আবূ সালেহ বলেন, এরপর দরিদ্র মুহাজিররা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ফিরে এলেন এবং বললেন, আমাদের ধনী ভাইরা আমাদের আমলের বিষয়টি শুনে ফেলেছেন এবং তারাও আমাদের মত আমল করা শুরু করেছেন। তিনি বললেন, তা আল্লাহ দান-তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। কুতায়বা ছাড়া অন্যান্য রাবীগণ এই হাদীসে ইবনু আজলান সূত্রে বাড়িয়ে বলেছেন যে, সূমাইয়্যা বলেন, এই হাদীসটি আমি আমার পরিবারের এক ব্যাক্তির নিকট বললাম। সে আমাকে বলল, তুমি ভূল করেছ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি সুবহানাল্লাহ বলবে তেত্রিশবার, আল-হামদুলিল্লাহ বলবে তেত্রিশবার এবং আল্লাহু আকবার বলবে তেত্রিশবার। সুমায়্যি বলেন, তারপর আমি আবূ সালিহের নিকট গেলাম এবং তাঁকে ঐ কথা বললাম। তিনি আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর, সুবাহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ এই ভাবে সবগুলি মিলিয়ে তেত্রিশবার বলবে। ইবনু আজলান (রহঃ) বলেন, আমি এই হাদীস রাজা ইবনু হাওয়ার কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি আমার কাছে আবূ সালিহ (রহঃ) থেকে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এবং তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সেরুপ বর্ণনা করেন।
১২২৬ উমায়্যা ইবনু বিস্তাম আল আয়শী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা দরিদ্র মুহাজিরগন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ধনবান লোকেরা উচ্চ মর্যাদা ও অনুগ্রহ নিয়োগেল। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ লায়স থেকে কুতায়বার বর্ণনার মত। কিন্তু আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীসে আবূ সালিহের কথাটিও সংযোজন পর্যন্ত। এই হাদীসে একথাটিও বেশী বলেছেন যে, সূহায়ল বলতেন, প্রত্যেকটি বাক্য এগারবার করে বলবে তাতে সর্বমোট তেত্রিশবার হবে।
১২২৭ হাসান ইবনু ঈসা (রহঃ) কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক ফরয সালাতের পর এমন কিছু যিকর আছে, যা পাঠকারী কিংবা আমলকারী কখনও বঞ্চিত হবে না। তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামডুলিল্লাহ ও চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর।
১২২৮ নাসর ইবনু আলী আল-জাহযামী (রহঃ) কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সালাতের পর পাঠ করার এমন কিছু যিকর আছে, যা পাঠকারী কিংবা আমলকারী কখনো বঞ্চিত হবে না। প্রত্যেক সালাতের পর তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ ও চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর।
১২২৯ মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) হাকাম (রহঃ) সুত্রে উপরোক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
১২৩০ আব্দুল হামীদ ইবনু বায়ান আল ওয়াসিতী (রহঃ) হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক সালাতের পর সুবহানাল্লাহ তেত্রিশবার, আলহামদুলিল্লাহ তেত্রিশবার ও আল্লাহু আকবার তেত্রিশবার বলবে এই নিরানব্বই-আর আশহাদু আল্লাহ্‌ ইলাহা ইল্লালাহু অয়াদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মূলক অয়া লাহুল হামদ অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির" বলে একশ পূর্ণ করবে, তার পাপ সমুহ মাফ হয়ে যাবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মত হয়।
১২৩১ মুহাম্মাদ ইবনুুস সাব্বাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরুপ।
১২৩২ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে তাকবীর তাহরীমা বলে কিরা’আত পাঠ পুর্বে কিছুক্ষণ নীরব থাকতেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কুরবান, আপনি তাকবীর তাহরিমা ও কিরা’আতের মাঝখানে নীরব থেকে কী বলেন তা আমাকে বলুন। তিনি বললেন, আমি পড়ি (আরবি হাদিস দেখুন) অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমার ও আমার পাপসমূহের মধ্যে ব্যবধান করে দাও, যেরুপ ব্যবধান করে দিয়েছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপ সমূহ থেকে পরিস্কর করে দাও, যেরুপ পরিস্কার করা হয়ে থাকে সাদা ময়লা থেকে। হে আল্লাহ তুমি আমার পাপ সমূহকে ধূয়ে বরফ, পানি ও শিলা (বৃষ্টির মত সচ্ছ পানি) দ্বারা।
১২৩৩ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র ও আবূ কামিল (রহঃ) উমারা ইবনু কা-কা (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে জারীরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন, আমার নিকট ইয়াহইয়া ইবনু হাসান ও ইউনূস আল মুআদ্দিব (রহঃ) প্রমুখ থেকেও বর্ণনা করা হয়েছে তারা সকলেই আব্দুল ওয়াহিদ ইবনু যিয়াদ ও উমারা ইবনু কা’কার মাধ্যমে আবূ যুরআর সুত্রে . আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্বিতীয় রাকআতে দাড়াতেন, তখন “আল-হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দ্বারা কিরআত শূরু করতেন এবং নীরব থাকতেন না।
১২৩৪ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি এসে সালাতের কাতারে শামিল হল। সে হাপাচ্ছিল। এরপর সে বলল ‘আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা, তিনি পবিত্র ও বরকতময় বলেছ? সকলে নীরব থাকল। তিনি আবার জিঞ্জাসা করলেন, কে এই বাক্য বলেছ? বস্তুত সে কোনও মন্দ কথা বলেনি। তখন এক ব্যাক্তি বলল, আমি যখন এলাম তখন আমি হাঁপাচ্ছিলাম। তখন আমি তা বলেছিলাম। তিনি বললেন, আমি বারোজন ফেরেশতাকে দেখলাম, তারা তাড়াহুড়া করছে কে ঐগুলো উপরে নিয়ে যাবে।
১২৩৫ যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। লোকদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠল- অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন কে এই বাক্যগুলো বলেছে? লোকদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি বলেছি ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেন, আমি আাশ্চর্যাম্বিত হলাম ঐ গুলোর জন্য আকাশের সব দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এই কথা শোনার পর থেকে আমি কোনও দিন এই বাক্য গুলো পড়া বাদ দেইনি।
১২৩৬ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব, মুহাম্মাদ ইবনু জাফর ইবনু যিয়াদ ও হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, সালাত শুরু হয়ে গেলে তার জন্য দৌড়িয়ে আসবে না। বরং ধীরে সুস্হে আসবে তারপর যা ইমামের সাথে পাবে, তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায়, পূরণ করে নিবে।
১২৩৭ ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইবনু হুজর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সালাতের ইকামাত দেওয়া হলে, তার জন্য দৌড়ে আসবে না, বরং ধীরে সুস্হে আসবে। তারপর যা পাবে, আদায় করবে আর যা ছুটে যায়, তা পূর্ণ করে নিবে। কেননা, তোমাদের কেউ যখন সালাতের উদ্দেশ্যে চলে তখন সে সালাতেই গণ্য।
১২৩৮ মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহু (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাদের নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কতগুলো হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে এইটিও যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালতের আযান দেওয়া হয়, তখন তোমরা তার দিকে ধীরস্থীর ভাবে হেটে আস। তারপর যা পাবে পড়বে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করে নিবে।
১২৩৯ কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালাতের ইকামত দেওয়া হয়, তোমাদের কেউ তার দিকে দৌড়ে আসবে না, বরং ধীরস্হির ভাবে হেঁটে আসবে। যা পাবে আদায় করবে, আর যা আগে ছুটে যায় তা কাযা করে নিবে।
১২৪০ ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাত আদায় করছিলাম। তিনি পদ ধ্বনি ও শুঞ্জন শুনলেন। পরে বললেন, তোমাদের কি হয়েছিল? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। তিনি বললেন এমন করবে না। তোমরা যখন সালাতে আসবে,শান্ত ভাবে আসবে। অতঃপর যা ইমামের সাথে পাবে তা আদায় করে নেবে; আর যা তোমাদের আগে ছুটে গেছে তা পুরন করে নিবে।
১২৪১ আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) সুত্রে উপরোক্ত সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

No comments:

Post a Comment

ইসমাইল হোসেন